০৫:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

২০ বছরের মধ্যে লেবাননে সবচেয়ে বড় হামলা, নিহত বেড়ে ৪৯২

লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহকে লক্ষ্য করে ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলায় নিহত বেড়ে ৪৯২ জনে দাঁড়িয়েছে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, গত ২০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় হামলা এটি।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ২০০৬ সালের যুদ্ধের পর থেকে হিজবুল্লাহ লেবাননে যত অবকাঠামো তৈরি করেছিল, তা ধ্বংসের অভিযানে নেমেছে ইসরায়েল। দেশটির সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, এরই মধ্যে হিজবুল্লাহর ১ হাজার ৩০০টি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করা হয়েছে। ফলে হাজার হাজার পরিবার তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী আরও জানিয়েছে, হিজবুল্লাহ ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে ২০০টিরও বেশি রকেট নিক্ষেপ করেছে।

বিশ্বের অন্যান্য শক্তিধর দেশগুলো বলছে, ইসরায়েল ও লেবানন সর্বাত্মক যুদ্ধের দিকে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। উভয় পক্ষেরই সংযমী হওয়া উচিত।

লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্যমতে, নিহতদের মধ্যে ৩৫ জন শিশু ও ৫৮ জন নারী রয়েছেন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন ১ হাজার ৬৪৫ জন। হতাহতের মধ্যে কতজন বেসামরিক মানুষ আর কতজন যোদ্ধা রয়েছেন, তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

লেবাননের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফিরাস আবিয়াদ বলেন, ইসরায়েলি হামলার কারণে হাজার হাজার পরিবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। তিনি বলেন, লেবানন যেন আরেক গাজায় পরিণত না হয়।

এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়েনের (ইইউ) পররাষ্ট্রবিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেল বলেন, ‘নিউইয়র্কে জাতিসংঘের বিশ্বনেতাদের সমাবেশের আগে এমন সহিংসতা অত্যন্ত বিপজ্জনক ও উদ্বেগজনক। আমরা প্রায় একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের মধ্যে আছি।’

মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের সদর দপ্তর পেন্টাগন জানিয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বাড়ার প্রেক্ষিতে ‘স্বল্পসংখ্যক’ অতিরিক্ত সেনা পাঠাচ্ছে আমেরিকা। তবে কত সেনা পাঠানো হচ্ছে, তা সুনির্দিষ্ট করে বলেনি পেন্টাগন।

মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের হাজার হাজার সেনা রয়েছে। পাশাপাশি যুদ্ধজাহাজ, যুদ্ধবিমান ও বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও মোতায়েন করা হয়েছে। যাতে তারা নিজস্ব বাহিনী ও ইসরায়েলকে সুরক্ষিত রাখতে পারে।

পেন্টাগনের মুখপাত্র এয়ার ফোর্সের মেজর জেনারেল প্যাট্রিক রাইডার বলেন, ‘অতি সতর্কতা হিসেবে, আমরা এই অঞ্চলে আমাদের বাহিনীকে বড় করার জন্য অল্প সংখ্যক অতিরিক্ত মার্কিন সামরিক কর্মী পাঠাচ্ছি।’

কয়েক দিন ধরে লেবাননের হিজবুল্লাহ গোষ্ঠী ও ইসরায়েলি বাহিনীর মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা চলছিল। এরই মধ্যে সোমবার ভোর থেকে আকাশপথে ব্যাপক হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। জবাবে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে দুই শতাধিক রকেট ছুড়েছে হিজবুল্লাহ।

গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সবচেয়ে ভয়াবহ হামলার পর থেকেই গাজায় যুদ্ধ চালাচ্ছে ইসরায়েল। পাশাপাশি হিজবুল্লাহসহ ইরান সমর্থিত অন্য আঞ্চলিক গোষ্ঠীগুলো সেই সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে।

২০ বছরের মধ্যে লেবাননে সবচেয়ে বড় হামলা, নিহত বেড়ে ৪৯২

আপডেট : ১২:৪৭:৩৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহকে লক্ষ্য করে ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলায় নিহত বেড়ে ৪৯২ জনে দাঁড়িয়েছে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, গত ২০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় হামলা এটি।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ২০০৬ সালের যুদ্ধের পর থেকে হিজবুল্লাহ লেবাননে যত অবকাঠামো তৈরি করেছিল, তা ধ্বংসের অভিযানে নেমেছে ইসরায়েল। দেশটির সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, এরই মধ্যে হিজবুল্লাহর ১ হাজার ৩০০টি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করা হয়েছে। ফলে হাজার হাজার পরিবার তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী আরও জানিয়েছে, হিজবুল্লাহ ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে ২০০টিরও বেশি রকেট নিক্ষেপ করেছে।

বিশ্বের অন্যান্য শক্তিধর দেশগুলো বলছে, ইসরায়েল ও লেবানন সর্বাত্মক যুদ্ধের দিকে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। উভয় পক্ষেরই সংযমী হওয়া উচিত।

লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্যমতে, নিহতদের মধ্যে ৩৫ জন শিশু ও ৫৮ জন নারী রয়েছেন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন ১ হাজার ৬৪৫ জন। হতাহতের মধ্যে কতজন বেসামরিক মানুষ আর কতজন যোদ্ধা রয়েছেন, তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

লেবাননের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফিরাস আবিয়াদ বলেন, ইসরায়েলি হামলার কারণে হাজার হাজার পরিবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। তিনি বলেন, লেবানন যেন আরেক গাজায় পরিণত না হয়।

এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়েনের (ইইউ) পররাষ্ট্রবিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেল বলেন, ‘নিউইয়র্কে জাতিসংঘের বিশ্বনেতাদের সমাবেশের আগে এমন সহিংসতা অত্যন্ত বিপজ্জনক ও উদ্বেগজনক। আমরা প্রায় একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের মধ্যে আছি।’

মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের সদর দপ্তর পেন্টাগন জানিয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বাড়ার প্রেক্ষিতে ‘স্বল্পসংখ্যক’ অতিরিক্ত সেনা পাঠাচ্ছে আমেরিকা। তবে কত সেনা পাঠানো হচ্ছে, তা সুনির্দিষ্ট করে বলেনি পেন্টাগন।

মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের হাজার হাজার সেনা রয়েছে। পাশাপাশি যুদ্ধজাহাজ, যুদ্ধবিমান ও বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও মোতায়েন করা হয়েছে। যাতে তারা নিজস্ব বাহিনী ও ইসরায়েলকে সুরক্ষিত রাখতে পারে।

পেন্টাগনের মুখপাত্র এয়ার ফোর্সের মেজর জেনারেল প্যাট্রিক রাইডার বলেন, ‘অতি সতর্কতা হিসেবে, আমরা এই অঞ্চলে আমাদের বাহিনীকে বড় করার জন্য অল্প সংখ্যক অতিরিক্ত মার্কিন সামরিক কর্মী পাঠাচ্ছি।’

কয়েক দিন ধরে লেবাননের হিজবুল্লাহ গোষ্ঠী ও ইসরায়েলি বাহিনীর মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা চলছিল। এরই মধ্যে সোমবার ভোর থেকে আকাশপথে ব্যাপক হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। জবাবে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে দুই শতাধিক রকেট ছুড়েছে হিজবুল্লাহ।

গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সবচেয়ে ভয়াবহ হামলার পর থেকেই গাজায় যুদ্ধ চালাচ্ছে ইসরায়েল। পাশাপাশি হিজবুল্লাহসহ ইরান সমর্থিত অন্য আঞ্চলিক গোষ্ঠীগুলো সেই সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে।