ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে বিধ্বস্ত উপকূল
- আপডেট সময় : ০৩:২৩:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ মে ২০২৪
- / ৩৮০ বার পড়া হয়েছে
ঘূর্ণিঝড় রিমাল চলে গেলেও তাণ্ডব যেন থামছেই না। বিধ্বস্ত উপকূল জলোচ্ছ্বাসের অথৈ পানিতে তলিয়ে যায় বিস্তীর্ণ এলাকা। গাছপালা ভেঙে ব্যাহত যান চলাচল। বন্ধ মোবাইল নেটওয়ার্ক। আর বিদ্যুৎহীন উপকূলীয় এলাকার কয়েক লাখ মানুষ।
রাতের যে তাণ্ডব আঘাত হানে সাতক্ষীরা উপকূলে সকালেও চলতে থাকে সেই রেশ। এসময় বিধ্বস্ত হয় ৫ শতাধিক কাঁচা ঘরবাড়ি। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে সেখানকার আশাশুনি ও শ্যামনগর উপজেলা। জোয়ারের পানিতে বন্দি হয় কয়েক হাজার পরিবার। শ্যামনগরের বেশিরভাগ সড়কে গাছ পড়ে চলাচল ব্যাহত হয়। এছাড়া উপকূলীয় বেশিরভাগ এলাকায় বিচ্ছিন্ন হয় মোবাইল নেটওয়ার্ক। সেই সাথে নেই ইন্টারনেটও।
ঘূর্ণিঝড়ের চোখ রাঙানি কিছুটা কমলেও বাগেরহাটে সকালেও অব্যাহত থাকে বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া। জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায় শরনখোলা উপজেলার বেশিরভাগ এলাকা। তীব্র বাতাসে ভেঙ্গে যায় গাছপালা। উড়ে যায় কাঁচা ঘরবাড়ি। এতে বসতি হারিয়েছে কয়েক হাজারো মানুষ। এছাড়াও ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডব চলাকালীন বাগেরহাটের উপকূলীয় এলাকায় বন্ধ থাকে মোবাইল নেটওয়ার্ক। আর গেল তিন দিন ধরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন শরনখোলা পুরো উপজেলার।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে তছনছ হয় ঘরবাড়ি ও দোকানপাট। বিভিন্ন স্থানে ভেঙে পড়ে গাছপালা। বিচ্ছিন্ন হয় যোগাযোগ। দিনের আলোতে দৃশ্যমান হয় রিমালের ক্ষতচিহ্ন।
বেলা যত গড়াচ্ছে ততই স্পষ্ট হচ্ছে পটুয়াখালীর বিভিন্ন এলাকায় ক্ষয়ক্ষতির চিত্র। অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে বিধ্বস্ত হয়েছে সেখানকার কয়েক হাজার ঘরবাড়ি। গাছপালা উপড়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয় নীলগঞ্জ ইউনিয়নের গইয়াতলা ও উমেদপুর গ্রামের। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে কলাপাড়া উপজেলার ৮০ হাজার গ্রাহক।
এদিকে গাছ পড়ে ও তার ছিঁড়ে মধ্যরাত থেকে নোয়াখালীর সবগুলো উপজেলার বিচ্ছিন্ন রয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ। যাতে ভোগান্তিতে ১২ লাখের বেশি গ্রাহক। এদিকে জোয়ারের পানিতে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে হাতিয়া উপজেলা। পানিবন্দি সেখানকার লক্ষাধিক মানুষ।
টানা ১৮ ঘণ্টা বৃষ্টিতে পিরোজপুরে পানিবন্দি শতাধিক গ্রামের ৪ থেকে ৫ লাখ মানুষ। বিধ্বস্ত হয় ৩শতাধিক ঘরবাড়ি। এছাড়াও জেলার ৪টি পৌরসভার অধিকাংশ সড়ক ডুবে আছে পানিতে। এদিকে রাত থেকে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন প্রায় ৭টি উপজেলার দেড় লাখ গ্রাহক। মোবাইল নেটওয়ার্ক আর ইন্টারনেট সেবাও বন্ধ।
ভোলার উপকূলও বাদ যায়নি ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডব থেকে। সকালেও চলে দমকা হাওয়া থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি। অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে চরফ্যাশনের ৩০টি গ্রামের বিভিন্ন এলাকায় পানি বন্দি হয়ে পড়ে ৪০ হাজার মানুষ। গাছ পড়ে নিহত হওয়ার পাশাপাশি বিচ্ছিন্ন হয় সড়ক যোগাযোগ। বন্ধ হয়ে যায় লঞ্চসহ নৌযান চলাচল।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ঝালকাঠির সুগন্ধা ও বিশখালী নদীর পানি বেড়ে প্লাবিত হয় নিম্নাঞ্চল। এমনকি পানি ঢুকে পড়ে জেলা শহরের অলিগলির বাসা-বাড়ি ও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। তলিয়ে যায় বেশ কয়েকটি প্রধান সড়ক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। প্লাবিত হয় ৪ উপজেলার ২ শতাধিক গ্রাম। প্রবল বাতাসে গাছ পড়ে বন্ধ হয় আঞ্চলিক মহাসড়কে যান চলাচল।
এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় রাঙামাটি ও বান্দরবানসহ পাহাড়ি এলাকায় তৈরি হয়েছে ভূমিধসের শঙ্কা। ঝুঁকিপূর্ণদের সরিয়ে নিতে মাইকিং করছেন প্রশাসন।