ঢাকা ০১:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

দেশের বন্যা পরিস্থিতি অবনতির শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৫:৪০:১৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ জুলাই ২০২৪
  • / ৩৮০ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

উজানের ঢল আর অতিবৃষ্টিতে সিলেট বিভাগের চার জেলায় বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে। ফলে দুর্ভোগ কমছে না বানভাসি মানুষের। এদিকে, বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে উত্তরে। এই অবস্থায় আগামী ২৪ ঘণ্টায় কুড়িগ্রামসহ পাঁচ জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি হতে পারে। শুক্রবার (৫ জুলাই) বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এদিকে, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম ও জামালপুরে অবনতি হয়েছে বন্যা পরিস্থিতির। নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ায় দুর্ভোগে পানিবন্দি লাখো মানুষ। তবে লালমনিরহাট ও ফেনীতে বানের পানি কমেছে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত ধীরগতিতে বৃদ্ধি পেতে পারে। পাশাপাশি গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। এ ছাড়া দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদীসমূহের পানি সমতল সার্বিকভাবে হ্রাস পাচ্ছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আবহাওয়া সংস্থাসমূহের তথ্য অনুযায়ী দেশের উত্তরাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারী থেকে অতি ভারী এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। এই অবস্থায় আগামী ২৪ ঘণ্টায় কুড়িগ্রাম, জামালপুর, গাইবান্ধা, বগুড়া, টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জ জেলার ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদী সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি হতে পারে। পাশাপাশি আগামী ৪৮ ঘণ্টায় পদ্মা নদীর গোয়ালন্দ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।

তবে আগামী ২৪ ঘণ্টায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন নিম্নাঞ্চলের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হতে পারে জানিয়ে এতে আরও বলা হয়, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চলের তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার ও ঘাঘট নদীসমূহের পানি সমতল সময় বিশেষে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে। এর ফলে তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীসমূহের পানি সমতল কিছু পয়েন্টে স্বল্পমেয়াদে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে এবং ঘাঘট নদী সংলগ্ন গাইবান্ধা জেলার কতিপয় নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা অবনতি হতে পারে।

এ ছাড়া আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চল ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের যমুনাশ্বরী, করতোয়া, বাঙালি, পুর্নভবা, টাঙ্গন, ইছামতি-যমুনা, আত্রাই, মহানন্দা ও ছোট যমুনা নদীসমূহের পানি সমতল সময় বিশেষে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

উজানে অতিবৃষ্টির প্রভাবে সিলেটের নদনদীগুলোর পানি বেড়েই চলেছে। সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি সব পয়েন্টে বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে। জকিগঞ্জ ও বিয়ানীবাজারে কুশিয়ারা নদীর কয়েকটি স্থানে বাধ ভেঙে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। সিলেট নগরীসহ সবকটি উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা জলাবদ্ধ হয়ে আছে। বাড়িঘর ডুবে যাওয়ায় অনেক বাসিন্দা আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন।

মৌলভীবাজারের সবকটি উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত রয়েছে। দ্বিতীয় দফায় বন্যায় পানিবন্দি তিন লাখের বেশি মানুষ। রাস্তাঘাট ডুবে বিঘিœত হচ্ছে যোগাযোগ।

আগামী দু’দিন বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতির আশঙ্কা আছে বলে জানিয়েছেন মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড এর নির্বাহী প্রকৌশলী জাবেদ ইকবাল।

হবিগঞ্জে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ উপচে প্লাবিত হয়েছে নিুাঞ্চল। রাস্তাঘাট ও বাড়িঘর ডুবে আছে।সুনামগঞ্জের উচু এলাকাগুলো থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। তবে এখনো তাহিরপুর, দোয়ারাবাজার, বিশ্বম্ভরপুর ও সদর উপজেলার নিচু এলাকা ডুবে আছে।

গাইবান্ধার বন্যার আরো অবনতি হয়েছে। সদর, ফুলছড়ি, সাঘাটা ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ৫০ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। জামালপুরে যমুনার পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে। নতুন করে প্লাবিত হয়েছে মেলান্দহ ও মাদারগঞ্জ উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন।

কুড়িগ্রামে সবগুলো নদ-নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। ফলে বহু বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ আছে বলে জানিয়েছে বানভাসী মানুষ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধী । লালমনিরহাটে তিস্তা ও ধরলায় পানি কমতে শুরু করলেও শুরু হয়েছে নদী ভাঙন। ফেনীর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনীয়া নদীর পানি কমায় ফুলগাজী ও পরশুরামে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ শাহীনুল ইসলাম জানান, ঢাকায় আপাতত ভারী ও টানা বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। তবে, এই সপ্তাহে বৃষ্টির পরিমাণ কমে আসলেও আগামী সপ্তাহে আবারও বৃদ্ধি পাবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

দেশের বন্যা পরিস্থিতি অবনতির শঙ্কা

আপডেট সময় : ০৫:৪০:১৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ জুলাই ২০২৪

উজানের ঢল আর অতিবৃষ্টিতে সিলেট বিভাগের চার জেলায় বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে। ফলে দুর্ভোগ কমছে না বানভাসি মানুষের। এদিকে, বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে উত্তরে। এই অবস্থায় আগামী ২৪ ঘণ্টায় কুড়িগ্রামসহ পাঁচ জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি হতে পারে। শুক্রবার (৫ জুলাই) বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এদিকে, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম ও জামালপুরে অবনতি হয়েছে বন্যা পরিস্থিতির। নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ায় দুর্ভোগে পানিবন্দি লাখো মানুষ। তবে লালমনিরহাট ও ফেনীতে বানের পানি কমেছে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত ধীরগতিতে বৃদ্ধি পেতে পারে। পাশাপাশি গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। এ ছাড়া দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদীসমূহের পানি সমতল সার্বিকভাবে হ্রাস পাচ্ছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আবহাওয়া সংস্থাসমূহের তথ্য অনুযায়ী দেশের উত্তরাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারী থেকে অতি ভারী এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। এই অবস্থায় আগামী ২৪ ঘণ্টায় কুড়িগ্রাম, জামালপুর, গাইবান্ধা, বগুড়া, টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জ জেলার ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদী সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি হতে পারে। পাশাপাশি আগামী ৪৮ ঘণ্টায় পদ্মা নদীর গোয়ালন্দ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।

তবে আগামী ২৪ ঘণ্টায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন নিম্নাঞ্চলের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হতে পারে জানিয়ে এতে আরও বলা হয়, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চলের তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার ও ঘাঘট নদীসমূহের পানি সমতল সময় বিশেষে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে। এর ফলে তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীসমূহের পানি সমতল কিছু পয়েন্টে স্বল্পমেয়াদে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে এবং ঘাঘট নদী সংলগ্ন গাইবান্ধা জেলার কতিপয় নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা অবনতি হতে পারে।

এ ছাড়া আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চল ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের যমুনাশ্বরী, করতোয়া, বাঙালি, পুর্নভবা, টাঙ্গন, ইছামতি-যমুনা, আত্রাই, মহানন্দা ও ছোট যমুনা নদীসমূহের পানি সমতল সময় বিশেষে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

উজানে অতিবৃষ্টির প্রভাবে সিলেটের নদনদীগুলোর পানি বেড়েই চলেছে। সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি সব পয়েন্টে বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে। জকিগঞ্জ ও বিয়ানীবাজারে কুশিয়ারা নদীর কয়েকটি স্থানে বাধ ভেঙে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। সিলেট নগরীসহ সবকটি উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা জলাবদ্ধ হয়ে আছে। বাড়িঘর ডুবে যাওয়ায় অনেক বাসিন্দা আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন।

মৌলভীবাজারের সবকটি উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত রয়েছে। দ্বিতীয় দফায় বন্যায় পানিবন্দি তিন লাখের বেশি মানুষ। রাস্তাঘাট ডুবে বিঘিœত হচ্ছে যোগাযোগ।

আগামী দু’দিন বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতির আশঙ্কা আছে বলে জানিয়েছেন মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড এর নির্বাহী প্রকৌশলী জাবেদ ইকবাল।

হবিগঞ্জে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ উপচে প্লাবিত হয়েছে নিুাঞ্চল। রাস্তাঘাট ও বাড়িঘর ডুবে আছে।সুনামগঞ্জের উচু এলাকাগুলো থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। তবে এখনো তাহিরপুর, দোয়ারাবাজার, বিশ্বম্ভরপুর ও সদর উপজেলার নিচু এলাকা ডুবে আছে।

গাইবান্ধার বন্যার আরো অবনতি হয়েছে। সদর, ফুলছড়ি, সাঘাটা ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ৫০ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। জামালপুরে যমুনার পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে। নতুন করে প্লাবিত হয়েছে মেলান্দহ ও মাদারগঞ্জ উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন।

কুড়িগ্রামে সবগুলো নদ-নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। ফলে বহু বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ আছে বলে জানিয়েছে বানভাসী মানুষ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধী । লালমনিরহাটে তিস্তা ও ধরলায় পানি কমতে শুরু করলেও শুরু হয়েছে নদী ভাঙন। ফেনীর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনীয়া নদীর পানি কমায় ফুলগাজী ও পরশুরামে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ শাহীনুল ইসলাম জানান, ঢাকায় আপাতত ভারী ও টানা বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। তবে, এই সপ্তাহে বৃষ্টির পরিমাণ কমে আসলেও আগামী সপ্তাহে আবারও বৃদ্ধি পাবে।