শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:১২ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
হামাসের নতুন প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ার নিহত : ইসরায়েল রাষ্ট্র সংস্কারে আরও ৪ কমিশন গঠন ‘শেখ হাসিনাকে ফেরাতে ব্যবস্থা নেবে সরকার’ শেখ হাসিনা ভারতে আছেন এবং থাকবেন: ভারত কমনওয়েলথ সম্মেলনে যাচ্ছেন না ড. ইউনূস: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ঈদুল ফিতরে ৫, আজহায় ৬ ও দুর্গাপূজায় ২ দিন ছুটি সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানের সব সম্পদ জব্দের আদেশ ভারতকে লজ্জায় ডুবিয়ে নিউজিল্যান্ডের লিড আ.লীগ আমলের বাজার সিন্ডিকেট এখনও সক্রিয়: জামায়াত আমির জাতীয় পার্টি বৈষম্যের শিকার: জিএম কাদের ওবায়দুল কাদের-জাফর ইকবালসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ৪৩ থেকে ৪৬ বিসিএসের নিয়োগ বাতিলের দাবি বিএনপির কমপ্লিট শাটডাউনের হুঁশিয়ারি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কূটনৈতিক যুদ্ধে ভারত-কানাডার সম্পর্ক চরমে সাবেক সেনাপ্রধান আজিজকে স্ত্রীসহ দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা নিজ দেশের জনগণের তোপের মুখে ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি সেপ্টেম্বরে ১৯২ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ১৯৫ জন শরীরচর্চা করতে গিয়ে গুরুতর আহত অভিনেত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩৫ জনের নামে হত্যাচেষ্টার মামলা বাজার সিন্ডিকেট ভাঙার চেষ্টা করছে সরকার: উপদেষ্টা আসিফ

অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতিতে লোকসানে রাজশাহী সুগার মিল

রাজশাহী প্রতিনিধি / ২২২ জন দেখেছেন
আপডেট : শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:১২ পূর্বাহ্ন
অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতিতে লোকসানে রাজশাহী সুগার মিল
৭১ নিউজ বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বাজারদরের চেয়ে উৎপাদন খরচ ৪ গুণ বেশি হওয়ায় গেল ৫ বছরে প্রায় ৪০০ কোটি টাকার লোকসান করেছে রাজশাহী সুগার মিল। কাঁচামাল সংকটে লোকসানের দাবি সুগার মিল কর্তৃপক্ষের। চাষিরা বলছেন, আখের ন্যায্য দাম না পাওয়ায় আগ্রহ হারাচ্ছেন তারা। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি এবং আধুনিকায়ন না হওয়ার ফলে লোকসানি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে সুগার মিলটি।

উত্তর অঞ্চলের চিনিকলগুলোর মধ্যে অন্যতম রাজশাহীর হরিয়ানে অবস্থিত এই চিনিকলটি।

চলতি মৌসুমে প্রতিষ্ঠানটি চিনি উৎপাদন করেছে ১ হাজার ৩৫৬ মেট্রিক টন। উৎপাদন খরচ ৮৩ কোটি ১ লাখ ২৯ হাজার টাকা। সে হিসেবে প্রতি কেজি চিনি উৎপাদনে খরচ ৪০৫ টাকা ৬৮ পয়সা। বাজারদরের চেয়ে উৎপাদন খরচ ৪ গুণ বেশি হওয়ায় বছরের লোকসান শত কোটি টাকা। গেল ৫ বছরে প্রতিষ্ঠানটি লোকসান দিয়েছে ৩৯১ কোটি ১৬ লাখ ৭৮ টাকা।

কর্মকর্তাদের দাবি, আখের স্বল্পতায় চিনিকলটি ক্রমে লোকসান দিচ্ছে। আর কৃষকরা বলছেন, আখের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় তারা চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন।

আখ চাষি জিল্লুর শিকদার বলেন, “আমার কয়েক বিঘা জমিতে প্রতি বছর আখ চাষ করি। কিন্তু দিন দিন সার, বীজ, কীটনাশকসহ শ্রমিক খরচ বেড়েছে। কিন্তু বাড়েনি আখের দাম। ফলে আমার মতো চাষিরা আখের বিকল্প হিসেবে অন্য পেশায় ঝুঁকছেন”।

আরেক আখ চাষি জামাল মিয়া বলেন, “চাষ উৎপাদনে প্রায় পুরো বছরই চলে যায়। আখ চাষ করলে ওই জমিতে একাধিক ফসল সেভাবে করার সুযোগ থাকে না। এছাড়াও দিন-দিন সার, বীজ, কীটনাশক সহ লেবার খরচ বাড়ছে। জমি থেকে আখ কেটে সুগারমিল পর্যন্ত পৌঁছে দিতে যে গাড়ি ভাড়া লাগতো, সেটিও বেড়েছে। কিন্তু খরচ বাড়লেও তুলানামূলক বাড়েনি আখের দাম”।

এ ব্যাপারে রাজাশাহী সুগার মিলসের ভারপ্রাপ্ত মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ শাহিনুল ইসলাম বলেন, “কৃষি প্রণোদনা হিসেবে আখ চাষিরা সার, কীটনাশক ও এসটিটি পদ্ধতিতে আখ আবাদের জন্য আখের মুড়ির জন্য ভর্তুকি পেয়ে থাকেন। তারপরও আখের আবাদ ও উৎপাদন কম। মূলত, আখ থেকে মুনাফা কম পাওয়ায় চাষিরা অন্য লাভজনক চাষে ঝুঁকছেন। আর উৎপাদন খরচ যে হারে বাড়ছে, দাম সে হারে বাড়ছে না বলে লোকসানের মুখে পড়ছে প্রতিষ্ঠান”।

এদিকে, চিনিকল শ্রমিক নেতাদের দাবি, কর্মকর্তাদের অদক্ষতায় ক্রমেই রুগ্ন শিল্পে পরিণত হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।

“আখ মাড়াই মৌসুম ছাড়া চিনিকলগুলো বেশিরভাগ সময়ই বন্ধ থাকে। সেই সময়ে আমের জুসসহ আনুষঙ্গিক অন্যান্য পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ, ডিস্টিলারি স্থাপন বা চিনিকলে কো-জেনারেশনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারলে বাড়তি আয় হবে”- বলেন রাজশাহী চিনি কল শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. মাসুদ রানা।

আর বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডে স্বচ্ছতার পাশাপাশি যন্ত্রাংশে আধুনিকায়ন করা না গেলে কখনোই লাভের মুখ দেখবে না প্রতিষ্ঠানটি।

“একসময় সরকারের চিনিকলের ঐতিহাসিক ভূমিকা ছিল। তবে বর্তমানে বাজারে তাদের হিস্যা অতি সামান্য। বেসরকারি রিফাইনারিগুলো বাজারের মোট চাহিদার চেয়ে অনেক বেশি জোগান দেওয়ার সক্ষমতা রাখে। বর্তমান বাস্তবতায় সব মিলিয়ে বাজারে তেমন কোনো প্রভাবক হিসেবে কাজ করছে না সরকারি চিনিকল”- বলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় আইবিএ বিভাগের অধ্যাপক মো. হাছানাত আলী।

ষার্টের দশকের স্থাপিত সুগার মিলটি একসময় রমরমা থাকলেও এখন রুগ্ন দশা। বছরে ১২০ দিন চলার কথা থাকলেও আখ স্বল্পতার কারণে চলতি মৌসুমে চলেছে ২১ দিন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এভাবে চলতে থাকলে দ্রুত প্রতিষ্ঠানটি দেউলিয়া হওয়ার পাশাপাশি বেকার হবে অন্তত ১২০০ মানুষ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের অন্য সংবাদ