মিয়ানমারের সাবেক সেনাদের কাজে ফেরার নির্দেশ
- আপডেট সময় : ০৮:৪৬:০১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
- / ৪১১ বার পড়া হয়েছে
বিদ্রোহীদের সঙ্গে তুমুল লড়াইয়ে নাস্তানাবুদ হওয়ার জেরে সেনাবাহিনীর সাবেক সদস্যদের কাজে ফেরার নির্দেশ দিয়েছে মিয়ানমারের জান্তা সরকার। ৫ বছরের মধ্যে অবসরে যাওয়া সেনাসদস্যদের বাধ্যতামূলকভাবে কাজে ফিরতে হবে। বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর আক্রমণে সামরিক বাহিনীর সদস্যরা একের পর এক ঘাঁটি হারাচ্ছে। এসময় আত্মরক্ষার্থে তারা প্রতিবেশী দেশগুলোতেও আশ্রয় নিচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে ক্ষমতা ধরে রাখতে জান্তা সরকার অবসরপ্রাপ্ত সৈন্যদের ফের যুদ্ধের ফ্রন্টলাইনে ফেরত পাঠাচ্ছে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম দ্য ইরাবতী। এদিকে ৩ মাস দখলে রাখার পর জান্তা বাহিনীর কাছে রাখাইন রাজ্যের একটি শহরের দখল হারিয়েছে বিদ্রোহীরা।
সশস্ত্র বিদ্রোহীদের তোপের মুখে দিন দিন কোণঠাসা হয়ে পড়ছে মিয়ানমারের জান্তা সরকার। দেশটির ৫২ শতাংশ অঞ্চল বিদ্রোহীদের দখলে চলে গেছে, লড়াই চলছে আরো ২৩ শতাংশ এলাকায়। চলতি বছরই জান্তা সরকারকে উৎখাতের ঘোষণা দিয়েছে সশস্ত্র বিদ্রোহী জোট ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স। এমন পরিস্থিতিতে সাবেক সেনাসদস্যদের কাজে ফেরার নির্দেশ দিয়েছে দেশটির জান্তা সরকারের মুখপাত্র।
মঙ্গলবার মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এমআরটিভি নিউজে মুখপাত্র জেনারেল জাও মিন তুন বলেন, রিজার্ভ ফোর্স আইনের আওতায় গত ৫ বছরের মধ্যে অবসর নেয়া সেনাসদস্যদের কাজে ফিরতে হবে।
জেনারেল মিন অং হ্লাইং মিয়ানমার ওয়ার ভেটেরান্স অর্গানাইজেশনেরও সভাপতি। মঙ্গলবারের ওই বৈঠকের পর রাতেই আইনটিতে স্বাক্ষর করেন মিন। মূলত ‘রিজার্ভ ফোর্সেস ল’ আইনটি ২০১০ সালে তৎকালীন স্বৈরশাসক থান শোয়ের নেতৃত্বাধীন জান্তা সরকার জারি করেছিল, কিন্তু কখনও ব্যবহার করা হয়নি। এবারই প্রথম আইনটি সক্রিয় করা হলো।
ইরাবতী বলছে, যাদের ফ্রন্টলাইনে ফেরত পাঠানো হবে তারা তাদের পেনশনের পাশাপাশি সামরিক প্রধান কর্তৃক প্রদত্ত অন্যান্য সুবিধা পাবেন। অবসর গ্রহণ বা পদত্যাগ করার সময় যারা যে পদে ছিলেন তাদের একই পদে নিয়োগ দেয়া হবে বলেও আইনে বলা হয়েছে।
সশস্ত্র বিদ্রোহী আরাকান আর্মির হামলায় রাখাইন রাজ্যে নাস্তানাবুদ হচ্ছে জান্তা বাহিনী। স্থলভাগের দখল হারিয়ে আকাশপথে হামলা জোরদার করেছে জান্তার বিমানবাহিনী। মঙ্গলবার এমনই এক হামলায় রাখাইন ও চিন রাজ্যে প্রাণ হারায় শিশুসহ কয়েকজন। রাখাইনের বিদ্রোহীদের অন্য রাজ্যগুলোতে ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে রাজ্যটি থেকে আকাশপথে যাত্রায় বিভিন্ন নিয়ম জারি করছে জান্তা সরকারের পরিবহন ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়। জানানো হয়, রাখাইনের পাশাপাশি তানিনথারি অঞ্চল থেকে দেশের যেকোন স্থানে উড়োজাহাজে ভ্রমণের ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলকভাবে স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতিপত্র নিতে হবে।
এদিকে প্রথমবারের মতো ব্যর্থতার মুখ দেখলো বিদ্রোহীদের সশস্ত্র বিদ্রোহী জোট ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স। নিয়ন্ত্রণে থাকা সাগাইং রাজ্যের কাওলিন শহর ৩ মাস পর দখলে নিয়েছে জান্তা বাহিনী। দেশটির সংবাদমাধ্যম ইরাবতী জানিয়েছে, ১০ দিন ধরে সেনাবাহিনীর সঙ্গে তুমুল লড়াইয়ের পর শহরটির নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে বিদ্রোহীরা।