০৯:৩৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আজ ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস

আজ ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস। ১৯৬৬ সালের এই দিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষিত ৬ দফা দাবির পক্ষে দেশব্যাপী তীব্র গণআন্দোলনের সূচনা হয়। এই দিনে আওয়ামী লীগের ডাকা হরতাল চলাকালে পুলিশের গুলিতে নিহত হন ১১ জন বাঙালি। এরপর থেকেই বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আপোসহীন সংগ্রামের ধারায় ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের দিকে এগিয়ে যায় বাঙালি জাতি।

৪৭ সালে দেশ ভাগের পর পশ্চিম পাকিস্তানের শাসক গোষ্ঠীর বৈষম্যের শিকার হয় পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ। বঞ্চিত হয় অর্থনীতি ও রাজনীতির সব ক্ষেত্রে। যদিও পূর্ব পাকিস্তানের জনসংখ্যা ছিল পাকিস্তানের মোট জনসংখ্যার ৫৬ শতাংশ।

পাকিস্তানের পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার তথ্য অনুযায়ী ১৯৪৭ সালে পাকিস্তানের দুই অংশে মাথাপিছু আয় ছিল প্রায় সমান, ১৯৭১ সালে পশ্চিমের মানুষের আয় পূর্বের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যায়। এছাড়া পাকিস্তানের প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় কেন্দ্রীয় সরকারের উন্নয়ন বরাদ্দের মাত্র ২০ শতাংশ পায় পূর্ব পাকিস্তান। তৃতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় সেই বরাদ্দ বেড়ে হয় ৩৬ শতাংশ।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. সাদেকা হালিম বলেন, ‘তখন সরকার ছিল পশ্চিম পাকিস্তানে তারা পূর্ব পাকিস্তানকে ভাবত অঙ্গ রাজ্য হিসেবে। এখানকার যে রাজস্ব আসতো তার মোটাদাগে চলে যেত পশ্চিম পাকিস্তানে।’

এদিকে সংস্কৃতি, শিক্ষা, প্রশাসন, প্রতিরক্ষাসহ সব ক্ষেত্রে বছরের পর বছর পদে পদে বৈষম্যের শিকার হয় পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ। তখন ১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি লাহোরে এক সম্মেলনে ছয় দফা উত্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু।

যেখানে বলা হয় প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র ছাড়া সব ক্ষমতা থাকবে প্রাদেশিক সরকারের হাতে। পূর্ববাংলা ও পশ্চিম পাকিস্তানে দুটি পৃথক ও সহজে বিনিময়যোগ্য মুদ্রা থাকবে। কর ধার্য ও আদায় করার দায়িত্ব থাকবে প্রাদেশিক সরকারের হাতে। দুই অঞ্চলের অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার হিসাব হবে আলাদা। এছাড়া আধা সামরিক বাহিনী গঠন ও নৌবাহিনীর সদর দফতর স্থাপনের দাবি জানানো হয়।

উপাচার্য আরও বলেন, ‘কেউ যদি স্বায়ত্তশাসন চাই তাহলে সেটা বিচ্ছিন্নতাবাদীর কর্মসূচি হতে পারে না। কারণ এখানে ১ হাজার মাইল দূরে দুটি দেশ।’

ক্রমেই ছয় দফার প্রতি ব্যাপক জনসমর্থন তৈরি হয়। ১৯৬৬ সালের ৭ জুন, ৬ দফা আদায়ের হরতালে গুলি চালায় পুলিশ, নিহত হয় ১১ জন। ক্রমেই অধিকার আদায়ের এ আন্দোলন রুপ নেয় স্বাধীনতা আন্দোলনে।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান বলেন, ‘৬ দফায় হলো মাইলফলক আর স্বাধীনতার মূল পিলার। এই ছয় দফায় ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা।’

বঙ্গবন্ধুর দেয়া ৬ দফা দাবি আদায়ের মধ্য দিয়ে রচিত হয় পূর্ব বাংলার মুক্তি আন্দোলনের ভীত।

আজ ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস

আপডেট : ১২:৩৫:৪৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ জুন ২০২৪

আজ ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস। ১৯৬৬ সালের এই দিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষিত ৬ দফা দাবির পক্ষে দেশব্যাপী তীব্র গণআন্দোলনের সূচনা হয়। এই দিনে আওয়ামী লীগের ডাকা হরতাল চলাকালে পুলিশের গুলিতে নিহত হন ১১ জন বাঙালি। এরপর থেকেই বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আপোসহীন সংগ্রামের ধারায় ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের দিকে এগিয়ে যায় বাঙালি জাতি।

৪৭ সালে দেশ ভাগের পর পশ্চিম পাকিস্তানের শাসক গোষ্ঠীর বৈষম্যের শিকার হয় পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ। বঞ্চিত হয় অর্থনীতি ও রাজনীতির সব ক্ষেত্রে। যদিও পূর্ব পাকিস্তানের জনসংখ্যা ছিল পাকিস্তানের মোট জনসংখ্যার ৫৬ শতাংশ।

পাকিস্তানের পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার তথ্য অনুযায়ী ১৯৪৭ সালে পাকিস্তানের দুই অংশে মাথাপিছু আয় ছিল প্রায় সমান, ১৯৭১ সালে পশ্চিমের মানুষের আয় পূর্বের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যায়। এছাড়া পাকিস্তানের প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় কেন্দ্রীয় সরকারের উন্নয়ন বরাদ্দের মাত্র ২০ শতাংশ পায় পূর্ব পাকিস্তান। তৃতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় সেই বরাদ্দ বেড়ে হয় ৩৬ শতাংশ।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. সাদেকা হালিম বলেন, ‘তখন সরকার ছিল পশ্চিম পাকিস্তানে তারা পূর্ব পাকিস্তানকে ভাবত অঙ্গ রাজ্য হিসেবে। এখানকার যে রাজস্ব আসতো তার মোটাদাগে চলে যেত পশ্চিম পাকিস্তানে।’

এদিকে সংস্কৃতি, শিক্ষা, প্রশাসন, প্রতিরক্ষাসহ সব ক্ষেত্রে বছরের পর বছর পদে পদে বৈষম্যের শিকার হয় পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ। তখন ১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি লাহোরে এক সম্মেলনে ছয় দফা উত্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু।

যেখানে বলা হয় প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র ছাড়া সব ক্ষমতা থাকবে প্রাদেশিক সরকারের হাতে। পূর্ববাংলা ও পশ্চিম পাকিস্তানে দুটি পৃথক ও সহজে বিনিময়যোগ্য মুদ্রা থাকবে। কর ধার্য ও আদায় করার দায়িত্ব থাকবে প্রাদেশিক সরকারের হাতে। দুই অঞ্চলের অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার হিসাব হবে আলাদা। এছাড়া আধা সামরিক বাহিনী গঠন ও নৌবাহিনীর সদর দফতর স্থাপনের দাবি জানানো হয়।

উপাচার্য আরও বলেন, ‘কেউ যদি স্বায়ত্তশাসন চাই তাহলে সেটা বিচ্ছিন্নতাবাদীর কর্মসূচি হতে পারে না। কারণ এখানে ১ হাজার মাইল দূরে দুটি দেশ।’

ক্রমেই ছয় দফার প্রতি ব্যাপক জনসমর্থন তৈরি হয়। ১৯৬৬ সালের ৭ জুন, ৬ দফা আদায়ের হরতালে গুলি চালায় পুলিশ, নিহত হয় ১১ জন। ক্রমেই অধিকার আদায়ের এ আন্দোলন রুপ নেয় স্বাধীনতা আন্দোলনে।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান বলেন, ‘৬ দফায় হলো মাইলফলক আর স্বাধীনতার মূল পিলার। এই ছয় দফায় ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা।’

বঙ্গবন্ধুর দেয়া ৬ দফা দাবি আদায়ের মধ্য দিয়ে রচিত হয় পূর্ব বাংলার মুক্তি আন্দোলনের ভীত।