০৯:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

১০০ ম্যাচে লাল কার্ড দেখার আশা আর্সেনাল কোচের

প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে গতকাল রোববার রাতে ম্যানচেস্টার সিটির মাঠে আতিথ্য নিয়েছিল আর্সেনাল। শিরোপা প্রত্যাশী দুই শক্তিশালী দলের লড়াই বলে কথা। প্রত্যাশামতো ম্যাচের প্রথমার্ধটা হয়ে উঠল আগুনে। ম্যাচের নবম মিনিটে আর্লিং হলান্ডের গোলে এগিয়ে যায় সিটি। ২২ মিনিটে রিকার্দো কালাফিওরির গোলে সমতা ফেরানোর পর প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে গ্যাব্রিয়েল মাগালিয়াইসের গোলে লিড (২-১) নেয় আর্সেনাল।

আক্রমণ-প্রতিআক্রমণে জমে ওঠা ম্যাচটা এ পর্যন্ত উত্তাপ ছড়ানোই ছিল। কিন্তু প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে আর্সেনাল মিডফিল্ডার লেয়ান্দ্র ত্রোসার্দ দ্বিতীয় হলুদ কার্ডে লাল কার্ডে মাঠের বাইরে গেলে ম্যাচের গতিপথ পাল্টে যায়। ১০ জন হয়ে পড়া আর্সেনাল দ্বিতীয়ার্ধে খোলসবন্দী হয়ে পড়ে। অন্যদিকে সিটি একের পর এক আক্রমণ চালিয়েও আর্সেনালের জমাট রক্ষণ ভেঙে গোল আদায় করতে পারছিল না কোনোভাবে। ম্যাচের একদম অন্তিম মুহূর্তে জন স্টোনসের কল্যাণে সমতাসূচক (২-২) গোল পায় পেপ গার্দিওলার দল।

ড্র ম্যাচ ছাপিয়ে আলোচনায় ত্রোসার্ডের লালকার্ড। ম্যাচ শেষে এ নিয়ে ক্ষোভ ঝেড়ে আর্সেনাল কোচ মিকেল আর্তেতা। তিনি জানিয়েছেন, যেভাবে ত্রোসার্ড লাল কার্ড দেখেছেন, তাতে প্রিমিয়ার লিগের এ মৌসুমে ১০০ ম্যাচে লাল কার্ড দেখার আশা করছেন তিনি। অন্যদিকে আর্সেনালের রক্ষণাত্মক কৌশলকে ‘চতুর কিংবা জঘন্য’ বলে উল্লেখ স্টোনস।

ম্যাচটা হলান্ডের জন্য ছিল রেকর্ডের। নরওয়েজিয়ান স্ট্রাইকারের গতকালের গোলটি ছিল সিটির জার্সিতে ১০০ তম গোল। ইংলিশ ক্লাবটির হয়ে ১০৫তম ম্যাচে গোলের সেঞ্চুরির দেখা পেলেন হলান্ড। ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলের ইতিহাসে এটি যৌথভাবে দ্রুততম ১০০ গোলের রেকর্ড। এর আগে রেয়াল মাদ্রিদে যোগ দেওয়ার পর ২০১১ সালে ১০৫ ম্যাচে গোলের সেঞ্চুরি করেছিলেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো।

হলান্ডের রেকর্ডের ম্যাচে সব ছাপিয়ে আলোচনায় ত্রোসার্ডের লাল কার্ড। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ের অষ্টম মিনিটে সিটি মিডফিল্ডার বের্নার্দো সিলভাকে ফাউল করেন ত্রোসার্ড। রেফারি ফাউলের বাঁশি বাজানোর পরেও বেলজিয়ান ফরোয়ার্ড বলে শট নিয়ে দূরে পাঠানোয় দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখেন। ১০ জনে পরিণত হয় আর্সেনাল।

ত্রোসার্ডের এমন লালকার্ড মানতে পারছেন না আর্সেনাল কোচ আর্তেতা। ৪২ বছর বয়সী এ স্প্যানিশ কোচের মতে, এমন ইস্যুতে লাল কার্ড দেখানো হলে প্রিমিয়ার লিগের এ মৌসুমে ১০০ ম্যাচে লাল কার্ড প্রত্যাশা করছেন তিনি।

ম্যাচ শেষে ক্ষোভ ঝেড়ে আর্তেতা বলেছেন, ‘আমি সেটাই বলছি। এটা স্পষ্ট যে, এটি নিয়ে মন্তব্য করার প্রয়োজন নেই। এ নিয়ে দ্বিতীয়বার। চলতি মৌসুমে আমি প্রিমিয়ার লিগের ১০০টা ম্যাচে ১১ জনের বিপরীতে ১০ জন কিংবা ৯ জনের বিপরীতে ১০ জন দেখার আশা করতেছি। দেখা যাক।’

ত্রোসার্ডের ওই লালকার্ডের পর রক্ষণাত্মক কৌশল শুরু করে ১০ জনের আর্সেনাল। দ্বিতীয়ার্ধের বেশিরভাগ সময়ই আর্সেনালের অর্ধেই ছিল দুদলের ২০ জন খেলোয়াড়। এ সময় আর্তেতার শিষ্যরা কেবল সিটির আক্রমণ সামলে গেছে। শুধু দ্বিতীয়ার্ধে সিটি শট নিয়েছে ২৮টি, যার ৯টি ছিল লক্ষ্যে। অন্যদিকে এ সময় আর্সেনাল শট নিয়েছিল মাত্র ১টি।

এতো আক্রমণের পরেও গোল আদায় করতে পারছিল না সিটি। অবশেষে ম্যাচের যোগ করা সময়ের অষ্টম মিনিটে জটলা থেকে গোল করে সিটিকে সমতায় (২-২) ফেরান স্টোনস।

১০ জন হয়েও সিটির আক্রমণ যেভাবে সামলে গেছে, সেজন্য শিষ্যদের কৃতিত্ব দিয়েছেন আর্তেতা, ‘ওরা যেভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে, সেটা অবিশ্বাস্য। আমি ওদের জন্য গর্বিত। এমন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে এর চেয়ে কঠিন পরিস্থিতি আর হতে পারে না। আমরা যেভাবে সে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছি, সেটা অবিশ্বাস্য।’

তবে আর্সেনালের এমন কৌশলের কড়া সমালোচনা করেছেন সিটির সমতাসূচক গোলদাতা স্টোনস, ‘দুদলেল জন্যই বিকেলটা খুব কঠিন ছিল। ওরা (আর্সেনাল) যেভাবে খেলা থামিয়ে দিচ্ছিল, যেভাবে ফুটবল খেলেছে, অধিকাংশ দলই এমন করে না। তারা খেলার গতি একদম কমিয়ে দিয়েছিল।’

স্টোনস যোগ করেন, ‘আমি বলব না তারা এটা আয়ত্ত করেছে। তবে গত কয়েক বছর ধরেই এটা করে। সেজন্য আমরা এমনটা আগেই প্রত্যাশা করেছিলাম। তাদের এ কৌশলকে আপনি চতুর কিংবা জঘন্য, যেভাবে খুশি বলতে পারেন। কিন্তু তারা খেলাকে নষ্ট করে দিয়েছে, যা ছন্দে বিপর্যয় ঘটায়। নিজেদের সুবিধার জন্য তারা এ কৌশল ব্যবহার করেছে। কিন্তু আমরা সেটা ভালোভাবে মোকাবেলা করতে পেরেছি।’

১০০ ম্যাচে লাল কার্ড দেখার আশা আর্সেনাল কোচের

আপডেট : ০৫:২৮:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে গতকাল রোববার রাতে ম্যানচেস্টার সিটির মাঠে আতিথ্য নিয়েছিল আর্সেনাল। শিরোপা প্রত্যাশী দুই শক্তিশালী দলের লড়াই বলে কথা। প্রত্যাশামতো ম্যাচের প্রথমার্ধটা হয়ে উঠল আগুনে। ম্যাচের নবম মিনিটে আর্লিং হলান্ডের গোলে এগিয়ে যায় সিটি। ২২ মিনিটে রিকার্দো কালাফিওরির গোলে সমতা ফেরানোর পর প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে গ্যাব্রিয়েল মাগালিয়াইসের গোলে লিড (২-১) নেয় আর্সেনাল।

আক্রমণ-প্রতিআক্রমণে জমে ওঠা ম্যাচটা এ পর্যন্ত উত্তাপ ছড়ানোই ছিল। কিন্তু প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে আর্সেনাল মিডফিল্ডার লেয়ান্দ্র ত্রোসার্দ দ্বিতীয় হলুদ কার্ডে লাল কার্ডে মাঠের বাইরে গেলে ম্যাচের গতিপথ পাল্টে যায়। ১০ জন হয়ে পড়া আর্সেনাল দ্বিতীয়ার্ধে খোলসবন্দী হয়ে পড়ে। অন্যদিকে সিটি একের পর এক আক্রমণ চালিয়েও আর্সেনালের জমাট রক্ষণ ভেঙে গোল আদায় করতে পারছিল না কোনোভাবে। ম্যাচের একদম অন্তিম মুহূর্তে জন স্টোনসের কল্যাণে সমতাসূচক (২-২) গোল পায় পেপ গার্দিওলার দল।

ড্র ম্যাচ ছাপিয়ে আলোচনায় ত্রোসার্ডের লালকার্ড। ম্যাচ শেষে এ নিয়ে ক্ষোভ ঝেড়ে আর্সেনাল কোচ মিকেল আর্তেতা। তিনি জানিয়েছেন, যেভাবে ত্রোসার্ড লাল কার্ড দেখেছেন, তাতে প্রিমিয়ার লিগের এ মৌসুমে ১০০ ম্যাচে লাল কার্ড দেখার আশা করছেন তিনি। অন্যদিকে আর্সেনালের রক্ষণাত্মক কৌশলকে ‘চতুর কিংবা জঘন্য’ বলে উল্লেখ স্টোনস।

ম্যাচটা হলান্ডের জন্য ছিল রেকর্ডের। নরওয়েজিয়ান স্ট্রাইকারের গতকালের গোলটি ছিল সিটির জার্সিতে ১০০ তম গোল। ইংলিশ ক্লাবটির হয়ে ১০৫তম ম্যাচে গোলের সেঞ্চুরির দেখা পেলেন হলান্ড। ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলের ইতিহাসে এটি যৌথভাবে দ্রুততম ১০০ গোলের রেকর্ড। এর আগে রেয়াল মাদ্রিদে যোগ দেওয়ার পর ২০১১ সালে ১০৫ ম্যাচে গোলের সেঞ্চুরি করেছিলেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো।

হলান্ডের রেকর্ডের ম্যাচে সব ছাপিয়ে আলোচনায় ত্রোসার্ডের লাল কার্ড। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ের অষ্টম মিনিটে সিটি মিডফিল্ডার বের্নার্দো সিলভাকে ফাউল করেন ত্রোসার্ড। রেফারি ফাউলের বাঁশি বাজানোর পরেও বেলজিয়ান ফরোয়ার্ড বলে শট নিয়ে দূরে পাঠানোয় দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখেন। ১০ জনে পরিণত হয় আর্সেনাল।

ত্রোসার্ডের এমন লালকার্ড মানতে পারছেন না আর্সেনাল কোচ আর্তেতা। ৪২ বছর বয়সী এ স্প্যানিশ কোচের মতে, এমন ইস্যুতে লাল কার্ড দেখানো হলে প্রিমিয়ার লিগের এ মৌসুমে ১০০ ম্যাচে লাল কার্ড প্রত্যাশা করছেন তিনি।

ম্যাচ শেষে ক্ষোভ ঝেড়ে আর্তেতা বলেছেন, ‘আমি সেটাই বলছি। এটা স্পষ্ট যে, এটি নিয়ে মন্তব্য করার প্রয়োজন নেই। এ নিয়ে দ্বিতীয়বার। চলতি মৌসুমে আমি প্রিমিয়ার লিগের ১০০টা ম্যাচে ১১ জনের বিপরীতে ১০ জন কিংবা ৯ জনের বিপরীতে ১০ জন দেখার আশা করতেছি। দেখা যাক।’

ত্রোসার্ডের ওই লালকার্ডের পর রক্ষণাত্মক কৌশল শুরু করে ১০ জনের আর্সেনাল। দ্বিতীয়ার্ধের বেশিরভাগ সময়ই আর্সেনালের অর্ধেই ছিল দুদলের ২০ জন খেলোয়াড়। এ সময় আর্তেতার শিষ্যরা কেবল সিটির আক্রমণ সামলে গেছে। শুধু দ্বিতীয়ার্ধে সিটি শট নিয়েছে ২৮টি, যার ৯টি ছিল লক্ষ্যে। অন্যদিকে এ সময় আর্সেনাল শট নিয়েছিল মাত্র ১টি।

এতো আক্রমণের পরেও গোল আদায় করতে পারছিল না সিটি। অবশেষে ম্যাচের যোগ করা সময়ের অষ্টম মিনিটে জটলা থেকে গোল করে সিটিকে সমতায় (২-২) ফেরান স্টোনস।

১০ জন হয়েও সিটির আক্রমণ যেভাবে সামলে গেছে, সেজন্য শিষ্যদের কৃতিত্ব দিয়েছেন আর্তেতা, ‘ওরা যেভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে, সেটা অবিশ্বাস্য। আমি ওদের জন্য গর্বিত। এমন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে এর চেয়ে কঠিন পরিস্থিতি আর হতে পারে না। আমরা যেভাবে সে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছি, সেটা অবিশ্বাস্য।’

তবে আর্সেনালের এমন কৌশলের কড়া সমালোচনা করেছেন সিটির সমতাসূচক গোলদাতা স্টোনস, ‘দুদলেল জন্যই বিকেলটা খুব কঠিন ছিল। ওরা (আর্সেনাল) যেভাবে খেলা থামিয়ে দিচ্ছিল, যেভাবে ফুটবল খেলেছে, অধিকাংশ দলই এমন করে না। তারা খেলার গতি একদম কমিয়ে দিয়েছিল।’

স্টোনস যোগ করেন, ‘আমি বলব না তারা এটা আয়ত্ত করেছে। তবে গত কয়েক বছর ধরেই এটা করে। সেজন্য আমরা এমনটা আগেই প্রত্যাশা করেছিলাম। তাদের এ কৌশলকে আপনি চতুর কিংবা জঘন্য, যেভাবে খুশি বলতে পারেন। কিন্তু তারা খেলাকে নষ্ট করে দিয়েছে, যা ছন্দে বিপর্যয় ঘটায়। নিজেদের সুবিধার জন্য তারা এ কৌশল ব্যবহার করেছে। কিন্তু আমরা সেটা ভালোভাবে মোকাবেলা করতে পেরেছি।’