ঢাকা ১০:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

ছাত্র আন্দোলনে সাড়ে পাঁচশ মানুষ পঙ্গুত্বের শিকার

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১২:১০:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ৩৬১ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বুলেট কেড়ে নিয়েছে কারো হাত, কারো পা, কারো চোখ। স্বাস্থ্য বিভাগের হিসেবে, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অঙ্গহানি হয়েছে অন্তত সাড়ে পাঁচশ মানুষের। পঙ্গুত্বের শিকার এসব মানুষকে বিনামূল্যে কৃত্রিম হাত-পায়ের ব্যবস্থা করে দিচ্ছে ব্র্যাক।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সবশেষ হিসেব অনুযায়ী, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহত হন ৩ হাজার ২০০ জনের বেশি। এরমধ্যে হাত-পা কেটে ফেলতে হয়েছে অনেকের। অঙ্গ হারিয়ে মানসিকভাবেও বেশ বিপর্যস্ত তারা।

দুরন্ত কিশোরের মনের আকাশ ছেয়ে গেছে কালো মেঘে। স্পর্শে স্পর্শে সে মন খুঁজে ফেরে হারানো পা। কোনো কিছুতেই সান্ত্বনা নেই সেই মনের। তার পা নেই, মানতে পারছেন না আল আমিন।

আল আমিন বলেন, ‘ঘুমের মধ্যে আমার মনে হয় আমার পাটা আছে। তখন আমি ধাম করে ঘুম থেকে উঠে পা ধরে দেখি পাও নাই।’

জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালে ভর্তি আল আমিন। এখানে তার মতো পা কেটে ফেলতে হয়েছে ১৭ জনকে। ৪ জন হারিয়েছেন হাত।

আহত এক শিক্ষার্থীর মা বলেন, ‘হাঁটার সময় অসুবিধা হয়। যখন হাঁটতে লয়, তখন অনেক কান্না করে আমার ছেলে। তখন আমি কথা কইলে কোনো কতা কয় না, খালি ঝরঝর কইরা চোখের পানি ফালায়।’

আন্দোলনে আহত এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘মাঝেমাঝেই আমি হাত দিয়ে দেখি, পায়ের নখগুলা টানি- এমন মনে হয়। কিন্তু আসলে তা তো নাই। তখন মনে পড়ে পা তো নেই, পা তো কেটে ফেলেছে।’

হাত কেটে ফেলা আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘এমন মনে হইছে দুনিয়ার সবচেয়ে অসহায় মানুষটাই আমি আরকি। এটা মাঝে মাঝে মনে হয় আরকি। কিন্তু আমি আসলে চাচ্ছি আমার ভেতর থেকে ওই ব্যাপারটা কাটিয়ে উঠতে।’

১৬ বছরে এসে আবার নতুন করে হাঁটতে শিখছেন রিফাত হাওলাদার। স্বৈরাচারের গুলি কেড়ে নিয়েছে একটি পা। তাই কৃত্রিম পায়ে আবারও উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা। রিফাতের মতো অঙ্গ হারানো মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছে ব্র্যাক।

ব্র্যাক লিম্ব অ্যান্ড ব্রেইস সেন্টার অপারেশনাল ম্যানেজার ডা. এস এম ইয়াসির আজাদ বলেন, ‘তাদেরকে (আহত) যদি আমরা নতুনভাবে রিহ্যাবিলিটেশন না করি তাহলে তারা কখনোই স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় চলে আসতে পারবে না। তো তারা যাতে স্বাভাবিক জীবনযাত্রার মধ্যে আসতে পারে এই জন্য ব্র্যাক এই প্রোগ্রামটা নিয়েছে।’

মোহাম্মদপুরের ব্র্যাক লিম্ব এন্ড ব্রেইস সেন্টারে চলছে প্রতিস্থাপনের কাজ। একেকজন পাচ্ছেন ১০ লাখ টাকার একটি সেট।

নিউজটি শেয়ার করুন

ছাত্র আন্দোলনে সাড়ে পাঁচশ মানুষ পঙ্গুত্বের শিকার

আপডেট সময় : ১২:১০:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বুলেট কেড়ে নিয়েছে কারো হাত, কারো পা, কারো চোখ। স্বাস্থ্য বিভাগের হিসেবে, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অঙ্গহানি হয়েছে অন্তত সাড়ে পাঁচশ মানুষের। পঙ্গুত্বের শিকার এসব মানুষকে বিনামূল্যে কৃত্রিম হাত-পায়ের ব্যবস্থা করে দিচ্ছে ব্র্যাক।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সবশেষ হিসেব অনুযায়ী, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহত হন ৩ হাজার ২০০ জনের বেশি। এরমধ্যে হাত-পা কেটে ফেলতে হয়েছে অনেকের। অঙ্গ হারিয়ে মানসিকভাবেও বেশ বিপর্যস্ত তারা।

দুরন্ত কিশোরের মনের আকাশ ছেয়ে গেছে কালো মেঘে। স্পর্শে স্পর্শে সে মন খুঁজে ফেরে হারানো পা। কোনো কিছুতেই সান্ত্বনা নেই সেই মনের। তার পা নেই, মানতে পারছেন না আল আমিন।

আল আমিন বলেন, ‘ঘুমের মধ্যে আমার মনে হয় আমার পাটা আছে। তখন আমি ধাম করে ঘুম থেকে উঠে পা ধরে দেখি পাও নাই।’

জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালে ভর্তি আল আমিন। এখানে তার মতো পা কেটে ফেলতে হয়েছে ১৭ জনকে। ৪ জন হারিয়েছেন হাত।

আহত এক শিক্ষার্থীর মা বলেন, ‘হাঁটার সময় অসুবিধা হয়। যখন হাঁটতে লয়, তখন অনেক কান্না করে আমার ছেলে। তখন আমি কথা কইলে কোনো কতা কয় না, খালি ঝরঝর কইরা চোখের পানি ফালায়।’

আন্দোলনে আহত এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘মাঝেমাঝেই আমি হাত দিয়ে দেখি, পায়ের নখগুলা টানি- এমন মনে হয়। কিন্তু আসলে তা তো নাই। তখন মনে পড়ে পা তো নেই, পা তো কেটে ফেলেছে।’

হাত কেটে ফেলা আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘এমন মনে হইছে দুনিয়ার সবচেয়ে অসহায় মানুষটাই আমি আরকি। এটা মাঝে মাঝে মনে হয় আরকি। কিন্তু আমি আসলে চাচ্ছি আমার ভেতর থেকে ওই ব্যাপারটা কাটিয়ে উঠতে।’

১৬ বছরে এসে আবার নতুন করে হাঁটতে শিখছেন রিফাত হাওলাদার। স্বৈরাচারের গুলি কেড়ে নিয়েছে একটি পা। তাই কৃত্রিম পায়ে আবারও উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা। রিফাতের মতো অঙ্গ হারানো মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছে ব্র্যাক।

ব্র্যাক লিম্ব অ্যান্ড ব্রেইস সেন্টার অপারেশনাল ম্যানেজার ডা. এস এম ইয়াসির আজাদ বলেন, ‘তাদেরকে (আহত) যদি আমরা নতুনভাবে রিহ্যাবিলিটেশন না করি তাহলে তারা কখনোই স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় চলে আসতে পারবে না। তো তারা যাতে স্বাভাবিক জীবনযাত্রার মধ্যে আসতে পারে এই জন্য ব্র্যাক এই প্রোগ্রামটা নিয়েছে।’

মোহাম্মদপুরের ব্র্যাক লিম্ব এন্ড ব্রেইস সেন্টারে চলছে প্রতিস্থাপনের কাজ। একেকজন পাচ্ছেন ১০ লাখ টাকার একটি সেট।