শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৪১ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
হামাসের নতুন প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ার নিহত : ইসরায়েল রাষ্ট্র সংস্কারে আরও ৪ কমিশন গঠন ‘শেখ হাসিনাকে ফেরাতে ব্যবস্থা নেবে সরকার’ শেখ হাসিনা ভারতে আছেন এবং থাকবেন: ভারত কমনওয়েলথ সম্মেলনে যাচ্ছেন না ড. ইউনূস: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ঈদুল ফিতরে ৫, আজহায় ৬ ও দুর্গাপূজায় ২ দিন ছুটি সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানের সব সম্পদ জব্দের আদেশ ভারতকে লজ্জায় ডুবিয়ে নিউজিল্যান্ডের লিড আ.লীগ আমলের বাজার সিন্ডিকেট এখনও সক্রিয়: জামায়াত আমির জাতীয় পার্টি বৈষম্যের শিকার: জিএম কাদের ওবায়দুল কাদের-জাফর ইকবালসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ৪৩ থেকে ৪৬ বিসিএসের নিয়োগ বাতিলের দাবি বিএনপির কমপ্লিট শাটডাউনের হুঁশিয়ারি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কূটনৈতিক যুদ্ধে ভারত-কানাডার সম্পর্ক চরমে সাবেক সেনাপ্রধান আজিজকে স্ত্রীসহ দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা নিজ দেশের জনগণের তোপের মুখে ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি সেপ্টেম্বরে ১৯২ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ১৯৫ জন শরীরচর্চা করতে গিয়ে গুরুতর আহত অভিনেত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩৫ জনের নামে হত্যাচেষ্টার মামলা বাজার সিন্ডিকেট ভাঙার চেষ্টা করছে সরকার: উপদেষ্টা আসিফ

ভারতে ভেঙে ফেলা হলো ৮০০ বছর আগের মসজিদ

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক / ৮৬ জন দেখেছেন
আপডেট : শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৪১ পূর্বাহ্ন
ভারতে ভেঙে ফেলা হলো ৮০০ বছর আগের মসজিদ
৭১ নিউজ বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ভারতের দিল্লির মেহরাউলিতে অবস্থিত প্রায় ৮০০ বছরের পুরনো একটি মসজিদ গত ৩০ জানুয়ারি ভেঙে ফেলা হয়েছে। ত্রয়োদশ শতাব্দীতে নির্মিত এ মসজিদটির নাম ‘আখুনজি মসজিদ’।

মসজিদটির ইমাম জাকির হুসেন ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য প্রিন্টকে বলেন, গত বুধবার ভোরে আমার ঘুম ভেঙেছে বুলডোজারেরর শব্দে। ঘুম ভেঙে দেখি, ১০টি বুলডোজার দিয়ে মসজিদ ভাঙা হচ্ছে।

দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে এ মসজিদে ইমামতি করা জাকির হুসেন বলেন, এ দৃশ্য তাঁর কাছে ছিল অবিশ্বাস্য। মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পুরো মসজিদ গুড়ো করে দেয় দিল্লি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (ডিডিএ)। একই সঙ্গে তারা বাহরুল উলূম মাদরাসা ও এর চত্ত্বরে থাকা একটি কবরস্থানও ভেঙে ফেলেছে।

মাদরাসাটিতে অন্তত ২৫জন শিশু পড়াশোনা করত বলেও জানান তিনি। জাকির হুসেন বলেন, শিশুগুলো সবাই এতিম। তাদেরকে মাদরাসা ধ্বংস করার আগে কাছের একটি জঙ্গলে নিয়ে যাওয়া হয় এবং ধ্বংস প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত তীব্র শীতের মধ্যে সেখানেই বসিয়ে রাখে।

ডিডিএ কোনো নোটিশ ছাড়াই মসজিদ ও মাদরাসা ভেঙে দেয় বলে অভিযোগ করেন জাকির হুসেন। তিনি বলেন, ‘আমি যখন ফোনে অন্যদের মসজিদ ভাঙে ফেলার কথা জানাচ্ছিলাম তখন তারা আমার মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়েছে।’

মসজিদটি গুড়িয়ে দেওয়ার পর এলাকাটিতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। যে কোনো সময় সহিংস দাঙ্গা শুরু হয়ে যেতে পারে।

ডিডিএ এক বিবৃতিতে বলেছে, আখুনজি মসজিদটি একটি অবৈধ স্থাপনা। এটি সঞ্জয় বনের সংরক্ষিত এলাকায় দাঁড়িয়ে ছিল। মসজিদটি যেখানে ছিল সেটি দিল্লি রিজের দক্ষিণাংশের আরাবল্লি চিতাবাঘ বন্যপ্রাণী করিডোরের অংশ। ১৯৯৫ সালের রিজ সুরক্ষা আইন অনুযায়ী অবৈধ স্থাপনাটি ভেঙে ফেলা হয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, সঞ্জয় বন হচ্ছে ৭৮০ একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত একটি সংরক্ষিত বন। এটি দিল্লি দক্ষিণ রিজের অংশ। রিজ ম্যানেজমেন্ট বোর্ডের মতে, রিজ এলাকায় থাকা সব ধরণের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা উচিত। তাই ওই এলাকার ৫ হাজার বর্গমিটার জমি পুনরুদ্ধার করা হয়েছে।

জাকির হুসেন জানান, তিনি মসজিদ ধ্বংসের সময় উপস্থিত কর্মকর্তাদের জিজ্ঞেস করেছিলেন, এত বছরের পুরনো একটি মসজিদ কী করে অবৈধ হতে পারে? কিন্তু তারা কোনো উত্তর দিতে পারেননি।

সরকারি নথিপত্র থেকে জানা যায়, ১৯৯৭ সালের ১৯ মে তারিখের দিল্লি হাইকোর্টের এক আদেশ অনুসারে ২০১৪ সালে স্থানীয় গভর্নর মসজিদটির সীমানা নির্ধারণের আদেশ দিয়েছিলেন। সেই আদেশে দিল্লি হাইকোর্ট স্পষ্টভাবে বলেছেন, মসজিদ চত্ত্বরের কবরগুলো ধ্বংস করা উচিত নয়। কবরগুলো বেড়া দিয়ে সংরক্ষণ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হলো।

কিন্তু প্রতক্ষ্যদর্শী বাসিন্দারা শোয়েব খান বলেন, কবরগুলো খুঁড়ে ফেলা হয়েছে এবং কবরের পাথর সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। মাত্র ১৩ দিন আগে এক নবজাতককে এই চত্ত্বরে কবর দেওয়া হয়। সেই কবরও খুঁড়ে কাফন বের করে ফেলেছে তারা। সে এক ভয়ঙ্কর দৃশ্য!

জাকির হুসেন বলেন, দিল্লি হাইকোর্ট শুধু সীমানা নির্ধারণ করার নির্দেশ দিয়েছিল। কোনো কিছু ধ্বংস করতে বলেনি। কিন্তু তারা কবরগুলো পর্যন্ত গুঁড়িয়ে দিলো।

ডিডিএ তাদের বিবৃতিতে বলেছে, দক্ষিণ দিল্লির জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের সভাপতিত্বে গঠিত একটি বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সুপারিশের ভিত্তিতেই ‘অবৈধ অবকাঠামোটি’ ধ্বংস করা হয়েছে।

দিল্লির ইতিহাসবিদ ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ বিশেষজ্ঞ সোহেল হাশমি বলেন, ‘কুতুব মিনার থেকে ৪০০ মিটার দূরের এই মসজিদটি দিল্লির ৩ হাজার ঐতিহ্যবাহী স্থাপনার তালিকায় থাকা একটি মসজিদ। ১৯২০ সালে ভারতের আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া যে তালিকা প্রকাশ করেছিল, সেখানেও এ মসজিদের নাম রয়েছে।’

সোহেল হাশমি আরও বলেন, ‘সংরক্ষিত বন ঘোষণার বহু আগে থেকে মসজিদটি এখানে রয়েছে। এটি অবৈধ হওয়ার কোনো কারণ নেই। তা ছাড়া ডিডিএ এর আগে বেশ কয়েকবার বলেছে, তারা কোনো ধর্মীয় স্থাপনায় হাত দেবে না। তারপরও তারা কী কারণে মসজিদটি ভেঙে ফেলল তা বোধগম্য নয়।’

দ্য প্রিন্ট জানিয়েছে, হাশমির এসব অভিযোগের ব্যাপারে ডিডিএর জনসংযোগ কর্মকর্তা বিজয় শঙ্কর প্যাটেলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের অন্য সংবাদ