০৮:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গোলাগুলি কমলেও আতঙ্ক কাটেনি সীমান্তে

  • অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট : ০৭:৪৭:১৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • ৬৭ দেখেছেন

বান্দরবান ও কক্সবাজারের মিয়ানমার সীমান্তঘেঁষা এলাকায় আজও থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। সীমান্তের ওপার থেকে মঙ্গলবার বিকেলের পর থেকে এ পর্যন্ত গোলগুলি শব্দ পাওয়া যায় নি। তবে জান্তা বাহিনী কখন পূনরায় হামলা করে এটিই স্থানীয়দের আতঙ্ক। প্রশাসনের নির্দেশে বান্দরবানের তুমব্রু সীমান্তের বাসিন্দাদের অনেকেই সরে গেছে নিরাপদ আশ্রয়ে।

নানা সূত্রের খবরে জানা যায়- মিয়ানমার সেনাবাহিনীর কাছ থেকে রাখাইনের তুমব্রু ও ঢেঁকিবনিয়া সীমান্ত চৌকি দখলে নেয়ার পর অন্য ঘাঁটিগুলোর দিকে এগুচ্ছে আরাকান আর্মি। লড়াইয়ে টিকতে না পেরে জীবন বাঁচাতে বুধবার বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।

বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) নতুন করে টেকনাফে হোয়াইক্যাং সীমান্ত দিয়ে ৬৪ জন প্রবেশ করেছে বলে জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ। এ নিয়ে মোট তিনশ’ ২৮ জন বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

গতকাল বান্দরবান সীমান্ত লাগোয়া কয়েকটি বিজিবি ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী। জানান, মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা দুইশ’ ৬৪ জন বিজিপি সদস্যকে দেশটি ফিরিয়ে নিতে আগ্রহী। সীমান্ত অরক্ষিত নেই।

রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশের কোন সুযোগ দেয়া হবে না বলেও জানান বিজিবি মহাপরিচালক। এদিকে,সীমান্তে অস্থিরতার কারণে শনিবার থেকে টেকনাফ- সেন্টমার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে প্রশাসন।

মিয়ানমারের ভেতরের যুদ্ধের প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের সীমান্ত লাগোয়া গ্রামগুলোতে। মর্টার শেল ও গুলি এসে পড়ছে ঘুমধুম ও তুমব্র“তে। আতঙ্কিত হয়ে মঙ্গলবার রাতে উত্তর ঘুমধুম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছে ঘুমধুম ইউনিয়নের পশ্চিমকুল, কোনারপাড়া, মধ্যমপাড়া, ভাজাবনিয়া ও তুমব্রু বাজার এলাকার ২৭টি পরিবারের ১২০ জন সদস্য।

এদিকে, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের সেনাবাহিনী, সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিজিপি, পুলিশ, ইমিগ্রেশনসহ বিভিন্ন সংস্থার সদস্যদের দেশটি নৌবাহিনীর জাহাজে ফিরিয়ে নিতে চায়। হস্তান্তর প্রক্রিয়াটি কয়েকদিনের মধ্যেই শুরু হচ্ছে বলে জানা গেছে।

বুধবার পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয় সভায় মিয়ানমারের দেওয়া প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে এমন আলোচনা হয়েছে। এদিন মিয়ানমারের প্রশাসনিক রাজধানী নেপিডোতে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের আলোচনাতেও বিষয়টি গুরুত্বের সাথে এসেছে। সভায় উপস্থিত কর্মকর্তারা বলেন, বাংলাদেশ নাফ নদীর পরিবর্তে আকাশপথে বান্দরবনে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের লোকজনকে ফেরত দেয়ার প্রস্তাব করলেও তারা সমুদ্রপথেই নিতে চায়।

রাখাইনের অস্থিরতা যাতে বাংলাদেশের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে কোনো প্রভাব না ফেলে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সে দেশে অবস্থিত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মনোয়ার হোসেন অনুরোধ জানিয়েছেন বলে জানা গেছে।

সংঘাতময় পরিস্থিতির কারণে কক্সবাজারের টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ রুটে ১০ই ফেব্র“য়ারি থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন।

মিয়ানমারের যুদ্ধের কারণে রাখাইন রাজ্য থেকে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ও সীমান্ত এলাকার নিরাপত্তায় বিজিবি ও আইনশঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা টহল দিচ্ছে।

গোলাগুলি কমলেও আতঙ্ক কাটেনি সীমান্তে

আপডেট : ০৭:৪৭:১৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

বান্দরবান ও কক্সবাজারের মিয়ানমার সীমান্তঘেঁষা এলাকায় আজও থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। সীমান্তের ওপার থেকে মঙ্গলবার বিকেলের পর থেকে এ পর্যন্ত গোলগুলি শব্দ পাওয়া যায় নি। তবে জান্তা বাহিনী কখন পূনরায় হামলা করে এটিই স্থানীয়দের আতঙ্ক। প্রশাসনের নির্দেশে বান্দরবানের তুমব্রু সীমান্তের বাসিন্দাদের অনেকেই সরে গেছে নিরাপদ আশ্রয়ে।

নানা সূত্রের খবরে জানা যায়- মিয়ানমার সেনাবাহিনীর কাছ থেকে রাখাইনের তুমব্রু ও ঢেঁকিবনিয়া সীমান্ত চৌকি দখলে নেয়ার পর অন্য ঘাঁটিগুলোর দিকে এগুচ্ছে আরাকান আর্মি। লড়াইয়ে টিকতে না পেরে জীবন বাঁচাতে বুধবার বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।

বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) নতুন করে টেকনাফে হোয়াইক্যাং সীমান্ত দিয়ে ৬৪ জন প্রবেশ করেছে বলে জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ। এ নিয়ে মোট তিনশ’ ২৮ জন বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

গতকাল বান্দরবান সীমান্ত লাগোয়া কয়েকটি বিজিবি ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী। জানান, মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা দুইশ’ ৬৪ জন বিজিপি সদস্যকে দেশটি ফিরিয়ে নিতে আগ্রহী। সীমান্ত অরক্ষিত নেই।

রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশের কোন সুযোগ দেয়া হবে না বলেও জানান বিজিবি মহাপরিচালক। এদিকে,সীমান্তে অস্থিরতার কারণে শনিবার থেকে টেকনাফ- সেন্টমার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে প্রশাসন।

মিয়ানমারের ভেতরের যুদ্ধের প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের সীমান্ত লাগোয়া গ্রামগুলোতে। মর্টার শেল ও গুলি এসে পড়ছে ঘুমধুম ও তুমব্র“তে। আতঙ্কিত হয়ে মঙ্গলবার রাতে উত্তর ঘুমধুম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছে ঘুমধুম ইউনিয়নের পশ্চিমকুল, কোনারপাড়া, মধ্যমপাড়া, ভাজাবনিয়া ও তুমব্রু বাজার এলাকার ২৭টি পরিবারের ১২০ জন সদস্য।

এদিকে, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের সেনাবাহিনী, সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিজিপি, পুলিশ, ইমিগ্রেশনসহ বিভিন্ন সংস্থার সদস্যদের দেশটি নৌবাহিনীর জাহাজে ফিরিয়ে নিতে চায়। হস্তান্তর প্রক্রিয়াটি কয়েকদিনের মধ্যেই শুরু হচ্ছে বলে জানা গেছে।

বুধবার পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয় সভায় মিয়ানমারের দেওয়া প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে এমন আলোচনা হয়েছে। এদিন মিয়ানমারের প্রশাসনিক রাজধানী নেপিডোতে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের আলোচনাতেও বিষয়টি গুরুত্বের সাথে এসেছে। সভায় উপস্থিত কর্মকর্তারা বলেন, বাংলাদেশ নাফ নদীর পরিবর্তে আকাশপথে বান্দরবনে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের লোকজনকে ফেরত দেয়ার প্রস্তাব করলেও তারা সমুদ্রপথেই নিতে চায়।

রাখাইনের অস্থিরতা যাতে বাংলাদেশের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে কোনো প্রভাব না ফেলে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সে দেশে অবস্থিত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মনোয়ার হোসেন অনুরোধ জানিয়েছেন বলে জানা গেছে।

সংঘাতময় পরিস্থিতির কারণে কক্সবাজারের টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ রুটে ১০ই ফেব্র“য়ারি থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন।

মিয়ানমারের যুদ্ধের কারণে রাখাইন রাজ্য থেকে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ও সীমান্ত এলাকার নিরাপত্তায় বিজিবি ও আইনশঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা টহল দিচ্ছে।