ঢাকা ০৮:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

আজ শুভ বড়দিন

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৬:২৫:৩৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩
  • / ৪৬৪ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

গির্জায় গির্জায় প্রার্থনার মধ্যদিয়ে শুরু হয়েছে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বড়দিনের আনুষ্ঠানিকতা। মা মেরির কোল আলো করে পৃথিবীতে এসেছিলেন ছোট্ট শিশু যিশু। জন্মের পর রাখা হয়েছিলো বেথেলহেমের একটি গোয়াল ঘরে। তারই আদলে গড়া প্রতিটি গোয়াল ঘরে রাখা হয় শিশু যিশুর প্রতিকৃতি।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও খ্রিস্টান ধর্মানুসারীরা এ দিন যথাযথ ধর্মীয় আচার, আনন্দ-উৎসব এবং প্রার্থনার মধ্যদিয়ে ‘শুভ বড়দিন’ উদযাপনে মেতে উঠছে। রোববার সন্ধ্যার পর থেকেই গীর্জায় আসতে শুরু করেন অনেকে। ভরে যায় রাজধানীর তেজগাঁও জপমালা রানীর গির্জার প্রার্থনা কক্ষ। পবিত্র সংগীতের মাধ্যমে শুরু হয় খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বড়দিনের আনুষ্ঠানিকতা। এই দিনটিতে সবাইআনন্দ ভাগাভাগি করে নেন বলে জানালেন খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীর সাধারণ মানুষ।

রাজধানীর তারকা হোটেলগুলোতে আলোকসজ্জার পাশাপাশি হোটেলের ভেতরে কৃত্রিমভাবে স্থাপন করা হয়েছে ক্রিসমাস ট্রি ও শান্তা ক্লজ। বড়দিনের প্রাক্কালে গত রাতে বিভিন্ন গির্জায় বিশেষ প্রার্থনাও অনুষ্ঠিত হয়েছে। আর আজ সোমবার সকাল থেকে শুরু হবে বড়দিনের প্রার্থনা।

খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মানুষরা বিশ্বাস করেন, সৃষ্টিকর্তার মহিমা প্রচারের মাধ্যমে মানবজাতিকে সত্য ও ন্যায়ের পথে পরিচালিত করতেই যিশুর পৃথিবীতে আগমন ঘটেছিল।

এদিকে বড়দিন উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খ্রিষ্টা ধর্মাবলম্বীসহ সবার শান্তি ও কল্যাণ কামনা করে পৃথক বাণী দিয়েছেন।

বাণীতে সাহাবুদ্দিন বলেন, ধর্মের মূল কথাই হচ্ছে মানুষ হিসেবে মানুষের সেবা করা। সব ধর্মই মানুষের কল্যাণের কথা বলে। তাই ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ।

রাষ্ট্রপতি বলেন, বিশ্বব্যাপী খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীরা মহামতি যিশু খ্রিষ্টের জন্মদিনকে যথাযথ মর্যাদা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে ‘বড়দিন’ হিসেবে উদযাপন করে থাকেন। খ্রিষ্ট ধর্মানুসারে যিশু খ্রিষ্ট ছিলেন সত্যান্বেষী, মানবজাতির মুক্তির দূত এবং আলোর দিশারী।

বাণীতে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রণীত আমাদের সংবিধানে সকল ধর্ম ও বর্ণের মানুষের সমানাধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি– ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। সকল শ্রেণি-পেশার জনগণের উন্নয়নই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। এ লক্ষ্য অর্জনে আমরা সকল সম্প্রদায়ের মানুষের মর্যাদাপূর্ণ ও নিরাপদ জীবনযাপন নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছি।

রাজধানীসহ সারাদেশে গির্জাগুলো সাজানো হয়েছে বর্ণিল আলোকসজ্জায়। উৎসব নির্বিঘ্নে করতে দেশজুড়ে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন, পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।

এরআগে সন্ধ্যায় রাজধানীর গির্জা পরিদর্শন করেন পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন। পরে সাংবাদিকদের তিনি জানান, বড়দিন উপলক্ষে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

এদিকে, সারাদেশের গিজায় গির্জায় বড়দিন উদযাপনের অনেক আয়োজন হয়েছে। মেহেরপুরের খ্রীস্টান অধ্যুষিত পল্লীগুলোতে চলছে উৎসবের আমেজ। পাড়ায় পাড়ায় তৈরি করা হয়েছে গোশালা। রঙ বেরঙের কাগজ দিয়ে সাজানো হয়েছে গির্জাগুলো। রয়েছে আলোকসজ্জাও।

নাটোরে সাজিয়ে তোলা হয়েছে জেলার ৩৩ টি গির্জা। বাড়িতে গোয়ালঘর তৈরি ও উঠানে আল্পনা আঁকার পাশাপাশি পিঠাপুলি তৈরি হয়েছে।

বড়দিনে চট্টগ্রাম নগরীর পাথরঘাটার গীর্জায় আলপনাসহ নেয়া হয়েছে নানা প্রস্তুতি। গীর্জায় প্রার্থনায় এসেছেন তরুণ তরুণীরা। এছাড়া মাগুরা ও গোপালগঞ্জে উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে বড়দিন উদযাপনের সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

আজ শুভ বড়দিন

আপডেট সময় : ০৬:২৫:৩৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩

গির্জায় গির্জায় প্রার্থনার মধ্যদিয়ে শুরু হয়েছে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বড়দিনের আনুষ্ঠানিকতা। মা মেরির কোল আলো করে পৃথিবীতে এসেছিলেন ছোট্ট শিশু যিশু। জন্মের পর রাখা হয়েছিলো বেথেলহেমের একটি গোয়াল ঘরে। তারই আদলে গড়া প্রতিটি গোয়াল ঘরে রাখা হয় শিশু যিশুর প্রতিকৃতি।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও খ্রিস্টান ধর্মানুসারীরা এ দিন যথাযথ ধর্মীয় আচার, আনন্দ-উৎসব এবং প্রার্থনার মধ্যদিয়ে ‘শুভ বড়দিন’ উদযাপনে মেতে উঠছে। রোববার সন্ধ্যার পর থেকেই গীর্জায় আসতে শুরু করেন অনেকে। ভরে যায় রাজধানীর তেজগাঁও জপমালা রানীর গির্জার প্রার্থনা কক্ষ। পবিত্র সংগীতের মাধ্যমে শুরু হয় খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বড়দিনের আনুষ্ঠানিকতা। এই দিনটিতে সবাইআনন্দ ভাগাভাগি করে নেন বলে জানালেন খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীর সাধারণ মানুষ।

রাজধানীর তারকা হোটেলগুলোতে আলোকসজ্জার পাশাপাশি হোটেলের ভেতরে কৃত্রিমভাবে স্থাপন করা হয়েছে ক্রিসমাস ট্রি ও শান্তা ক্লজ। বড়দিনের প্রাক্কালে গত রাতে বিভিন্ন গির্জায় বিশেষ প্রার্থনাও অনুষ্ঠিত হয়েছে। আর আজ সোমবার সকাল থেকে শুরু হবে বড়দিনের প্রার্থনা।

খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মানুষরা বিশ্বাস করেন, সৃষ্টিকর্তার মহিমা প্রচারের মাধ্যমে মানবজাতিকে সত্য ও ন্যায়ের পথে পরিচালিত করতেই যিশুর পৃথিবীতে আগমন ঘটেছিল।

এদিকে বড়দিন উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খ্রিষ্টা ধর্মাবলম্বীসহ সবার শান্তি ও কল্যাণ কামনা করে পৃথক বাণী দিয়েছেন।

বাণীতে সাহাবুদ্দিন বলেন, ধর্মের মূল কথাই হচ্ছে মানুষ হিসেবে মানুষের সেবা করা। সব ধর্মই মানুষের কল্যাণের কথা বলে। তাই ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ।

রাষ্ট্রপতি বলেন, বিশ্বব্যাপী খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীরা মহামতি যিশু খ্রিষ্টের জন্মদিনকে যথাযথ মর্যাদা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে ‘বড়দিন’ হিসেবে উদযাপন করে থাকেন। খ্রিষ্ট ধর্মানুসারে যিশু খ্রিষ্ট ছিলেন সত্যান্বেষী, মানবজাতির মুক্তির দূত এবং আলোর দিশারী।

বাণীতে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রণীত আমাদের সংবিধানে সকল ধর্ম ও বর্ণের মানুষের সমানাধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি– ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। সকল শ্রেণি-পেশার জনগণের উন্নয়নই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। এ লক্ষ্য অর্জনে আমরা সকল সম্প্রদায়ের মানুষের মর্যাদাপূর্ণ ও নিরাপদ জীবনযাপন নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছি।

রাজধানীসহ সারাদেশে গির্জাগুলো সাজানো হয়েছে বর্ণিল আলোকসজ্জায়। উৎসব নির্বিঘ্নে করতে দেশজুড়ে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন, পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।

এরআগে সন্ধ্যায় রাজধানীর গির্জা পরিদর্শন করেন পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন। পরে সাংবাদিকদের তিনি জানান, বড়দিন উপলক্ষে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

এদিকে, সারাদেশের গিজায় গির্জায় বড়দিন উদযাপনের অনেক আয়োজন হয়েছে। মেহেরপুরের খ্রীস্টান অধ্যুষিত পল্লীগুলোতে চলছে উৎসবের আমেজ। পাড়ায় পাড়ায় তৈরি করা হয়েছে গোশালা। রঙ বেরঙের কাগজ দিয়ে সাজানো হয়েছে গির্জাগুলো। রয়েছে আলোকসজ্জাও।

নাটোরে সাজিয়ে তোলা হয়েছে জেলার ৩৩ টি গির্জা। বাড়িতে গোয়ালঘর তৈরি ও উঠানে আল্পনা আঁকার পাশাপাশি পিঠাপুলি তৈরি হয়েছে।

বড়দিনে চট্টগ্রাম নগরীর পাথরঘাটার গীর্জায় আলপনাসহ নেয়া হয়েছে নানা প্রস্তুতি। গীর্জায় প্রার্থনায় এসেছেন তরুণ তরুণীরা। এছাড়া মাগুরা ও গোপালগঞ্জে উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে বড়দিন উদযাপনের সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।