ঢাকা ০৯:৩৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी
ব্রেকিং নিউজ ::
ইসরায়েল ও ইরানের সংঘাত: বাংলাদেশিদের জন্য হটলাইন সেবা চালু করা হয়েছে দুতাবাস। ইরানে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিকদের + ৯৮৯908577368 ও + ৯৮৯১22065745 নম্বরে (হোয়াটসঅ্যাপ সহ) যোগাযোগ করতে বলেছে দূতাবাস কর্তৃপক্ষ।

যুবাদের এশিয়া কাপে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ

স্পোর্টস ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৫:২৯:০৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৩
  • / ৪৭৮ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ। ফাইনালে আরব আমিরাতকে ১৯৫ রানে হারিয়েছে টাইগার যুবারা। দুবাইয়ে বাংলাদেশের দেয়া ২৮৩ রানের টার্গেটে ৮৭ রানে গুটিয়ে যায় আমিরাত। সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ম্যাচ সেরা আশিকুর রহমান শিবলী। টুর্নামেন্ট সেরাও এই ওপেনার।

সেমিফাইনালে ভারতকে যখন হারানো হয়ে গেল, বাংলাদেশ দলকে শিরোপামঞ্চে দেখার আশায় বুক বেঁধেছিলেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। এর পাশাপাশি অন্য সেমিফাইনালের ফল শোনার পর বাংলাদেশকে শিরোপামঞ্চে দেখার প্রস্তুতি তখন থেকেই সম্ভবত শুরু হয়ে গিয়েছিল। দ্বিতীয় সেমিফাইনাল থেকে যে পাকিস্তান নয়, উঠেছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত। গ্রুপ পর্বে এই আমিরাতকেই ৬১ রানে হারিয়েছিল বাংলাদেশ।

সেদিন স্রেফ হারিয়েছিল, দুবাইয়ে আজ অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের ফাইনাল সংযুক্ত আরব আমিরাতকে গুঁড়িয়েই দিল বাংলাদেশ! আগে ব্যাট করে আশিকুর রহমান শিবলির দারুণ সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশ করেছিল ২৮২ রান, জবাবে আমিরাত অলআউট হয়ে গেছে মাত্র ৮৭ রানে।

১৯৬ রানের এই জয়ে একটা ইতিহাসই গড়ে ফেলেছে বাংলাদেশ। ১৯৮৯ সাল থেকে শুরু যুব এশিয়া কাপের এটি ছিল দশম টুর্নামেন্ট, এবারই প্রথম শিরোপা জিতল বাংলাদেশ! আগের নয়বারের মধ্যে শুধু একবার (২০১৭) আফগানিস্তান জিতেছিল, বাকি আটবারই শিরোপা গেছে ভারতের ঘরে। অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায়ে একবার বিশ্বকাপই জিতে ফেলা বাংলাদেশের মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন বাকি ছিল, সেটাও হয়ে গেল আর কী!

দুবাইয়ের একাডেমি মাঠের সবুজ পিচে টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত। শুরুতে দারুণ সাবধানী বাংলাদেশ প্রথম দশ ওভারে তুলতে পেরেছে মাত্র ২৭ রান, এর মধ্যে পঞ্চম ওভারে হারায় ওপেনার জিশান আলমের উইকেটও। সেখান থেকে শিবলি পরের দুই ব্যাটসম্যানের সঙ্গে গড়লেন দারুণ দুই জুটি। আর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পিচে অভ্যস্ত ব্যাটসম্যানরা রানের গতিও বাড়ালেন।

দ্বিতীয় উইকেটে চৌধুরী মোহাম্মদ রিজওয়ানের (৭১ বলে ৪ চার ১ ছক্কায় ৬০ রান) শিবলি গড়লেন ১২৫ রানের জুটি, তৃতীয় উইকেটে আরিফুল ইসলামের (৪০ বলে ৬ চারে ৫০) সঙ্গে তাঁর জুটি হলো ৮৬ রানের। ওই জুটির পথেই ৪১তম ওভারে দুই শ পেরোল বাংলাদেশের। তার কিছুক্ষণ পর ১২৯ বলে সেঞ্চুরি হয়ে গেল শিবলির।

আরিফুল আউট হলে ভাঙে সে জুটি। আর শিবলি এক বলের জন্য ইনিংসজুড়ে ব্যাট ক্যারি করার কীর্তিটা গড়তে পারলেন না। শেষ ওভারের পঞ্চম বলে যখন সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হচ্ছেন, বাংলাদেশের যুবাদের রান ২৮২, শিবলির নামের পাশে জ্বলজ্বলে ১৪৯ বলে ১২ চার ১ ছক্কায় ১২৯ রানের ইনিংস।

টুর্নামেন্টে শুধু সেমিফাইনালে ভারতের বিপক্ষে রান পাননি শিবলি, সেদিন করেছেন ৭ রান। এর বাইরে আজ তো সেঞ্চুরি পেলেনই, গ্রুপ পর্বে তিন ম্যাচে তাঁর স্কোর ছিল যথাক্রমে – ৭১, ৫৫* ও ১১৬*! টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক শিবলি হবেন না তো আর কে হবেন!

বাংলাদেশের এই স্কোরের পর সংযুক্ত আরব আমিরাত জবাব দেবে কী, বাংলাদেশের তিন পেসার – মারুফ মৃধা, রোহানাত দৌলা বর্ষণ আর ইকবাল হোসেন ইমনের দাপটে দাঁড়াতেই পারল না! মারুফের গতি ও সুইং তো যেন খেলতেই পারছিল না!

পঞ্চম ও সপ্তম ওভারে মারুফ ফেরালেন দুই ওপেনার আয়ানশ শর্মা (৯) ও অক্ষত রায়কে (১১)। ২৮ রানেই দুই ওপেনারকে হারানো আমিরাত এরপর দেখল উইকেটের বর্ষণ – বাংলাদেশের পেসার বর্ষণই যে একে একে তুলে নিলেন পরের তিন ব্যাটসম্যান তানিশ সুরি (৬), ইথান ডি’সুজা (৪) ও অধিনায়ক আয়ান আফজাল খানকে (৫)। ১২ ওভারের মধ্যে আমিরাতের ইনিংসের অর্ধেক শেষ, তখনো রান ৪৫! এ ম্যাচে এরপর আর বাকি থাকে কী!

বাকি থাকে শুধু আমিরাত কত রানে গুটিয়ে যায়, বাংলাদেশ কত রানে জেতে – সেটিই। ইকবাল হোসেন ইমন নিলেন পরের দুই উইকেট – ইয়াইন রায় (৬) ও আমমার বাদামি (০)। ৬১ রানে ৭ উইকেট নেই আমিরাতের।

১৯তম ওভারে বাংলাদেশের স্পিনার শেখ পারভেজ জীবন ইনিংস প্রথম উইকেট নিলেন, দলীয় ৭১ রানে ফিরলেন হার্দিক পাই। মারুফ এসে এরপর ২০তম ওভারে ফেরান আয়মান আহমেদকে (০)। ৭২ রানে নবম উইকেট হারানো আমিরাত যে এরপর দশম উইকেটে আরও ১৫ রান তুলতে পেরেছে, সেটা চারে নেমে অন্য প্রান্তে ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়াই দেখতে থাকা ধ্রুব পারেসারের (২৫*) কারণে।

নিউজটি শেয়ার করুন

যুবাদের এশিয়া কাপে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ

আপডেট সময় : ০৫:২৯:০৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৩

অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ। ফাইনালে আরব আমিরাতকে ১৯৫ রানে হারিয়েছে টাইগার যুবারা। দুবাইয়ে বাংলাদেশের দেয়া ২৮৩ রানের টার্গেটে ৮৭ রানে গুটিয়ে যায় আমিরাত। সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ম্যাচ সেরা আশিকুর রহমান শিবলী। টুর্নামেন্ট সেরাও এই ওপেনার।

সেমিফাইনালে ভারতকে যখন হারানো হয়ে গেল, বাংলাদেশ দলকে শিরোপামঞ্চে দেখার আশায় বুক বেঁধেছিলেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। এর পাশাপাশি অন্য সেমিফাইনালের ফল শোনার পর বাংলাদেশকে শিরোপামঞ্চে দেখার প্রস্তুতি তখন থেকেই সম্ভবত শুরু হয়ে গিয়েছিল। দ্বিতীয় সেমিফাইনাল থেকে যে পাকিস্তান নয়, উঠেছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত। গ্রুপ পর্বে এই আমিরাতকেই ৬১ রানে হারিয়েছিল বাংলাদেশ।

সেদিন স্রেফ হারিয়েছিল, দুবাইয়ে আজ অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের ফাইনাল সংযুক্ত আরব আমিরাতকে গুঁড়িয়েই দিল বাংলাদেশ! আগে ব্যাট করে আশিকুর রহমান শিবলির দারুণ সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশ করেছিল ২৮২ রান, জবাবে আমিরাত অলআউট হয়ে গেছে মাত্র ৮৭ রানে।

১৯৬ রানের এই জয়ে একটা ইতিহাসই গড়ে ফেলেছে বাংলাদেশ। ১৯৮৯ সাল থেকে শুরু যুব এশিয়া কাপের এটি ছিল দশম টুর্নামেন্ট, এবারই প্রথম শিরোপা জিতল বাংলাদেশ! আগের নয়বারের মধ্যে শুধু একবার (২০১৭) আফগানিস্তান জিতেছিল, বাকি আটবারই শিরোপা গেছে ভারতের ঘরে। অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায়ে একবার বিশ্বকাপই জিতে ফেলা বাংলাদেশের মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন বাকি ছিল, সেটাও হয়ে গেল আর কী!

দুবাইয়ের একাডেমি মাঠের সবুজ পিচে টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত। শুরুতে দারুণ সাবধানী বাংলাদেশ প্রথম দশ ওভারে তুলতে পেরেছে মাত্র ২৭ রান, এর মধ্যে পঞ্চম ওভারে হারায় ওপেনার জিশান আলমের উইকেটও। সেখান থেকে শিবলি পরের দুই ব্যাটসম্যানের সঙ্গে গড়লেন দারুণ দুই জুটি। আর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পিচে অভ্যস্ত ব্যাটসম্যানরা রানের গতিও বাড়ালেন।

দ্বিতীয় উইকেটে চৌধুরী মোহাম্মদ রিজওয়ানের (৭১ বলে ৪ চার ১ ছক্কায় ৬০ রান) শিবলি গড়লেন ১২৫ রানের জুটি, তৃতীয় উইকেটে আরিফুল ইসলামের (৪০ বলে ৬ চারে ৫০) সঙ্গে তাঁর জুটি হলো ৮৬ রানের। ওই জুটির পথেই ৪১তম ওভারে দুই শ পেরোল বাংলাদেশের। তার কিছুক্ষণ পর ১২৯ বলে সেঞ্চুরি হয়ে গেল শিবলির।

আরিফুল আউট হলে ভাঙে সে জুটি। আর শিবলি এক বলের জন্য ইনিংসজুড়ে ব্যাট ক্যারি করার কীর্তিটা গড়তে পারলেন না। শেষ ওভারের পঞ্চম বলে যখন সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হচ্ছেন, বাংলাদেশের যুবাদের রান ২৮২, শিবলির নামের পাশে জ্বলজ্বলে ১৪৯ বলে ১২ চার ১ ছক্কায় ১২৯ রানের ইনিংস।

টুর্নামেন্টে শুধু সেমিফাইনালে ভারতের বিপক্ষে রান পাননি শিবলি, সেদিন করেছেন ৭ রান। এর বাইরে আজ তো সেঞ্চুরি পেলেনই, গ্রুপ পর্বে তিন ম্যাচে তাঁর স্কোর ছিল যথাক্রমে – ৭১, ৫৫* ও ১১৬*! টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক শিবলি হবেন না তো আর কে হবেন!

বাংলাদেশের এই স্কোরের পর সংযুক্ত আরব আমিরাত জবাব দেবে কী, বাংলাদেশের তিন পেসার – মারুফ মৃধা, রোহানাত দৌলা বর্ষণ আর ইকবাল হোসেন ইমনের দাপটে দাঁড়াতেই পারল না! মারুফের গতি ও সুইং তো যেন খেলতেই পারছিল না!

পঞ্চম ও সপ্তম ওভারে মারুফ ফেরালেন দুই ওপেনার আয়ানশ শর্মা (৯) ও অক্ষত রায়কে (১১)। ২৮ রানেই দুই ওপেনারকে হারানো আমিরাত এরপর দেখল উইকেটের বর্ষণ – বাংলাদেশের পেসার বর্ষণই যে একে একে তুলে নিলেন পরের তিন ব্যাটসম্যান তানিশ সুরি (৬), ইথান ডি’সুজা (৪) ও অধিনায়ক আয়ান আফজাল খানকে (৫)। ১২ ওভারের মধ্যে আমিরাতের ইনিংসের অর্ধেক শেষ, তখনো রান ৪৫! এ ম্যাচে এরপর আর বাকি থাকে কী!

বাকি থাকে শুধু আমিরাত কত রানে গুটিয়ে যায়, বাংলাদেশ কত রানে জেতে – সেটিই। ইকবাল হোসেন ইমন নিলেন পরের দুই উইকেট – ইয়াইন রায় (৬) ও আমমার বাদামি (০)। ৬১ রানে ৭ উইকেট নেই আমিরাতের।

১৯তম ওভারে বাংলাদেশের স্পিনার শেখ পারভেজ জীবন ইনিংস প্রথম উইকেট নিলেন, দলীয় ৭১ রানে ফিরলেন হার্দিক পাই। মারুফ এসে এরপর ২০তম ওভারে ফেরান আয়মান আহমেদকে (০)। ৭২ রানে নবম উইকেট হারানো আমিরাত যে এরপর দশম উইকেটে আরও ১৫ রান তুলতে পেরেছে, সেটা চারে নেমে অন্য প্রান্তে ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়াই দেখতে থাকা ধ্রুব পারেসারের (২৫*) কারণে।