ঢাকা ০৯:৪৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ১ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

তেল পরিবহনে ৬ মাসে সাশ্রয় ৮০০ কোটি টাকা

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৭:০৬:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / ৩৭০ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

দরপত্রের কিছু শর্ত পরিবর্তন এবং ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়ার ফলে আমদানি করা জ্বালানি তেল পরিবহনে ছয় মাসে আগের বছর চেয়ে সরকারের সাশ্রয় হবে কমপক্ষে ৮০০ কোটি টাকা। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত তেল আমদানির দরপত্রের পর কয়েক দফায় সমাঝোতা করে এ ব্যয় কমানো হয়েছে।

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কপোরেশনের (বিপিসি) চেয়ারম্যান মো. আমিন উল আহসান বলেন, ‘সবার জন্য ভালো খবর হচ্ছে নতুন বছর ২০২৫ সালে শুধু তেল পরিবহনে (ফ্রেইট চার্জ) সরকার ৮০০ কোটি টাকার বেশি ব্যয় কমাতে পেরেছে। এ জন্য বিভিন্ন কারণ রয়েছে।’

বাংলাদেশে জ্বালনি তেলের চাহিদা প্রতি বছর বাড়ছে। বিপিসির তথ্যমতে, ২০২০ সালে জ্বালানি তেল আমদানি হয়েছে ৫১ লাখ ৯২ হাজার ৬৪০ টন যা ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে। ২০২১ সালে দেশে জ্বালানি তেল আমদানি হয়েছে ৫৬ লাখ টনের বেশি, ২০২২ সালে ৬৫ লাখ টনের বেশি, ২০২৩ সালে ৬৮ লাখ ৬৮ হাজার টন, যা ২০২৪ সালে ৬৩ লাখ ৭১ হাজার টনের বেশি।

মূলত জুলাইয়ে ছাত্র‑জনতার আন্দোলনসহ নানা কারণে আমদানিতে এ অবনমন হয়েছে। এ আমদানির বড় অংশই ডিজেল, যার পরিমাণ ৩৫ লাখ ৩৫ হাজার টন।

প্রতি বছর এই জ্বালানি তেল আমদানিতে বাংলাদেশ প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে। এ ব্যয়ে ফ্রেইট চার্জ একটি বড় অংশ।

বিপিসির তথ্য বলছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে; অর্থাৎ, ২০২৩ সালের জানুয়ারি‑জুন সময়ে ডিজেলের প্রতি ব্যারেলে ফ্রেইট চার্জ ছিল ১০ দশমিক ৬৫ ডলার হারে, যা জুলাই‑ডিসেম্বরে সময়ে ছিল ৯ দশমিক ৩২ ডলার, ২০২৪ সালের জানুয়ারি‑জুনে ছিল ৯ দশমিক ১৮ ডলার ও জুলাই-ডিসম্বেরে ৮ দশমিক ৮৩ ডলার। এ খরচ ২০২৫ সালে এসে নেমেছে ৫ দশমিক ২৬ ডলারে। একইভাবে ব্যারেলপ্রতি জেট ফুয়েলের ফ্রেইট চার্জ ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ছিল ১২ দশমিক ৫৫ ডলার, ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ১০ দশমিক ৮৬ ডলার। এ হার ২০২৫ সালের জানুয়ারির জন্য ৭ দশমিক ৫৩ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে মেরিন ফুয়েলের ফ্রেইট চার্জ বেড়েছে। ২০২৩ সালে প্রতি ব্যারেল মেরিন ফুয়েলের ফ্রেইট চার্জ ছিল ৬৭ দশমিক ৮৮ ডলার। ২০২৫ সালের জানুয়ারি এসে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭২ ডলারে। তবে ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে এ হার ছিল ৭৮ ডলার।

সরকার বদলের কারণেই প্রতিযোগিতামূলক ফ্রেইট চার্জ নির্ধারণে বাংলাদেশ সুবিধা পেয়েছে জানিয়ে বিপিসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘ভালো ফ্রেইট চার্জ নির্ধারণের পরিবেশ পাওয়া গেছে, যাতে করে আমরা ঠিকাদারদের সাথে সমাঝোতা করতে পেরেছি।’ তিনি বলেন, ‘ফ্রেইট চার্জে এত ডলার কমার অর্থ হচ্ছে শত কোটি টাকা সাশ্রয়। এবারের সমাঝোতাতে ২০২৫ সালের জন্য ৩ ডলারের বেশি কমানো গেছে। ফলে ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে সাশ্রয় হবে ৮০০ কোটি টাকার বেশি।’

কীভাবে সম্ভব হল? এ বিষয়ে বিপিসি সূত্র জানিয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর তেল আমদানিতে আগের সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়েছে। পরিবর্তন করেছে আন্তর্জাতিক টেন্ডারের শর্ত। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে (বাংলাদেশে জ্বালানি তেল রপ্তানির শর্ত হিসেবে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের রিফাইনারি বা তেল পরিশোধনাগার থাকার বাধ্যবাধকতা ছিল। অর্থাৎ, রিফাইনারির মালিক ছাড়া অন্য কেউ বাংলাদেশে জ্বালানি তেল বিক্রি করতে পারবে না।

এ সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর এ শর্ত শিথিল করেছে। নতুন শর্ত অনুযায়ী, রিফাইনারির মালিক বা এজেন্ট ছাড়াও আর্ন্তজাতিক যেকোনো সরবরাহকারী বিপিসিকে তেল বিক্রি করতে পারবে। তবে এ জন্য সেই ঠিকাদার বা সরবরাহকারীর কিছু শর্ত পালন করতে হবে। বিশেষ করে গত তিন বছরে ৩০০ কোটি ডলারের তেল বিক্রির লেনদেন থাকতে হবে। আন্তর্জাতিক দরপত্রের ক্ষেত্রে এ শর্ত শিথিলের কারণে এবার আগের চেয়ে বেশি সাড়া পাওয়া গেছে। এতে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো ফ্রেইট চার্জ কমিয়েছে।

গেল বছর বিপিসির এ টেন্ডারে অংশ নিয়েছিল সাতটি কোম্পানি। এবার নিয়েছে ১০টি কোম্পানি। সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এবারের টেন্ডারে নতুন করে পেট্রোলিম্যাক্স সিঙ্গাপুর লিমিটেড, সিনোসেম ইন্টারন্যাশনাল ও পেট্রোচায়না সিঙ্গাপুর লিমিটেড অংশ নিয়েছে। তবে তাদের কেউ নূন্যতম দরদাতা হতে পারেনি। ২০২৫ সালের জানুয়ারি-জুনের জন্য সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে কাজ পেয়েছে ভিটল, ইউনিপ্যাক ও ওকিউ ট্রেডিং।

জ্বালানি বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, ‘জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান আগের সরকারের সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়েছেন। এতে আগের সরবরাহকারী কোম্পানিগুলো বেশ চাপে পড়ে গেছে। তারা নতুন নতুন কোম্পানির আগমনের আশঙ্কায় আগের চেয়ে ফ্রেইট চার্জ কমিয়ে দিয়েছে।’

অন্তর্বর্তী সরকারের চেষ্টার ফলেই জ্বালানি তেলের মতো একটি জরুরি পণ্য আমদানিতে ফ্রেইট চার্জ এভাবে কমানো গেছে বলে মনে করেন এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘আগের কোম্পানিগুলো এবারও তেল বিক্রির কাজ পেলেও ২০২৫ সালের জন্য তেল সরবরাহে ফ্রেইট চার্জ কমিয়ে দিল কীভাবে? জ্বালানি তেল কেনার শর্ত শিথিল করায় অবশ্যই এ দেশ উপকৃত হয়েছে। চাইলে তো আগেও পারা যেত।’

নিউজটি শেয়ার করুন

তেল পরিবহনে ৬ মাসে সাশ্রয় ৮০০ কোটি টাকা

আপডেট সময় : ০৭:০৬:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

দরপত্রের কিছু শর্ত পরিবর্তন এবং ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়ার ফলে আমদানি করা জ্বালানি তেল পরিবহনে ছয় মাসে আগের বছর চেয়ে সরকারের সাশ্রয় হবে কমপক্ষে ৮০০ কোটি টাকা। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত তেল আমদানির দরপত্রের পর কয়েক দফায় সমাঝোতা করে এ ব্যয় কমানো হয়েছে।

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কপোরেশনের (বিপিসি) চেয়ারম্যান মো. আমিন উল আহসান বলেন, ‘সবার জন্য ভালো খবর হচ্ছে নতুন বছর ২০২৫ সালে শুধু তেল পরিবহনে (ফ্রেইট চার্জ) সরকার ৮০০ কোটি টাকার বেশি ব্যয় কমাতে পেরেছে। এ জন্য বিভিন্ন কারণ রয়েছে।’

বাংলাদেশে জ্বালনি তেলের চাহিদা প্রতি বছর বাড়ছে। বিপিসির তথ্যমতে, ২০২০ সালে জ্বালানি তেল আমদানি হয়েছে ৫১ লাখ ৯২ হাজার ৬৪০ টন যা ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে। ২০২১ সালে দেশে জ্বালানি তেল আমদানি হয়েছে ৫৬ লাখ টনের বেশি, ২০২২ সালে ৬৫ লাখ টনের বেশি, ২০২৩ সালে ৬৮ লাখ ৬৮ হাজার টন, যা ২০২৪ সালে ৬৩ লাখ ৭১ হাজার টনের বেশি।

মূলত জুলাইয়ে ছাত্র‑জনতার আন্দোলনসহ নানা কারণে আমদানিতে এ অবনমন হয়েছে। এ আমদানির বড় অংশই ডিজেল, যার পরিমাণ ৩৫ লাখ ৩৫ হাজার টন।

প্রতি বছর এই জ্বালানি তেল আমদানিতে বাংলাদেশ প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে। এ ব্যয়ে ফ্রেইট চার্জ একটি বড় অংশ।

বিপিসির তথ্য বলছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে; অর্থাৎ, ২০২৩ সালের জানুয়ারি‑জুন সময়ে ডিজেলের প্রতি ব্যারেলে ফ্রেইট চার্জ ছিল ১০ দশমিক ৬৫ ডলার হারে, যা জুলাই‑ডিসেম্বরে সময়ে ছিল ৯ দশমিক ৩২ ডলার, ২০২৪ সালের জানুয়ারি‑জুনে ছিল ৯ দশমিক ১৮ ডলার ও জুলাই-ডিসম্বেরে ৮ দশমিক ৮৩ ডলার। এ খরচ ২০২৫ সালে এসে নেমেছে ৫ দশমিক ২৬ ডলারে। একইভাবে ব্যারেলপ্রতি জেট ফুয়েলের ফ্রেইট চার্জ ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ছিল ১২ দশমিক ৫৫ ডলার, ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ১০ দশমিক ৮৬ ডলার। এ হার ২০২৫ সালের জানুয়ারির জন্য ৭ দশমিক ৫৩ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে মেরিন ফুয়েলের ফ্রেইট চার্জ বেড়েছে। ২০২৩ সালে প্রতি ব্যারেল মেরিন ফুয়েলের ফ্রেইট চার্জ ছিল ৬৭ দশমিক ৮৮ ডলার। ২০২৫ সালের জানুয়ারি এসে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭২ ডলারে। তবে ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে এ হার ছিল ৭৮ ডলার।

সরকার বদলের কারণেই প্রতিযোগিতামূলক ফ্রেইট চার্জ নির্ধারণে বাংলাদেশ সুবিধা পেয়েছে জানিয়ে বিপিসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘ভালো ফ্রেইট চার্জ নির্ধারণের পরিবেশ পাওয়া গেছে, যাতে করে আমরা ঠিকাদারদের সাথে সমাঝোতা করতে পেরেছি।’ তিনি বলেন, ‘ফ্রেইট চার্জে এত ডলার কমার অর্থ হচ্ছে শত কোটি টাকা সাশ্রয়। এবারের সমাঝোতাতে ২০২৫ সালের জন্য ৩ ডলারের বেশি কমানো গেছে। ফলে ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে সাশ্রয় হবে ৮০০ কোটি টাকার বেশি।’

কীভাবে সম্ভব হল? এ বিষয়ে বিপিসি সূত্র জানিয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর তেল আমদানিতে আগের সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়েছে। পরিবর্তন করেছে আন্তর্জাতিক টেন্ডারের শর্ত। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে (বাংলাদেশে জ্বালানি তেল রপ্তানির শর্ত হিসেবে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের রিফাইনারি বা তেল পরিশোধনাগার থাকার বাধ্যবাধকতা ছিল। অর্থাৎ, রিফাইনারির মালিক ছাড়া অন্য কেউ বাংলাদেশে জ্বালানি তেল বিক্রি করতে পারবে না।

এ সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর এ শর্ত শিথিল করেছে। নতুন শর্ত অনুযায়ী, রিফাইনারির মালিক বা এজেন্ট ছাড়াও আর্ন্তজাতিক যেকোনো সরবরাহকারী বিপিসিকে তেল বিক্রি করতে পারবে। তবে এ জন্য সেই ঠিকাদার বা সরবরাহকারীর কিছু শর্ত পালন করতে হবে। বিশেষ করে গত তিন বছরে ৩০০ কোটি ডলারের তেল বিক্রির লেনদেন থাকতে হবে। আন্তর্জাতিক দরপত্রের ক্ষেত্রে এ শর্ত শিথিলের কারণে এবার আগের চেয়ে বেশি সাড়া পাওয়া গেছে। এতে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো ফ্রেইট চার্জ কমিয়েছে।

গেল বছর বিপিসির এ টেন্ডারে অংশ নিয়েছিল সাতটি কোম্পানি। এবার নিয়েছে ১০টি কোম্পানি। সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এবারের টেন্ডারে নতুন করে পেট্রোলিম্যাক্স সিঙ্গাপুর লিমিটেড, সিনোসেম ইন্টারন্যাশনাল ও পেট্রোচায়না সিঙ্গাপুর লিমিটেড অংশ নিয়েছে। তবে তাদের কেউ নূন্যতম দরদাতা হতে পারেনি। ২০২৫ সালের জানুয়ারি-জুনের জন্য সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে কাজ পেয়েছে ভিটল, ইউনিপ্যাক ও ওকিউ ট্রেডিং।

জ্বালানি বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, ‘জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান আগের সরকারের সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়েছেন। এতে আগের সরবরাহকারী কোম্পানিগুলো বেশ চাপে পড়ে গেছে। তারা নতুন নতুন কোম্পানির আগমনের আশঙ্কায় আগের চেয়ে ফ্রেইট চার্জ কমিয়ে দিয়েছে।’

অন্তর্বর্তী সরকারের চেষ্টার ফলেই জ্বালানি তেলের মতো একটি জরুরি পণ্য আমদানিতে ফ্রেইট চার্জ এভাবে কমানো গেছে বলে মনে করেন এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘আগের কোম্পানিগুলো এবারও তেল বিক্রির কাজ পেলেও ২০২৫ সালের জন্য তেল সরবরাহে ফ্রেইট চার্জ কমিয়ে দিল কীভাবে? জ্বালানি তেল কেনার শর্ত শিথিল করায় অবশ্যই এ দেশ উপকৃত হয়েছে। চাইলে তো আগেও পারা যেত।’