দুর্যোগকালীন সময়ে নতুন এক মানবিক বাংলাদেশ
- আপডেট সময় : ০১:৩১:৪৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৪
- / ৩৬৩ বার পড়া হয়েছে
হঠাৎ দেখা দেয়া স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় একতাবদ্ধ হয়েছেন দেশের মানুষ। এ যেন নতুন এক মানবিক বাংলাদেশ। দুর্যোগে বন্যার্তদের জন্য সবটুকু দিয়ে কাজ করছেন সাধারণ মানুষ। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সাহায্য করছেন বন্যার্তদের। ইঞ্জিনচালিত নৌকা নিয়ে চরম ঝুকিতে থাকাদের উদ্ধার করছেন। সারাদেশ থেকে তহবিল সংগ্রহ করে পৌছে দেয়া হচ্ছে ত্রাণ। সনাতনধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মী উৎসব দূগাপূজার অর্থ দেয়া হচ্ছে সহযোগিতা হিসেবে। বন্যায় দুর্গত মানুষের সাহায্যের করা হয়েছে কনসার্ট।
গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার বন্যাপরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করলে, সবার আগে প্রয়োজন হয় আটকে পড়াদের উদ্ধার। সেসময় অনেকেই ইঞ্জিনচালিত নৌকার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আবেদন জানান। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে ঝাপিয়ে পড়ে সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে চট্টগ্রাম থেকে বিভিন্ন সেচ্ছাসেবী সংগঠন ও সাধারণ মানুষ ট্রাকে করে স্পিডবোট, ইঞ্জিনচালিত নৌকা নিয়ে আসেন। ফেনী, নোয়াখালি ও কুমিল্লায় শুরু করেন উদ্ধার কার্যক্রম। এতে প্রাণে বাঁচে অনেক আটকে পড়া মানুষ।
আর কয়েকদিন বাদেই সনাতনধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মী উৎসব দূর্গাপূজা। সেই উৎসবকে সামনে রেখে প্রস্তুত হচ্ছিলেন তাঁরা। জাতির এই সংকটকালীন সময়ে উৎসবের অর্থ সহায়তা দিয়ে পাঠানো হচ্ছে বিভিন্ন বন্যাদুর্গত অঞ্চলে। বন্যাদুর্গতদের অর্থ সহায়তা পাঠিয়েছে বরিশাল ও কুমিল্লার বেশ কয়েকটি মন্দির কমিটি।
দেশজুড়ে সংগ্রহ করা হচ্ছে তহবিল। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র অন্দোলনের উদ্যোগে চলছে তহবিল সংগ্রহ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) ত্রাণসামগ্রী নিয়ে আসছেন নানান শ্রেণি-পেশার মানুষ। টিএসসি এলাকায় দেখা যায়, সব শ্রেণীর মানুষ ট্রাক, পিকআপ, ভ্যান, রিকশা, প্রাইভেটকার ভর্তি করে বন্যার্তদের জন্য ত্রাণসামগ্রী নিয়ে আসছেন।
ত্রাণসামগ্রীতে টিএসসি ক্যাফেটেরিয়া, গেস্টরুম ভর্তি হয়ে যাওয়ায় সেন্ট্রাল অডিটোরিয়ামসহ টিএসসির বারান্দায় রাখা হচ্ছে। পাশাপাশি নগদ টাকাও উঠছে। ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে আসা গাড়ির লম্বা লাইন লেগে গেছে টিএসসি এলাকায়। ত্রাণ সামগ্রী প্যাকেজিংয়ে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে স্কুল-কলেজের তিন শতাধিক শিক্ষার্থী কাজ করছেন।
বন্যাকবলিত এলাকায় ফ্রি টকটাইম এবং ইন্টারনেট সুবিধার ঘোষণা দিয়েছে দেশের অপারেটররা। সবার আগে তারাই বন্যার্তদের জন্য সহযোগিতামূলক উদ্যোগ নিয়েছে। দেশের ৪টি বেসরকারি অপারেটর কোম্পানি গ্রামীণফোন, বাংলালিংক, রবি এবং এয়ারটেল এবং সরকারি অপারেটর কোম্পানি টেলিটকের পক্ষ থেকে এমন সুবিধা দেওয়া হয়েছে।
বন্যার্তদের সহযোগীতায় সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা, সরকারি-বেসরকারী অনেক চাকুরীজীবিরা তাদের ১ দিনের বেতনের সমপরিমাণ অর্থ প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে দান করেছেন।
বিভিন্ন সেচ্ছাসেবী সংগঠন বন্যার্তদের সহযোগীতায় ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, তারা ৫০০ টন ত্রাণ দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। দেশজুড়ে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন সাধারণ মানুষ ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।