রাখাইন নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার দাবি আরাকান আর্মির
- আপডেট সময় : ০৬:৫৭:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩
- / ৪১০ বার পড়া হয়েছে
রাখাইন প্রদেশের ১৭টির মধ্যে ১৫টি শহরের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার দাবি করেছে বিদ্রোহী গোষ্ঠি আরাকার আর্মি। পাশাপাশি চীন প্রদেশের পালেতয়া শহরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ারও দাবি করেছে তারা। গোষ্ঠিটি বলছে, তারা মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ১৪২টি অবস্থানের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।
মিয়ানমার ভিত্তিক গণমাধ্যম ইরাবতী বলছে, ৪৫ দিনের সংঘাতের পর গত বৃহস্পতিবার রাখাইনের প্রাদেশিক রাজধানী সিতওয়ের ১৪টি শহরসহ একটি সেনাঘাটি এবং সেনা চৌকির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে আরাকান আর্মি। পালেতওয়া শহরে জান্তার নিয়ন্ত্রণে থাকা ১৭টি অবস্থানও এখন তাদের দখলে।
ইরাবতী বলছে, রাখাইনের উত্তরে আরাকান আর্মির সঙ্গে মারুক ইউ, পউকতাও ও মউঙ্গডু এবং চীন প্রদেশের পালেতওয়ার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সেনাবাহিনীর সঙ্গে গোষ্ঠিটির তীব্র লড়াই চলছে।
গত বুধবার মারুক ইউ শহরের কোয়ে থাং প্যাকোডায় তীব্র লড়াইয়ে সামরিক বাহিনী ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে বলে জানা যায়। এ সময় শহরটির পায়ার ওয়াক, য়ার হাউং, পিপিন কোন ও মউঙ থার কোন গ্রামে এবং মারুক ইউ শহরে বিমান হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা।
মারুক ইউ শহরের এক বাসিন্দা বলেন, কোনো বেসামরিক প্রাণহানি হয়নি। তবে বেশ কয়েকটি ঘরবাড়ি, ধর্মীয় স্থাপণা ও প্যাগোডা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
এই সপ্তাহে মউঙ্গডু ও পাউকটাওয়ে তীব্র সংঘর্ষের পর আরাকান আমি পালেতয়ার একটি সামরিক ক্যাম্প দখল করে। সেনাবাহিনীর শক্ত নিয়ন্ত্রণে থাকা তারুনাইগ ও নোন বু এলাকারও এরই মধ্যে পতন হয়েছে।
গত মঙ্গলবার, পালেতয়া শহর থেকে ৫০ কিলোমিটার দুরে সিনলেৎওয়ায় একটি সামরিক চৌকিতে আরাকান আর্মি আক্রমণ করে। পালেতয়ার এক বাসিন্দা বলেন, ‘সিনলেৎওয়ার গ্রামের বাসিন্দারা জঙ্গলে পালিয়ে যায়। ফোন এবং ইন্টারনেটের সংযোগ কেটে দেওয়া হয়েছে, তাদের সঙ্গে আমরা আর যোগাযোগ করতে পারিনি।’
আরাকান আর্মি বলছে, গত ১৩ নভেম্বর জান্তা সরকার রাখাইনের প্রায় ৩০০ বাসিন্দাকে গ্রেপ্তার করে। গত সোম ও মঙ্গলবার সিৎওয়ে, মিনবিয়া, কিয়াকতাও, মারুক ইউ ও পউকতাও শহরের ৬০ জন বাসিন্দাকে আটক করা হয়।
আরাকান আর্মি এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, আটকরা নৌকায় করে পউকতাও ও সিৎওয়েতে বিভিন্ন পণ্য আনা–নেওয়া করতেন। আটক অন্যদের মধ্যে আছেন ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থী ও স্কুলের শিক্ষক।
সিৎওয়ের এক বাসিন্দা বলেন, ‘কোনো কারন ছাড়া প্রতিদিনই জান্তা সরকার কিওউকফু, থানডওয়ে, তানুঙউপ, মারুক ইউ ও মিনবিয়ার বাসিন্দাদের গ্রেপ্তার করছে।’
গ্রেপ্তারদের অনেককেই লম্বা বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে আরাকান আর্মি বা বেসামরিক ন্যাশনাল ইউনিটি সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক রাখার অভিযোগে দীর্ঘ কারাবরণ করতে হচ্ছে।
জাতিসংঘ বলছে, গত ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত জান্তা সরকারের বোমা হামলা ও গোলাগুলিতে ৩২ বেসামরিক নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ৯৬ জন।
জাতিসংঘের এই রিপোর্টের পর জান্তা সরকারের বোমা হামলা আরও বেড়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, গত ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত পউকতাও, মিনবিয়া ও পোনাগুন শহরের এক লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।