ঢাকা ১১:৪৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

গণঅভ্যুত্থানে সাভারে হত্যায় জড়িতরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৩:২৩:০৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / ৩৭১ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

জুলাই আগস্টের অভ্যুত্থানে দেশের যেসব এলাকায় বেশি হত্যাযজ্ঞ চলে তার অন্যতম সাভার। এই হত্যায় জড়িত ও চিহ্নিত আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর আত্মগোপনে চলে যাওয়া, বিগত আমলের রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় ফুলে-ফেঁপে ওঠা দাপুটে নেতাকর্মীদের আইনের আওতায় আনার দাবি স্থানীয় রাজনৈতিক কর্মী ও সচেতন নাগরিকদের।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে দেশের সবচেয়ে বেশি হত্যাযজ্ঞ চলে সাভারে। সেখানে প্রকাশ্যে ছাত্র জনতার উপর গুলি চালায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। রাজপথে গণহত্যায় আগ্নেআস্ত্র নিয়ে সরাসরি অংশ নেন সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম রাজিব, ফখরুল আলম সমর, আশুলিয়া আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাভারের সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক ফারুক হাসান তুহিন, সাভার ছাত্রলীগ সভাপতি আতিকসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

জুলাই অভ্যুত্থানে জনগণের বিরুদ্ধে সশস্ত্রভাবে অবস্থান নেয়া এসব অভিযুক্তরা ৫ আগস্টের পর থেকেই চলে গেছেন আত্মগোপনে।

জুলাই আন্দোলনের সংগঠক, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয়দের দাবি, রাজনীতিকে ঢাল বানিয়ে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুতই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

স্থানীয় একজন বলেন, ‘৫ আগস্ট বিকেলে কমপক্ষে শতাধিক লোক তারা গুলি করে হত্যা করেছে সাভারে। প্রশাসনের কাছে প্রত্যাশা করবো যেন দ্রুত যে যেখানে আছে ধরে এনে আইনের আওতায় নিয়ে এসে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করুক।’

স্থানীয় অন্য একজন বলেন, ‘তারা যেদিন ধরা পড়বে, আইনে আসবে, প্রশাসন তাদের গ্রেপ্তার করবে তখনই আমাদের সাভারবাসীর অন্তরে একটা শান্তি আসবে।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল বলেন, ‘সাভার-আশুলিয়ার সংসদ সদস্য সাইফুল এবং আওয়ামী লীগ নেতা রাজীব, সমর এবং তুহিন, ছাত্রলীগ নেতা আতিকসহ যারা এই হামলার সঙ্গে জড়িত ছিল তাদের দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। অন্যথায় আমরা যে গণঅভ্যুত্থান পেয়েছি সেই অভ্যুত্থান পরিপূর্ণতা পাবে না।’

বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-পরিবার কল্যাণবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. দেওয়ান মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বাবু বলেন, ‘খুঁজে খুঁজে তাদের বের করতে হবে, অনেকের কাছে ভিডিও আছে, অনেকে আমাদের চাক্ষুষ প্রমাণ আছে, এদের সাক্ষী প্রমাণ নিয়ে তাদের মামলায় আসামি করতে হবে। এবং প্রচলিত নিয়মে আইনের মধ্যে তাদের যা যা শাস্তি দেয়া দরকার তাদের সেটা দিতে হবে।’

জুলাই আন্দোলনে প্রকাশ্যে হত্যাসহ নানা অপরাধের অভিযোগে গেল চার মাসে শতাধিক মামলা হয়েছে। তবে ধরাছোঁয়ার বাইরে আছে হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেয়া চিহ্নিত নেতাকর্মীরা। যদিও পুলিশ বলছে, অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।

ঢাকা জেলা সাভার সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহীনুর কবির বলেন, ‘সাভার-আশুলিয়া-ধামরাই থানায় মামলা হয়েছে প্রায় ১০০ এর মতো। এবং আসামিও রয়েছে অনেক। তাদের অনেককেই আমরা গ্রেপ্তার করেছি। অনেকেই বাড়িছাড়া হয়েছে। তাদের আমরা গ্রেপ্তার করছি এবং প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। যে করেই হোক তাদের আমরা আইনের আওতায় নিয়ে আসবো।’

ছাত্র জনতার ত্যাগের মধ্য দিয়ে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে শহীদ পরিবারগুলো বলছেন, নিরস্ত্র মানুষের ওপর গুলি চালানো অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা না করলে, বৃথা যাবে হাজারও মানুষের আত্মত্যাগ।

নিউজটি শেয়ার করুন

গণঅভ্যুত্থানে সাভারে হত্যায় জড়িতরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে

আপডেট সময় : ০৩:২৩:০৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

জুলাই আগস্টের অভ্যুত্থানে দেশের যেসব এলাকায় বেশি হত্যাযজ্ঞ চলে তার অন্যতম সাভার। এই হত্যায় জড়িত ও চিহ্নিত আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর আত্মগোপনে চলে যাওয়া, বিগত আমলের রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় ফুলে-ফেঁপে ওঠা দাপুটে নেতাকর্মীদের আইনের আওতায় আনার দাবি স্থানীয় রাজনৈতিক কর্মী ও সচেতন নাগরিকদের।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে দেশের সবচেয়ে বেশি হত্যাযজ্ঞ চলে সাভারে। সেখানে প্রকাশ্যে ছাত্র জনতার উপর গুলি চালায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। রাজপথে গণহত্যায় আগ্নেআস্ত্র নিয়ে সরাসরি অংশ নেন সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম রাজিব, ফখরুল আলম সমর, আশুলিয়া আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাভারের সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক ফারুক হাসান তুহিন, সাভার ছাত্রলীগ সভাপতি আতিকসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

জুলাই অভ্যুত্থানে জনগণের বিরুদ্ধে সশস্ত্রভাবে অবস্থান নেয়া এসব অভিযুক্তরা ৫ আগস্টের পর থেকেই চলে গেছেন আত্মগোপনে।

জুলাই আন্দোলনের সংগঠক, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয়দের দাবি, রাজনীতিকে ঢাল বানিয়ে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুতই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

স্থানীয় একজন বলেন, ‘৫ আগস্ট বিকেলে কমপক্ষে শতাধিক লোক তারা গুলি করে হত্যা করেছে সাভারে। প্রশাসনের কাছে প্রত্যাশা করবো যেন দ্রুত যে যেখানে আছে ধরে এনে আইনের আওতায় নিয়ে এসে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করুক।’

স্থানীয় অন্য একজন বলেন, ‘তারা যেদিন ধরা পড়বে, আইনে আসবে, প্রশাসন তাদের গ্রেপ্তার করবে তখনই আমাদের সাভারবাসীর অন্তরে একটা শান্তি আসবে।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল বলেন, ‘সাভার-আশুলিয়ার সংসদ সদস্য সাইফুল এবং আওয়ামী লীগ নেতা রাজীব, সমর এবং তুহিন, ছাত্রলীগ নেতা আতিকসহ যারা এই হামলার সঙ্গে জড়িত ছিল তাদের দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। অন্যথায় আমরা যে গণঅভ্যুত্থান পেয়েছি সেই অভ্যুত্থান পরিপূর্ণতা পাবে না।’

বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-পরিবার কল্যাণবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. দেওয়ান মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বাবু বলেন, ‘খুঁজে খুঁজে তাদের বের করতে হবে, অনেকের কাছে ভিডিও আছে, অনেকে আমাদের চাক্ষুষ প্রমাণ আছে, এদের সাক্ষী প্রমাণ নিয়ে তাদের মামলায় আসামি করতে হবে। এবং প্রচলিত নিয়মে আইনের মধ্যে তাদের যা যা শাস্তি দেয়া দরকার তাদের সেটা দিতে হবে।’

জুলাই আন্দোলনে প্রকাশ্যে হত্যাসহ নানা অপরাধের অভিযোগে গেল চার মাসে শতাধিক মামলা হয়েছে। তবে ধরাছোঁয়ার বাইরে আছে হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেয়া চিহ্নিত নেতাকর্মীরা। যদিও পুলিশ বলছে, অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।

ঢাকা জেলা সাভার সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহীনুর কবির বলেন, ‘সাভার-আশুলিয়া-ধামরাই থানায় মামলা হয়েছে প্রায় ১০০ এর মতো। এবং আসামিও রয়েছে অনেক। তাদের অনেককেই আমরা গ্রেপ্তার করেছি। অনেকেই বাড়িছাড়া হয়েছে। তাদের আমরা গ্রেপ্তার করছি এবং প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। যে করেই হোক তাদের আমরা আইনের আওতায় নিয়ে আসবো।’

ছাত্র জনতার ত্যাগের মধ্য দিয়ে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে শহীদ পরিবারগুলো বলছেন, নিরস্ত্র মানুষের ওপর গুলি চালানো অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা না করলে, বৃথা যাবে হাজারও মানুষের আত্মত্যাগ।