ঢাকা ০২:১৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी
ব্রেকিং নিউজ ::
ইসরায়েল ও ইরানের সংঘাত: বাংলাদেশিদের জন্য হটলাইন সেবা চালু করেছে দুতাবাস। ইরানে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিকদের + ৯৮৯908577368 ও + ৯৮৯১22065745 নম্বরে (হোয়াটসঅ্যাপ সহ) যোগাযোগ করতে বলেছে দূতাবাস কর্তৃপক্ষ।

প্রচারণায় নেই কোনো নেতা–কর্মী বা সমর্থক

শরীয়তপুর প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৮:০৩:৩৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩
  • / ৫০২ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে সারা দেশে প্রার্থীরা ব্যস্ত নির্বাচনী প্রচারণায়। ভোটের প্রচারণায় কর্মী–সমর্থকদের নিয়ে দলবদ্ধ হয়ে ভোটারদের কাছে গিয়ে ভোট চাচ্ছেন প্রার্থীরা। কেউ করছেন মিছিল, কেউ আয়োজন করছেন জনসভার। তবে সাদাসিধেভাবে ব্যতিক্রম প্রচারণা করছেন শরীয়তপুর-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. গোলাম মোস্তফা।

শরীয়তপুর সদর ও জাজিরা উপজেলা নিয়ে গঠিত শরীয়তপুর-১ আসন। এই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ঈগল প্রতীক নিয়ে লড়বেন মো. গোলাম মোস্তফা। এ নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন তিনি। কিন্তু তাঁর প্রচারণায় নেই কোনো নেতা–কর্মী বা সমর্থক। একাই নিজের প্রচারণা চালাচ্ছেন এই প্রার্থী।

নির্বাচনী প্রচারণার জন্য তিনি একটি অটোরিকশা ভাড়া করেছেন। সেখানে মাইক লাগিয়ে একাই নিজের পক্ষে ভোট চাচ্ছেন ভোটারদের কাছ থেকে। নির্বাচনের সময় প্রার্থীরা যেখানে ভোটারদের চা খাওয়ান, সেখানে এই প্রার্থীকে চা খাওয়াচ্ছেন ভোটাররাই।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জাজিরা উপজেলার নাওডোবা এলাকার বাসিন্দা গোলাম মোস্তফা। তাঁর বাৎসরিক আয় ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ সাড়ে ৭ লাখ টাকা। পেশায় তিনি একজন ব্যবসায়ী। তফসিল ঘোষণার পরই শরীয়তপুর-১ আসনে প্রথম মনোনয়ন কেনেন তিনি। আওয়ামী লীগের দুর্গখ্যাত জেলার এই গুরুত্বপূর্ণ আসনে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পাঁচ প্রার্থীর সঙ্গে লড়ছেন মোস্তফা হাওলাদার।

এদিকে এমন ব্যতিক্রম প্রচারণায় এরই মধ্যে এলাকায় সাড়া ফেলেছে তিনি। প্রতিদিন পর্যাপ্ত পোস্টার ও লিফলেট নিয়ে ভাড়ার অটোরিকশায় করে প্রতিদিন অন্তত ৫ থেকে ৬টি ইউনিয়নে যান তিনি। সঙ্গে রাখা মই দিয়ে নিজেই বিভিন্ন স্থানে উঠে নিজ হাতে পোস্টার সাঁটিয়ে দিচ্ছেন। আর এই প্রচারণার কাজে তাঁকে সহযোগিতা করছেন অটোরিকশা চালক ও দুই সহযোগী। অটোরিকশায় লাগানো হয়েছে দুইটি মাইক। এভাবে নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে তাঁর নির্বাচনী আসনের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ ও প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

এ বিষয়ে কথা হয় স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম মোস্তফার সঙ্গে। জানতে চাইলে এই প্রার্তী বলেন, ‘কর্মী আসে তার স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে নয়। ন্যায্য চাহিদা হলে হয়তো আমি পূরণ করতে পারব। কিন্তু যদি কোনো অবৈধ সুবিধা নিতে চায়, তাহলে আমি তা দিতে পারব না। এ জন্য আমি সঙ্গে কাউকে রাখছি না। মানুষ আমার প্রচারণা দেখে নয়, সততা দেখে ভোট দেবে। আমি ভোটারদের কাছে যাচ্ছি। নির্বাচিত হলে ভোটের প্রতিদানে উন্নয়নের কাজ করে যাব। আমি মনে করি, সবাই আমার। কেউ দূরের বা কাছের নয়। তাই নির্বাচিত হলে জনগণের সমান অধিকার নিশ্চিত করার চেষ্টা করব।’

গোলাম মোস্তফার বলেন, ‘কর্মী সঙ্গে রাখতে হলে অনেক টাকার দরকার। সেই টাকা আমার কাছে নেই। নির্বাচনের আগে আমার কাছে ছিল ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। এরই মধ্যে এক লাখ ৩৫ হাজার টাকা শেষ। ভোটকেন্দ্রে এজেন্ট দিয়ে যে তাদের সম্মানি দেব, সেই টাকাও নেই। কেউ যদি স্বেচ্ছায় এজেন্ট হয়, তাহলে হতে পারে।’

এ নিয়ে কথা হয় এলাকার ভোটারদের সঙ্গে। তারা জানান, গোলাম মোস্তফা হাওলাদার একজন নতুন প্রার্থী। তাঁর নিজের প্রচারণা দেখি, তিনি নিজেই করছে, আবার তিনি নিজেই গাছে উঠে পোস্টারও টানাচ্ছেন। তাঁর তেমন টাকা-পয়সাও নেই। এজন্য কর্মী ও রাখতে পারছেন না। এমন প্রার্থীকে ডাক দিয়ে চা খাওয়ান তারা। তিনি পাস করবেন কিনা, তা জানেন না তারা। তবে এমন মানুষ নির্বাচনে জয়ী হলে, দেশের জন্য ভালো হবে বলে মন্তব্য করেন ভোটাররা।

এই আসনে অন্য প্রার্থীরা হলেন– আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন অপু, জাতীয় পার্টির মাসুদুর রহমান, তৃণমূল বিএনপির বাসার মাদবর ও খেলাফত আন্দোলনের মো. আব্দুস সামাদ।

জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, শরীয়তপুর-১ আসনে রয়েছে দুইটি পৌরসভা ও ২৩টি ইউনিয়ন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসনটিতে ৩ লাখ ৬৩ হাজার ৩৪৯ জন ভোটারের মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৯০ হাজার ৪০৮ জন, নারী ১ লাখ ৭২ হাজার ৯১০ জন ও তৃতীয় লিঙ্গের ১১ জন রয়েছেন। এসব ভোটাররা ১৩৫টি ভোটকেন্দ্রের ৪৭৮টি কক্ষে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। আসনটিতে অস্থায়ী ভোটকক্ষের সংখ্যা ৪৪টি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চেয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসনটিতে ৬৭ হাজার ৩৩০ জন ভোটার বেড়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

প্রচারণায় নেই কোনো নেতা–কর্মী বা সমর্থক

আপডেট সময় : ০৮:০৩:৩৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে সারা দেশে প্রার্থীরা ব্যস্ত নির্বাচনী প্রচারণায়। ভোটের প্রচারণায় কর্মী–সমর্থকদের নিয়ে দলবদ্ধ হয়ে ভোটারদের কাছে গিয়ে ভোট চাচ্ছেন প্রার্থীরা। কেউ করছেন মিছিল, কেউ আয়োজন করছেন জনসভার। তবে সাদাসিধেভাবে ব্যতিক্রম প্রচারণা করছেন শরীয়তপুর-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. গোলাম মোস্তফা।

শরীয়তপুর সদর ও জাজিরা উপজেলা নিয়ে গঠিত শরীয়তপুর-১ আসন। এই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ঈগল প্রতীক নিয়ে লড়বেন মো. গোলাম মোস্তফা। এ নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন তিনি। কিন্তু তাঁর প্রচারণায় নেই কোনো নেতা–কর্মী বা সমর্থক। একাই নিজের প্রচারণা চালাচ্ছেন এই প্রার্থী।

নির্বাচনী প্রচারণার জন্য তিনি একটি অটোরিকশা ভাড়া করেছেন। সেখানে মাইক লাগিয়ে একাই নিজের পক্ষে ভোট চাচ্ছেন ভোটারদের কাছ থেকে। নির্বাচনের সময় প্রার্থীরা যেখানে ভোটারদের চা খাওয়ান, সেখানে এই প্রার্থীকে চা খাওয়াচ্ছেন ভোটাররাই।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জাজিরা উপজেলার নাওডোবা এলাকার বাসিন্দা গোলাম মোস্তফা। তাঁর বাৎসরিক আয় ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ সাড়ে ৭ লাখ টাকা। পেশায় তিনি একজন ব্যবসায়ী। তফসিল ঘোষণার পরই শরীয়তপুর-১ আসনে প্রথম মনোনয়ন কেনেন তিনি। আওয়ামী লীগের দুর্গখ্যাত জেলার এই গুরুত্বপূর্ণ আসনে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পাঁচ প্রার্থীর সঙ্গে লড়ছেন মোস্তফা হাওলাদার।

এদিকে এমন ব্যতিক্রম প্রচারণায় এরই মধ্যে এলাকায় সাড়া ফেলেছে তিনি। প্রতিদিন পর্যাপ্ত পোস্টার ও লিফলেট নিয়ে ভাড়ার অটোরিকশায় করে প্রতিদিন অন্তত ৫ থেকে ৬টি ইউনিয়নে যান তিনি। সঙ্গে রাখা মই দিয়ে নিজেই বিভিন্ন স্থানে উঠে নিজ হাতে পোস্টার সাঁটিয়ে দিচ্ছেন। আর এই প্রচারণার কাজে তাঁকে সহযোগিতা করছেন অটোরিকশা চালক ও দুই সহযোগী। অটোরিকশায় লাগানো হয়েছে দুইটি মাইক। এভাবে নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে তাঁর নির্বাচনী আসনের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ ও প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

এ বিষয়ে কথা হয় স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম মোস্তফার সঙ্গে। জানতে চাইলে এই প্রার্তী বলেন, ‘কর্মী আসে তার স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে নয়। ন্যায্য চাহিদা হলে হয়তো আমি পূরণ করতে পারব। কিন্তু যদি কোনো অবৈধ সুবিধা নিতে চায়, তাহলে আমি তা দিতে পারব না। এ জন্য আমি সঙ্গে কাউকে রাখছি না। মানুষ আমার প্রচারণা দেখে নয়, সততা দেখে ভোট দেবে। আমি ভোটারদের কাছে যাচ্ছি। নির্বাচিত হলে ভোটের প্রতিদানে উন্নয়নের কাজ করে যাব। আমি মনে করি, সবাই আমার। কেউ দূরের বা কাছের নয়। তাই নির্বাচিত হলে জনগণের সমান অধিকার নিশ্চিত করার চেষ্টা করব।’

গোলাম মোস্তফার বলেন, ‘কর্মী সঙ্গে রাখতে হলে অনেক টাকার দরকার। সেই টাকা আমার কাছে নেই। নির্বাচনের আগে আমার কাছে ছিল ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। এরই মধ্যে এক লাখ ৩৫ হাজার টাকা শেষ। ভোটকেন্দ্রে এজেন্ট দিয়ে যে তাদের সম্মানি দেব, সেই টাকাও নেই। কেউ যদি স্বেচ্ছায় এজেন্ট হয়, তাহলে হতে পারে।’

এ নিয়ে কথা হয় এলাকার ভোটারদের সঙ্গে। তারা জানান, গোলাম মোস্তফা হাওলাদার একজন নতুন প্রার্থী। তাঁর নিজের প্রচারণা দেখি, তিনি নিজেই করছে, আবার তিনি নিজেই গাছে উঠে পোস্টারও টানাচ্ছেন। তাঁর তেমন টাকা-পয়সাও নেই। এজন্য কর্মী ও রাখতে পারছেন না। এমন প্রার্থীকে ডাক দিয়ে চা খাওয়ান তারা। তিনি পাস করবেন কিনা, তা জানেন না তারা। তবে এমন মানুষ নির্বাচনে জয়ী হলে, দেশের জন্য ভালো হবে বলে মন্তব্য করেন ভোটাররা।

এই আসনে অন্য প্রার্থীরা হলেন– আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন অপু, জাতীয় পার্টির মাসুদুর রহমান, তৃণমূল বিএনপির বাসার মাদবর ও খেলাফত আন্দোলনের মো. আব্দুস সামাদ।

জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, শরীয়তপুর-১ আসনে রয়েছে দুইটি পৌরসভা ও ২৩টি ইউনিয়ন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসনটিতে ৩ লাখ ৬৩ হাজার ৩৪৯ জন ভোটারের মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৯০ হাজার ৪০৮ জন, নারী ১ লাখ ৭২ হাজার ৯১০ জন ও তৃতীয় লিঙ্গের ১১ জন রয়েছেন। এসব ভোটাররা ১৩৫টি ভোটকেন্দ্রের ৪৭৮টি কক্ষে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। আসনটিতে অস্থায়ী ভোটকক্ষের সংখ্যা ৪৪টি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চেয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসনটিতে ৬৭ হাজার ৩৩০ জন ভোটার বেড়েছে।