ঢাকা ০৯:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫, ৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी
ব্রেকিং নিউজ ::
ইসরায়েল ও ইরানের সংঘাত: বাংলাদেশিদের জন্য হটলাইন সেবা চালু করেছে দুতাবাস। ইরানে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিকদের + ৯৮৯908577368 ও + ৯৮৯১22065745 নম্বরে (হোয়াটসঅ্যাপ সহ) যোগাযোগ করতে বলেছে দূতাবাস কর্তৃপক্ষ।

ব্রহ্মপুত্রের তীরে মিলেছে ৩৬৩০ কোটি টাকার খনিজ সম্পদ

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৩:০৯:১১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪
  • / ৪৬১ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ব্রহ্মপুত্রের তীরে প্রতি বর্গকিলোমিটারে সন্ধান মিলেছে ৩ হাজার ৬৩০ কোটি টাকার খনিজ সম্পদ। বালুচরে প্রাপ্ত মূল্যবান ৬ খনিজ পদার্থ আহরণে সব প্রক্রিয়া শেষ। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জানান প্রধানমন্ত্রীর মতামতের ওপর নির্ভর করছে আহরণের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।

কুড়িগ্রাম থেকে ব্রহ্মপুত্রের তীর ধরে গাইবান্ধার দূরত্ব অন্তত শত কিলোমিটার। আর এই এলাকার হাজার হাজার হেক্টর বালুচরে লুকিয়ে আছে মূল্যবান খনিজ। শুধু এই অংশে দেশি-বিদেশি একাধিক প্রতিষ্ঠান দীর্ঘ গবেষণায় বালুচরে আবিষ্কার করেছে ইলমেনাইট, কোয়ার্টজ, রুটাইল, জিরকন, ম্যাগনেটাইট ও গারনেটের মতো মূল্যবান ছয় খনিজ।

ব্রহ্মপুত্রের তীরবর্তী গাইবান্ধায় প্রায় ৪ হাজার হেক্টর বালুচরে অনুসন্ধান চালিয়ে সেখানকার ২ হাজার ৩৯৫ হেক্টর বালুচর লিজ চেয়েছে অস্ট্রেলিয়ান প্রতিষ্ঠান এভারলাস্ট মিনারেলস লিমিটেড। যেখানে সরকারকে উত্তোলনের পর ৪৩ ভাগ দিয়ে খনিজ আহরণের প্রস্তাব করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

তবে খনিজ আহরণের চুড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য এখন সরকারপ্রধানের মতামতের অপেক্ষায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়।

জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘এটা আমাদের পরিকল্পনায় আছে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমতির জন্য আমরা অপেক্ষা করছি। উনার অনুমতি পেলে কাজ শুরু করবো।’

জয়পুরহাটে খনিজ প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রে গবেষণায় এ ছয় খনিজ প্রাপ্তি নিশ্চিত করে ইনস্টিটিউট অব মাইনিং, মিনারোলজি অ্যান্ড মেটালার্জি’র গবেষকরা জানান, ১০ মিটার গভীরতায় প্রতি বর্গকিলোমিটার বালুচরে আছে ৩ হাজার ৬৩০ কোটি টাকার খনিজ সম্পদ। সচেতন নাগরিকরা বলছেন দেশের সম্পদ দেশিয় প্রতিষ্ঠান আহরণ করলে রাষ্ট্র বেশি লাভবান হবে। তবে গবেষকদের মত, বিদেশি প্রতিষ্ঠান আহরণ করলে সরকারের খরচ সাশ্রয় হবে।

গাইবান্ধা সামাজিক সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক আমিনুল ইসলাম গোলাপ বলেন, ‘আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলো নিজেদের স্বার্থ বেশি দেখে। সেক্ষেত্রে তারা অনেক সময় সরকারকে দুর্বল করে অসম চুক্তি করে নেয়। এজন্য জাতীয় স্বার্থ রক্ষা হয় না।’

বিসিএসআইআর’র অবসরপ্রাপ্ত পরিচালক ড. মোহাম্মদ নাজিম জামান বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমাদের সক্ষমতা আছে কিন্তু ফান্ডিং একটা বড় বিষয়। প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ করতে হবে। বিদেশি কোম্পানির সাথে চুক্তিতে গেলে সম্পূর্ণ সেট আপ আমরা পাবো।’

সিরামিক, টাইলস, রঙ, ওয়েলডিং রড, কালি, খাবার, ওষুধ, চুম্বক, ইস্পাত ও কাঁচ তৈরির কাচামালসহ বহুবিধ ব্যবহারে মূলত বাইরের দেশ থেকে আমদানি করতে হয় এখানে প্রাপ্ত ছয় খনিজ। গবেষকরা বলছেন, উত্তোলন করলেও প্রতি বন্যায় আবারও ব্রহ্মপুত্রের বালুচরে জমা হবে এসব খনিজ।

সরকারি প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট অব মাইনিং, মিনারোলজি এন্ড মেটালার্জি ব্রহ্মপুত্র নদে জরিপ চালায়। প্রাথমিকভাবে বালিতে মেলে খনিজের উপস্থিতি। এরপর ২০২০ সালে খনিজ প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ছয় খনিজের উপস্থিতি চুড়ান্তভাবে নিশ্চিত করেন গবেষকরা। বেশ ক’বছর ধরে গাইবান্ধায় বালুচরে অনুসন্ধান শেষে বালাসীঘাটে একটি প্ল্যান্ট স্থাপন করে অস্ট্রেলিয়ান এই প্রতিষ্ঠান।

এদিকে এই ছয় খনিজের বাইরেও আরও দুটি খনিজ পদার্থের অনুসন্ধান করছেন জয়পুরহাটে অবস্থিত বিসিএসআইআর এর গবেষকরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

ব্রহ্মপুত্রের তীরে মিলেছে ৩৬৩০ কোটি টাকার খনিজ সম্পদ

আপডেট সময় : ০৩:০৯:১১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪

ব্রহ্মপুত্রের তীরে প্রতি বর্গকিলোমিটারে সন্ধান মিলেছে ৩ হাজার ৬৩০ কোটি টাকার খনিজ সম্পদ। বালুচরে প্রাপ্ত মূল্যবান ৬ খনিজ পদার্থ আহরণে সব প্রক্রিয়া শেষ। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জানান প্রধানমন্ত্রীর মতামতের ওপর নির্ভর করছে আহরণের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।

কুড়িগ্রাম থেকে ব্রহ্মপুত্রের তীর ধরে গাইবান্ধার দূরত্ব অন্তত শত কিলোমিটার। আর এই এলাকার হাজার হাজার হেক্টর বালুচরে লুকিয়ে আছে মূল্যবান খনিজ। শুধু এই অংশে দেশি-বিদেশি একাধিক প্রতিষ্ঠান দীর্ঘ গবেষণায় বালুচরে আবিষ্কার করেছে ইলমেনাইট, কোয়ার্টজ, রুটাইল, জিরকন, ম্যাগনেটাইট ও গারনেটের মতো মূল্যবান ছয় খনিজ।

ব্রহ্মপুত্রের তীরবর্তী গাইবান্ধায় প্রায় ৪ হাজার হেক্টর বালুচরে অনুসন্ধান চালিয়ে সেখানকার ২ হাজার ৩৯৫ হেক্টর বালুচর লিজ চেয়েছে অস্ট্রেলিয়ান প্রতিষ্ঠান এভারলাস্ট মিনারেলস লিমিটেড। যেখানে সরকারকে উত্তোলনের পর ৪৩ ভাগ দিয়ে খনিজ আহরণের প্রস্তাব করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

তবে খনিজ আহরণের চুড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য এখন সরকারপ্রধানের মতামতের অপেক্ষায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়।

জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘এটা আমাদের পরিকল্পনায় আছে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমতির জন্য আমরা অপেক্ষা করছি। উনার অনুমতি পেলে কাজ শুরু করবো।’

জয়পুরহাটে খনিজ প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রে গবেষণায় এ ছয় খনিজ প্রাপ্তি নিশ্চিত করে ইনস্টিটিউট অব মাইনিং, মিনারোলজি অ্যান্ড মেটালার্জি’র গবেষকরা জানান, ১০ মিটার গভীরতায় প্রতি বর্গকিলোমিটার বালুচরে আছে ৩ হাজার ৬৩০ কোটি টাকার খনিজ সম্পদ। সচেতন নাগরিকরা বলছেন দেশের সম্পদ দেশিয় প্রতিষ্ঠান আহরণ করলে রাষ্ট্র বেশি লাভবান হবে। তবে গবেষকদের মত, বিদেশি প্রতিষ্ঠান আহরণ করলে সরকারের খরচ সাশ্রয় হবে।

গাইবান্ধা সামাজিক সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক আমিনুল ইসলাম গোলাপ বলেন, ‘আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলো নিজেদের স্বার্থ বেশি দেখে। সেক্ষেত্রে তারা অনেক সময় সরকারকে দুর্বল করে অসম চুক্তি করে নেয়। এজন্য জাতীয় স্বার্থ রক্ষা হয় না।’

বিসিএসআইআর’র অবসরপ্রাপ্ত পরিচালক ড. মোহাম্মদ নাজিম জামান বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমাদের সক্ষমতা আছে কিন্তু ফান্ডিং একটা বড় বিষয়। প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ করতে হবে। বিদেশি কোম্পানির সাথে চুক্তিতে গেলে সম্পূর্ণ সেট আপ আমরা পাবো।’

সিরামিক, টাইলস, রঙ, ওয়েলডিং রড, কালি, খাবার, ওষুধ, চুম্বক, ইস্পাত ও কাঁচ তৈরির কাচামালসহ বহুবিধ ব্যবহারে মূলত বাইরের দেশ থেকে আমদানি করতে হয় এখানে প্রাপ্ত ছয় খনিজ। গবেষকরা বলছেন, উত্তোলন করলেও প্রতি বন্যায় আবারও ব্রহ্মপুত্রের বালুচরে জমা হবে এসব খনিজ।

সরকারি প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট অব মাইনিং, মিনারোলজি এন্ড মেটালার্জি ব্রহ্মপুত্র নদে জরিপ চালায়। প্রাথমিকভাবে বালিতে মেলে খনিজের উপস্থিতি। এরপর ২০২০ সালে খনিজ প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ছয় খনিজের উপস্থিতি চুড়ান্তভাবে নিশ্চিত করেন গবেষকরা। বেশ ক’বছর ধরে গাইবান্ধায় বালুচরে অনুসন্ধান শেষে বালাসীঘাটে একটি প্ল্যান্ট স্থাপন করে অস্ট্রেলিয়ান এই প্রতিষ্ঠান।

এদিকে এই ছয় খনিজের বাইরেও আরও দুটি খনিজ পদার্থের অনুসন্ধান করছেন জয়পুরহাটে অবস্থিত বিসিএসআইআর এর গবেষকরা।