০৯:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাজেটের প্রভাব নেই নিত্যপণ্যের বাজারে

সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারগুলোয় বেড়েছে মুরগি, খাসির মাংস ও সবজির দাম। বিশেষ করে গত দুদিনের ব্যবধানে প্রায় প্রতিটি সবজির দাম ১০-২০ টাকা বেড়েছে। এর জন্য সরবরাহ সংকটকে দায়ী করছেন বিক্রেতারা। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে বৃহস্পতিবার (৬ জুন)। বাজেট পেশ হলেও অন্য বছরের মতো প্রস্তাবিত বাজেটের পর নিত্যপণ্যের বাজারে কোনো প্রভাব পড়েনি।

যদিও শুক্রবার (৭ জুন) রাজধানীর বাড্ডা, রামপুরা ও কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায়, সব ধরনের পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক আছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ক্রেতারাও ভিড় করছেন বাজার করতে।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাজেট ঘোষণার আগেই অনেক পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। এজন্য ঘোষণার পর পণ্যের দাম বাড়ার আর কিছু থাকে না। তারপরও কিছু জিনিসে এর প্রভাব পড়তে পারে, যা হয়তো আগামী সপ্তাহের বাজারে দেখা যাবে।

সবজির বাজারে গিয়ে দেখা যায়, অন্যান্য সাপ্তাহিক ছুটির দিনের মতো এই দিনেও বাজার অনেকটা উত্তপ্ত। প্রায় অধিকাংশ সবজিই বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে। বাজারে কিছু সবজি আছে যেগুলো মানভেদে বিক্রি হচ্ছে সর্বনিম্ন ৩০ টাকার মধ্যে।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, বর্তমানে মানভেদে প্রতি কেজি কচুরমুখী ১২০ টাকা, লতি ৬০ টাকা, লম্বা বেগুন ৬০-৮০ টাকা, দেশি গাজর ৭০-৮০ টাকা, চায়না গাজর ১২০ টাকা কাঁঠালের বিচি ৫০-৬০ টাকা, গোল বেগুন ৬০-৮০ টাকা, টমেটো ৯০-১০০ টাকা, ঝিঙ্গা ৫০ টাকা, পটল ৪০-৫০ টাকা, উস্তা ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, শসা ১০০-১২০ টাকা, সজনে ডাটা ১০০ টাকা, বরবটি ৯০-১০০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১৬০ টাকা, কাঁকরোল ৯০-১০০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬৫-৭০ টাকা, ধুন্দুল ৬৫-৭০ টাকা, কুমড়া ৩০ টাকা, পেঁপে ৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি পিস ফুলকপি ৪০ টাকা, বাঁধাকপি ৩০ টাকা, লেবুর হালি ২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে বাজার করতে আসা মওদুদ আহমেদ নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, গতকাল বাজেট হয়েছে দেখলাম, যদিও বাজেটের সাথে আমাদের মতো শ্রেণিপেশার মানুষের কোনো সম্পর্ক নেই। এই ধরনের বাজেটে সাধারণ মানুষের জন্য কিছু থাকে না। বাজেট কম হোক বা বেশি হোক, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কখনোই কমবে না বরং উল্টো বাড়তেই থাকবে। যেকারণে বাজেটকেন্দ্রিক খুব বেশি একটা আগ্রহ নেই।

তিনি বলেন, বাজারে প্রায় প্রতিটি পণ্যেরই দাম ঊর্ধ্বমুখী। যেকারণে মাসের খাবার খরচ বেড়েছে প্রায় অর্ধেক। কিন্তু আমাদের আয় তো বাড়েনি। ২টা টিউশনি করিয়ে আগে যা পেতাম, এখনও তাই পাই। কিন্তু যেভাবে সবকিছুর দাম বাড়ছে, তাতে আমাদের মতো মানুষদের কিছুই কিনে খাবার উপায় নেই।

বাজেটের প্রভাব বিষয়ে এই বিক্রেতা বলেন, বাজার আগের মতোই আছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বাজেট হলেও আজকের বাজারে কোনো প্রভাব নেই। সবজির দাম তো এমনিতেই তুলনামূলক বেশি, এখানে আর কী দাম বাড়বে। তারপরও হয়তো আগামী সপ্তাহের বাজারে আসল চিত্র বোঝা যাবে।

আরেক সবজি বিক্রেতা সায়েদুল ইসলাম বলেন, কিছু জিনিসের দাম শুক্রবার এলে এমনিতেই বেড়ে যায়। যেমন, শসা, টমেটো আর গাজর শুক্রবার আসলে এই জিনিসগুলোর চাহিদাও বাড়ে, দামও বাড়ে।

অন্যান্য সবজি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাজারে সবজির সরবরাহ কমে যাওয়ায় দামটা একটু বাড়তি। গরম কমলে সামনে দাম কিছুটা কমতে পারে।

এদিকে গত দুই দিনের ব্যবধানে বেড়েছে ব্রয়লার মুরগি, লাল লেয়ার ও খাসির মাংসের দাম। তবে আগের মতোই আছে গরুর মাংসের দাম।

বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৯০-২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা দুদিন আগেও ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল। এছাড়া ৩২০ টাকায় বিক্রি হওয়া লাল লেয়ার মুরগি আজ বিক্রি হচ্ছে ৩৪০ টাকা কেজি দরে। তবে আগের মতোই ৩২০-৩৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে সোনালি মুরগি। সাদা কক বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৩২০ টাকায় ও সাদা লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ২৯০ টাকায়।

বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি খাসির মাংস ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা কয়দিন আগেও ১১০০ টাকা ছিল। তবে গরুর মাংস আগের মতোই ৭৫০-৭৮০ টাকা ও ছাগলের মাংস ১০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

খাসির মাংসের দাম বাড়ার জন্য কোরবানির ঈদের কথা বলছেন বিক্রেতারা। আব্দুল মোতালেব নামের এক বিক্রেতা বলেন, কয়েকদিন পর ঈদ। এখন কিনতে গেলে যে খাসির দাম ৫০০০ টাকা হওয়া উচিত, সেটি অন্য আরেকজন ৭০০০ টাকায় কিনে নিচ্ছে। যে কারণে খাসির দাম বেশি পড়ছে।

তবে আগের মতোই আছে পেঁয়াজ, রসুন, ডিমের দাম। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি পাবনার পেঁয়াজ ৮০ টাকা, রাজশাহীর পেঁয়াজ ৭৮-৮০ টাকা, ফরিদপুরের পেঁয়াজ ৭৫-৭৬ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি হালি লাল ডিম ৫০ টাকা ও সাদা ডিম ৪৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অপরিবর্তিত আছে চালের দাম। প্রতি কেজি মিনিকেট ৬৬-৬৮ টাকা, নাজিরশাইল ৬৫-৮০ টাকা, মোট আটাশ চাল ৫২-৫৩ টাকা, স্বর্ণা (গুটি) ৪৮-৫০ টাকা ও স্বর্ণা (পাইজাম) ৫৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

জসিম উদ্দিন নামে এক বেসরকারি চাকরিজীবী বলেন, আমাদের স্বল্প বেতনে প্রতিদিন মাছ বা মাংস খাওয়া যায় না। কিন্তু সবজির দামও যদি এমন বাড়তি যায় তাহলে এটা খাওয়াও কমিয়ে দিতে হবে।

তিনি বলেন, বাজারে সব ধরনের সবজিতে ভরপুর। কোনো সংকট নেই। তারপরও ব্যবসায়ীরা একজোট হয়ে দাম বাড়িয়ে দেয়। আমরা আসলে যাবো কোথায়? এভাবে একটা দেশ চলতে পারে?

প্রসঙ্গত, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে বৃহস্পতিবার (৬ জুন)। জাতীয় সংসদে বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। দেশের ইতিহাসের ৫৪তম বাজেট এটি। এর আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে পাঁচ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। আর ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা।

নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতি পরিস্থিতিতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার। এজন্য বিশেষ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখা ও উচ্চ মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে অন্তত ২৭টি প্রয়োজনীয় পণ্য ও খাদ্যশস্য সরবরাহের ওপর উৎসে কর কমানো হচ্ছে। ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে এসব পণ্যে উৎসে কর ২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১ শতাংশ করা হচ্ছে। পণ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে— পেঁয়াজ, রসুন, মটর, ছোলা, চাল, গম, আলু, মসুর, ভোজ্যতেল, চিনি, আদা, হলুদ, শুকনা মরিচ, ডাল, ভুট্টা, ময়দা, আটা, লবণ, গোলমরিচ, এলাচ, দারচিনি, লবঙ্গ, খেজুর, তেজপাতা, পাট, তুলা, সুতা এবং সব ধরনের ফলসহ ২৭ পণ্য।

বাজেটের প্রভাব নেই নিত্যপণ্যের বাজারে

আপডেট : ০১:০১:৫২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ জুন ২০২৪

সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারগুলোয় বেড়েছে মুরগি, খাসির মাংস ও সবজির দাম। বিশেষ করে গত দুদিনের ব্যবধানে প্রায় প্রতিটি সবজির দাম ১০-২০ টাকা বেড়েছে। এর জন্য সরবরাহ সংকটকে দায়ী করছেন বিক্রেতারা। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে বৃহস্পতিবার (৬ জুন)। বাজেট পেশ হলেও অন্য বছরের মতো প্রস্তাবিত বাজেটের পর নিত্যপণ্যের বাজারে কোনো প্রভাব পড়েনি।

যদিও শুক্রবার (৭ জুন) রাজধানীর বাড্ডা, রামপুরা ও কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায়, সব ধরনের পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক আছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ক্রেতারাও ভিড় করছেন বাজার করতে।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাজেট ঘোষণার আগেই অনেক পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। এজন্য ঘোষণার পর পণ্যের দাম বাড়ার আর কিছু থাকে না। তারপরও কিছু জিনিসে এর প্রভাব পড়তে পারে, যা হয়তো আগামী সপ্তাহের বাজারে দেখা যাবে।

সবজির বাজারে গিয়ে দেখা যায়, অন্যান্য সাপ্তাহিক ছুটির দিনের মতো এই দিনেও বাজার অনেকটা উত্তপ্ত। প্রায় অধিকাংশ সবজিই বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে। বাজারে কিছু সবজি আছে যেগুলো মানভেদে বিক্রি হচ্ছে সর্বনিম্ন ৩০ টাকার মধ্যে।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, বর্তমানে মানভেদে প্রতি কেজি কচুরমুখী ১২০ টাকা, লতি ৬০ টাকা, লম্বা বেগুন ৬০-৮০ টাকা, দেশি গাজর ৭০-৮০ টাকা, চায়না গাজর ১২০ টাকা কাঁঠালের বিচি ৫০-৬০ টাকা, গোল বেগুন ৬০-৮০ টাকা, টমেটো ৯০-১০০ টাকা, ঝিঙ্গা ৫০ টাকা, পটল ৪০-৫০ টাকা, উস্তা ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, শসা ১০০-১২০ টাকা, সজনে ডাটা ১০০ টাকা, বরবটি ৯০-১০০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১৬০ টাকা, কাঁকরোল ৯০-১০০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬৫-৭০ টাকা, ধুন্দুল ৬৫-৭০ টাকা, কুমড়া ৩০ টাকা, পেঁপে ৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি পিস ফুলকপি ৪০ টাকা, বাঁধাকপি ৩০ টাকা, লেবুর হালি ২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে বাজার করতে আসা মওদুদ আহমেদ নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, গতকাল বাজেট হয়েছে দেখলাম, যদিও বাজেটের সাথে আমাদের মতো শ্রেণিপেশার মানুষের কোনো সম্পর্ক নেই। এই ধরনের বাজেটে সাধারণ মানুষের জন্য কিছু থাকে না। বাজেট কম হোক বা বেশি হোক, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কখনোই কমবে না বরং উল্টো বাড়তেই থাকবে। যেকারণে বাজেটকেন্দ্রিক খুব বেশি একটা আগ্রহ নেই।

তিনি বলেন, বাজারে প্রায় প্রতিটি পণ্যেরই দাম ঊর্ধ্বমুখী। যেকারণে মাসের খাবার খরচ বেড়েছে প্রায় অর্ধেক। কিন্তু আমাদের আয় তো বাড়েনি। ২টা টিউশনি করিয়ে আগে যা পেতাম, এখনও তাই পাই। কিন্তু যেভাবে সবকিছুর দাম বাড়ছে, তাতে আমাদের মতো মানুষদের কিছুই কিনে খাবার উপায় নেই।

বাজেটের প্রভাব বিষয়ে এই বিক্রেতা বলেন, বাজার আগের মতোই আছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বাজেট হলেও আজকের বাজারে কোনো প্রভাব নেই। সবজির দাম তো এমনিতেই তুলনামূলক বেশি, এখানে আর কী দাম বাড়বে। তারপরও হয়তো আগামী সপ্তাহের বাজারে আসল চিত্র বোঝা যাবে।

আরেক সবজি বিক্রেতা সায়েদুল ইসলাম বলেন, কিছু জিনিসের দাম শুক্রবার এলে এমনিতেই বেড়ে যায়। যেমন, শসা, টমেটো আর গাজর শুক্রবার আসলে এই জিনিসগুলোর চাহিদাও বাড়ে, দামও বাড়ে।

অন্যান্য সবজি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাজারে সবজির সরবরাহ কমে যাওয়ায় দামটা একটু বাড়তি। গরম কমলে সামনে দাম কিছুটা কমতে পারে।

এদিকে গত দুই দিনের ব্যবধানে বেড়েছে ব্রয়লার মুরগি, লাল লেয়ার ও খাসির মাংসের দাম। তবে আগের মতোই আছে গরুর মাংসের দাম।

বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৯০-২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা দুদিন আগেও ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল। এছাড়া ৩২০ টাকায় বিক্রি হওয়া লাল লেয়ার মুরগি আজ বিক্রি হচ্ছে ৩৪০ টাকা কেজি দরে। তবে আগের মতোই ৩২০-৩৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে সোনালি মুরগি। সাদা কক বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৩২০ টাকায় ও সাদা লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ২৯০ টাকায়।

বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি খাসির মাংস ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা কয়দিন আগেও ১১০০ টাকা ছিল। তবে গরুর মাংস আগের মতোই ৭৫০-৭৮০ টাকা ও ছাগলের মাংস ১০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

খাসির মাংসের দাম বাড়ার জন্য কোরবানির ঈদের কথা বলছেন বিক্রেতারা। আব্দুল মোতালেব নামের এক বিক্রেতা বলেন, কয়েকদিন পর ঈদ। এখন কিনতে গেলে যে খাসির দাম ৫০০০ টাকা হওয়া উচিত, সেটি অন্য আরেকজন ৭০০০ টাকায় কিনে নিচ্ছে। যে কারণে খাসির দাম বেশি পড়ছে।

তবে আগের মতোই আছে পেঁয়াজ, রসুন, ডিমের দাম। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি পাবনার পেঁয়াজ ৮০ টাকা, রাজশাহীর পেঁয়াজ ৭৮-৮০ টাকা, ফরিদপুরের পেঁয়াজ ৭৫-৭৬ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি হালি লাল ডিম ৫০ টাকা ও সাদা ডিম ৪৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অপরিবর্তিত আছে চালের দাম। প্রতি কেজি মিনিকেট ৬৬-৬৮ টাকা, নাজিরশাইল ৬৫-৮০ টাকা, মোট আটাশ চাল ৫২-৫৩ টাকা, স্বর্ণা (গুটি) ৪৮-৫০ টাকা ও স্বর্ণা (পাইজাম) ৫৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

জসিম উদ্দিন নামে এক বেসরকারি চাকরিজীবী বলেন, আমাদের স্বল্প বেতনে প্রতিদিন মাছ বা মাংস খাওয়া যায় না। কিন্তু সবজির দামও যদি এমন বাড়তি যায় তাহলে এটা খাওয়াও কমিয়ে দিতে হবে।

তিনি বলেন, বাজারে সব ধরনের সবজিতে ভরপুর। কোনো সংকট নেই। তারপরও ব্যবসায়ীরা একজোট হয়ে দাম বাড়িয়ে দেয়। আমরা আসলে যাবো কোথায়? এভাবে একটা দেশ চলতে পারে?

প্রসঙ্গত, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে বৃহস্পতিবার (৬ জুন)। জাতীয় সংসদে বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। দেশের ইতিহাসের ৫৪তম বাজেট এটি। এর আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে পাঁচ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। আর ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা।

নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতি পরিস্থিতিতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার। এজন্য বিশেষ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখা ও উচ্চ মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে অন্তত ২৭টি প্রয়োজনীয় পণ্য ও খাদ্যশস্য সরবরাহের ওপর উৎসে কর কমানো হচ্ছে। ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে এসব পণ্যে উৎসে কর ২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১ শতাংশ করা হচ্ছে। পণ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে— পেঁয়াজ, রসুন, মটর, ছোলা, চাল, গম, আলু, মসুর, ভোজ্যতেল, চিনি, আদা, হলুদ, শুকনা মরিচ, ডাল, ভুট্টা, ময়দা, আটা, লবণ, গোলমরিচ, এলাচ, দারচিনি, লবঙ্গ, খেজুর, তেজপাতা, পাট, তুলা, সুতা এবং সব ধরনের ফলসহ ২৭ পণ্য।