বেনজীর যেকোনো জায়গায় যেতে পারেন : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
- আপডেট সময় : ১১:৩৫:২৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ জুন ২০২৪
- / ৩৯৭ বার পড়া হয়েছে
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ যেকোনো জায়গায় যেতে পারেন, কারণ তার বিরুদ্ধে দেশত্যাগে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই।
সোমবার (৩ জুন) এন্টিগা ও নিউইয়র্ক সফর শেষে দেশে ফিরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন তিনি।
মিডিয়া ব্রিফিং-এ গণমাধ্যমকর্মীরা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে জানতে চান, বেনজীর আহমেদকে খোঁজার ব্যাপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পদক্ষেপ নিচ্ছে কিনা বা তিনি কোথায় আছেন তা মন্ত্রনালয় জানে কিনা । জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তার দেশত্যাগে তো কোনো নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়নি। কোর্টও দেয়নি, দুদকও দেয়নি। কারো ওপর যখন দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা না থাকে তিনি তো যে কোনো জায়গায় যেতেই পারেন। ৬ জুন তিনি হাজির হচ্ছেন কি হচ্ছেন না সেটি দেখার বিষয়, না কি তিনি সময় নিচ্ছেন। যেহেতু তার দেশত্যাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা কোনো জায়গা থেকে দেওয়া হয়নি তো তিনি যে কোনো জায়গায় যেতেই পারেন।’
বেনজীর-আজিজ আওয়ামী লীগ সরকারের সৃষ্টি বিএনপির এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, সরকার অত্যন্ত স্বচ্ছতার সঙ্গে দেশ পরিচালনা করছে। সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ না থাকায় দুদক অত্যন্ত স্বচ্ছতার সঙ্গে স্বাধীনভাবে কাজ করছে। তাই সবাই এসব দুর্নীতির কথা জানতে পারছে। আদালত অত্যন্ত স্বাধীনভাবে কাজ করছে বিধায় এই বিষয়গুলো উঠে এসেছে। এটা তো অন্য কেউ তুলে আনেনি। তাই সরকারকে এ ব্যাপারে দোষারোপের কোন সুযোগ নেই।
সাংবাদিকরা ‘জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে শীর্ষ অবদান রাখা বাংলাদেশের শান্তিরক্ষা বাহিনী নিয়ে ডয়েচেভ্যালে একটি নেতিবাচক প্রতিবেদন করেছে’- এ বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ডয়েচে ভেলের প্রতিবেদনের সারমর্ম বোঝা বড় মুশকিল, কারণ কোনো তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে তা করা হয়নি। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীতে আমাদের অবদানকে খাটো করার জন্য সেটি ইচ্ছাকৃতভাবে করা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘ডয়েচে ভেলে মাঝেমধ্যেই এমন প্রতিবেদন করে যা দেশের স্বার্থবিরোধী এবং দেশকে ‘আন্ডারামাইন’ করে। সেজন্য ঠিক ডয়েচে ভেলে নয় বরং সেখানে কিছু বাঙালি আছে তারা এগুলোর সাথে যুক্ত। বড়কথা, ডয়েচে ভেলের প্রতিবেদনটি অসার, অন্তঃসারশূন্য, সেখানে সাবস্ট্যানটিভ কিছু নেই।’
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা জাতিসংঘে অত্যন্ত দক্ষতা ও সুনামের সাথে কাজ করছে। জাতিসংঘ মহাসচিব তার সাথে সাক্ষাতে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন, শান্তিরক্ষী দিবসের অনুষ্ঠানে জাতিসংঘের অন্যান্য কর্তাব্যক্তিরাও আমাদের বাহিনীর দক্ষতার প্রশংসা করেছেন এবং এ পর্যন্ত বাংলাদেশের ১৬৯ জন শান্তিরক্ষী জাতিসংঘের বিভিন্ন মিশনে দায়িত্বপালনকালে আত্মদান করেছেন, সেটিও বিশ্বময় অত্যন্ত সম্মানিত হয়েছে।
হাছান মাহমুদ অভিমত ব্যক্ত করেন, ‘যেখানে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের বিশ্বময় প্রশংসা হচ্ছে, সেখানে ডয়েচে ভেলের প্রতিবেদনের কোনো মূল্য নেই।’
মালয়েশিয়ায় শ্রমিকরা যেতে না পারার পেছনে কেউ জড়িত কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, মালয়েশিয়ায় যাওয়ার তারিখ বর্ধিত করা যায় কি না, সে বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ করছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এর আগে সাম্প্রতিক সফর প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ২৭ থেকে ২৯ মে এন্টিগায় ক্ষুদ্র দ্বীপ উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের (সিডস) চতুর্থ সম্মেলনে ও সেখানে ইউএন গ্রুপ অভ ফ্রেন্ডস অন ভিশন সম্মেলনে যোগদান, ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্র ও জ্যামাইকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী, জাতিসংঘে কানাডার স্থায়ী প্রতিনিধির সাথে বৈঠকের বিষয়ে জানান।
এরপর ৩০ ও ৩১ মে যুক্তরাষ্ট্রের নিইউয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি, মিয়ানমার বিষয়ে মহাসচিবের বিশেষ দূত, জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার এবং জাতিসংঘের ৬ উন্নয়ন সংস্থার প্রধানদের সঙ্গে পৃথক ধারাবাহিক সভা, রোহিঙ্গা বিষয়ে ওআইসি দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতদেরকে ব্রিফিং এবং বাংলাদেশ ও অস্ট্রিয়ার যৌথ উদ্যোগে আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী দিবস অভ্যর্থনা ও নিউইয়র্ক স্টেট আওয়ামী লীগ আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান বিষয়ে আলোকপাত করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান।