এবারের বাজেট মোটেও উচ্চাভিলাষী নয় : সংসদে প্রধানমন্ত্রী
- আপডেট সময় : ০৯:৫৫:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪
- / ৩৮৩ বার পড়া হয়েছে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট মোটেও উচ্চাভিলাষী নয়। আমরা একটা লক্ষ্য স্থির করি। শতভাগ কখনো পূরণ হয় না। তারপরও আমাদের সুনির্দিষ্ট একটা লক্ষ্য থাকে যে এখানে আমরা যাবো। সেটা আমরা যেতে পেরেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, কোথায় ৬২ হাজার কোটি টাকার বাজেট, আর কোথায় ৭ লাখ কোটি টাকার বাজেট। আমরা তো এই জায়গায় আসতে পেরেছি। চ্যালেঞ্জ নিয়েছি বলেই না সম্ভব হয়েছে। আমাদের ইচ্ছাটা কী? দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন। সেজন্যই তো উন্নয়নটা হয়। আমাদের উন্নয়নের থাবা যেন অব্যাহত থাকে সে লক্ষ্যেই আমরা এই বাজেট প্রণয়ন করেছি এবং উন্নয়ন বাজেট দিয়েছি। এখানে কমানোর কিছু নেই।
আজ (শনিবার) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।
তিনি বলেন, এই বাজেটের মধ্যে আগামী দিনে আমরা যে প্রেক্ষিত পরিকল্পনা করেছি ২০২১ থেকে ২০৪১ সাল সেটি বাস্তবায়নে সক্ষম হবো। সেই ধারাবাহিকতা আমাদের আছে। আমরা একটা রাজনৈতিক দল করি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। আমাদের কিন্তু নিজেদের ঘোষণাপত্র আছে, আমরা কিন্তু নির্বাচনের আগে ইশতেহার ঘোষণা করি। এই ইশতেহার আমরা কখনও ভুলে যাই না। জাতির কাছে যে ওয়াদা দিয়ে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আমরা ক্ষমতায় এসেছি তা পালন করি। এই বাজেট প্রণয়নের সময়েও আমাদের যে নির্বাচনী ইশতেহার, সেটির অগ্রাধিকার এবং মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের যে দিক নির্দেশনা সেটাও বাজেটে উঠে এসেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ বাজেট আমরা দিয়েছি। বাজেটের আকার ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। আমাদের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৬.৭৫ শতাংশ। বাজেটের ওপর এ পর্যন্ত বিরোধীদলীয় নেতাসহ ২৩৪ জন সংসদ সদস্য বক্তব্য রেখে বাজেটের ওপর আলোকপাত করেছেন এবং পরামর্শ দিয়েছেন। এর বাইরে অনেকেই বাজেট নিয়ে আলোচনা করেছেন। বাজেট নিয়ে আলোচনা সমালোচনা যে যাই করুক সকলকেই আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। কেউ কেউ বাজেটকে উচ্চাভিলাষী বলেছেন, কেউ বলেছে ঘাটতি বাজেট। কিছুক্ষণ আগে বিরোধীদলীয় নেতা বললেন এই বাজেট বাস্তবায়ন সম্ভব নয়, আমাদের প্রবৃদ্ধির হার কমাতে হবে, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি কমাতে হবে ইত্যাদি। এই চ্যালেঞ্জ নেওয়ার মতো সক্ষমতা আছে কি না…. চ্যালেঞ্জ নেওয়াটাই তো আমাদের কাজ। চ্যালেঞ্জ নিয়েই তো আমরা চলতে চাই, চ্যালেঞ্জ নিয়েই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ বাংলাদেশ বিশ্বে মর্যাদার আসনে আসীন হয়েছে। আজকের বাংলাদেশ হাত পেতে ভিক্ষা চাওয়ার বাংলাদেশ না। আমরা উন্নয়নের পরিকল্পনা নিয়ে তা বাস্তবায়ন করি এবং মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করি। যারা পরিবর্তনগুলো দেখেন না তাদের বলবো গ্রামে যান। গ্রামের মানুষের যে ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে সেটা এরশাদ সাহেবের উত্তরবঙ্গে যে মঙ্গা নেই, সেটাও দেখবেন। কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, রংপুর, গাইবান্ধাসহ বিভিন্ন এলকায় দুর্ভিক্ষ লেগেই থাকতো। সেখানে ছুটে গেছি, মানুষকে খাদ্য সহায়তা দিয়েছি। গ্রামের পর গ্রামে গিয়েছি, মানুষের শরীরে মাংস ছিল না চামড়া আর হাড় ছাড়া। এখন মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে পেরেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, সবকিছু মোকাবেলা করে বাংলাদেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। অব্যাহত রয়েছে প্রবৃদ্ধি। ২০৪১ সালের মধ্যে বিশ্বে যে পরিবর্তন আসবে তার সাথে সামঞ্জস্য রেখে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে বলে প্রত্যাশা তার। এই সময়ের মধ্যে স্মার্ট মানবসম্পদ গড়ে তুলতে সরকার সবধরণের ব্যবস্থা নিচ্ছে বলেও জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, নারী পুরুষ সমানভাবে না এগোলে একটি দেশ উন্নত হতে পারেনা বা এগোতে পারে না। মেট্রোরেলের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিরোধীরা মেট্রোরেলের বিরোধীতা করেছিলেন। তারা বলেছিলেন, কোন দরকার ছিল না মেট্রোরেলের। এখন বুদ্ধিজীবীরা কি বলে মেট্রোরেল নিয়ে। দেখা হলে জিজ্ঞেস করতে চান তিনি। চলমান প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হলে ২০২৩ সালের মধ্যে ঢাকার মধ্যে কোন যানজট থাকবেনা। প্রতিটি বিভাগীয় শহরে মেট্রোরেল সম্প্রসারণ করার পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানান তিনি। এছাড়া ফেনী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত সরকারের মেরিন ড্রাইভ নির্মাণ পরিকল্পনাও তুলে ধরেন তিনি। উল্লেখ করেন মিরসরাই থেকে টেকনাফ পর্যন্ত রেল করার পরিকল্পনাও রয়েছে।