ঢাকা ০৫:৩০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

পাকিস্তানের নির্বাচন নিয়ে সেনাপ্রধান বললেন, ‘শান্ত হোন’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০১:৪৯:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • / ৪৪৬ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনের সব আসনের ফল এখনো আসেনি। সংবাদমাধ্যম ডন বলছে, ২৫৩ আসনের ফল প্রকাশ করেছে পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচন কমিশন ইসিপি। এর মধ্যেই নিজেদের জয়ী বলে দাবি করেছেন সাবেক দুই প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও নওয়াজ শরিফ। এ নিয়ে এবার দেশটির সেনাপ্রধান আসিম মুনির সবাইকে শান্ত হতে বলেছেন।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, ভোটের ফল প্রকাশ শেষ হওয়ার আগেই দেশবাসীকে বিশেষ বার্তা দেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে কোনো ধরনের অরাজকতা ও মেরুকরণ না করার তাগিদ দেন তিনি।

২৫৩ আসনের মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সমর্থক স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জিতেছেন ৯২টি আসনে। তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী পিএমএল–এন জিতেছে ৭১টিতে। ৫৪টি আসন পাওয়া পিপিপির সঙ্গে তারা জোটে রাজি হয়েছে বলে জানায়।

এই জোট নিয়েই এখন সবচেয়ে বেশি আলোচনা। সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের দল পিএমএল–এন (৭১) ও বিলাওয়াল ভুট্টোর পিপিপি (৫৪) জোটে রাজি হলেও এখনো তারা মিলে ১৩৪টি আসনে জিততে পারেনি। মোট জিতেছে ১২৫টিতে। আরও ১২টি আসনের ফল বাকি। একটিতে ভোটগ্রহণ বাতিল করা হয়েছে।

এর মধ্যেই কারাগারে থেকে ইমরান বললেন, তিনি জয়ী হয়েছেন। তাঁর দলও দাবি করছে, জোট বানিয়ে সরকার গঠন করবে পিটিআই। আবার পিএমএল–এনের নেতা নওয়াজ শরিফ তো রীতিমতো জনসভা করে বিজয় ঘোষণা করলেন। সবাইকে নিয়ে সরকার গঠন করবেন বলে জানান তিনি। তাঁকে সেনাবাহিনী সমর্থন দিচ্ছে বলে অভিযোগ।

এর মধ্যেই এবার সেনাপ্রধান আসিম মুনির বললেন, সব দলকে এই অবস্থায় পরিপক্কতা ও একতা দেখাতে হবে। ২৫ কোটি মানুষের এই দেশে মেরুকরণের রাজনীতি মোটেই মেনে নেওয়া যায় না। নির্বাচন শুধু হারজিতের ব্যাপার নয়, মানুষের জন্য কাজ করার ব্যাপার।’

পাকিস্তানে গত বৃহস্পতিবার জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু এ নির্বাচনের পূর্ণাঙ্গ ফল এখনো প্রকাশ করা হয়নি। তবে ভোট গণনা প্রায় শেষের দিকে। সবশেষ খবরে জানা গেছে, কোনো দলই এখন পর্যন্ত একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। এমন পরিস্থিতিতে জোট ছাড়া সরকার গঠন করা সম্ভব নয়।

পাকিস্তানের রাজনীতিতে দেশটির সেনাবাহিনীর ব্যাপক হস্তক্ষেপ করে। ১৯৪৭ সালে ভারত থেকে বিভক্ত হওয়ার পর প্রায় অর্ধেক সময় দেশটির শাসন সেনাদের হাতে ছিল।

এছাড়া পাকিস্তানের নির্বাচনগুলোতে যে দল সেনাবাহিনীর সমর্থন পায় তারাই সাধারণত ক্ষমতায় আসে। ধারণা করা হচ্ছে, এবার তিনবারের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজকে (পিএমএলএন) সমর্থন দিয়েছে সেনাবাহিনী।

পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ জানিয়েছে, জোট সরকার গঠনে রাজি হয়েছে পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) ও পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)। পিএমএল-এন দলের প্রধান দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। আর পিপিপির প্রধান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি। বিলাওয়াল দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টার সন্তান।

সদ্য সমাপ্ত জাতীয় নির্বাচনে তুমুল লড়াই হয়েছে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) ও পিএমএল-এনের মধ্যে। ইমরান খান বিভিন্ন মামলায় সাজা পেয়ে এখনো কারাবন্দী রয়েছেন এবং আইনি জটিলতায় তাঁর দল পিটিআই নির্বাচনে অংশ নিতে পারেনি। ফলে পিটিআইয়ের বেশির ভাগ নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। তাঁরা বেশির ভাগ আসনে জয়ও পেয়েছেন। কিন্তু নওয়াজের দল কিংবা ইমরানের দল—কোনোটিই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। এমন পরিস্থিতিতে ক্ষমতায় যেতে জোট গড়ার উদ্যোগ নিয়েছেন নওয়াজ শরিফ।

নিউজটি শেয়ার করুন

পাকিস্তানের নির্বাচন নিয়ে সেনাপ্রধান বললেন, ‘শান্ত হোন’

আপডেট সময় : ০১:৪৯:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনের সব আসনের ফল এখনো আসেনি। সংবাদমাধ্যম ডন বলছে, ২৫৩ আসনের ফল প্রকাশ করেছে পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচন কমিশন ইসিপি। এর মধ্যেই নিজেদের জয়ী বলে দাবি করেছেন সাবেক দুই প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও নওয়াজ শরিফ। এ নিয়ে এবার দেশটির সেনাপ্রধান আসিম মুনির সবাইকে শান্ত হতে বলেছেন।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, ভোটের ফল প্রকাশ শেষ হওয়ার আগেই দেশবাসীকে বিশেষ বার্তা দেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে কোনো ধরনের অরাজকতা ও মেরুকরণ না করার তাগিদ দেন তিনি।

২৫৩ আসনের মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সমর্থক স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জিতেছেন ৯২টি আসনে। তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী পিএমএল–এন জিতেছে ৭১টিতে। ৫৪টি আসন পাওয়া পিপিপির সঙ্গে তারা জোটে রাজি হয়েছে বলে জানায়।

এই জোট নিয়েই এখন সবচেয়ে বেশি আলোচনা। সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের দল পিএমএল–এন (৭১) ও বিলাওয়াল ভুট্টোর পিপিপি (৫৪) জোটে রাজি হলেও এখনো তারা মিলে ১৩৪টি আসনে জিততে পারেনি। মোট জিতেছে ১২৫টিতে। আরও ১২টি আসনের ফল বাকি। একটিতে ভোটগ্রহণ বাতিল করা হয়েছে।

এর মধ্যেই কারাগারে থেকে ইমরান বললেন, তিনি জয়ী হয়েছেন। তাঁর দলও দাবি করছে, জোট বানিয়ে সরকার গঠন করবে পিটিআই। আবার পিএমএল–এনের নেতা নওয়াজ শরিফ তো রীতিমতো জনসভা করে বিজয় ঘোষণা করলেন। সবাইকে নিয়ে সরকার গঠন করবেন বলে জানান তিনি। তাঁকে সেনাবাহিনী সমর্থন দিচ্ছে বলে অভিযোগ।

এর মধ্যেই এবার সেনাপ্রধান আসিম মুনির বললেন, সব দলকে এই অবস্থায় পরিপক্কতা ও একতা দেখাতে হবে। ২৫ কোটি মানুষের এই দেশে মেরুকরণের রাজনীতি মোটেই মেনে নেওয়া যায় না। নির্বাচন শুধু হারজিতের ব্যাপার নয়, মানুষের জন্য কাজ করার ব্যাপার।’

পাকিস্তানে গত বৃহস্পতিবার জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু এ নির্বাচনের পূর্ণাঙ্গ ফল এখনো প্রকাশ করা হয়নি। তবে ভোট গণনা প্রায় শেষের দিকে। সবশেষ খবরে জানা গেছে, কোনো দলই এখন পর্যন্ত একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। এমন পরিস্থিতিতে জোট ছাড়া সরকার গঠন করা সম্ভব নয়।

পাকিস্তানের রাজনীতিতে দেশটির সেনাবাহিনীর ব্যাপক হস্তক্ষেপ করে। ১৯৪৭ সালে ভারত থেকে বিভক্ত হওয়ার পর প্রায় অর্ধেক সময় দেশটির শাসন সেনাদের হাতে ছিল।

এছাড়া পাকিস্তানের নির্বাচনগুলোতে যে দল সেনাবাহিনীর সমর্থন পায় তারাই সাধারণত ক্ষমতায় আসে। ধারণা করা হচ্ছে, এবার তিনবারের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজকে (পিএমএলএন) সমর্থন দিয়েছে সেনাবাহিনী।

পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ জানিয়েছে, জোট সরকার গঠনে রাজি হয়েছে পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) ও পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)। পিএমএল-এন দলের প্রধান দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। আর পিপিপির প্রধান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি। বিলাওয়াল দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টার সন্তান।

সদ্য সমাপ্ত জাতীয় নির্বাচনে তুমুল লড়াই হয়েছে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) ও পিএমএল-এনের মধ্যে। ইমরান খান বিভিন্ন মামলায় সাজা পেয়ে এখনো কারাবন্দী রয়েছেন এবং আইনি জটিলতায় তাঁর দল পিটিআই নির্বাচনে অংশ নিতে পারেনি। ফলে পিটিআইয়ের বেশির ভাগ নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। তাঁরা বেশির ভাগ আসনে জয়ও পেয়েছেন। কিন্তু নওয়াজের দল কিংবা ইমরানের দল—কোনোটিই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। এমন পরিস্থিতিতে ক্ষমতায় যেতে জোট গড়ার উদ্যোগ নিয়েছেন নওয়াজ শরিফ।