বেটিং অ্যাপ কেলেঙ্কারিতে জড়াল সাকিবের বোনের নাম
- আপডেট সময় : ০১:০২:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ মার্চ ২০২৪
- / ৪০৪ বার পড়া হয়েছে
ভারতে গত কিছুদিনে ঝড় বয়ে যাচ্ছে ‘মহাদেব অনলাইন বেটিং অ্যাপ’ নিয়ে তদন্ত। ভারতের চত্তিশগড় থেকে দুবাইয়ে বিস্তীর্ণ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে পোকার, তাস, ক্রিকেট, ব্যাডমিন্টন, টেনিস, এমনকি ভারতের নির্বাচনকে ঘিরেও অবৈধ বাজি চলে এই অ্যাপে। এর মাধ্যমে অর্থ পাচার, ম্যাচ ফিক্সিংসহ নানা অপরাধে জড়ানোর অভিযোগ আছে। এসবের মাধ্যমে প্রায় ৬ হাজার কোটি রুপির প্রতারণার কথা বলছে ভারতের সংবাদমাধ্যম।
এই কেলেঙ্কারির তদন্তে বাংলাদেশে জানাতুল হাসান নামে একজনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে বলে জানাচ্ছে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে, যাঁকে বাংলাদেশ দলের অলরাউন্ডার ও মাগুরা -১ আসনের সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসানের বোন বলে দাবি করছে ভারতের সংবাদমাধ্যমটি।
এ ঘটনা নিয়ে তদন্ত করছে ভারতের তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। তারা গতকাল শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তদন্তের সূত্র ধরে গিরিশ তালরেজা ও সুরাজ চোখানি নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই দুজন ‘মহাদেব অ্যাপ’-এর মূল প্রচারকদের একজন হরিশঙ্কর তিব্রেওয়ালের ঘনিষ্ঠ সঙ্গী বলে জানিয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।
তদন্তকারী সংস্থাটি তিব্রেওয়ালের বিভিন্ন স্থাপনায় অভিযান চালিয়েছে। সেখান থেকে জানা গেছে, তিব্রেওয়াল ‘স্কাই এক্সচেঞ্জ’ নামের একটি অবৈধ বেটিংয়ের অ্যাপের মালিক ও পরিচালনাকারী। তাঁর দুবাইভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে তিব্রেওয়াল অবৈধ বেটিং থেকে পাওয়া অর্থ ‘বিদেশি পোর্টফোলিও ইনভেস্টমেন্ট’ (এফপিআই)-এর মাধ্যমে ভারতের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করতেন, যাতে অবৈধ অর্থ বৈধতা পায়।
এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট জানাচ্ছে, শেয়ারবাজারে তিব্রেওয়ালের অর্থ বিনিয়োগের দিকটা দেখভাল করতেন সুরাজ চোখানি। এর পাশাপাশি চোখানি ‘ইলেভেন উইকেট ডট কম’ নামে বাংলাদেশে একটি অ্যাপেও বিনিয়োগ করেছেন। এই অ্যাপের সঙ্গেই জড়িয়ে আছে সাকিবের বোনের নাম।
ইন্ডিয়া টুডে লিখেছে, ইলেভেন উইকেট ডট কম-এর অংশীদারদের একজন জানাতুল হাসান, যিনি সাকিবের বোন বলে দাবি করছে তারা।
এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটকে সূত্র হিসেবে জানিয়ে ইন্ডিয়া টুডে লিখেছে, মহাদেব অ্যাপ হচ্ছে অনলাইনে একটি অবৈধ বেটিং প্ল্যাটফর্মকে ঘিরে বড় অঙ্কের আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনা। এখানে পোকার, তাস, ক্রিকেট, ব্যাডমিন্টন, ফুটবল, টেনিসসহ অনেক খেলায় বাজি ধরা হয়। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের তদন্তে উঠে এসেছে, এই প্ল্যাটফর্মটি ‘প্যানেল ও ব্রাঞ্চ’ পদ্ধতিতে চলে, যেখানে চেনাজানা লোকদের ৭০/৩০ শতাংশ লাভ ভাগাভাগির শর্তে নিয়োগ দেওয়া হয়। এই প্ল্যাটফর্ম থেকেই নতুন ‘ইউজার’ নিবন্ধন করিয়ে তাঁদের ভিন্ন ভিন্ন আইডি দেওয়া হয়, এরপর বেনামি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে অর্থ পাচার করা হয়। প্ল্যাটফর্মটি প্রতিদিনই প্রায় ২০০ কোটি রুপি আয় করে বলে জানাচ্ছে ইন্ডিয়া টুডে।
দুবাইয়ে বসে অ্যাপটা পরিচালন করতেন সৌরভ চন্দ্রশেখর (২৮) নামের একজন, যিনি আগে ছিলেন একজন জুস বিক্রেতা। তাঁর সঙ্গে কাজ করতেন রবি উপ্পল (৪৩)। দুজনই ভারতের ছত্তিশগড়ের বাসিন্দা, বছর দুয়েক ধরে দুবাইয়ে আছেন। রবি উপ্পলকে দুবাইয়ে আটক করা হয়েছে, ইন্টারপোলের মাধ্যমে তাঁকে শিগগিরই ভারতে আনার চেষ্টা করছে ভারতীয় পুলিশ।