শেখ হাসিনা কোথায় আছেন, জানাল ভারতের দ্য প্রিন্ট
- আপডেট সময় : ০৬:৪৯:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪
- / ৩৬৪ বার পড়া হয়েছে
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা ভারতে যাওয়ার পর থেকে কোথায় আছেন বা কীভাবে আছেন তা নিয়ে ভারত সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে এখন পর্যন্ত কিছু জানায়নি। তিনি দেশটিতে আশ্রয় নিয়েছেন জানালেও তাঁর অবস্থানের পুরো বিষয়টিই কঠোর গোপনীয়তার মধ্যে রাখা হয়েছে। তবে কয়েকটি সূত্রের বরাতে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য প্রিন্ট জানিয়েছে, শেখ হাসিনা দিল্লিতে অবস্থান করছেন।
আজ বৃহস্পতিবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে দ্য প্রিন্ট লিখেছে, নয়াদিল্লির লুটিয়েন্স বাংলো জোনের একটি বাড়িতে গত দুই মাস ধরে বসবাস করছেন শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর জন্য কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে ভারত সরকার।
লুটিয়েন্স বাংলো এলাকাটিতে ভারতের মন্ত্রী, সিনিয়র এমপি ও শীর্ষ কর্মকর্তাদের জন্য বরাদ্দকৃত বাড়ির মতো একটিতে হাসিনাকে থাকতে দেওয়া হয়েছে। তাঁর গোপনীয়তা ও নিরাপত্তার স্বার্থে দ্য প্রিন্ট বাড়িটির প্রকৃত ঠিকানা বা রাস্তার বিবরণ প্রকাশ করেনি।
একটি সূত্র প্রিন্টকে জানায়, ‘শেখ হাসিনার জন্য কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা রয়েছে। তাঁর নিরাপত্তায় সার্বক্ষণিক সাদা পোশাকে নিরাপত্তাকর্মীরা রয়েছেন। তিনি একজন সম্মানিত ব্যক্তি হিসেবে এই পর্যায়ের নিরাপত্তা পাচ্ছেন। দুই মাসের বেশি সময় ধরে ওই এলাকায় বসবাস করছেন হাসিনা। সেখানে তাঁর থাকার সব ব্যবস্থা করা হয়েছে। যথাযথ প্রটোকলসহ হাসিনা মাঝেমধ্যে পাশ্ববর্তী লোধি গার্ডেনে হাঁটতে যান।’
সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, ‘হাসিনা ও তাঁর ঘনিষ্ঠ কয়েকজন গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি বিমানে চড়ে গাজিয়াবাদের হিন্দন বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করেন। ওই দিনই ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল ও উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তারা বিমানঘাঁটিতে হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন। এর দুই দিনের মধ্যে ওই বিমানঘাঁটি থেকে অন্যত্র নেওয়া হয় হাসিনাকে।’
আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, ‘শেখ হাসিনা বেশি দিন বিমানঘাঁটিতে থাকতে পারতেন না। সেখানে থাকার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা ছিল না। তাই কয়েক দিনের মধ্যে তাঁকে একটি নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। এরপর লুটিয়েন্স দিল্লির নিরাপদ ও সুরক্ষিত এলাকায় একটি বাড়িতে তাঁর থাকার ব্যবস্থা করা হয়। কঠোর নিরাপত্তাবেষ্টিত ওই এলাকাটিতে অনেক সাবেক ও বর্তমান এমপিদের বাড়ি রয়েছে।’
হাসিনা প্রায়ই বাড়ির বাইরে যান কি না জানতে চাইলে সূত্রটি বলে, ‘বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন হলে নিরাপত্তায় নিয়োজিতদের জানানো হয় এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’
ভারত সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে শেখ হাসিনার অবস্থান বাংলাদেশ সরকারের কাছে প্রকাশ করেনি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর গত আগস্টে পার্লামেন্টে বলেছিলেন, হাসিনা তাৎক্ষণিকভাবে ভারতে আসার অনুমোদন চেয়েছিলেন।
গত ৫ আগস্ট হাসিনার সঙ্গে তাঁর বোন শেখ রেহানাও ভারতে যান। তবে তিনি বোনের সঙ্গে থাকছেন কি না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আর হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল দিল্লিতে থাকেন। তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক, যার সদরদপ্তর দিল্লিতে।
এদিকে জুলাই-আগস্টে গণহত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গত সপ্তাহে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ১৮ নভেম্বরের মধ্যে শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করে হাজিরের নির্দেশও দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
গত ১৭ অক্টোবর চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলামের করা আবেদন গ্রহণ করে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ আদেশ দেন। সদস্যরা হলেন, বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মহিতুল হক এনাম চৌধুরী।