ঢাকা ০৬:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

রানা প্লাজা ধস: সাক্ষ্যগ্রহণেই পার ১১ বছর

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১২:৪০:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪
  • / ৩৯৬ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির অবহেলাজনিত হত্যা মামলার বিচার প্রক্রিয়ায় ১১ বছর ধরে সাক্ষ্যগ্রহণেই ঘুরপাক খাচ্ছে। এ মামলায় মোট ৫৯৪ জন সাক্ষীর মধ্যে এখন পর্যন্ত সাক্ষ্য দিয়েছেন মাত্র ৮৫ জন। ফলে সর্বোচ্চ আদালতের বেঁধে দেওয়া ৬ মাসের মধ্যে মামলা শেষ হওয়া নিয়ে সংশয় আইনজীবীদের।

রানা প্লাজার দুর্ঘটনা পুরো বিশ্বকেই নাড়িয়ে দিয়েছিল। এরপর কারখানার কর্মপরিবেশ ঠিক করতে চাপ পড়ে দেশের পোশাক শিল্পের ওপর।

এ ঘটনায় অবহেলায় হত্যার অভিযোগের প্রমাণ মেলে। ২০১৫ সালে সিআইডি ভবন মালিক সোহেল রানাসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়। বিচার শুরু হয় পরের বছর। এরপর একের পর এক আসামি হাইকোর্টে যাওয়ায় মামলাটির বিচার থমকে থাকে ২০২২ সাল পর্যন্ত।

অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর বিমল সমদ্দার জানান, মূল আসামি রানা প্রায়ই অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে থাকেন। আবার তাকে জেলখানা থেকে আনলে তার পক্ষের আইনজীবীরা আদালতে চিৎকার-হট্টেগোল করেন।

রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় সাক্ষী করা হয় ৫৯৪ জনকে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সাক্ষ্য দিয়েছেন মাত্র ৮৫ জন। ফলে বিচারে দীর্ঘসূত্রিতা দেখা দিয়েছে। কবে এ সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হবে কেউ জানে না।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর বিমল সমদ্দার আরও জানান, সাক্ষী যদি না আসে তাহলে বিচারকের কিছু করার থাকে না। এখানে আদালত নিরূপায়। তারপরও আমরা সবরকম চেষ্টা করছি, যতো দ্রুত সম্ভব মামলা শেষ করতে।

এদিকে গেলো ১৫ জানুয়ারি রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানার পক্ষে আপিল বিভাগে জামিন চান তার আইনজীবী। সেখানে আপিল বিভাগ সাফ জানিয়ে দেন জামিন হবে না রানার। তবে এ মামলা ৬ মাসে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেওয়া হয়।

সঠিক বিচারে সবার সাজা হবে জানিয়ে অবস্থায় অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলছেন, এখানে জড়িত মালিক থেকে শুরু করে দেখভালের দায়িত্বে থাকা পৌরসভা সবার বিচার হবে। কেউ ছাড় পাবে না। তাদের গাফিলতিতে এতো মানুষের প্রাণ গেছে।

রানা প্লাজা মামলায় আসামিদের পক্ষে কথা বলতে রাজি হয়নি কোনো আইনজীবী। গেলো ২১ এপ্রিল এ মামলায় সবশেষ ৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেয়া হয়। ২৮ জুন এ মামলার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণ। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজা ধসে ১ হাজার ১৩৫ জন নিহত এবং ১ হাজার ১৬৯ জন গুরুতর আহত হয়ে পঙ্গু হয়ে যান। এ ঘটনায় মোট মামলা হয় ২০টি। এর মধ্যে তিনটি হচ্ছে ফৌজদারি মামলা। শ্রমিক নিহতের ঘটনায় হত্যা মামলা করে পুলিশ। অন্যদিকে ইমারত নির্মাণ আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে মামলা করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এবং ভবন নির্মাণসংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। খুনের মামলা ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন। ইমারত আইনের মামলাটির সাক্ষ্য গ্রহণ বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া ভবন নির্মাণসংক্রান্ত দুর্নীতির মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে ঢাকার বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতে। এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ পর্যায়ে।

নিউজটি শেয়ার করুন

রানা প্লাজা ধস: সাক্ষ্যগ্রহণেই পার ১১ বছর

আপডেট সময় : ১২:৪০:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির অবহেলাজনিত হত্যা মামলার বিচার প্রক্রিয়ায় ১১ বছর ধরে সাক্ষ্যগ্রহণেই ঘুরপাক খাচ্ছে। এ মামলায় মোট ৫৯৪ জন সাক্ষীর মধ্যে এখন পর্যন্ত সাক্ষ্য দিয়েছেন মাত্র ৮৫ জন। ফলে সর্বোচ্চ আদালতের বেঁধে দেওয়া ৬ মাসের মধ্যে মামলা শেষ হওয়া নিয়ে সংশয় আইনজীবীদের।

রানা প্লাজার দুর্ঘটনা পুরো বিশ্বকেই নাড়িয়ে দিয়েছিল। এরপর কারখানার কর্মপরিবেশ ঠিক করতে চাপ পড়ে দেশের পোশাক শিল্পের ওপর।

এ ঘটনায় অবহেলায় হত্যার অভিযোগের প্রমাণ মেলে। ২০১৫ সালে সিআইডি ভবন মালিক সোহেল রানাসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়। বিচার শুরু হয় পরের বছর। এরপর একের পর এক আসামি হাইকোর্টে যাওয়ায় মামলাটির বিচার থমকে থাকে ২০২২ সাল পর্যন্ত।

অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর বিমল সমদ্দার জানান, মূল আসামি রানা প্রায়ই অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে থাকেন। আবার তাকে জেলখানা থেকে আনলে তার পক্ষের আইনজীবীরা আদালতে চিৎকার-হট্টেগোল করেন।

রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় সাক্ষী করা হয় ৫৯৪ জনকে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সাক্ষ্য দিয়েছেন মাত্র ৮৫ জন। ফলে বিচারে দীর্ঘসূত্রিতা দেখা দিয়েছে। কবে এ সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হবে কেউ জানে না।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর বিমল সমদ্দার আরও জানান, সাক্ষী যদি না আসে তাহলে বিচারকের কিছু করার থাকে না। এখানে আদালত নিরূপায়। তারপরও আমরা সবরকম চেষ্টা করছি, যতো দ্রুত সম্ভব মামলা শেষ করতে।

এদিকে গেলো ১৫ জানুয়ারি রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানার পক্ষে আপিল বিভাগে জামিন চান তার আইনজীবী। সেখানে আপিল বিভাগ সাফ জানিয়ে দেন জামিন হবে না রানার। তবে এ মামলা ৬ মাসে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেওয়া হয়।

সঠিক বিচারে সবার সাজা হবে জানিয়ে অবস্থায় অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলছেন, এখানে জড়িত মালিক থেকে শুরু করে দেখভালের দায়িত্বে থাকা পৌরসভা সবার বিচার হবে। কেউ ছাড় পাবে না। তাদের গাফিলতিতে এতো মানুষের প্রাণ গেছে।

রানা প্লাজা মামলায় আসামিদের পক্ষে কথা বলতে রাজি হয়নি কোনো আইনজীবী। গেলো ২১ এপ্রিল এ মামলায় সবশেষ ৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেয়া হয়। ২৮ জুন এ মামলার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণ। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজা ধসে ১ হাজার ১৩৫ জন নিহত এবং ১ হাজার ১৬৯ জন গুরুতর আহত হয়ে পঙ্গু হয়ে যান। এ ঘটনায় মোট মামলা হয় ২০টি। এর মধ্যে তিনটি হচ্ছে ফৌজদারি মামলা। শ্রমিক নিহতের ঘটনায় হত্যা মামলা করে পুলিশ। অন্যদিকে ইমারত নির্মাণ আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে মামলা করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এবং ভবন নির্মাণসংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। খুনের মামলা ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন। ইমারত আইনের মামলাটির সাক্ষ্য গ্রহণ বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া ভবন নির্মাণসংক্রান্ত দুর্নীতির মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে ঢাকার বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতে। এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ পর্যায়ে।