ভারতের পতাকা নামিয়ে নতুন পতাকা উড়াল মণিপুরের শিক্ষার্থীরা
- আপডেট সময় : ০১:০০:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
- / ৩৭৩ বার পড়া হয়েছে
আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভারতের মণিপুর রাজ্য। গতকাল সোমবার শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সরকারি ভবনে হামলা চালিয়েছে। এমনকি রাজ্যের রাজভবন ও থাউবালের জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কার্যালয়েও হামলা চালিয়েছে তারা। এ ছাড়া ডিসি অফিসে টানানো ভারতের জাতীয় পাতাকা নামিয়ে সাত রঙের নতুন একটি পতাকা টানিয়ে দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, রাজ্যের নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তনের দাবিতে সকাল থেকেই ইম্ফলের রাস্তা দখল করে বিক্ষোভ করেছে বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা। তাদের প্রধান দাবি, বর্তমান নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে অপসারণ করতে হবে এবং মণিপুরে শান্তি ফেরাতে রাজ্য সরকারের হাতে সর্বোচ্চ ক্ষমতা দিতে হবে। এ ছাড়া চলমান সংকটকে আরও ভালোভাবে মোকাবিলা করতে নিরাপত্তা অভিযানের দায়িত্ব স্থানীয় কর্তৃপক্ষের হাতে দিতে হবে।
শিক্ষার্থীরা মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সংয়ের বাসভবনেও হামলা চালানোর চেষ্টা করেছে বলে ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।
এদিকে মণিপুরের শিক্ষার্থীদের নতুন পতাকা উড়ানোর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। শিক্ষার্থীরা নতুন যে পতাকা উড়িয়েছেন, সেটি আয়তাকার সাত রঙের একটি পতাকা। প্রাচীনকালের মেইতি জাতিগোষ্ঠীর সাতটি বংশের প্রতিনিধিত্বের কথা তুলে ধরতে মণিপুরে অনেকেই এই পতাকা ব্যবহার করেন।
থাউবালের ডিসি এ সুভাষ সিং বলেন, শিক্ষার্থীরা একটি নতুন পতাকা টানিয়ে দিয়েছে। তবে সেটি ডিসি অফিসের প্রধান ভবনে নয়, বরং মূল ফটকে।
২০২৩ সালের মে মাস থেকে মণিপুরে কুকি এবং মেইতির মধ্যে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ চলছে। প্রাণ গেছে কয়েক শ মানুষের। আপাত শান্তি ফিরলেও বিক্ষিপ্ত অশান্তি, গোলাগুলির খবর প্রায়ই আসছে। সাম্প্রতিক হামলার ঘটনায় কুকি জঙ্গিদের দায়ী করছে মেইতিরা। অন্যদিকে কুকিদের দাবি, মেইতিদের দিক থেকেই প্রথম গুলি চলেছে।
মণিপুরের কংগ্রেস ভাইস-প্রেসিডেন্ট লামটিনথাং হাওকিপ কুকি সম্প্রদায়ভুক্ত। তাঁর দাবি, মণিপুরে নতুন করে অশান্তি ছড়াতে চাইছে বিজেপি। মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী তথা মেইতি সম্প্রদায়ভুক্ত এন বীরেন সিংয়ের বিরুদ্ধে সম্প্রতি কুকি-জো সম্প্রদায়ের মানুষ প্রতিবাদ মিছিল করেছিলেন। সেই প্রতিবাদের কণ্ঠরুদ্ধ করতেই এসব হামলা চালানো হয় বলে দাবি করেন হাওকিপ।
গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে নতুন করে মণিপুরে শুরু হয় উত্তেজনা। এবার রাইফেল ও গ্রেনেডের পাশাপাশি ড্রোন ও রকেট ব্যবহার করা হচ্ছে।
এতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আবারও হুমকির মুখে পড়ে। গত সপ্তাহে ড্রোন হামলায় একজন নিহতের তথ্যও পাওয়া গেছে। এরপর আরও দুইবার হামলা হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে গতকাল থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় পরিবর্তনের দাবি নিয়ে রাস্তায় নামল মণিপুরের শিক্ষার্থীরা।