ঢাকা ০২:৫২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫, ১৮ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

দোহায় গাজা নিয়ে বৈঠকে যোগ দেয়নি হামাস

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০২:০৫:২০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৪
  • / ৩৭১ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

কাতারের দোহায় শুরু হওয়া যুদ্ধবিরতির প্রথম দিনের আলোচনায় অংশ নেয়নি ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার শাসক দল হামাস। এ অবস্থাতেই আজ শুক্রবার দ্বিতীয় দিনের মতো ওই বৈঠক আবার শুরু হচ্ছে।

বৈঠকে অংশ নিয়ে যুক্তবিরতির চেষ্টা করা যুক্তরাষ্ট্রের এক মধ্যস্থতাকারী রয়টার্সকে জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতি নিয়ে বৃহস্পতিবার প্রথম দিনের বৈঠক হয়েছে। শুক্রবার ফের বৈঠক হবে। তবে হাামাস এতে অংশ নেয়নি।

ইসরায়েলি হামলা এখনও অব্যাহত আছে গাজায়। হামাসের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ হিসাবে, নিহতের সংখ্যা ৪০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে কোনো ধরনের আলোচনায় অংশ নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে হামাস।

দোহায় চলা বৈঠক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেছেন, প্রথম দিনের বৈঠকে ‘গঠনমূলক আলোচনা’ হয়েছে।

হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কিরবি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। বাকি বাধাগুলো অতিক্রম করা যেতে পারে এবং আমাদের অবশ্যই এই প্রক্রিয়াটি বন্ধ করতে হবে।’

এদিকে গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মধ্যস্থতাকারীদের আলোচনা চলার মধ্যেই উত্তর গাজা উপত্যকার জাবালিয়ায় একটি বাড়িতে বৃহস্পতিবার রাতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ছয় ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

টেলিগ্রামে বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে হামাসের পলিটব্যুরোর সদস্য হোসাম বদরান বলেন, ‘ইসরায়েলের অব্যাহত অভিযান যুদ্ধবিরতির অগ্রগতির পথে বাধা। হামাসের কর্মকর্তারা বৃহস্পতিবারের আলোচনায় যোগ দেননি।’

বদরান বলেন, ‘আলোচনা অবশ্যই পূর্বে গৃহীত একটি কাঠামো চুক্তি বাস্তবায়নের দিকে যেতে হবে। সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতি, ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহার, বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের প্রত্যাবর্তন এবং জিম্মি বিনিময় চুক্তি হতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘দোহায় যে আলোচনা হচ্ছে, সেদিকে হামাস দৃষ্টি রাখছে। গাজায় আগ্রাসন বন্ধে একটি কৌশলগত দৃষ্টিকোণ থেকে যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি বিনিময় চায় হামাস।’

মার্কিন এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, মধ্যস্থতাকারীরা বৈঠকের পর হামাসের দোহা-ভিত্তিক আলোচনাকারী দলের সাথে পরামর্শ করার পরিকল্পনা করছেন।

এরআগে বৃহস্পতিবার গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে দোহায় নতুন করে আলোচনায় বসেন মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর নেতারা। তবে তার আগমুহূর্তে এক হামাস নেতা জানান, চুক্তিটি বাস্তবায়নের জন্য একটি রোডম্যাপ চেয়েছিল হামাস। ইসরায়েলকে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে দেওয়ার জন্য যে আলোচনা, তাতে তারা অংশ নেবেন না।

গত মে মাসের শেষ দিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যে প্রস্তাব দিয়েছিলেন তার ওপর ভিত্তি করেই যুদ্ধবিরতির রোডম্যাপটি হওয়া উচিত এবং ইসরায়েলকে নতুন শর্ত যোগ করার জন্য অভিযুক্ত করা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, হামাসই শর্ত পরিবর্তনের দাবি করেছে।

বিবিসি লিখেছে, হামাস ছাড়াই দোহায় আলোচনা শুরু হয়েছে। আমেরিকা, মিশর এবং কাতারের মধ্যস্থতাকারীরা বলছেন, তারা পরিকল্পনা তৈরি করবেন, এতেই অবশিষ্ট সমস্যাগুলো সমাধান হবে।

গত বছরের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। এর প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী গাজায় হামাসকে ধ্বংস করার জন্য অভিযান শুরু করে। ইসরায়েলে নিহতের সংখ্যা ১২০০– এর মতো। ওই সময় ২৫১ জনকে জিম্মি করে হামাস। আর গাজায় নিহতের সংখ্যা ৪০ হাজারেরও বেশি।

যুদ্ধ শুরুর পর এখন পর্যন্ত বেশ কয়েক বার চেষ্টা হয়েছে যুদ্ধবিরতি নিয়ে স্থায়ী চুক্তির। মাঝে সাময়িক যুদ্ধবিরতি থাকলেও শেষ পর্যন্ত এ নিয়ে কার্যত কোনো সমাধান আসেনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

দোহায় গাজা নিয়ে বৈঠকে যোগ দেয়নি হামাস

আপডেট সময় : ০২:০৫:২০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৪

কাতারের দোহায় শুরু হওয়া যুদ্ধবিরতির প্রথম দিনের আলোচনায় অংশ নেয়নি ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার শাসক দল হামাস। এ অবস্থাতেই আজ শুক্রবার দ্বিতীয় দিনের মতো ওই বৈঠক আবার শুরু হচ্ছে।

বৈঠকে অংশ নিয়ে যুক্তবিরতির চেষ্টা করা যুক্তরাষ্ট্রের এক মধ্যস্থতাকারী রয়টার্সকে জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতি নিয়ে বৃহস্পতিবার প্রথম দিনের বৈঠক হয়েছে। শুক্রবার ফের বৈঠক হবে। তবে হাামাস এতে অংশ নেয়নি।

ইসরায়েলি হামলা এখনও অব্যাহত আছে গাজায়। হামাসের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ হিসাবে, নিহতের সংখ্যা ৪০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে কোনো ধরনের আলোচনায় অংশ নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে হামাস।

দোহায় চলা বৈঠক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেছেন, প্রথম দিনের বৈঠকে ‘গঠনমূলক আলোচনা’ হয়েছে।

হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কিরবি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। বাকি বাধাগুলো অতিক্রম করা যেতে পারে এবং আমাদের অবশ্যই এই প্রক্রিয়াটি বন্ধ করতে হবে।’

এদিকে গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মধ্যস্থতাকারীদের আলোচনা চলার মধ্যেই উত্তর গাজা উপত্যকার জাবালিয়ায় একটি বাড়িতে বৃহস্পতিবার রাতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ছয় ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

টেলিগ্রামে বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে হামাসের পলিটব্যুরোর সদস্য হোসাম বদরান বলেন, ‘ইসরায়েলের অব্যাহত অভিযান যুদ্ধবিরতির অগ্রগতির পথে বাধা। হামাসের কর্মকর্তারা বৃহস্পতিবারের আলোচনায় যোগ দেননি।’

বদরান বলেন, ‘আলোচনা অবশ্যই পূর্বে গৃহীত একটি কাঠামো চুক্তি বাস্তবায়নের দিকে যেতে হবে। সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতি, ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহার, বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের প্রত্যাবর্তন এবং জিম্মি বিনিময় চুক্তি হতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘দোহায় যে আলোচনা হচ্ছে, সেদিকে হামাস দৃষ্টি রাখছে। গাজায় আগ্রাসন বন্ধে একটি কৌশলগত দৃষ্টিকোণ থেকে যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি বিনিময় চায় হামাস।’

মার্কিন এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, মধ্যস্থতাকারীরা বৈঠকের পর হামাসের দোহা-ভিত্তিক আলোচনাকারী দলের সাথে পরামর্শ করার পরিকল্পনা করছেন।

এরআগে বৃহস্পতিবার গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে দোহায় নতুন করে আলোচনায় বসেন মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর নেতারা। তবে তার আগমুহূর্তে এক হামাস নেতা জানান, চুক্তিটি বাস্তবায়নের জন্য একটি রোডম্যাপ চেয়েছিল হামাস। ইসরায়েলকে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে দেওয়ার জন্য যে আলোচনা, তাতে তারা অংশ নেবেন না।

গত মে মাসের শেষ দিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যে প্রস্তাব দিয়েছিলেন তার ওপর ভিত্তি করেই যুদ্ধবিরতির রোডম্যাপটি হওয়া উচিত এবং ইসরায়েলকে নতুন শর্ত যোগ করার জন্য অভিযুক্ত করা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, হামাসই শর্ত পরিবর্তনের দাবি করেছে।

বিবিসি লিখেছে, হামাস ছাড়াই দোহায় আলোচনা শুরু হয়েছে। আমেরিকা, মিশর এবং কাতারের মধ্যস্থতাকারীরা বলছেন, তারা পরিকল্পনা তৈরি করবেন, এতেই অবশিষ্ট সমস্যাগুলো সমাধান হবে।

গত বছরের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। এর প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী গাজায় হামাসকে ধ্বংস করার জন্য অভিযান শুরু করে। ইসরায়েলে নিহতের সংখ্যা ১২০০– এর মতো। ওই সময় ২৫১ জনকে জিম্মি করে হামাস। আর গাজায় নিহতের সংখ্যা ৪০ হাজারেরও বেশি।

যুদ্ধ শুরুর পর এখন পর্যন্ত বেশ কয়েক বার চেষ্টা হয়েছে যুদ্ধবিরতি নিয়ে স্থায়ী চুক্তির। মাঝে সাময়িক যুদ্ধবিরতি থাকলেও শেষ পর্যন্ত এ নিয়ে কার্যত কোনো সমাধান আসেনি।