১০:৩২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অশান্ত মণিপুরে চোখ রাঙাচ্ছে অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র

ভারতের মণিপুরের কুকি ও মেইতে সম্প্রদায়ের মধ্যে নতুন করে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। এবার দুই গোষ্ঠীর হাতেই দেখা যাচ্ছে আমেরিকা, জার্মানি, চীন ও রাশিয়ার অত্যাধুনিক সমরাস্ত্রের। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের বিশ্লেষণে উঠে এসেছে এ তথ্য। যুক্তরাজ্যভিত্তিক এক সংস্থার দাবি, মণিপুরে বহুল ব্যবহৃত অস্ত্রের বেশিরভাগই চীন ও রাশিয়ার তৈরি।

এদিকে, ইম্ফলে বিক্ষোভের কারণে মোবাইল এবং ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পরিষেবা স্থগিতাদেশের তিন দিন পর মণিপুর সরকার পাঁচটি উপত্যকা জেলায় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পরিষেবা আবারও চালু করেছে। তবে মোবাইল ডেটা ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল রয়েছে।

ইন্টারনেট পরিষেবা পুনরায় চালু হওয়া পাঁচটি জেলা হচ্ছে- ইম্ফল পশ্চিম, ইম্ফল পূর্ব, থৌবল, বিষ্ণুপুর এবং কাকচিং। কথিত “ড্রোন হামলা” এবং পরবর্তীতে এই অঞ্চলে বিক্ষোভ নিয়ে ভুল তথ্য সম্বলিত সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের বিস্তার রোধ করার জন্য প্রাথমিকভাবে ইন্টারনেটের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল। মূলত পাঁচ দিনের জন্য নির্ধারিত এই নিষেধাজ্ঞাটি এখন আংশিকভাবে শিথিল করা হয়েছে। তবে মোবাইল ডেটা পরিষেবাগুলো এখনও স্থগিত রয়েছে।

এদিকে মণিপুরে চলমান জাতিগত সংঘাত মোকাবিলায় দেশটির কেন্দ্রীয় আধা-সামরিক বাহিনীর (সিআরপিএফ) সদস্যদের মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। মণিপুর থেকে আসাম রাইফেলসের দু’টি ব্যাটালিয়ন প্রত্যাহার করে নেওয়ার কয়েকদিন পর দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার সহিংসতায় বিধ্বস্ত রাজ্যটিতে সিআরপিএফের ২ হাজার সদস্যের দু’টি ব্যাটালিয়ন মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেয়।

এছাড়া ভারতীয় দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সিআরপিএফের নতুন এই দুটি ইউনিটের সব কোম্পানিকে মণিপুরের বিভিন্ন অংশে ঘাঁটি স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছে। প্রত্যেক ইউনিটে পাঁচ থেকে ছয়টি কোম্পানি রয়েছে। দু’টি ব্যাটালিয়নে সিআরপিএফের প্রায় ২ হাজার জওয়ান ও কর্মকর্তা রয়েছেন।

কুকি ও মেইতে সম্প্রদায়ের সংঘর্ষে গত বছরের মে থেকে উত্তপ্ত ভারতের মণিপুর। দফায় দফায় সংঘর্ষে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে। কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের পরও মণিপুরের পরিস্থিতি বেসামাল।

নতুন করে দুই সম্প্রদায়ের ছড়ানো সংঘর্ষে শঙ্কিত ভারত সরকার। দুই পক্ষের হাতেই দেখা যাচ্ছে অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র। অস্থিতিশীলতার সুযোগে মণিপুরের বেশ কয়েকটি পুলিশ স্টেশন থেকে লুট হয় অন্তত ৪ হাজার অস্ত্র। ভারতের প্রতিরক্ষা বিভাগ ও সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, এসব অস্ত্রের নিয়ন্ত্রণ এখন কুকি ও মেইতে সম্প্রদায়ের হাতে।

এছাড়া, দুই সম্প্রদায়ের অস্ত্র ভাণ্ডারে আছে জার্মানির হেকলার অ্যান্ড কোচ, আমেরিকার কোল্ট এ-আর-ফিফটিন, এম-সিক্সটিন, এম-ফোর-এ-ওয়ান এবং চীনা এ-কে-ফিফটি সিক্স রাইফেল। ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে এসব সমরাস্ত্রের খোঁজ পেয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে।

শুধু স্বয়ংক্রিয় রাইফেল নয়, এদের অস্ত্র ভাণ্ডারে আছে বিধ্বংসী বোমা, ড্রোন, হ্যান্ড গ্রেনেড, রকেট লঞ্চার, মর্টার শেল ও ট্যাংক বিধ্বংসী নানা অস্ত্র। প্রশ্ন উঠেছে, দুটো বেসামরিক গোষ্ঠীর কাছে এসব সমরাস্ত্র গেলো কীভাবে।

কুকি ও মেইতে সম্প্রদায়ের অস্ত্র পর্যালোচনা করেছে যুক্তরাজ্য ভিত্তিক কালেক্টিভ অ্যাওয়ারনেস টু আনএক্সপ্লোডেড অর্ডন্যান্স নামের একটি সংস্থা। তাদের দাবি, কুকি ও মেইতেদের বহুল ব্যবহৃত অস্ত্রগুলো চীন ও রাশিয়ার তৈরি।

সীমান্ত নিয়ে চীন-ভারতের সম্পর্ক বৈরী হলেও, মস্কোর সাথে দিল্লির সম্পর্ক বেশ উন্নত। তবে যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা বিভিন্ন রাষ্ট্র বরাবরই বেইজিং ও মস্কো বিরোধী।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অধ্যাদেশ অনুমোদন

অশান্ত মণিপুরে চোখ রাঙাচ্ছে অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র

আপডেট : ০১:৫৪:২৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ভারতের মণিপুরের কুকি ও মেইতে সম্প্রদায়ের মধ্যে নতুন করে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। এবার দুই গোষ্ঠীর হাতেই দেখা যাচ্ছে আমেরিকা, জার্মানি, চীন ও রাশিয়ার অত্যাধুনিক সমরাস্ত্রের। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের বিশ্লেষণে উঠে এসেছে এ তথ্য। যুক্তরাজ্যভিত্তিক এক সংস্থার দাবি, মণিপুরে বহুল ব্যবহৃত অস্ত্রের বেশিরভাগই চীন ও রাশিয়ার তৈরি।

এদিকে, ইম্ফলে বিক্ষোভের কারণে মোবাইল এবং ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পরিষেবা স্থগিতাদেশের তিন দিন পর মণিপুর সরকার পাঁচটি উপত্যকা জেলায় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পরিষেবা আবারও চালু করেছে। তবে মোবাইল ডেটা ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল রয়েছে।

ইন্টারনেট পরিষেবা পুনরায় চালু হওয়া পাঁচটি জেলা হচ্ছে- ইম্ফল পশ্চিম, ইম্ফল পূর্ব, থৌবল, বিষ্ণুপুর এবং কাকচিং। কথিত “ড্রোন হামলা” এবং পরবর্তীতে এই অঞ্চলে বিক্ষোভ নিয়ে ভুল তথ্য সম্বলিত সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের বিস্তার রোধ করার জন্য প্রাথমিকভাবে ইন্টারনেটের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল। মূলত পাঁচ দিনের জন্য নির্ধারিত এই নিষেধাজ্ঞাটি এখন আংশিকভাবে শিথিল করা হয়েছে। তবে মোবাইল ডেটা পরিষেবাগুলো এখনও স্থগিত রয়েছে।

এদিকে মণিপুরে চলমান জাতিগত সংঘাত মোকাবিলায় দেশটির কেন্দ্রীয় আধা-সামরিক বাহিনীর (সিআরপিএফ) সদস্যদের মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। মণিপুর থেকে আসাম রাইফেলসের দু’টি ব্যাটালিয়ন প্রত্যাহার করে নেওয়ার কয়েকদিন পর দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার সহিংসতায় বিধ্বস্ত রাজ্যটিতে সিআরপিএফের ২ হাজার সদস্যের দু’টি ব্যাটালিয়ন মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেয়।

এছাড়া ভারতীয় দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সিআরপিএফের নতুন এই দুটি ইউনিটের সব কোম্পানিকে মণিপুরের বিভিন্ন অংশে ঘাঁটি স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছে। প্রত্যেক ইউনিটে পাঁচ থেকে ছয়টি কোম্পানি রয়েছে। দু’টি ব্যাটালিয়নে সিআরপিএফের প্রায় ২ হাজার জওয়ান ও কর্মকর্তা রয়েছেন।

কুকি ও মেইতে সম্প্রদায়ের সংঘর্ষে গত বছরের মে থেকে উত্তপ্ত ভারতের মণিপুর। দফায় দফায় সংঘর্ষে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে। কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের পরও মণিপুরের পরিস্থিতি বেসামাল।

নতুন করে দুই সম্প্রদায়ের ছড়ানো সংঘর্ষে শঙ্কিত ভারত সরকার। দুই পক্ষের হাতেই দেখা যাচ্ছে অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র। অস্থিতিশীলতার সুযোগে মণিপুরের বেশ কয়েকটি পুলিশ স্টেশন থেকে লুট হয় অন্তত ৪ হাজার অস্ত্র। ভারতের প্রতিরক্ষা বিভাগ ও সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, এসব অস্ত্রের নিয়ন্ত্রণ এখন কুকি ও মেইতে সম্প্রদায়ের হাতে।

এছাড়া, দুই সম্প্রদায়ের অস্ত্র ভাণ্ডারে আছে জার্মানির হেকলার অ্যান্ড কোচ, আমেরিকার কোল্ট এ-আর-ফিফটিন, এম-সিক্সটিন, এম-ফোর-এ-ওয়ান এবং চীনা এ-কে-ফিফটি সিক্স রাইফেল। ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে এসব সমরাস্ত্রের খোঁজ পেয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে।

শুধু স্বয়ংক্রিয় রাইফেল নয়, এদের অস্ত্র ভাণ্ডারে আছে বিধ্বংসী বোমা, ড্রোন, হ্যান্ড গ্রেনেড, রকেট লঞ্চার, মর্টার শেল ও ট্যাংক বিধ্বংসী নানা অস্ত্র। প্রশ্ন উঠেছে, দুটো বেসামরিক গোষ্ঠীর কাছে এসব সমরাস্ত্র গেলো কীভাবে।

কুকি ও মেইতে সম্প্রদায়ের অস্ত্র পর্যালোচনা করেছে যুক্তরাজ্য ভিত্তিক কালেক্টিভ অ্যাওয়ারনেস টু আনএক্সপ্লোডেড অর্ডন্যান্স নামের একটি সংস্থা। তাদের দাবি, কুকি ও মেইতেদের বহুল ব্যবহৃত অস্ত্রগুলো চীন ও রাশিয়ার তৈরি।

সীমান্ত নিয়ে চীন-ভারতের সম্পর্ক বৈরী হলেও, মস্কোর সাথে দিল্লির সম্পর্ক বেশ উন্নত। তবে যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা বিভিন্ন রাষ্ট্র বরাবরই বেইজিং ও মস্কো বিরোধী।