১১:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সবজির ভরা মৌসুমে গরম বাজার

শীতের শুরুতে সব ধরনের সবজির দাম কমলেও বিগত কয়েকদিন ধরে দাম বেড়েছে। এ অবস্থায় ক্রেতারা বলছেন— শীতে সবজির ভরা মৌসুমে গরম বাজার। ব্রয়লার মুরগি আগের সপ্তাহের দামেই বিক্রি হচ্ছে। তবে মাছের বাজার স্থিতিশীল আছে।

শীতের মৌসুমে কেন সবজির দাম বাড়তি— এ বিষয়ে গুলশান সংলগ্ন লেকপাড় বাজারের সবজি বিক্রেতা এরশাদ আলী বলেন, এটা ঠিক যে সবজির দাম অনেক বেড়েছে। কারণ, গত মাসের শুরুতে আকস্মিক বৃষ্টিতে খেতে ফসল নষ্ট হয়েছে। হরতাল-অবরোধের প্রভাবও পড়েছিল। এখন নির্বাচনের কারণে অনেক কৃষক ভাবছে— নির্বাচনের পরেই ফসল তুলে বিক্রি করবে। সবকিছু মিলিয়ে বাজারে একটা প্রভাব পড়েছে। কারওয়ানবাজার পাইকারি মার্কেটেও মাল কম আসছে, আর বাড়তি দামও যাচ্ছে। আশা করা যায় কিছুদিনের মধ্যে বাজারে সবজি সরবরাহ বাড়লে দাম কমে যাবে।

চলতি সপ্তাহে বাজারে পেঁয়াজের দাম কমেছে। দেশি পেঁয়াজ (পুরাতন) ১২০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ (নতুন) ৯০ এবং ইন্ডিয়ান পেঁয়াজ ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে এসব বাজারে পেঁয়াজ (দেশি) ১৩০ টাকা, নতুন পেঁয়াজ ১০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, ৩০/৪০ টাকার সিম বাজারে এখন ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শীতের শুরুতে ফুলকপির দাম কমে ৩০ টাকা হলেও বর্তমান বাজারে ছোট ফুলকপির দাম ৫০ টাকা। বেগুন কিছুদিন আগেও ৫০/৬০ টাকা কেজি বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৮০ টাকায়। শীতের শুরুতে সবজির দাম কমলেও কয়েকদিনের ব্যবধানে নতুন করে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে বাজারে।

এদিন বাজারে গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা, সিম প্রতি কেজি ৮০ টাকা, ফুলকপি প্রতি পিস ৫০ টাকা, বাঁধাকপি প্রতি পিস ৫০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৮০ টাকা, মিস্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৫০ টাকা আর মুলা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। এ ছাড়া, কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি মানভেদে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা, পটল প্রতি কেজি ৮০ টাকা, শসা প্রতি কেজি ৬০ টাকা, বরবটি প্রতি কেজি ১২০ টাকা, পেঁয়াজের ফুলকা প্রতি আঁটি ২০ টাকা, শালগম প্রতি কেজি ৫০ টাকা, ঢেঁড়স প্রতি কেজি ১৬০ টাকা, করলা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, টমেটো প্রতি কেজি ৮০ টাকা, কাঁচা টমেটো প্রতি কেজি ৪০ টাকা, গাঁজর প্রতি কেজি ৬০ টাকা, খিঁড়া প্রতি কেজি ৮০ টাকা এবং পেঁপে প্রতি কেজি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া বাজারগুলোতে লাল শাক ১০ টাকা আঁটি, লাউ শাক ৩০, মূলা শাক ১০ থেকে ১৫, পালং শাক ১৫ ও কলমি শাক ১০ টাকা আঁটি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, চলতি সপ্তাহে ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লার মুরগি। যা গত সপ্তাহে একই দামে বিক্রি হয়েছে। সোনালি, সোনালি হাইব্রিড ও লেয়ার মুরগির দামও আগের মতোই আছে। বাজারে সোনালি ৩২০ টাকা, সোনালি হাইব্রিড ৩০০, দেশি মুরগি ৫০০-৫২০ ও লেয়ার ২৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারগুলোতে এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়, হাঁসের ডিম ২০০ ও দেশি মুরগির ডিমের হালি ৮০ টাকায়। তবে গত সপ্তাহে লাল ডিম ১২০ টাকা ডজন বিক্রি হয়েছে।

এসব বাজারে গরুর মাংস কেজি প্রতি ৫৮০ থেকে ৭৫০ টাকা এবং খাসির মাংস কেজি প্রতি ১০৫০-১১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে গরুর মাংসের দাম কিছুটা কম থাকায় মাছের বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। শুক্রবার ৪০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকা, এক কেজি শিং মাছ (চাষের, আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৫০০, প্রতি কেজি রুই মাছের দাম বেড়ে (আকারভেদে) ৪০০-৫৫০, মাগুর মাছ ৭০০-৯০০, মৃগেল ৩০০-৪৫০, পাঙ্গাস ২০০-২২০, চিংড়ি ৬০০-৮০০, বোয়ালমাছ ৪০০-৯০০, কাতল ৪০০-৬০০, পোয়া মাছ ৩৫০-৪০০, পাবদা মাছ ৪০০-৪৫০, তেলাপিয়া ২২০, কৈ মাছ ২২০-২৩০, মলা ৫০০, বাতাসি টেংরা ৯০০, টেংরা মাছ ৬০০-৭০০, কাচকি মাছ ৬০০, পাঁচ মিশালি মাছ ২২০, রুপচাঁদা ১ হাজার, বাইম মাছ ১০০০-১২০০, দেশি কই ১ হাজার, সোল মাছ ৬০০-৮০০, আইড় মাছ ৬০০-৮০০ এবং কাইকলা মাছ ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে রাজধানীর শেওড়াপাড়া বাজারে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী জুয়েল আহমেদ। তিনি বলেন, শীতের মৌসুমে আগে কখনোই এত দামে সবজি কিনিনি। বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে শীতকালে সবজির দাম কম থাকবে এটা সবার জানা। কিন্তু আজ বাজারে এসে দেখলাম সব ধরনের সবজির দাম বাড়তি। সবকিছুই প্রায় দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে। সামান্য অজুহাতে বেড়ে যায় দাম। যা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না সংশ্লিষ্টরা আর বিপদে পড়ি আমাদের মতো সাধারণ ক্রেতারা। বাজারে যে সবজির দাম চলছে, তা সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার ছাড়া আর কিছুই না।

সবজির ভরা মৌসুমে গরম বাজার

আপডেট : ০৭:৩০:৫৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৫ জানুয়ারী ২০২৪

শীতের শুরুতে সব ধরনের সবজির দাম কমলেও বিগত কয়েকদিন ধরে দাম বেড়েছে। এ অবস্থায় ক্রেতারা বলছেন— শীতে সবজির ভরা মৌসুমে গরম বাজার। ব্রয়লার মুরগি আগের সপ্তাহের দামেই বিক্রি হচ্ছে। তবে মাছের বাজার স্থিতিশীল আছে।

শীতের মৌসুমে কেন সবজির দাম বাড়তি— এ বিষয়ে গুলশান সংলগ্ন লেকপাড় বাজারের সবজি বিক্রেতা এরশাদ আলী বলেন, এটা ঠিক যে সবজির দাম অনেক বেড়েছে। কারণ, গত মাসের শুরুতে আকস্মিক বৃষ্টিতে খেতে ফসল নষ্ট হয়েছে। হরতাল-অবরোধের প্রভাবও পড়েছিল। এখন নির্বাচনের কারণে অনেক কৃষক ভাবছে— নির্বাচনের পরেই ফসল তুলে বিক্রি করবে। সবকিছু মিলিয়ে বাজারে একটা প্রভাব পড়েছে। কারওয়ানবাজার পাইকারি মার্কেটেও মাল কম আসছে, আর বাড়তি দামও যাচ্ছে। আশা করা যায় কিছুদিনের মধ্যে বাজারে সবজি সরবরাহ বাড়লে দাম কমে যাবে।

চলতি সপ্তাহে বাজারে পেঁয়াজের দাম কমেছে। দেশি পেঁয়াজ (পুরাতন) ১২০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ (নতুন) ৯০ এবং ইন্ডিয়ান পেঁয়াজ ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে এসব বাজারে পেঁয়াজ (দেশি) ১৩০ টাকা, নতুন পেঁয়াজ ১০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, ৩০/৪০ টাকার সিম বাজারে এখন ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শীতের শুরুতে ফুলকপির দাম কমে ৩০ টাকা হলেও বর্তমান বাজারে ছোট ফুলকপির দাম ৫০ টাকা। বেগুন কিছুদিন আগেও ৫০/৬০ টাকা কেজি বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৮০ টাকায়। শীতের শুরুতে সবজির দাম কমলেও কয়েকদিনের ব্যবধানে নতুন করে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে বাজারে।

এদিন বাজারে গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা, সিম প্রতি কেজি ৮০ টাকা, ফুলকপি প্রতি পিস ৫০ টাকা, বাঁধাকপি প্রতি পিস ৫০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৮০ টাকা, মিস্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৫০ টাকা আর মুলা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। এ ছাড়া, কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি মানভেদে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা, পটল প্রতি কেজি ৮০ টাকা, শসা প্রতি কেজি ৬০ টাকা, বরবটি প্রতি কেজি ১২০ টাকা, পেঁয়াজের ফুলকা প্রতি আঁটি ২০ টাকা, শালগম প্রতি কেজি ৫০ টাকা, ঢেঁড়স প্রতি কেজি ১৬০ টাকা, করলা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, টমেটো প্রতি কেজি ৮০ টাকা, কাঁচা টমেটো প্রতি কেজি ৪০ টাকা, গাঁজর প্রতি কেজি ৬০ টাকা, খিঁড়া প্রতি কেজি ৮০ টাকা এবং পেঁপে প্রতি কেজি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া বাজারগুলোতে লাল শাক ১০ টাকা আঁটি, লাউ শাক ৩০, মূলা শাক ১০ থেকে ১৫, পালং শাক ১৫ ও কলমি শাক ১০ টাকা আঁটি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, চলতি সপ্তাহে ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লার মুরগি। যা গত সপ্তাহে একই দামে বিক্রি হয়েছে। সোনালি, সোনালি হাইব্রিড ও লেয়ার মুরগির দামও আগের মতোই আছে। বাজারে সোনালি ৩২০ টাকা, সোনালি হাইব্রিড ৩০০, দেশি মুরগি ৫০০-৫২০ ও লেয়ার ২৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারগুলোতে এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়, হাঁসের ডিম ২০০ ও দেশি মুরগির ডিমের হালি ৮০ টাকায়। তবে গত সপ্তাহে লাল ডিম ১২০ টাকা ডজন বিক্রি হয়েছে।

এসব বাজারে গরুর মাংস কেজি প্রতি ৫৮০ থেকে ৭৫০ টাকা এবং খাসির মাংস কেজি প্রতি ১০৫০-১১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে গরুর মাংসের দাম কিছুটা কম থাকায় মাছের বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। শুক্রবার ৪০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকা, এক কেজি শিং মাছ (চাষের, আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৫০০, প্রতি কেজি রুই মাছের দাম বেড়ে (আকারভেদে) ৪০০-৫৫০, মাগুর মাছ ৭০০-৯০০, মৃগেল ৩০০-৪৫০, পাঙ্গাস ২০০-২২০, চিংড়ি ৬০০-৮০০, বোয়ালমাছ ৪০০-৯০০, কাতল ৪০০-৬০০, পোয়া মাছ ৩৫০-৪০০, পাবদা মাছ ৪০০-৪৫০, তেলাপিয়া ২২০, কৈ মাছ ২২০-২৩০, মলা ৫০০, বাতাসি টেংরা ৯০০, টেংরা মাছ ৬০০-৭০০, কাচকি মাছ ৬০০, পাঁচ মিশালি মাছ ২২০, রুপচাঁদা ১ হাজার, বাইম মাছ ১০০০-১২০০, দেশি কই ১ হাজার, সোল মাছ ৬০০-৮০০, আইড় মাছ ৬০০-৮০০ এবং কাইকলা মাছ ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে রাজধানীর শেওড়াপাড়া বাজারে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী জুয়েল আহমেদ। তিনি বলেন, শীতের মৌসুমে আগে কখনোই এত দামে সবজি কিনিনি। বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে শীতকালে সবজির দাম কম থাকবে এটা সবার জানা। কিন্তু আজ বাজারে এসে দেখলাম সব ধরনের সবজির দাম বাড়তি। সবকিছুই প্রায় দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে। সামান্য অজুহাতে বেড়ে যায় দাম। যা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না সংশ্লিষ্টরা আর বিপদে পড়ি আমাদের মতো সাধারণ ক্রেতারা। বাজারে যে সবজির দাম চলছে, তা সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার ছাড়া আর কিছুই না।