ঢাকা ০২:৫৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

পুলিশের মনোবল ফেরানোই বড় চ্যালেঞ্জ

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৩:২৪:৫০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ৩৫৯ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

রাজধানীতে হামলা আর আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত বেশিরভাগ থানার কার্যক্রম চলছে স্বল্প পরিসরে। অন্য থানায় ছোট কক্ষে কাজ করছেন কর্মকর্তারা। নিজস্ব ভবনে চলছে সংস্কার কাজ। গাড়ি, পোশাক আর নথি পুড়ে যাওয়ায়, পুরোদমে কাজ শুরু হতে সময় লাগবে। তবে পুলিশের মনোবল ফেরানোই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলছেন, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় কয়েকবার হামলা চালানো হয় যাত্রাবাড়ী থানায়। ৫ আগস্ট সরকার পতনের দিন সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা চালানো হয় থানাটিতে। পরে উদ্ধার করা হয় বেশ কয়েকজনের মরদেহ। এরপর থেকে থানাটির কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। থানাটির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ডেমরা থানার একটি কক্ষে স্বল্প পরিসরে তাদের কার্যক্রম চলছে, তবে এই থানার স্বাভাবিক কার্যক্রম কবে নাগাদ শুরু হবে তার নিশ্চয়তা তিনি দিতে পারেননি।

ভবনটিতে এখন সংস্কার কাজ চলছে। আর থানার নিরাপত্তায় কাজ করছেন শিক্ষার্থী ও আনসার সদস্যরা।

শিক্ষার্থীরা জানায়, সেবাগ্রহীতারা থানায় এসে তেমন কোনো সার্ভিস না পাওয়ায় তাদেরকে ডেমরা থানায় ট্রান্সফার করা হচ্ছে।

আগুনে পুড়ে যাওয়া ভাটারা থানার ভবনও ব্যবহার উপযোগী হয়নি। নিয়মিত কার্যক্রম চলছে গুলশান থানার নতুন ভবনে।

থানায় সেবা নিতে আসা জনসাধারণ বলছে, থানাগুলোতে পুলিশেরা এখনও পুরোপুরিভাবে কাজ শুরু করতে পারে নাই। সাধারণ ডায়েরিগুলোই শুধু নিচ্ছেন তারা।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ যেমন হামলা করে, তেমনি পাল্টা হামলার শিকার হয় থানাগুলো। ব্যাপক ক্ষতি হলেও, এর মাঝেই কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন পুলিশ সদস্যরা।

গুলশান থানার এসআই বিশ্বজিৎ বলেন, ‘মোটামুটি সব সেবাই আমাদের থানায় আমরা দেওয়ার চেষ্টা করছি। বেশিরভাগই এখন হারানো সংক্রান্ত জিডি আসছে।’

কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মনোবল হারিয়ে ফেলাই পুলিশের সবচেয়ে বড় সংকট এখন। এটি কাটিয়ে ওঠাকে চ্যালেঞ্জ বলছেন তারা।

এ নিয়ে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইফতেখার হাসান বলেন, ‘এখন সবচেয়ে বেশি দরকার পুলিশের মোটিভেশনাল ডেভেলপমেন্ট। এর কারণ হলো পুলিশেরা অনেকটাই ডিমোরালাইজড হয়ে আছেন। আমি তাদের সঙ্গে নিয়মিত কথা বলছি। তাদেরকে মেনটালি গিয়ার-আপ করার চেষ্টা করছি।’

মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সেবামূলক পুলিশিংয়ের মন-মানসিকতা নিয়েই থানায় জয়েন করেছি।’

ক্ষতিগ্রস্ত বেশিরভাগ থানার কার্যক্রম চলছে না নিজস্ব ভবনে। সংস্কার শেষে ভবনে ফিরতে পারলেও, পুরোপুরি কাটবে না সংকট। কারণ আগুনে পুড়ে গেছে অসংখ্য গাড়ি, পোশাক আর প্রয়োজনীয় নথি।

প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ–অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দেশ ছাড়ার পর থেকেই দেশজুড়ে থানাসহ পুলিশের স্থাপনাগুলোতে একের পর এক হামলা শুরু হয়। সে সময় হামলা–অগ্নিসংযোগে মুখ থুবড়ে পড়েছিল দেশের পুলিশি কার্যক্রম। পুলিশ সদর দপ্তরসহ দেশের অধিকাংশ স্থানে পুলিশের অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত, থানা লুট ও বাহিনীর সদস্যদের হতাহতের ঘটনায় নিরাপত্তার অভাবে থানাগুলো অচল হয়ে পড়ে।

নিউজটি শেয়ার করুন

পুলিশের মনোবল ফেরানোই বড় চ্যালেঞ্জ

আপডেট সময় : ০৩:২৪:৫০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

রাজধানীতে হামলা আর আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত বেশিরভাগ থানার কার্যক্রম চলছে স্বল্প পরিসরে। অন্য থানায় ছোট কক্ষে কাজ করছেন কর্মকর্তারা। নিজস্ব ভবনে চলছে সংস্কার কাজ। গাড়ি, পোশাক আর নথি পুড়ে যাওয়ায়, পুরোদমে কাজ শুরু হতে সময় লাগবে। তবে পুলিশের মনোবল ফেরানোই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলছেন, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় কয়েকবার হামলা চালানো হয় যাত্রাবাড়ী থানায়। ৫ আগস্ট সরকার পতনের দিন সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা চালানো হয় থানাটিতে। পরে উদ্ধার করা হয় বেশ কয়েকজনের মরদেহ। এরপর থেকে থানাটির কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। থানাটির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ডেমরা থানার একটি কক্ষে স্বল্প পরিসরে তাদের কার্যক্রম চলছে, তবে এই থানার স্বাভাবিক কার্যক্রম কবে নাগাদ শুরু হবে তার নিশ্চয়তা তিনি দিতে পারেননি।

ভবনটিতে এখন সংস্কার কাজ চলছে। আর থানার নিরাপত্তায় কাজ করছেন শিক্ষার্থী ও আনসার সদস্যরা।

শিক্ষার্থীরা জানায়, সেবাগ্রহীতারা থানায় এসে তেমন কোনো সার্ভিস না পাওয়ায় তাদেরকে ডেমরা থানায় ট্রান্সফার করা হচ্ছে।

আগুনে পুড়ে যাওয়া ভাটারা থানার ভবনও ব্যবহার উপযোগী হয়নি। নিয়মিত কার্যক্রম চলছে গুলশান থানার নতুন ভবনে।

থানায় সেবা নিতে আসা জনসাধারণ বলছে, থানাগুলোতে পুলিশেরা এখনও পুরোপুরিভাবে কাজ শুরু করতে পারে নাই। সাধারণ ডায়েরিগুলোই শুধু নিচ্ছেন তারা।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ যেমন হামলা করে, তেমনি পাল্টা হামলার শিকার হয় থানাগুলো। ব্যাপক ক্ষতি হলেও, এর মাঝেই কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন পুলিশ সদস্যরা।

গুলশান থানার এসআই বিশ্বজিৎ বলেন, ‘মোটামুটি সব সেবাই আমাদের থানায় আমরা দেওয়ার চেষ্টা করছি। বেশিরভাগই এখন হারানো সংক্রান্ত জিডি আসছে।’

কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মনোবল হারিয়ে ফেলাই পুলিশের সবচেয়ে বড় সংকট এখন। এটি কাটিয়ে ওঠাকে চ্যালেঞ্জ বলছেন তারা।

এ নিয়ে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইফতেখার হাসান বলেন, ‘এখন সবচেয়ে বেশি দরকার পুলিশের মোটিভেশনাল ডেভেলপমেন্ট। এর কারণ হলো পুলিশেরা অনেকটাই ডিমোরালাইজড হয়ে আছেন। আমি তাদের সঙ্গে নিয়মিত কথা বলছি। তাদেরকে মেনটালি গিয়ার-আপ করার চেষ্টা করছি।’

মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সেবামূলক পুলিশিংয়ের মন-মানসিকতা নিয়েই থানায় জয়েন করেছি।’

ক্ষতিগ্রস্ত বেশিরভাগ থানার কার্যক্রম চলছে না নিজস্ব ভবনে। সংস্কার শেষে ভবনে ফিরতে পারলেও, পুরোপুরি কাটবে না সংকট। কারণ আগুনে পুড়ে গেছে অসংখ্য গাড়ি, পোশাক আর প্রয়োজনীয় নথি।

প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ–অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দেশ ছাড়ার পর থেকেই দেশজুড়ে থানাসহ পুলিশের স্থাপনাগুলোতে একের পর এক হামলা শুরু হয়। সে সময় হামলা–অগ্নিসংযোগে মুখ থুবড়ে পড়েছিল দেশের পুলিশি কার্যক্রম। পুলিশ সদর দপ্তরসহ দেশের অধিকাংশ স্থানে পুলিশের অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত, থানা লুট ও বাহিনীর সদস্যদের হতাহতের ঘটনায় নিরাপত্তার অভাবে থানাগুলো অচল হয়ে পড়ে।