মধ্যপ্রাচ্য ইস্যুতে পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে বিশ্লেষণ মার্কিন প্রার্থীদের
- আপডেট সময় : ০১:২০:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ নভেম্বর ২০২৪
- / ৩৪৭ বার পড়া হয়েছে
যুক্তরাষ্ট্রে দ্বিতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্মাবলম্বী জনগোষ্ঠী ইহুদি ও মুসলিম। তাই আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মধ্যপ্রাচ্য ইস্যুতে প্রার্থীদের পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। বিশ্লেষকদের ধারণা, ফিলিস্তিন সংকট নিয়ে দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের ওপর জোর দিবেন কামালা হ্যারিস। অন্যদিকে গাজাবাসীকে ইসরাইল কিংবা মিশরের মরুভূমিতে সরাতে পারেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এক বছরের বেশি সময় ধরে গাজায় চলছে হামাস-ইসরাইল যুদ্ধ। আঞ্চলিক এই যুদ্ধের উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে গোটা মধ্যপ্রাচ্যে। ধর্মের দিক দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে দ্বিতীয় ও তৃতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী ইহুদি ও মুসলিম। তাই মার্কিন রাজনীতিতেও আলোচনার তুঙ্গে মধ্যপ্রাচ্য ইস্যু।
নির্বাচনী প্রচারণা সভায় দুই প্রেসিডেন্ট প্রার্থীই ইসরাইলের গাজা অভিযানের পক্ষে সাফাই গেয়েছেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প চেষ্টা করেছেন ইসরাইলের অস্তিত্ব রক্ষার সঙ্গে নিজের পুনর্নিবাচিত হওয়ার বিষয়টি প্রতিষ্ঠা করতে। নিজেকে ইসরাইলের ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ বন্ধু হিসেবেও দাবি করেছেন ট্রাম্প। দ্বিরাষ্ট্রের প্রশ্নে এখনও নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেননি রিপাবলিকান প্রার্থী। তবে গাজা খালি করে সমুদ্রমুখী রিসোর্ট করার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে ট্রাম্পের জামাতা। এক্ষেত্রে ফিলিস্তিনিদের পাঠানো হতে পারে ইসরাইল কিংবা মিশরের মরুভূমিতে।
তবে সংঘাত নিরসনে দ্বিরাষ্ট্র সমাধানকে প্রাধান্য দিয়েছেন প্রতিদ্বন্দ্বী কামালা হ্যারিস। ফিলিস্তিনিদের দুর্ভোগের প্রশ্নে চুপ থাকবেন না বলেও দাবি করেছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী। যদিও যুদ্ধবিরতির চুক্তির বিষয়ে বাইডেন-কামালা প্রশাসনের কূটনৈতিক ব্যর্থতা কারোরই চোখ এড়ায় নি। ইসরাইলকে অস্ত্র রপ্তানি বন্ধ করা হবে না বলেও সাফ জানিয়েছেন বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট। যুদ্ধ পরবর্তী গাজার জন্য উপত্যকা পুনর্গঠন, শক্তিশালী নিরাপত্তা বাহিনী তৈরি ও শাসন কাঠামো গড়ে তোলার পরিকল্পনা উত্থাপন করেছেন কামালা।
ক্ষমতায় থাকলে ৭ অক্টোবরের ঘটনা ঘটতো না। আর ক্ষমতা পেলে মুহূর্তের মধ্যেই বন্ধ করবেন গাজা যুদ্ধ। ট্রাম্পের এমন দাবিগুলো এখন টক অফ আমেরিকা। যদিও বিশ্লেষকরা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ বন্ধ করা সহজ হবে না ট্রাম্পের জন্য।
ইরান প্রসঙ্গে ট্রাম্পের চেয়ে বড় বিরোধী সম্ভবত কেউ নেই। তাই নির্বাচনে জয় পেলে নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে ইরানকে এক ঘরে করে রাখার চেষ্টা আরও বাড়বে বলে ধারণা করাই যায়। আগের মেয়াদের মতো এবারও চলতে পারে শীর্ষ ইরানি জেনারেলদের গুপ্তহত্যা ও হামলার মাধ্যমে পরমাণু পরীক্ষা পিছিয়ে দেয়া।
এক্ষেত্রেও কিছুটা ব্যতিক্রম কামলা। ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জানান, জয় পেলে পরমাণু কর্মসূচি বন্ধে ইরানের সঙ্গে আবারও চুক্তি করতে আগ্রহী তিনি। তবে হামাস, হিজবুল্লাহ ও হুথিদের মতো প্রক্সি সংগঠন দিয়ে খামেনি প্রশাসনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধে সর্বোচ্চ পদক্ষেপ গ্রহণের ঘোষণা কামালা হ্যারিসের।
ধারণা করা হয়েছে, বর্তমান বাইডেন প্রশাসনের নীতিগুলো অপরিবর্তিত রাখবেন কামালা। এক্ষেত্রে তার মুখে বাক স্বাধীনতার কথা বারবার উচ্চারিত হলেও ইসরাইলের বিরুদ্ধে যেকোনো মত দমনে কঠোর অবস্থানে থাকবেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী। অন্যদিকে সৌদি আরবের মতো উপসাগরীয় দেশগুলোর মানবাধিকার প্রসঙ্গ এড়িয়ে যাবেন ট্রাম্প। আগের মেয়াদের মতো জোর দিবেন পারস্পরিক অর্থনৈতিক সহায়তায়।