ঢাকা ০৭:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৪ মার্চ ২০২৫, ২০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

গাজায় মানবিক সহায়তা বন্ধ করেছে ইসরায়েল, আরব বিশ্বের নিন্দা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০১:৪৪:৪৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ মার্চ ২০২৫
  • / ৩৪৯ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

রোববার গাজা উপত্যকায় জরুরি সহায়তা প্রবেশ বন্ধ করে দেয় ইসরায়েল৷ নেতানিয়াহুর এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন মানবিক সহায়তা সংস্থা এবং মিশর ও সৌদি আরব৷

নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য প্রতিনিধির প্রস্তাবিত শান্তিচুক্তি ‘হামাস প্রত্যাখ্যান’ করার প্রতিক্রিয়ায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা৷

ইসরায়েল-হামাস অস্ত্রবিরতির প্রথম পর্যায়ের মেয়াদ শনিবার শেষ হয়েছ, যার মধ্যে মানবিক সহায়তা বৃদ্ধির বিষয়টি যুক্ত ছিল৷ কিন্তু চুক্তির দ্বিতীয় ধাপে পৌঁছাতে দুই পক্ষ এখনও সম্মত হতে পারেনি৷ প্রথম ধাপের মেয়াদ বৃদ্ধি করে হামাসের কাছ থেকে আরো বন্দির মুক্তি চায় ইসরায়েল৷ কিন্তু হামাস চায় চুক্তিকে দ্বিতীয় ধাপে নিতে, যার উদ্দেশ্য হবে স্থায়ীভাবে যুদ্ধবন্ধ করা৷

ইসরায়েল অস্ত্রবিরতি চুক্তি ব্যাহত করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছে হামাস৷ গাজায় মানবিক সহায়তা ঢুকতে না দেয়াকে ‘যুদ্ধাপরাধ’ হিসেবে অভিহিত করেছে তারা৷

অস্থবিরতি বাড়ানোর জন্য মার্কিন প্রস্তাব হামাস প্রত্যাখ্যান করলে আরো পরিণতি ভোগ করতে হবে বলে সতর্ক করেছে নেতানিয়াহুর কার্যালয়৷

ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি চুক্তির ‘স্পষ্ট লঙ্ঘন’ করেছে এমন অভিযোগ করেছে মিশর৷ ফিলিস্তিনিদের ‘অনাহারে রাখাকে ইসরায়েল অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে’ বলে অভিহিত করেছে তারা৷

ইসরায়েলের সিদ্ধান্তকে ‘ব্ল্যাকমেল’ বা প্রতারণা এবং ফিলিস্তিনিদের ওপর ‘সামষ্টিক শাস্তি’ হিসেবে দেখছে সৌদি আরব৷ দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইসরায়েলকে থামাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে৷ ইসরায়েলের পূর্বের প্রতিবেশী জর্ডানও মানবিক সহায়তা আটকে দেয়ার নিন্দা জানিয়েছে৷

ইসরায়েলের সঙ্গে সৌদি আরবের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ার পথে বাধার উদ্দেশ্যেই ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাস ইসরায়েলে হামলা চালায় বলে মনে করেন অনেক পর্যবেক্ষক৷

জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান টম ফ্লেচার ইসরায়েলের সিদ্ধান্তকে ‘ভীতিকর’ বলে অভিহিত করেছেন৷ আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে মানবিক সহায়তা অবশ্যই অবাহত রাখতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি৷

মানবিক সহায়তাকে দরকষাকষির দান হিসেবে ব্যবহারের জন্য ইসরায়েলকে অভিযুক্ত করেছে চিকিৎসা বিষয়ক দাতব্য সংস্থা এমএসএফ বা ডক্টর্স উইদাউট বর্ডার্স৷

গাজাবাসীর উপর ইসরায়েলের এই সিদ্ধান্তের প্রভাব ভয়াবহ হবে বলে ডিডাব্লিউকে বলেছেন ইউনিসেফের মুখপাত্র রোসালিয়া বোলেন৷ তিনি জানান, প্রথম ধাপের চুক্তি কার্যকরের পর ‘মানবিক সহায়তা তাৎক্ষণিক স্বস্তি বয়ে আনার পাশাপাশি অনেকের জীবন বাঁচালেও তা প্রয়োজনের তুলনায় পর্যাপ্ত ছিল না’৷

গত জানুয়ারিতে ইসরায়েলের সঙ্গে অস্ত্রবিরতির অধীনে ৩৩ ইসরায়েলি ও পাঁচ থাই বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস৷ স্থায়ীভাবে যুদ্ধ বন্ধে আলোচনা চললেও দুইপক্ষ কোনো সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেনি৷ নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে বলা হয়েছে হামাস রাজি হলে মার্কিন প্রস্তাব নিয়ে সমঝোতায় পৌঁছাতে প্রস্তুত তারা৷ হামাসের প্রতি চুক্তিভঙ্গের অভিযোগ এনে তারা বলেছে, ‘‘কার্যকর মনে না করলে চুক্তি অনুযায়ী ৪২ দিন পর ইসরায়েল আবারও যুদ্ধে ফেরত আসতে পারে৷”

দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছে৷ ইসরায়েলসহ বেশ কিছু দেশ হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করে৷ এএফপি, ডিপিএ, রয়টার্স

নিউজটি শেয়ার করুন

গাজায় মানবিক সহায়তা বন্ধ করেছে ইসরায়েল, আরব বিশ্বের নিন্দা

আপডেট সময় : ০১:৪৪:৪৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ মার্চ ২০২৫

রোববার গাজা উপত্যকায় জরুরি সহায়তা প্রবেশ বন্ধ করে দেয় ইসরায়েল৷ নেতানিয়াহুর এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন মানবিক সহায়তা সংস্থা এবং মিশর ও সৌদি আরব৷

নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য প্রতিনিধির প্রস্তাবিত শান্তিচুক্তি ‘হামাস প্রত্যাখ্যান’ করার প্রতিক্রিয়ায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা৷

ইসরায়েল-হামাস অস্ত্রবিরতির প্রথম পর্যায়ের মেয়াদ শনিবার শেষ হয়েছ, যার মধ্যে মানবিক সহায়তা বৃদ্ধির বিষয়টি যুক্ত ছিল৷ কিন্তু চুক্তির দ্বিতীয় ধাপে পৌঁছাতে দুই পক্ষ এখনও সম্মত হতে পারেনি৷ প্রথম ধাপের মেয়াদ বৃদ্ধি করে হামাসের কাছ থেকে আরো বন্দির মুক্তি চায় ইসরায়েল৷ কিন্তু হামাস চায় চুক্তিকে দ্বিতীয় ধাপে নিতে, যার উদ্দেশ্য হবে স্থায়ীভাবে যুদ্ধবন্ধ করা৷

ইসরায়েল অস্ত্রবিরতি চুক্তি ব্যাহত করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছে হামাস৷ গাজায় মানবিক সহায়তা ঢুকতে না দেয়াকে ‘যুদ্ধাপরাধ’ হিসেবে অভিহিত করেছে তারা৷

অস্থবিরতি বাড়ানোর জন্য মার্কিন প্রস্তাব হামাস প্রত্যাখ্যান করলে আরো পরিণতি ভোগ করতে হবে বলে সতর্ক করেছে নেতানিয়াহুর কার্যালয়৷

ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি চুক্তির ‘স্পষ্ট লঙ্ঘন’ করেছে এমন অভিযোগ করেছে মিশর৷ ফিলিস্তিনিদের ‘অনাহারে রাখাকে ইসরায়েল অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে’ বলে অভিহিত করেছে তারা৷

ইসরায়েলের সিদ্ধান্তকে ‘ব্ল্যাকমেল’ বা প্রতারণা এবং ফিলিস্তিনিদের ওপর ‘সামষ্টিক শাস্তি’ হিসেবে দেখছে সৌদি আরব৷ দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইসরায়েলকে থামাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে৷ ইসরায়েলের পূর্বের প্রতিবেশী জর্ডানও মানবিক সহায়তা আটকে দেয়ার নিন্দা জানিয়েছে৷

ইসরায়েলের সঙ্গে সৌদি আরবের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ার পথে বাধার উদ্দেশ্যেই ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাস ইসরায়েলে হামলা চালায় বলে মনে করেন অনেক পর্যবেক্ষক৷

জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান টম ফ্লেচার ইসরায়েলের সিদ্ধান্তকে ‘ভীতিকর’ বলে অভিহিত করেছেন৷ আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে মানবিক সহায়তা অবশ্যই অবাহত রাখতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি৷

মানবিক সহায়তাকে দরকষাকষির দান হিসেবে ব্যবহারের জন্য ইসরায়েলকে অভিযুক্ত করেছে চিকিৎসা বিষয়ক দাতব্য সংস্থা এমএসএফ বা ডক্টর্স উইদাউট বর্ডার্স৷

গাজাবাসীর উপর ইসরায়েলের এই সিদ্ধান্তের প্রভাব ভয়াবহ হবে বলে ডিডাব্লিউকে বলেছেন ইউনিসেফের মুখপাত্র রোসালিয়া বোলেন৷ তিনি জানান, প্রথম ধাপের চুক্তি কার্যকরের পর ‘মানবিক সহায়তা তাৎক্ষণিক স্বস্তি বয়ে আনার পাশাপাশি অনেকের জীবন বাঁচালেও তা প্রয়োজনের তুলনায় পর্যাপ্ত ছিল না’৷

গত জানুয়ারিতে ইসরায়েলের সঙ্গে অস্ত্রবিরতির অধীনে ৩৩ ইসরায়েলি ও পাঁচ থাই বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস৷ স্থায়ীভাবে যুদ্ধ বন্ধে আলোচনা চললেও দুইপক্ষ কোনো সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেনি৷ নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে বলা হয়েছে হামাস রাজি হলে মার্কিন প্রস্তাব নিয়ে সমঝোতায় পৌঁছাতে প্রস্তুত তারা৷ হামাসের প্রতি চুক্তিভঙ্গের অভিযোগ এনে তারা বলেছে, ‘‘কার্যকর মনে না করলে চুক্তি অনুযায়ী ৪২ দিন পর ইসরায়েল আবারও যুদ্ধে ফেরত আসতে পারে৷”

দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছে৷ ইসরায়েলসহ বেশ কিছু দেশ হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করে৷ এএফপি, ডিপিএ, রয়টার্স