বিএনপির রাজনীতি করার অধিকার বাংলাদেশে নেই : প্রধানমন্ত্রী
- আপডেট সময় : ১২:৪৬:১১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৩
- / ৪১৫ বার পড়া হয়েছে
আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি হচ্ছে একটা সন্ত্রাসী দল। এই সন্ত্রাসী দলের রাজনীতি করার অধিকার বাংলাদেশে নেই। কারণ তারা মানুষ পোড়ায়, মানুষ হত্যা করে। আমাদের রাজনীতি মানুষের কল্যাণে, আর ওদের রাজনীতি মানুষ হত্যায়। তাদের কী মানুষ চায় বলেন? তাদের মানুষ চায় না।
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপির অপশাসনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালে মানুষ আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছিল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে বাংলাদেশ এগিয়ে যায়। আজ বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। কথা দিয়েছিলাম কোনো ঘর অন্ধকার থাকবে না। সেই কথা রেখেছি। আজকে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছি। দারিদ্র্য বিমোচন করেছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি।
শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) বিকালে বরিশালে বঙ্গবন্ধু উদ্যানে আওয়ামী লীগের নির্বাচনি জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা যখন জনগণের জন্য উন্নয়ন করি, তখন ওই বিএনপি-জামায়াত করে অগ্নিসন্ত্রাস। রেললাইনের ফিস প্লেট ফেলে দিয়ে, বগি ফেলে দিয়ে মানুষ হত্যার ফাঁদ পাতে। রেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়েছে। মা-সন্তানকে বুকে জড়িয়ে রেখেছে- এই অবস্থায় আগুনে পুড়ে কাঠ হয়ে গেছে। এই দৃশ্য পুরো বিশ্ব বিবেককে নাড়া দিয়েছে। আসে আগুন, গাড়িতে আগুন, ঠিক ২০০১ সালে শুরু করেছিল। এরপর ১৩-১৪ একই ঘটনা ঘটায়। এখন আবার অগ্নিসন্ত্রাস শুরু করেছে। আমি ধিক্কার জানাই বিএনপি-জামায়াতকে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। বিএনপির দুঃশাসনে জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করে আমাদের ক্ষমতায় রেখেছে। আজ ২০২৩ সাল, আমরা বদলে যাওয়া বাংলাদেশে। আজকে দুর্ভিক্ষ নেই, মঙ্গা নেই। যে মানুষ একবেলা খেতে পারত না। তারা তিনবেলা খেতে পারছে। বই বিনামূলে বিতরণ করছি। অসহায়দের ভাতা দিচ্ছি। আজকে ১০ কোটি মানুষ উপকারভোগী। আমরা বিশেষ প্রণোদনা দিয়ে শিল্প কলকারখানা চালিয়ে আসছি। ১০ টাকায় কৃষকরা অ্যাকাউন্ট খুলতে পারে। ১ কোটি ২ লাখ কৃষক অ্যাকাউন্ট খুলে ভর্তুকির টাকা পাচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আজকে আমি বরিশালে উপস্থিত হয়েছি। ৭ জানুয়ারি নির্বাচন, সেই লক্ষে এখানে উপস্থিত হয়েছি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শূন্য হাতে বাংলাদেশ বিনির্মাণের যাত্রা শুরু করেছিলেন। তিনি যখন দায়িত্ব নেন তখন মাথাপিছু আয় ছিল ৯১ ডলার। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার তিন বছরের মধ্যে তা ২৭৭ ডলারে উন্নীত করেন। তিনি অসহায়দের জন্য অকাতরে সব বিলিয়ে দেন। কিন্তু ১৯৭৫ সালে জাতির জনককে হত্যা নয় মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে হত্যা করেছিল। এরপর অবৈধভাবে জিয়া, এরশাদ ক্ষমতায় আসে। তারা মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে পারেনি। একমাত্র আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ উন্নয়নে দেশের সোনালী সময় ছিল। দুর্ভাগ্য চক্রান্ত করে ২০০১ সালে আমাকে ক্ষমতায় আসতে দেওয়া হয়নি। বরিশালে নেতাকর্মীদের যে নির্যাতন করা হয়েছিল তা অবর্ননীয়। ২০০১ থেকে ২০০৬ ছিল মানুষের সবচেয়ে বড় অন্ধকার যুগ। বরিশাল থেকে ২৫ হাজার লোক গোপালগঞ্জে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, বরিশাল এক সময় ছিল শস্য ভান্ডার। আবার আমরা সেই ভান্ডারের সুনাম ফেরাতে সাইলো নির্মাণ করছি।
এ সময় বরিশালে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, বরিশালে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করা হবে, বরিশালে শিল্পকারখানা স্থাপন করা হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগের হাত ধরেই এক সময়কার অন্ধকার বরিশালে আলো জ্বলছে। ভাঙ্গা থেকে পায়রা বন্দর ও কুয়াকাটা পর্যন্ত ছয় লেনের রাস্তা করা হবে। বিএনপি সন্ত্রাসী দল। রাজনীতি করার অধিকার তাদের নাই।
এর আগে দুপুর ১টায় প্রধানমন্ত্রী বরিশাল সার্কিট হাউজে পৌঁছান। এরপর বেলা তিনটায় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু উদ্যানের জনসভা মঞ্চে আসেন। এ সময় নেতাকর্মীরা প্রধানমন্ত্রীকে স্লোগানে স্লোগানে স্বাগত জানান। আওয়ামী লীগ সভাপতি লাখো জনতার উদ্দেশে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান। এ সময় প্রধানমন্ত্রী সঙ্গে তার ছোট বোন শেখ রেহানাও উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর আগমন ঘিরে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে বরিশাল। শুক্রবার সকাল থেকেই বিভিন্ন স্থান থেকে মিছিল সহকারে দলে দলে লোক আসে জনসভাস্থল বঙ্গবন্ধু উদ্যানে। পোস্টার-ব্যানারসহ নৌকা মার্কার প্রচারের বিভিন্ন উপকরণ নিয়ে নানা রঙের পোশাকে বর্ণিল মিছিল নিয়ে তারা হাজির হন নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে। নৌকা আর জয় বাংলা স্লোগানে মুখরিত হয় জনসভাস্থলসহ পুরো নগরী।