মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে বিজিপির ২২৯ সদস্য
- আপডেট সময় : ০৬:১২:৩৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
- / ৪১৯ বার পড়া হয়েছে
মিয়ানমারের বিদ্রোহী দল আরাকান আর্মির সঙ্গে সংঘর্ষের মধ্যে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বর্ডার গার্ড পুলিশ-বিজিপি) মোট ২২৯ জন সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। সবশেষ একসঙ্গে ১১৪ জন সদস্য প্রবেশ করেছেন।
মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) তাদেরকে নিরস্ত্রীকরণ করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়েছে। মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত আশ্রয় নেওয়া বিজিপির সদস্য সংখ্যা ছিল ১১৩। পরে আরও দুজনকে রিসিভ করলে সে সংখ্যা হয় ১১৫। এরপর একসঙ্গে আরো ১১৪ জন প্রবেশ করেন। পালিয়ে আসা এসব বিজিপি সদস্যকে নিরস্ত্র করে হেফাজতে নিচ্ছে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা।
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে অবস্থান নেওয়া বিজিপি সদস্যদের মধ্যে গুরুতর আহতদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে। বর্তমান পরিস্থিতি সীমান্তে থাকা মানুষদের সাবধানে চলাচলের পরামর্শও দিয়েছে বিজিবি। আতঙ্কের কারণে সীমান্তবর্তী বাজারগুলোর সব দোকানপাট বন্ধ রেখেছেন স্থানীয়রা। অনেকেই এলাকা ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছেন। যারা রয়ে গেছেন তারাও দিন কাটাচ্ছেন আতঙ্ক নিয়ে।
মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্তের দৈর্ঘ্য প্রায় ২৮৩ কিলোমিটার। এর বড় অংশ পড়েছে বান্দরবান ও কক্সবাজার জেলায়। কয়েক সপ্তাহ ধরে বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় যুদ্ধ জোরাল করেছে আরাকান আর্মিসহ বিদ্রোহী কয়েকটি গোষ্ঠী। সংঘাত বাড়ার পর সবচেয়ে বেশি গোলাগুলির আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে টেকনাফের হোয়াইক্যংয়ের উলুবনিয়া, তুলাতুলি, কাঞ্জরপাড়া, উখিয়ার পালংখালির আনজুমান পাড়া এবং বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি তুমব্রু ও ঘুমধুম সীমান্তে। এতে রোহিঙ্গা গ্রামগুলোতে আবার দেখা দিয়েছে উত্তেজনা, বেড়েছে অনুপ্রবেশের শঙ্কা।
এ সংঘাতের কারণে সীমান্ত এলাকায় সতর্ক অবস্থায় রয়েছে বিজিবি। এর মধ্যে সোমবার মিয়ানমার থেকে উড়ে আসা একটি গোলার আঘাতে ঘুমধুম সীমান্তে একজন বাংলাদেশি ও একজন রোহিঙ্গা নিহতের ঘটনা ঘটেছে। বাংলাদেশের তমব্রু ও ঘুমধুম সীমান্তের ওপারে থাকা দুইটি সীমান্ত চৌকি ইতোমধ্যে বিদ্রোহীগোষ্ঠী দখলে নিয়েছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।
এদিকে কক্সবাজার শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, চলমান সীমান্ত সংঘর্ষে মিয়ানমারের অনেক বেসামরিক নাগরিক সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশ ডুকে পড়তে পারে, তবে এটা আমরা কোনোভাবেই কামনা করি না। সীমান্তে আটকে পড়া পরিবারগুলোর খাদ্যসংকট সহ মানবিক সহায়তায় আন্তর্জাতিক সংস্থাদের এগিয়ে আশা উচিত। তবে কোনোভাবেই বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে দেয়া ঠিক হবে না।
এদিকে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ১১৩ জন বিজিপি সদস্য বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বিজিবির কাছে আত্মসমর্পণের পর ক্যাম্পে আশ্রয় গ্রহণ করেছে। পালিয়ে আশা মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) আহত ৯ জনকে কক্সবাজার হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, তাদের নাম জা নি মং এবং নিম লাইন কিং, ক্যে থিন সিন, ইয়ো ফো, মং র, মুলিউন থং, কিন মং জ এবং আরও ২ জনের নাম জানা সম্ভব হয়নি। আরও বেশ কয়েকজনকে কুতুপালংয়ের এমএসএফ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এ তথ্য জানিয়েছেন বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম।