রোনালদোর শেষটা রাঙাতে দিল না ফ্রান্স
- আপডেট সময় : ০২:২০:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ জুলাই ২০২৪
- / ৩৭৫ বার পড়া হয়েছে
এটাই হতে যাচ্ছে ক্যারিয়ারের শেষ ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ- এমন ঘোষণা আগেই দিয়েছিলেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। সে হিসেবে শূন্য হাতেই টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিলেন পর্তুগিজ মহাতারকা। গতকাল জার্মানির হার্মবুগে ফ্রান্সের বিপক্ষে নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ে গোলশূন্য ড্র হলে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানে পর্তুগালকে ৫-৩ ব্যবধানে হারিয়ে টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে ওঠে ফ্রান্স। অন্যদিকে স্বপ্নভঙ্গের বেদনা নিয়ে শেষ আট থেকেই বিদায় নিশ্চিত হয় পর্তুগালের।
অবশ্য ফ্রান্সের জন্য গতকালের ম্যাচটা ছিল প্রতিশোধের। এর আগে ২০১৬ ইউরোর ফাইনালে পর্তুগালের কাছে হেরেই শিরোপা হাতছাড়া করেছিল ফরাসিরা। গতকাল রোনালদোদের শেষ আটে বিদায় নিশ্চিত করে এক অর্থে মধুর প্রতিশোধ নেওয়া হলো দিদিয়ের দেশঁর শিষ্যদের।
এবার যে এমবাপ্পেরা গোল করতে পেরেছেন, এমন নয়। বরং পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে যেভাবে এগিয়েছ দেশঁর দল, গতকালও সেটারই পুনরাবৃত্তি হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো ওপেন প্লে গোল ছাড়াই টুর্নামেন্টের শেষ চারে উঠল ফ্রান্স।
এদিকে শেষ ইউরোকে রাঙাতে পারলেন না রোনালদো। রাঙানো তো দূরের কথা, এবার পুরো টুর্নামেন্টে ৫ ম্যাচে ২৩ শট নিয়েও কোনো গোল করতে পারেননি পর্তুগিজ কিংবদন্তি। এমনকি প্রতি ৯০ মিনিটে গড়ে বলে টাচ করেছেন মোটে ২৯ বার। এমন পরিসংখ্যান আসলে রোনালদোর নামের সঙ্গে যায় না।
অন্যদিকে গোল ভাগ্য যে ফ্রান্সের দিকেও মুখ তুলে তাকাচ্ছে না। টুর্নামেন্টে এ পর্যন্ত পেনাল্টি বাদে ৮৬টি শট নিয়েও কোনো গোল করতে পারেননি ফরাসিরা। তবে পেনাল্টি বাদে প্রতিপক্ষকেও গোল করতে দেয়নি দেশঁর শিষ্যরা। গতকালও সেটাই হয়েছে।
ম্যাড়মেড়ে প্রথমার্ধে দুদলের কেউই তেমন আক্রমণ করতে পারেনি। ম্যাচের ২১তম মিনিটে থিও এরনান্দেস যদিও দূর পাল্লার একটি শট নিয়েছিলেন, কিন্তু সেটি ঠেকাতে বেগ পেতে হয়নি দিয়েগো কস্তাকে। দুমিনিট পরে বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন এমবাপ্পে, কিন্তু সে যাত্রায়ও পর্তুগালকে উদ্ধার করেন ২৪ বছর বয়সী গোলকিপার।
প্রথমার্ধে দুদলের কেউই বলার মতো আক্রমণ করতে পারেনি। তবে দ্বিতীয়ার্ধে খেলার গতি কিছুটা বাড়ে। ম্যাচের ৫০তম মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে জোরালো শট নিয়েছিলেন এমবাপ্পে। কিন্তু সেটা ছিল পর্তুগিজ গোলকিপার বরাবর।
এরপর ধীরে ধীরে নিজেদের গুছিয়ে ওঠে পর্তুগিজরা। একের পর এক আক্রমণ চালাতে থাকে ফরাসি গোলমুখে। ম্যাচের ৬১ মিনিটে ব্রুনো ফের্নান্দেস প্রায় গোল পেয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেটি রুখে দেন ফরাসি গোলকিপার মাইক মিয়াঁ। দুমিনিট পরে সুযোগ হাতছাড়া করেন ভিতিনিয়ার। ৭৪ মিনিটে দেম্বেলের ২৫ গজ দূর থেকে নেওয়া শট পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। এভাবে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণেও কোন দল নির্ধারিত সময়ে গোল পায়নি। অতিরিক্ত সময়েও গোলের দেখা না পেলে ফলাফল নির্ধারণে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে।
সেখানে কিছুটা এগিয়ে ছিল পর্তুগালই। পরিসংখ্যান বলছে, বড় কোনো টুর্নামেন্টে সর্বশেষ ৫ টাইব্রেকারের ৪টিতেই জিতেছে পর্তুগিজরা। এর মধ্যে আগের ম্যাচেই দিয়েগো কস্তার অবিশ্বাস্য তিন সেভ। অন্যদিকে সর্বশেষ তিন টাইব্রেকারের তিনটিই হেরেছে দেশঁর দল।
তবে গতকাল সব হিসাবনিকাশ পাল্টে যায়। পর্তুগালের বড় ভরসা কস্তা কোনো সেভ করতে পারেননি। বল ঠেকাতে পারেননি ফরাসি গোলকিপারও। তবে জোয়াও ফেলিক্সের নেওয়া তৃতীয় শটটি পোস্টে লেগে মিস হলে, সেটিই ম্যাচের ব্যবধান গড়ে দেয়।
আগামী মঙ্গলবার মিউনিখে প্রথম সেমিফাইনালে স্পেনের মুখোমুখি হবে ফ্রান্স। গতকাল প্রথম কোয়ার্টার ফাইনালে জার্মানিকে ২-১ গোলে হারিয়ে শেষ চারের টিকিট নিশ্চিত করেছে স্প্যানিশরা।