১১:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ এতিম নুপুরের পাশে কেউই নেই

গত ৫ আগস্টে দুই পায়েই গুলিবিদ্ধ হন মিরপুরের শিক্ষার্থী নুপুর চৌধুরী। পরীক্ষাসহ নানা কাজে, হুইল চেয়ারে একাই ঘুরতে হয় তাকে। কারণ, বাবা মারা যাওয়ার পর অন্যত্র বিয়ে করেছেন মা। পড়াশোনার পাশাপাশি একটি খণ্ডকালীন চাকরি করে খরচ চালাতেন নুপুর। তার একটি গুলি বের করা গেলেও, অন্যটি নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে। স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে সহায়তা চেয়েছেন তিনি।

জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালের করিডরে একাই ছুটতে হয় নুপুর চৌধুরীকে। ভরসা শুধু হুইল চেয়ারটি। দুই পায়ে গুলিবিদ্ধ নুপুরকে পরীক্ষানিরীক্ষা কিংবা ওষুধ সেবনেও সহায়তার কেউ নাই।

নুপুর চৌধুরী বলেন, ‘জন্মের পর আমি আমার নানা নানির কাছে মানুষ হয়েছি। তারাও মারা গেছেন। তারপর থেকে আমার পাশে আর কেউ নেই। আমার খালা বা ফুফু যারাই বলেন সবাই যার যার মতো সংসার নিয়ে ব্যস্ত। একমাত্র ছাত্র ভাইয়েরা ছিলেন বলেই আমি আজ হাসপাতালে। নাহলে আমার লাশটাও কেউ খুঁজে পেতো না।’

বাবা মারা গেছেন। মা বিয়ে করেছেন অন্যত্র। রাজধানীর মিরপুরে একা থাকেন নুপুর। জুলাইয়ের আন্দোলনে জড়িত ছিল সক্রিয়ভাবে। ৫ আগস্টে মিরপুর-২ বিজয় উল্লাস করার সময় পুলিশের গুলি লাগে।

নুপুর বলেন, ‘আমি সব সময়ই আন্দোলনে ছিলাম। ৫ আগস্ট দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আনন্দ করতে বের হই। এ সময় হঠাৎ করেই মিরপুরে গোলাগুলি শুরু হয়। ওখানেই আমি গুলিবিদ্ধ হই।’

মিরপুরের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করেন নুপুর চৌধুরী। এখন হাসপাতালের এক ফ্লোর থেকে আরেক ফ্লোরে ছুটতেই কেটে যায় সময়। মুক্ত বাতাসে ফেরার আকুতি তার।

নুপুর চৌধুরী বলেন, ‘আমার দেশের অনেক ভাই বোনদের জীবন শেষ হয়ে গেছে। অনেক মায়ের বুক খালি হয়ে গেছে। আমার তো কেউই নাই। আমার আগে পিছে কেউই নাই। আমি যদি মরেও যেতাম কোনো আফসোস থাকত না।’

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, নুপুরের একটি গুলি অপসারণ হলেও, অপরটি বের করা জটিল। রক্তনালী ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক সিরাজুস সালেহীন বলেন, ‘আরেকটা গুলি এমনভাবে লেগেছে পুরা রক্তনালির পাশে লেগেছে। ওটা যদি বের করতে যাওয়া হয় তাহলে রক্তনালীতে ইনজুরি হতে পারে। আমরা একটি মেডিকেল বোর্ড করেছি, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে ওটা আপাতত বের করার দরকার নাই। নুপুর একটু সাইকোলজিক্যাল ট্রমাতে আছে। তার পরিবারে কেউ নাই।’

পড়াশুনার পাশাপাশি একটি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে খণ্ডকালীন চাকরি করতেন এই তরুণী। সুস্থ জীবনে ফেরা ও জীবিকার জন্য চেয়েছেন সহায়তা।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অধ্যাদেশ অনুমোদন

আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ এতিম নুপুরের পাশে কেউই নেই

আপডেট : ০২:০৭:০৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

গত ৫ আগস্টে দুই পায়েই গুলিবিদ্ধ হন মিরপুরের শিক্ষার্থী নুপুর চৌধুরী। পরীক্ষাসহ নানা কাজে, হুইল চেয়ারে একাই ঘুরতে হয় তাকে। কারণ, বাবা মারা যাওয়ার পর অন্যত্র বিয়ে করেছেন মা। পড়াশোনার পাশাপাশি একটি খণ্ডকালীন চাকরি করে খরচ চালাতেন নুপুর। তার একটি গুলি বের করা গেলেও, অন্যটি নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে। স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে সহায়তা চেয়েছেন তিনি।

জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালের করিডরে একাই ছুটতে হয় নুপুর চৌধুরীকে। ভরসা শুধু হুইল চেয়ারটি। দুই পায়ে গুলিবিদ্ধ নুপুরকে পরীক্ষানিরীক্ষা কিংবা ওষুধ সেবনেও সহায়তার কেউ নাই।

নুপুর চৌধুরী বলেন, ‘জন্মের পর আমি আমার নানা নানির কাছে মানুষ হয়েছি। তারাও মারা গেছেন। তারপর থেকে আমার পাশে আর কেউ নেই। আমার খালা বা ফুফু যারাই বলেন সবাই যার যার মতো সংসার নিয়ে ব্যস্ত। একমাত্র ছাত্র ভাইয়েরা ছিলেন বলেই আমি আজ হাসপাতালে। নাহলে আমার লাশটাও কেউ খুঁজে পেতো না।’

বাবা মারা গেছেন। মা বিয়ে করেছেন অন্যত্র। রাজধানীর মিরপুরে একা থাকেন নুপুর। জুলাইয়ের আন্দোলনে জড়িত ছিল সক্রিয়ভাবে। ৫ আগস্টে মিরপুর-২ বিজয় উল্লাস করার সময় পুলিশের গুলি লাগে।

নুপুর বলেন, ‘আমি সব সময়ই আন্দোলনে ছিলাম। ৫ আগস্ট দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আনন্দ করতে বের হই। এ সময় হঠাৎ করেই মিরপুরে গোলাগুলি শুরু হয়। ওখানেই আমি গুলিবিদ্ধ হই।’

মিরপুরের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করেন নুপুর চৌধুরী। এখন হাসপাতালের এক ফ্লোর থেকে আরেক ফ্লোরে ছুটতেই কেটে যায় সময়। মুক্ত বাতাসে ফেরার আকুতি তার।

নুপুর চৌধুরী বলেন, ‘আমার দেশের অনেক ভাই বোনদের জীবন শেষ হয়ে গেছে। অনেক মায়ের বুক খালি হয়ে গেছে। আমার তো কেউই নাই। আমার আগে পিছে কেউই নাই। আমি যদি মরেও যেতাম কোনো আফসোস থাকত না।’

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, নুপুরের একটি গুলি অপসারণ হলেও, অপরটি বের করা জটিল। রক্তনালী ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক সিরাজুস সালেহীন বলেন, ‘আরেকটা গুলি এমনভাবে লেগেছে পুরা রক্তনালির পাশে লেগেছে। ওটা যদি বের করতে যাওয়া হয় তাহলে রক্তনালীতে ইনজুরি হতে পারে। আমরা একটি মেডিকেল বোর্ড করেছি, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে ওটা আপাতত বের করার দরকার নাই। নুপুর একটু সাইকোলজিক্যাল ট্রমাতে আছে। তার পরিবারে কেউ নাই।’

পড়াশুনার পাশাপাশি একটি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে খণ্ডকালীন চাকরি করতেন এই তরুণী। সুস্থ জীবনে ফেরা ও জীবিকার জন্য চেয়েছেন সহায়তা।