ইউরো কাপে জার্মানিকে হারিয়ে সেমিফাইনালে স্পেন
- আপডেট সময় : ০২:১৭:২৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ জুলাই ২০২৪
- / ৩৬৯ বার পড়া হয়েছে
ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ের একদম শেষ মুহূর্তের খেলা চলছে। ২-১ গোলে পিছিয়ে থাকা জার্মানি খুব করে চাচ্ছে সমতায় ফিরিয়ে ম্যাচটা টাইব্রেকারে নিয়ে যেতে। বক্সের বাইরে থেকে ফ্রি কিক পায় ইউলিয়ান নাগলমানের দল। ফ্রি কিক নিতে এগিয়ে যান দলটির মিডফিল্ডার টনি ক্রুস। যিনি কিনা অবসর ভেঙে নতুন করে ফিরে এসেছিলেন জাতীয় দলে। স্পেন ম্যাচের আগে জানিয়েছিলেন, এবার শিরোপা জেতার সম্ভাবনা না থাকলে তিনি ফিরে আসতেন না।
শিরোপা জেতা তো পরের ব্যাপার, স্পেনের বিপক্ষে ম্যাচে টিকে থাকতে ওই শেষ সময়ের ফ্রি-কিকটাই ছিল শেষ ভরসা। ৩৪ বছর বয়সী ক্রুস ফি-কিক নিলেন। সেটি একটু লাফিয়ে সহজেই মুঠোবন্দি করলেন স্প্যানিশ গোলকিপার উনাই সিমন। যেন জার্মানির স্বপ্নটাকেও থামিয়ে দিলেন। সিমন বলটা ধরতেই ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজালেন রেফারি। উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়লেন স্প্যানিশরা। অন্যদিকে ঘরের মাঠে স্বপ্নভঙ্গ হয়ে ইউরোর প্রতীক্ষা আরও বাড়ল জার্মানদের। ম্যাচ শেষে ক্রুস জানিয়েছেন, পরের রাউন্ডের এত কাছাকাছি থেকেও বিদায় নেওয়াটা খুব কঠিন।
এ টুর্নামেন্টে জার্মানি শেষবার শিরোপা জিতেছিল ১৯৯৬ সালে। এরপর পেরিয়ে গেছে ২৮ বছর। দীর্ঘ এ শিরোপা খরার মাঝে অবশ্য ২০১৪ বিশ্বকাপ জিতেছে জার্মানি। যদিও পরের দুটি বৈশ্বিক টুর্নামেন্টের গ্রুপ পর্বই পেরোতে পারেননি জার্মানরা। সর্বশেষ ইউরোতেও বিদায় নিয়েছিল শেষ ষোলো থেকেই। তবে এবার ঘরের মাঠে নতুন জার্মানিরই দেখা মেলছিল।
গ্রুপ পর্বে স্কটল্যান্ডকে ৫-১ গোলে হারিয়ে ইউরো শিরোপা পুনরুদ্ধারের মিশন শুরু করেছিল জার্মানি। হাঙ্গেরির বিপক্ষেষে ২-০ গোলে জয়ের পর শেষ ম্যাচে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র- গ্রুপ সেরা হয়ে পরের রাউন্ডে এসে ডেনমার্ককে শেষ ষোলোতে ২-০ গোলে হারায় নাগলসমানের দল। প্রতিটা ম্যাচে এবার জার্মানরা এতটাই আধিপত্য বিস্তার করে খেলছিল যে, অনেকেই শিরোপা দেখছিলেন জামাল মুসিয়ালা-লেরয় সানেদের হাতে। কিন্তু গতকাল স্প্যানিশদের কাছে হেরে সে স্বপ্ন ভেঙে গেছে জার্মানদের। একই সঙ্গে প্রত্যাবর্তনের পর শেষটা মধুর হল না ক্রুসের।
গতকাল ম্যাচের ৫১ মিনিটে স্পেনের হয়ে প্রথম গোলটি করেছিলেন দানি ওলমো। এরপর ম্যাচে ফিরতে মরিয়া জার্মানি টানা আক্রমণ চালিয়ে যায়। নাগলমানের দল কতটা আক্রমণাত্মক খেলেছে, সেটা বোঝার জন্য একটা পরিসংখ্যানের দিকে তাকালেই চলে। ওলমোর গোলের পর স্প্যানিশরা জার্মান গোলমুখে শট নিয়েছে মাত্র একটি, যেখানে জার্মানি শট নিয়েছে ১১টি! এরপরও কাঙ্ক্ষিত গোলটা পাচ্ছিলেন না মুসিয়ালারা। তবে ম্যাচের নির্ধারিত সময়ের এক মিনিট বাকি থাকতে জার্মানিকে সমতায় ফেরান বদলি নামা ফ্লোরিয়ান ভিরৎজ।
এতে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানেও আধিপত্য বিস্তার করে জার্মানি। কিন্তু ম্যাচের ১১৯ মিনিটে জার্মান সমর্থকদের স্তব্ধ করেন মিকেল মেরিনো। ওলমোর ক্রস থেকে গোল করে স্প্যানিশদের সেমিফাইনালে তোলেন রেয়াল সোসিয়েদাদের এ মিডফিল্ডার।
বাকি সময়ে জার্মানি চেষ্টা চালিয়ে গেলেও শেষ পর্যন্ত আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি। এতে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শেষটা হতাশারই হলো ক্রুসের। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে ৩৪ বছর বয়সী এ মিডফিল্ডারও জানিয়েছেন, এভাবে বিদায় নেওয়া কঠিন।
ক্রুসের ভাষায়, ‘আমি বলব না, সবচেয়ে নির্দয় ম্যাচ ছিল এটি। তবে এমন একটি ম্যাচ যেখানে আমরা সবকিছু ঢেলে দিয়েছি। আমরা হারতে চাইনি। আমরা বড় কিছু অর্জন করতে চেয়েছিলাম এবং সেই স্বপ্ন এখন শেষ হয়ে গেছে। আমরা বুঝতে পারব যে, টুর্নামেন্টে ভালো খেলেছি, কিন্তু পরের রাউন্ডে পৌঁছানোর এত কাছাকাছি থেকেও বিদায় নেওয়াটা কঠিন।’
এদিকে আগামী মঙ্গলবার মিউনিখের সেমিফাইনালে ফ্রান্সের মুখোমুখি হবে স্পেন। গতকাল রাতে দ্বিতীয় কোয়ার্টার ফাইনালে পতুর্গালকে টাইব্রেকারে হারিয়েছে ফ্রান্স।