বিগত সরকারের ভুল নীতিতে জ্বালানি খাত ভুগছে: সিপিডি
- আপডেট সময় : ০৮:৩৭:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৫
- / ৩৫৯ বার পড়া হয়েছে
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে অন্তর্বর্তী সরকার অনেক উদ্যোগ নিলেও ব্যবসা-বাণিজ্যে স্বস্তি আনার মতো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না বলে মনে করছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ। আজ (বুধবার, ২৯ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর ২০২৪-২৫ অর্থবছরের পর্যালোচনায় সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলের সরকার গঠনেই অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা আসবে।’ বিগত সরকারের ভুল নীতিতে জ্বালানি খাত ভুগছে বলেও তুলে ধরে সিপিডি।
সরকারি এবং বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর কাছে পিডিবির পাওনা রয়েছে ২১ হাজার কোটি টাকা । আদানির বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বকেয়া প্রায় ৮ হাজার ৪শ কোটি টাকা। প্রাকৃতিক গ্যাস ও এলএনজি আমদানির জন্য বিদেশি কোম্পানিগুলোর কাছে সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকার ঋণ রয়েছে পেট্রোবাংলার। সিপিডি বলছে, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত ঋণের দুষ্টচক্রে আটকে পড়েছে, আর এজন্য দায়ী আগের সরকারের নীতিকাঠামো দায়ী। একইসঙ্গে এলএনজি সরবরাহে অন্তর্বর্তী সরকারের নেয়া পদক্ষেপের সমালোচনা করে সংস্থাটি।
হেলেন মাশিরাত প্রিয়তী সিপিডির জ্যেষ্ঠ গবেষণা সহকারী বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের জায়গা থেকে যদি আমরা চিন্তা করি তাহলে এলএনজির এই চুক্তি করাটা আসলে কোনোভাবেই যায় না। একে আমরা কাতার ও ওমানকে তাদের বকেয়া দিতে পারছি না। তার ওপরে আবার এলএনজি চুক্তি করছি অন্যদিকে আমার যে আরো ৯টা অঞ্চলে ওয়ার্কওভার করার কথা আমি সেখানে বলছি সেটার টাকা নেই। বিডার চেয়ারম্যান এ ধরনের চুক্তি করতে পারেন কিনা সেটা নিয়েও একটা প্রশ্ন আছে কারণে এবারই প্রথম জানতে পারলাম এটা নিয়ে বিডার চেয়ারম্যান এই চুক্তি করেছেন।’
সংকটময় সময়ে প্রত্যাশা পূরণের চ্যালেঞ্জ নিয়ে মিডিয়া ব্রিফিংয়ে বেসরকারি সংস্থাটি অর্থনীতির নানা পর্যালোচনা তুলে ধরে। তারা বলছেন, ৮ আগস্টের পর খাতভিত্তিক সংস্কার কর্মসূচি হাতে নিলেও ব্যবসা-বাণিজ্যে স্বস্তি আনার মতো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘আর্থিক সংকুলানের ক্ষেত্রে যে ন্যায্যতা তা বিনষ্ট করা উচিত নয়। এই যে কর বাড়িয়ে বিশেষ করে পরোক্ষ কর বাড়িয়ে যদি আমরা আর্থিক প্রবাহ ও সংকুলানের বিষয়টি মোকাবেলা করে তাহলে সেটা কিন্তু জনগণের ওপর বোঝা চাপিয়ে দেয়ার মতো হবে।’
সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু কিছু পদক্ষেপ অনেক সময় মনে হচ্ছে জনগণের স্বার্থের বিপরীতমুখী।’
অক্টোবর পর্যন্ত রাজস্ব আহরণের প্রবৃদ্ধি মাত্র ৩ দশমিক ৭ শতাংশ। রাজস্ব আহরণের এই ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী মাসগুলোতে রাজস্ব আদায় বাড়াতে ৪৫ শতাংশ হারে প্রবদ্ধি প্রয়োজন, বিদেশি ঋণের ব্যবহার উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। অভ্যন্তরীণ উৎসেও নির্ভরতা বাড়ছে। এই তথ্য জানিয়ে সংস্থাটি মনে করছে রাজনৈতিক সংস্কার ছাড়া অর্থনৈতিক সংস্কার সম্ভব নয়।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘অনেক সংস্কারের প্রস্তাবনা এসেছে কোনো কার্যক্রম নয় এগুলো কিন্তু উনারা বাস্তবায়ন করবেন না। এগুলো বাস্তবায়ন করবে নির্বাচিত সরকার। এই ধরনের অনিশ্চয়তার মধ্যে কোনো বিনিয়োগ হয় না। ’
সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আর্থিক দিক থেকে একটা প্রত্যাশার চাপ এটা অস্বীকার করা যাবে না। গত তিন বছরে মূল্যস্ফীতির চাপে কেবল প্রান্তিক মানুষরা নয়, স্থির আয়ের মানুষ ও নিম্ন মধ্যবিত্তরাও একটা বড় ধরনের চাপের মধ্যে রয়েছে।’
অর্থনৈতিক সক্ষমতা অর্জনে দুর্বল ব্যাংকের ব্যাপারে কঠোর সিদ্ধান্তসহ ব্যাংক খাতকে পুনরুদ্ধার করতে বেশকিছু পরামর্শ তুলে ধরে প্রতিষ্ঠানটি।