ঢাকা ০৮:৪৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১০ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

৯ দশমিক ৬ তাপমাত্রায় কাঁপছে তেঁতুলিয়া

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৮:৪২:৫১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৩
  • / ৪২৯ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

হিমালয় থেকে ধেয়ে আসা হিমেল বাতাস, গুমোট মেঘের ফাঁকে সূর্যের লুকোচুরি, সন্ধ্যার পর ভারী শিশির বিন্দু৷ এমন পরিবেশ বিরাজ করছে দেশের শেষ প্রান্তের জেলা পঞ্চগড়ে৷ হিমালয়ের অবস্থান খুব কাছাকাছি হওয়ার কারণে প্রতি বছর ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে এমন পরিবেশ বিরাজ করে৷ পঞ্চগড়ে ফের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।

জেলার প্রথম শ্রেণির তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ জানান, শুক্রবার সকাল ৯টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি রেকর্ড করা হয়েছে।

রাসেল শাহ বলেন, চলতি সপ্তাহে ১০ থেকে ৯ ডিগ্রির তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৬ দিন। অপর এক দিন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১০ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সপ্তাহজুড়েই এ জেলায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ প্রবাহিত হচ্ছে।

এদিকে তাপমাত্রা কমলেও ঘনকুয়াশার দেখা নেই। বিকেলের পর থেকে হিমশীতল বাতাসে করণে রাতভর কনকনে শীত অনুভূত হয়েছে। এ সময়ে আবহাওয়ার এমন পরিবর্তনের ফলে ভোগান্তিতে পড়তে হয় নিম্ন আয়ের মানুষদের৷ গরম কাপড়ের অভাব না থাকলেও রয়েছে পেটের ক্ষুধা, সংসারের চাপ, সঙ্গে কিস্তির টাকা পরিশোধের দুশ্চিন্তা। দিন দিন শীতের তীব্রতা বাড়ছে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সূর্যের রোদ ছড়ালেও কমেনি হাড় কাঁপানো শীতের দাপট। দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকলেও সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত ঠান্ডায় কাবু এখানকার মানুষ।

স্থানীয়রা বলছেন, সকালে সূর্যের দেখা মিললেও সকাল ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত থাকে হাড়কাঁপানো শীত। সন্ধ্যার পর থেকে শীতের মাত্রা বাড়ে। রাত বাড়তে থাকলে শীতও বাড়ে সমানতালে। হাড়কাঁপানো শীতকে উপেক্ষা করেই জীবিকার তাগিদে কাজে যেতে দেখা যায় শ্রমিক, ভ্যানচালক, দিনমজুর থেকে নিম্ন আয়ের বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষদের।

এদিকে, শীত উপেক্ষা করেই জীবিকার তাগিদে সকালেই কাজে যেতে দেখা যায় এ অঞ্চলের শ্রমজীবী মানুষদের। পাথর শ্রমিকরা নদীতে বরফ জলের মধ্যেই নেমে পড়েন কাজে। অপরদিকে, শীতের কারণে বাড়তে শুরু করে বিভিন্ন শীতজনিত রোগ-ব্যাধি। চিকিৎসকরা শীতজনিত রোগ থেকে নিরাময় থাকতে বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করছেন। অভাবী মানুষজন প্রতিদিন গরম কাপড়ের জন্যে পৌর সভা ইউনিয়ন পরিষদের ধরনা দিচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, বিকেলের পর হিমেল বাতাসে সন্ধ্যার পর থেকে শীতের মাত্রাটা বেশি বাড়ে এখানে। রাত বাড়তে থাকলে শীতও বৃদ্ধি পায় অধিকহারে। তবে সকাল ১০টা থেকেই তাপমাত্রা বেড়ে দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকছে।

এ বিষয়ে কথা হয় জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার দর্জিপাড়া গ্রামের কৃষক আনসারুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, শীতকাল আসলে আমাদের মৌসুমি ফসল নিয়ে বিপাকে পড়তে হয়। তীব্র শীতে ফসলে বিভিন্ন মড়ক দেখা দেয়। সদর উপজেলার হাফিজাবাদ এলাকার অটোরিকশা চালক জানান, কাজ কমে যাওয়ায় সাপ্তাহিক কিস্তি আরেক দিকে সংসারের ব্যয়৷ ফলে আমাদের অনেক কষ্টে দিন কাটাতে হচ্ছে।

পাথর উত্তোলন শ্রমিক হাসিবুল করিম বলেন, নদীতে ডুবে পাথর কুড়িয়ে আমাদের সংসার চলে। গত কয়েক দিন ধরে শীতের কারণে নদীর পানিও অনেক ঠান্ডা। ঠিকমতো কাজ করতে না পারায় আমাদের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছর এ জেলায় শীত বেশি থাকে। এবারও শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু করেছি। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে শীতবস্ত্র চেয়ে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। প্রকৃত গরীব, অসহায় ও শীতার্তদের মধ্যে এসব শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

৯ দশমিক ৬ তাপমাত্রায় কাঁপছে তেঁতুলিয়া

আপডেট সময় : ০৮:৪২:৫১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৩

হিমালয় থেকে ধেয়ে আসা হিমেল বাতাস, গুমোট মেঘের ফাঁকে সূর্যের লুকোচুরি, সন্ধ্যার পর ভারী শিশির বিন্দু৷ এমন পরিবেশ বিরাজ করছে দেশের শেষ প্রান্তের জেলা পঞ্চগড়ে৷ হিমালয়ের অবস্থান খুব কাছাকাছি হওয়ার কারণে প্রতি বছর ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে এমন পরিবেশ বিরাজ করে৷ পঞ্চগড়ে ফের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।

জেলার প্রথম শ্রেণির তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ জানান, শুক্রবার সকাল ৯টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি রেকর্ড করা হয়েছে।

রাসেল শাহ বলেন, চলতি সপ্তাহে ১০ থেকে ৯ ডিগ্রির তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৬ দিন। অপর এক দিন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১০ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সপ্তাহজুড়েই এ জেলায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ প্রবাহিত হচ্ছে।

এদিকে তাপমাত্রা কমলেও ঘনকুয়াশার দেখা নেই। বিকেলের পর থেকে হিমশীতল বাতাসে করণে রাতভর কনকনে শীত অনুভূত হয়েছে। এ সময়ে আবহাওয়ার এমন পরিবর্তনের ফলে ভোগান্তিতে পড়তে হয় নিম্ন আয়ের মানুষদের৷ গরম কাপড়ের অভাব না থাকলেও রয়েছে পেটের ক্ষুধা, সংসারের চাপ, সঙ্গে কিস্তির টাকা পরিশোধের দুশ্চিন্তা। দিন দিন শীতের তীব্রতা বাড়ছে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সূর্যের রোদ ছড়ালেও কমেনি হাড় কাঁপানো শীতের দাপট। দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকলেও সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত ঠান্ডায় কাবু এখানকার মানুষ।

স্থানীয়রা বলছেন, সকালে সূর্যের দেখা মিললেও সকাল ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত থাকে হাড়কাঁপানো শীত। সন্ধ্যার পর থেকে শীতের মাত্রা বাড়ে। রাত বাড়তে থাকলে শীতও বাড়ে সমানতালে। হাড়কাঁপানো শীতকে উপেক্ষা করেই জীবিকার তাগিদে কাজে যেতে দেখা যায় শ্রমিক, ভ্যানচালক, দিনমজুর থেকে নিম্ন আয়ের বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষদের।

এদিকে, শীত উপেক্ষা করেই জীবিকার তাগিদে সকালেই কাজে যেতে দেখা যায় এ অঞ্চলের শ্রমজীবী মানুষদের। পাথর শ্রমিকরা নদীতে বরফ জলের মধ্যেই নেমে পড়েন কাজে। অপরদিকে, শীতের কারণে বাড়তে শুরু করে বিভিন্ন শীতজনিত রোগ-ব্যাধি। চিকিৎসকরা শীতজনিত রোগ থেকে নিরাময় থাকতে বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করছেন। অভাবী মানুষজন প্রতিদিন গরম কাপড়ের জন্যে পৌর সভা ইউনিয়ন পরিষদের ধরনা দিচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, বিকেলের পর হিমেল বাতাসে সন্ধ্যার পর থেকে শীতের মাত্রাটা বেশি বাড়ে এখানে। রাত বাড়তে থাকলে শীতও বৃদ্ধি পায় অধিকহারে। তবে সকাল ১০টা থেকেই তাপমাত্রা বেড়ে দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকছে।

এ বিষয়ে কথা হয় জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার দর্জিপাড়া গ্রামের কৃষক আনসারুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, শীতকাল আসলে আমাদের মৌসুমি ফসল নিয়ে বিপাকে পড়তে হয়। তীব্র শীতে ফসলে বিভিন্ন মড়ক দেখা দেয়। সদর উপজেলার হাফিজাবাদ এলাকার অটোরিকশা চালক জানান, কাজ কমে যাওয়ায় সাপ্তাহিক কিস্তি আরেক দিকে সংসারের ব্যয়৷ ফলে আমাদের অনেক কষ্টে দিন কাটাতে হচ্ছে।

পাথর উত্তোলন শ্রমিক হাসিবুল করিম বলেন, নদীতে ডুবে পাথর কুড়িয়ে আমাদের সংসার চলে। গত কয়েক দিন ধরে শীতের কারণে নদীর পানিও অনেক ঠান্ডা। ঠিকমতো কাজ করতে না পারায় আমাদের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছর এ জেলায় শীত বেশি থাকে। এবারও শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু করেছি। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে শীতবস্ত্র চেয়ে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। প্রকৃত গরীব, অসহায় ও শীতার্তদের মধ্যে এসব শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে।