দেশের ৭৬৮টি মাদ্রাসাসহ ২ হাজারের বেশি স্কুলে বিজ্ঞান বিভাগ নেই
- আপডেট সময় : ০১:৪৫:১৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ জুন ২০২৪
- / ৩৮৯ বার পড়া হয়েছে
দেশের অনেক স্কুল-মাদ্রাসায় বিজ্ঞান বিভাগ নেই। অন্যদিকে নতুন শিক্ষাক্রমে দশম শেণি পর্যন্ত কোনো বিভাজন না থাকায় এখন সব শিক্ষার্থীকেই সব বিষয় পড়তে হচ্ছে। ফলে ঐসব বিদ্যালয়ে বিজ্ঞান পড়ানোর শিক্ষক সংকট এখন স্পষ্ট। এতে শিক্ষার্থীরা বাধ্য হয়ে কোচিংমুখী হচ্ছে। শিক্ষাবিদরা বলছেন, শূন্যপদ পূরণের সঙ্গে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে দ্রুতই।
দেশের প্রায় ৭০০ সরকারি মাধ্যমিক স্কুলের প্রায় সবগুলোতে বিজ্ঞান বিভাগ থাকলেও এমপিওভুক্ত ১৭ হাজার ৪৫১টি স্কুলের মধ্যে ২ হাজারের বেশি স্কুলেই বিজ্ঞান বিভাগ নেই। আবার এমপিওভুক্ত ৫ হাজার ৭৬৮টি মাদ্রাসার মধ্যেও অনেকগুলোতে নেই বিজ্ঞান বিভাগ। তাই এসব প্রতিষ্ঠানে নতুন শিক্ষাক্রমের বিজ্ঞান পড়ানোর সংকট এখন প্রকট আকার ধারণ করেছে।
শূন্যপদ দ্রুত পূরণ তো বটেই সঙ্গে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক নিশ্চিত করাও এখন জরুরি বলে মনে করেন শিক্ষা বিশ্লেষক ড. মোস্তাফিজুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘সারাবিশ্ব বিজ্ঞান আর গণিতকে গুরুত্ব দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা যদি এগুলোতে পিছিয়ে থাকি তাহলে সবকিছুতেই পিছিয়ে থাকতে হবে। সেজন্য বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক সংকটের সমাধান করতে হবে।’
বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ সূত্রমতে, মাধ্যমিক পর্যায়ের এমপিওভুক্ত স্কুল ও মাদ্রাসায় এখন শূন্যপদ ৮৪ হাজার ৯২৩টি। সম্প্রতি শূন্যপদ পূরণে ৫ম গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সংস্থাটি। যেখানে ৯৬ হাজার ৭৩৬ পদের বিপরীতে আবেদন করেছেন মাত্র ২৩ হাজার ৯৩২ জন প্রার্থী।
এনটিআরসিএ বলছে, সনদের মেয়াদ ৩ বছর হওয়ায় এতে শুধু ১৬ ও ১৭ তম নিবন্ধনধারীরাই আবেদন করতে পেরেছে এবং ৩৫ বছর বয়সীদের বেশিরভাগ আবেদন করতে না পারায় আবেদন কম পড়েছে। তাহলে সমাধান কী?
শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘আমরা পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। এই সংকট নিরসনে বিশেষ পরিকল্পনায় শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে। ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদেরও কাজে লাগানো হবে।’
এদিকে চলমান ১৭ তম শিক্ষক নিবন্ধন কার্যক্রম দ্রুত শেষ করে চলতি বছরেই ৬ষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে চায় এনটিআরসিএ।
শরীয়তপুর ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসার মাধ্যমিক পর্যায়ের গণিত বিষয়ের সহকারী শিক্ষক আফরোজ জাহান। তার মাথায় অনেক চাপ। কারণ গণিত পড়ানোর পরও ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণির সব বিজ্ঞান বিষয় তাকেই পড়াতে হবে।
আফরোজ জাহান বলেন, ‘গণিত ক্লাস নেওয়ার পর আমি যখন বিজ্ঞান ক্লাস নেই, তখন আমার উপর একটা চাপ পড়ে। আমি ওদেরকে ঠিকমতো যত্নও নিতে পারি না।’
বাধ্য হয়ে অন্য বিষয়ের শিক্ষকদেরও কখনো কখনো বিজ্ঞান ক্লাস নিতে হয় বলে জানান মাদ্রাসা অধ্যক্ষ মো. মিজানুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘আমাদের বিজ্ঞান ক্লাস নিতে খুব কষ্ট হচ্ছে। কৃষি কিংবা গণিত শিক্ষকদের দিয়ে ক্লাস নেয়াতে হচ্ছে। আমাদের যথেষ্ট শিক্ষক নেই।’
শিক্ষক না থাকায় বিদ্যালয়ে বিজ্ঞান বিষয় শিক্ষার্থীদের ঠিক মতো যখন সমস্যা তখন তারা সমাধন খোঁজে কোথায়?
এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘বিজ্ঞানের শিক্ষক না থাকায় আমার এ বিষয়টা বুঝতে খুব কষ্ট হয়। তাই কোচিংয়ে ভর্তি হতে হয়েছে।’
চিতলিয়া সমিতির হাট উচ্চ বিদ্যালয়ের চিত্রও প্রায় একই। প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশিদ বলেন, ‘এখানে নতুন আরও বিজ্ঞানের শিক্ষক হলে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনা সহজ হবে।’