ঢাকা ০৩:২১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫, ৪ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

সবজির বাজার যেমন-তেমন, মাছ-মুরগিতে স্বস্তি নেই

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০১:৫৮:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫
  • / ৩৪৪ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

শীতকালীন সবজির ভরা মৌসুম হওয়ায় বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরে তুলনামূলক কম যাচ্ছে সব ধরনের সবজির দাম। তবে সপ্তাহ ব্যবধানে নতুন আলু ও পেঁয়াজ আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। বাজারে মাছ ও মুরগির বাজার চড়া থাকলেও সবজি কিনে স্বস্তি মিলছে বলে তারা উল্লেখ করেন নগরবাসীর। মাছ ও মুরগি কিনতে এসে ক্রেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। তাদের মতে দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারের মনিটরিং জোরদার করতে হবে।

আজ (শুক্রবার) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে সবজির দামের এমন চিত্র দেখা গেছে।

রাজধানীর এসব বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় বাজারে সবজির দাম আগের সপ্তাহের চেয়ে কমেছে। এসব বাজারে শিম ১৫ থেকে ৪০ টাকা, বড় আকারের ফুলকপি ১৫ থেকে ২০ টাকা পিস, বাঁধা কপি বড় সাইজের ২০ থেকে ৩০ টাকা পিস, প্রতিটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়, পাকা টমেটো কেজিতে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, গাজর ৪০ থেকে ৫০ টাকা, মুলা কেজি ২০ টাকা, খিরাই ৪০ টাকা এবং শশা ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এসব বাজারে গ্রীষ্মকালীন সবজি বেগুন ৪০ থেকে ৫০ টাকা, করলা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, ধুন্দুল ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৭০ টাকা, কচুর লতি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, ঝিঙ্গা এবং কাঁচামরিচ ৪০ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এসব বাজারে লেবুর হালি ২০ থেকে ৪০ টাকা, ধনে পাতা ১০০ টাকা কেজি, কাঁচা কলা হালি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়, চাল কুমড়া ৬০ টাকা পিস, ক্যাপসিকাম ১৫০ টাকা এবং মিষ্টি কুমড়া ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারগুলোতে লালশাক ১০ টাকা আঁটি, লাউশাক ৪০ টাকা, মুলাশাক ১০ টাকা, পালংশাক ১০ টাকা, কলমিশাক তিন আঁটি ২০ টাকা, পুঁইশাক ৪০ টাকা এবং ডাটাশাক ২০ টাকা আঁটি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে। এসব বাজারে নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকা দরে। পুরাতন আলু ৫০ টাকা, বগুড়ার লাল আলু ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

দেশি পেঁয়াজ কেজিতে ১০০ টাকা, মুড়ি পেঁয়াজ ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পাতা পেঁয়াজ ৪০ টাকা, ইন্ডিয়ান পেঁয়াজ ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে। বাজারগুলোতে আদা ১২০ থেকে ২৮০ টাকা, রসুন ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা, দেশি মশুর ডাল ১৪০ টাকা, মুগ ডাল ১৮০ টাকা, মিনিকেট চাল ৭৮ থেকে ৮৬ টাকা এবং নাজিরশাইল ৭৬ থেকে ৮৪ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

সবজির দাম নিয়ে রাজধানীর মহাখালী বাজারে কথা হয় বেসরকারি চাকরিজীবী খোরশেদ আলমের সঙ্গে। তিনি বলেন, অন্যান্য সময়ের চেয়ে বাজারে এখন সবজির দাম তুলনামূলক কম। যে কারণে বেশি করে সবজি কিনতে পারছি আমরা। তবে দুই একটি সবজির দাম এখনও বাড়তি। যদিও বিক্রেতারা বলছেন এটার এখন মৌসুম না, সে কারণে দাম বেশি। বাকিগুলোর দাম সহনীয় পর্যায়ে আছে। সাধারণ ক্রেতারা এই সময় এসে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছে। বছরের অন্যান্য সময়ও যদি সবজির দাম এমন সহনীয় পর্যায়ে থাকে তাহলে সাধারণ ক্রেতারা সবজি কিনে খুশি থাকবে।

সবজির দামের বিষয়ে মগবাজারের সবজি বিক্রেতা আব্দুল জব্বার বলেন, বাজারে এখন সবজির দাম কম। বর্তমান সময় সবজির ভরপুর মৌসুম, যে কারণে বাজারে প্রচুর পরিমাণে সরবরাহ আছে সবজির। বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এই সময়ে এসে সবজির দাম একদম কম যাচ্ছে। যে কারণে ক্রেতারাও তুলনামূলক বেশি পরিমাণে সবজি কিনছে। আগে যেখানে সারা দিনে একজন বিক্রেতা এক মণ সবজি বিক্রি করতেন, এখন সেই বিক্রেতাই দুই মণ সবজি বিক্রি করছেন। তবে এমন কম দাম সব সময় থাকবে না, শীত কমতে শুরু করার সাথে সাথে সবজির সরবরাহ কমবে, দামও বাড়বে।

মালিবাগ বাজারের সবজি বিক্রেতা রিয়াজুল ইসলাম বলেন, বাজারে সবজির দাম অনেক কম কম যাচ্ছে। তবে ২-৩ আইটেমের সবজি মৌসুম এখন না থাকায় সেই সবজিগুলোর দাম কিছুটা বাড়তি যাচ্ছে বাজারে। বাকি সব ধরনের সবজি বর্তমানে কম দাম। দাম বেশি সবজির মধ্যে রয়েছে ‌ করলা, বরবটি, ঢেঁড়স, পটল। আসলে এসব সবজির মৌসুম এখন না, খুব অল্প পরিমাণের সরবরাহ রয়েছে এসব সবজির। যে কারণে অন্যান্য সব সবজি তুলনায় এগুলোর দাম কিছুটা বাড়তি।

রাজধানীর এসব বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহ ব্যবধানে সোনালি ও কক মুরগি কেজিতে ২০ টাকা কমে ৩৪০ টাকায় এবং সোনালি হাইব্রিড ৩২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লাল লেয়ার মুরগি ৩১০ টাকা এবং সাদা লেয়ার ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে ব্রয়লার মুরগি ১০ টাকা কমে ২০০ টাকা এবং দেশি মুরগি ৩০ টাকা কমে ৫২০ টাকা করে আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে।

বাজারগুলোতে এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়, হাঁসের ডিম ২২০ টাকায়, দেশি মুরগির ডিমের হালি ৯০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।

এদিকে মনিটরিংয়ের অভাবে মুরগি ও মাছের বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে বলে মনে করেন ক্রেতারা। তাদের মতে প্রতি সপ্তাহে মুরগির দাম বাড়ছে। এভাবে চলতে থাকলে মধ্যবিত্ত পরিবার মাছ ও মাংস তালিকা থেকে হারিয়ে যাবে।

মুরগির বেশি দাম নিয়ে বিক্রেতারা বলছেন, শীতের দিনে ঠান্ডার কারণে মুরগির বাচ্চা অসুস্থ হয় বেশি। ফলে লোকসানের সম্ভাবনায় খামারিরা বাচ্চা কম তোলেন। যার কারণে বাজারে চাহিদা অনুযায়ী যোগান কম থাকে। সেজন্য পুরো সময়জুড়ে চাহিদার চেয়ে যোগান কম থাকে। ফলে স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বাড়তি দামেই ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়। এরসঙ্গে অন্য মুরগির দামও বেশি থাকে।

মায়ের দোয়া ব্রয়লার হাউজের বিক্রেতা মামুন হোসেন বলেন, সবসময় ব্রয়লার মুরগি ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা কেজি বিক্রি করেছি। তবে শীত শুরুর পর দাম বেড়েছে। চাহিদা অনুযায়ী বাজারে পর্যাপ্ত মুরগি নেই। সেজন্য এখন দাম বেশি। শীত শেষ না হলে বাজারে পর্যাপ্ত মুরগি আসার সম্ভাবনাও কম। তাই দাম কমার সম্ভাবনাও কম।

মোতাসিম বিল্লাহ নামের আরেক বিক্রেতা বলেন, আমাদেরকে পাইকারি মার্কেট থেকেই বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। যার প্রভাব খুচরা বাজারেও পড়েছে। ব্রয়লার গত সপ্তাহে ২০০ টাকা কেজি বিক্রি করেছি। এখন ২২০ টাকা বিক্রি না করলে লাভ কিছুই থাকে না। আর অন্য জাতের মুরগিগুলো তো এমনিতেই সবসময় দাম বেশি থাকে।

অন্যদিকে, চলতি সপ্তাহে মাছের বাজার চড়া রয়েছে। এসব বাজারে ৫০০ গ্রামের ইলিশ ১১০০ টাকা, ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রামের ১৭০০ টাকা, এক কেজি ওজনের ২০০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারগুলোতে চাষের এক কেজি শিং মাছ (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায়, প্রতি কেজি রুই মাছের দাম বেড়ে (আকারভেদে) ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকায়, দেশি মাগুর মাছ ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা , মৃগেল ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায়, চাষের পাঙাস ২০০ থেকে ২৩০ টাকায়, চিংড়ি প্রতি কেজি ৭৫০ থেকে ১২০০ টাকায়, বোয়ালমাছ প্রতি কেজি ৬০০ থেকে ৮০০ টাকায়, বড় কাতল ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকায়, পোয়া মাছ ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায়, পাবদা মাছ ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায়, তেলাপিয়া ২২০ টাকায়, কৈ মাছ ২২০ থেকে ২৩০ টাকায়, মলা ৫০০ টাকা, বাতাসি টেংরা ১৩০০ টাকায়, টেংরা মাছ ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, কাচকি মাছ ৫০০ টাকায়, পাঁচ মিশালি মাছ ২২০ টাকায়, রুপচাঁদা ১২০০ টাকা, বড় বাইম মাছ ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা, দেশি কই ১২০০ টাকা, সোল মাছ ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, আড়ই মাছ ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, বেলে মাছ ৮০০ টাকা, কুড়াল মাছ ৭০০ টাকা, কাজলি মাছ ৮০০ টাকা এবং কাইকলা মাছ ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এসব বাজারে গরুর মাংস কেজি প্রতি ৬৫০ থেকে ৮০০ টাকা, গরুর কলিজা ৮০০ টাকা, গরুর মাথার মাংস ৪৫০ টাকা, গরুর বট ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা এবং খাসির মাংস কেজি প্রতি ১১৫০-১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

সবজির বাজার যেমন-তেমন, মাছ-মুরগিতে স্বস্তি নেই

আপডেট সময় : ০১:৫৮:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫

শীতকালীন সবজির ভরা মৌসুম হওয়ায় বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরে তুলনামূলক কম যাচ্ছে সব ধরনের সবজির দাম। তবে সপ্তাহ ব্যবধানে নতুন আলু ও পেঁয়াজ আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। বাজারে মাছ ও মুরগির বাজার চড়া থাকলেও সবজি কিনে স্বস্তি মিলছে বলে তারা উল্লেখ করেন নগরবাসীর। মাছ ও মুরগি কিনতে এসে ক্রেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। তাদের মতে দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারের মনিটরিং জোরদার করতে হবে।

আজ (শুক্রবার) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে সবজির দামের এমন চিত্র দেখা গেছে।

রাজধানীর এসব বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় বাজারে সবজির দাম আগের সপ্তাহের চেয়ে কমেছে। এসব বাজারে শিম ১৫ থেকে ৪০ টাকা, বড় আকারের ফুলকপি ১৫ থেকে ২০ টাকা পিস, বাঁধা কপি বড় সাইজের ২০ থেকে ৩০ টাকা পিস, প্রতিটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়, পাকা টমেটো কেজিতে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, গাজর ৪০ থেকে ৫০ টাকা, মুলা কেজি ২০ টাকা, খিরাই ৪০ টাকা এবং শশা ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এসব বাজারে গ্রীষ্মকালীন সবজি বেগুন ৪০ থেকে ৫০ টাকা, করলা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, ধুন্দুল ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৭০ টাকা, কচুর লতি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, ঝিঙ্গা এবং কাঁচামরিচ ৪০ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এসব বাজারে লেবুর হালি ২০ থেকে ৪০ টাকা, ধনে পাতা ১০০ টাকা কেজি, কাঁচা কলা হালি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়, চাল কুমড়া ৬০ টাকা পিস, ক্যাপসিকাম ১৫০ টাকা এবং মিষ্টি কুমড়া ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারগুলোতে লালশাক ১০ টাকা আঁটি, লাউশাক ৪০ টাকা, মুলাশাক ১০ টাকা, পালংশাক ১০ টাকা, কলমিশাক তিন আঁটি ২০ টাকা, পুঁইশাক ৪০ টাকা এবং ডাটাশাক ২০ টাকা আঁটি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে। এসব বাজারে নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকা দরে। পুরাতন আলু ৫০ টাকা, বগুড়ার লাল আলু ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

দেশি পেঁয়াজ কেজিতে ১০০ টাকা, মুড়ি পেঁয়াজ ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পাতা পেঁয়াজ ৪০ টাকা, ইন্ডিয়ান পেঁয়াজ ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে। বাজারগুলোতে আদা ১২০ থেকে ২৮০ টাকা, রসুন ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা, দেশি মশুর ডাল ১৪০ টাকা, মুগ ডাল ১৮০ টাকা, মিনিকেট চাল ৭৮ থেকে ৮৬ টাকা এবং নাজিরশাইল ৭৬ থেকে ৮৪ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

সবজির দাম নিয়ে রাজধানীর মহাখালী বাজারে কথা হয় বেসরকারি চাকরিজীবী খোরশেদ আলমের সঙ্গে। তিনি বলেন, অন্যান্য সময়ের চেয়ে বাজারে এখন সবজির দাম তুলনামূলক কম। যে কারণে বেশি করে সবজি কিনতে পারছি আমরা। তবে দুই একটি সবজির দাম এখনও বাড়তি। যদিও বিক্রেতারা বলছেন এটার এখন মৌসুম না, সে কারণে দাম বেশি। বাকিগুলোর দাম সহনীয় পর্যায়ে আছে। সাধারণ ক্রেতারা এই সময় এসে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছে। বছরের অন্যান্য সময়ও যদি সবজির দাম এমন সহনীয় পর্যায়ে থাকে তাহলে সাধারণ ক্রেতারা সবজি কিনে খুশি থাকবে।

সবজির দামের বিষয়ে মগবাজারের সবজি বিক্রেতা আব্দুল জব্বার বলেন, বাজারে এখন সবজির দাম কম। বর্তমান সময় সবজির ভরপুর মৌসুম, যে কারণে বাজারে প্রচুর পরিমাণে সরবরাহ আছে সবজির। বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এই সময়ে এসে সবজির দাম একদম কম যাচ্ছে। যে কারণে ক্রেতারাও তুলনামূলক বেশি পরিমাণে সবজি কিনছে। আগে যেখানে সারা দিনে একজন বিক্রেতা এক মণ সবজি বিক্রি করতেন, এখন সেই বিক্রেতাই দুই মণ সবজি বিক্রি করছেন। তবে এমন কম দাম সব সময় থাকবে না, শীত কমতে শুরু করার সাথে সাথে সবজির সরবরাহ কমবে, দামও বাড়বে।

মালিবাগ বাজারের সবজি বিক্রেতা রিয়াজুল ইসলাম বলেন, বাজারে সবজির দাম অনেক কম কম যাচ্ছে। তবে ২-৩ আইটেমের সবজি মৌসুম এখন না থাকায় সেই সবজিগুলোর দাম কিছুটা বাড়তি যাচ্ছে বাজারে। বাকি সব ধরনের সবজি বর্তমানে কম দাম। দাম বেশি সবজির মধ্যে রয়েছে ‌ করলা, বরবটি, ঢেঁড়স, পটল। আসলে এসব সবজির মৌসুম এখন না, খুব অল্প পরিমাণের সরবরাহ রয়েছে এসব সবজির। যে কারণে অন্যান্য সব সবজি তুলনায় এগুলোর দাম কিছুটা বাড়তি।

রাজধানীর এসব বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহ ব্যবধানে সোনালি ও কক মুরগি কেজিতে ২০ টাকা কমে ৩৪০ টাকায় এবং সোনালি হাইব্রিড ৩২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লাল লেয়ার মুরগি ৩১০ টাকা এবং সাদা লেয়ার ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে ব্রয়লার মুরগি ১০ টাকা কমে ২০০ টাকা এবং দেশি মুরগি ৩০ টাকা কমে ৫২০ টাকা করে আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে।

বাজারগুলোতে এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়, হাঁসের ডিম ২২০ টাকায়, দেশি মুরগির ডিমের হালি ৯০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।

এদিকে মনিটরিংয়ের অভাবে মুরগি ও মাছের বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে বলে মনে করেন ক্রেতারা। তাদের মতে প্রতি সপ্তাহে মুরগির দাম বাড়ছে। এভাবে চলতে থাকলে মধ্যবিত্ত পরিবার মাছ ও মাংস তালিকা থেকে হারিয়ে যাবে।

মুরগির বেশি দাম নিয়ে বিক্রেতারা বলছেন, শীতের দিনে ঠান্ডার কারণে মুরগির বাচ্চা অসুস্থ হয় বেশি। ফলে লোকসানের সম্ভাবনায় খামারিরা বাচ্চা কম তোলেন। যার কারণে বাজারে চাহিদা অনুযায়ী যোগান কম থাকে। সেজন্য পুরো সময়জুড়ে চাহিদার চেয়ে যোগান কম থাকে। ফলে স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বাড়তি দামেই ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়। এরসঙ্গে অন্য মুরগির দামও বেশি থাকে।

মায়ের দোয়া ব্রয়লার হাউজের বিক্রেতা মামুন হোসেন বলেন, সবসময় ব্রয়লার মুরগি ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা কেজি বিক্রি করেছি। তবে শীত শুরুর পর দাম বেড়েছে। চাহিদা অনুযায়ী বাজারে পর্যাপ্ত মুরগি নেই। সেজন্য এখন দাম বেশি। শীত শেষ না হলে বাজারে পর্যাপ্ত মুরগি আসার সম্ভাবনাও কম। তাই দাম কমার সম্ভাবনাও কম।

মোতাসিম বিল্লাহ নামের আরেক বিক্রেতা বলেন, আমাদেরকে পাইকারি মার্কেট থেকেই বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। যার প্রভাব খুচরা বাজারেও পড়েছে। ব্রয়লার গত সপ্তাহে ২০০ টাকা কেজি বিক্রি করেছি। এখন ২২০ টাকা বিক্রি না করলে লাভ কিছুই থাকে না। আর অন্য জাতের মুরগিগুলো তো এমনিতেই সবসময় দাম বেশি থাকে।

অন্যদিকে, চলতি সপ্তাহে মাছের বাজার চড়া রয়েছে। এসব বাজারে ৫০০ গ্রামের ইলিশ ১১০০ টাকা, ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রামের ১৭০০ টাকা, এক কেজি ওজনের ২০০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারগুলোতে চাষের এক কেজি শিং মাছ (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায়, প্রতি কেজি রুই মাছের দাম বেড়ে (আকারভেদে) ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকায়, দেশি মাগুর মাছ ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা , মৃগেল ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায়, চাষের পাঙাস ২০০ থেকে ২৩০ টাকায়, চিংড়ি প্রতি কেজি ৭৫০ থেকে ১২০০ টাকায়, বোয়ালমাছ প্রতি কেজি ৬০০ থেকে ৮০০ টাকায়, বড় কাতল ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকায়, পোয়া মাছ ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায়, পাবদা মাছ ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায়, তেলাপিয়া ২২০ টাকায়, কৈ মাছ ২২০ থেকে ২৩০ টাকায়, মলা ৫০০ টাকা, বাতাসি টেংরা ১৩০০ টাকায়, টেংরা মাছ ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, কাচকি মাছ ৫০০ টাকায়, পাঁচ মিশালি মাছ ২২০ টাকায়, রুপচাঁদা ১২০০ টাকা, বড় বাইম মাছ ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা, দেশি কই ১২০০ টাকা, সোল মাছ ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, আড়ই মাছ ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, বেলে মাছ ৮০০ টাকা, কুড়াল মাছ ৭০০ টাকা, কাজলি মাছ ৮০০ টাকা এবং কাইকলা মাছ ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এসব বাজারে গরুর মাংস কেজি প্রতি ৬৫০ থেকে ৮০০ টাকা, গরুর কলিজা ৮০০ টাকা, গরুর মাথার মাংস ৪৫০ টাকা, গরুর বট ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা এবং খাসির মাংস কেজি প্রতি ১১৫০-১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।