ঈদে আনন্দ উপভোগ করার সুযোগ নেই: মির্জা ফখরুল
- আপডেট সময় : ০১:০৪:৫০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ জুন ২০২৪
- / ৩৭৭ বার পড়া হয়েছে
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দ্রব্যমূল্য যেভাবে বেড়েছে এতে সাধারণ মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। এ জন্য আমাদের ঈদ আনন্দ উপভোগ করার সুযোগ থাকছে না।
সোমবার (১৭ জুন) সকালে ঈদের নামাজ আদায় ও নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে ঠাকুরগাঁও শহরের কালিবাড়ি এলাকার নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ঈদুল আজহা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা মনে করি যারা দুর্নীতিতে নিমজ্জিত আছেন তারা দুর্নীতি ত্যাগ করবেন। সেই সঙ্গে তাদের সমস্ত অশুভ কামনাগুলোকে বাদ দেবেন এবং জনগণের জন্যে মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করবেন। ঈদুল আজহার দিনে আপনাদের সকলকে ঈদ মোবারক জানাচ্ছি, সেইসাথে আপনাদের মাধ্যমে সারাদেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।
‘সেন্টমার্টিন নিয়ে বিএনপি গুজব ছড়াচ্ছে’ ওবায়দুল কাদেরের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ওবায়দুল কাদেরের কথার জবাব দিতে আমার রুচিতে বাঁধে বিভিন্ন ভাবে। যারা রাজনীতি করছেন, ক্ষমতায় আছেন তারা যদি সত্যকে উপলব্ধি না করেন; তারা যদি দেশের সমস্যাগুলোকে বুঝতে না পারেন; তারা যদি গণমানুষের প্রত্যাশা বুঝতে না পারেন তাহলে কিভাবে শাসক হবেন।
তিনি বলেন, আমরা দেখছি গত প্রায় দেড় যুগ ধরে এই দখলদারি আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের সমস্ত আকাঙ্খাকে পদদলিত করে জোড় করে শাসন চাপিয়ে দিয়েছে। সুতরাং তাদের কথার উত্তর দিতে আমাদের ইচ্ছে করেনা। তারা এতটুকু উপলব্ধি করে না যে, জনগণ এখন আর তাদেরকে পছন্দ করে না। তাদেরকে ঘৃণা করতে শুরু করেছে। তারা শুধু মিথ্যা কথা বলে, প্রতারণা করে, জোড় করে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় টিকে আছে। সুতরাং আমি সেগুলোকে বেশি গুরুত্ব দেই না।
ফখরুল আরও বলেন, সেন্টমার্টিন বিষয়টি আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারা যাই বলুক না কেন এটা তো সত্য সেখানে গোলাগুলি হচ্ছে, শুধু গোলাগুলি হচ্ছে না একপক্ষ থেকে গোলা আসছে এবং টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন পর্যন্ত সমস্ত জাহাজ চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনে জাহাজ যেতে পারছে না। এটাই বাস্তবতা, এখন বাস্তবতা তারা অস্বীকার করবে কি করে। কেন তাদের বিজিবির প্রধান যাচ্ছে বার বার, কেন সেনাবাহিনীর প্রধান বলছেন- আমরা সতর্ক আছি। আর ওবায়দুল কাদেরও বলছেন আমরা সতর্ক আছি। তাহলে আমরা গুজবটা ছড়ালাম কোথায়? এটা তো বাস্তবতা সেন্টমার্টিনে মিয়ানমারের ঘটনাগুলি একটা সমস্যা তৈরি করেছে। সেই সমস্যাতে সেন্টমার্টিনে জাহাজ যেতে পারছে না, খাদ্য যেতে পারছে না। সেখানকার যারা অধিবাসী তারা অত্যন্ত কষ্টের মধ্যে দিন পার করছে এবং নিরাপত্তার অভাববোধ করছে। সেই জিনিস তারা স্বীকার না করে এসমস্ত কথা বলছেন।
সম্প্রতি সংলাপ সম্পর্কিত প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দেওয়া বক্তব্য প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, আমরা কখনই আলোচনার বিরুদ্ধে নই, আমরা সংলাপেরও বিরুদ্ধে নই। কিন্তু সংলাপটা হবে কার সঙ্গে? সংলাপের উদ্যোগ নেবে কে? নির্বাচন কমিশন তো বলবে আমার কোনো ক্ষমতা নেই; এখন নির্বাচন কমিশনার সংলাপ নিয়ে কথা বললে তো হবে না, যার ক্ষমতা আছে, যারা ক্ষমতাকে দখল করেছে তাদেরকে সংলাপের বিষয়ে উদ্যোগ নিতে হবে বলতে হবে এবং আমাদের প্রধান যে দাবিনা, আর আমরা তো একা নই, ৬৩টি দল দাবি করেছে- এখানে অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে হলে একটা নিরপেক্ষ সরকার হতে হবে। একটা নিউট্রাল গর্ভমেন্ট লাগবে, এখানে দলীয় সরকার থাকলে নিউট্রাল হবে না। সে কারণে তাদের প্রথম যে উদ্যোগটা নেওয়া উচিৎ। প্রধান নির্বাচন কমিশনার হাবিবুল আউয়াল সাহেব যেহেতু এই কথা বলেছেন তার তো উচিৎ ছিল পদত্যাগ করা; যে আমি এটা করতে পারিনি সুতরাং আমি পদত্যাগ করছি। সেটা করলে সবাই খুশি হতো, তিনিও সম্মানিত বোধ করতেন এবং এই সরকারকে যদি বোঝাতে পারেন তাহলে বুঝতে হবে হাবিবুল আউয়াল সাহেবের এই কথার মূল্য আছে।
এসময় ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীনসহ বিএনপি ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।