ঢাকা ০৪:২০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ২৯ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

সাগরে গ্যাস অনুসন্ধানে আগ্রহী হয়নি আন্তর্জাতিক কোনো কোম্পানি

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১১:২১:৩৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫
  • / ৩৪৭ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

তিন মাস সময় বাড়িয়েও সাগরে গ্যাস অনুসন্ধানে আগ্রহী হয়নি আন্তর্জাতিক তেল-গ্যাস অনুসন্ধানকারী কোম্পানিগুলো। অনাগ্রহের বিষয়ে মতামত পেলে দরপত্রের মডেল সংস্কার করার কথা জানিয়েছে পেট্রোবাংলা। আর আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলোকে আকৃষ্টে সাগরের ভিন্ন ভিন্ন ব্লকে আলাদা পিএসসি মডেল তৈরির পরামর্শ জ্বালানি বিশেষজ্ঞদের। বলছেন, বাপেক্সের মাধ্যমেই ত্রিমাত্রিক জরিপ চালিয়ে মজুত গ্যাসের পরিমাণ জানা সম্ভব।

সাগরের গ্যাস অনুসন্ধানে গত বছর সাতটি আন্তর্জাতিক কোম্পানি পেট্রোবাংলার দরপত্র কিনলেও, শেষ পর্যন্ত কেউই অনুসন্ধানের নামেনি। তিন মাস সময় বাড়ালেও দরপত্র কেনেনি নতুন কোনো কোম্পানি।

২০১২ ও ২০১৪ সালে ভারত-মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা বিরোধ নিষ্পত্তি হলেও গ্যাস উত্তোলনে নেয়া হয়নি কোনো উদ্যোগ। কিন্তু হাত গুটিয়ে বসে থাকেনি প্রতিবেশি দেশগুলো। যদিও ২০১৬ সালের দরপত্র আহ্বানে সাড়া না পেয়ে ২০১৯ সালে নতুন পিএসসি তৈরি করে পেট্রোবাংলা, যা চূড়ান্ত হয় ২০২৩-এ। এ মডেলে সাগরের সম্ভাবনাময় ২৬টি ব্লক তুলে ধরলেও সাড়া মেলেনি অনুসন্ধানে।

পেট্রোবাংলা বলছে, সবশেষ গত বছর মার্চ থেকে সেপ্টেম্বরের দরপত্রে গভীর সমুদ্রে ১৫টি ও অগভীরে ৯টি ব্লকে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল। আগ্রহ দেখানো যুক্তরাষ্ট্র, নরওয়ে, ফ্রান্স, জাপান, চীন সিঙ্গাপুর ও ভারতের বেশ কয়েকটি কোম্পানির মধ্যে বহুমাত্রিক জরিপের তথ্য কেনে শেভরন, এক্সনমবিল, ইনপেক্স, সিনুক ও জোগম্যাক। তবে কেন কোম্পানিগুলো অনুসন্ধানে আসেনি তা জানতে চিঠি দিয়েছে পেট্রোবাংলা। তাদের মতামতের ভিত্তিতে সংশোধন হবে পিএসসি মডেল।

পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান মো. রেজানুর রহমান বলেন, ‘চিঠি পাঠিয়েছি যে আপনাদের মতামতটা দেন যে, কেন ড্রপ করেননি আর আমাদের টেন্ডারের শর্তগুলোতে আপনাদের কোনো সমস্যা আছে কি না বা কোনো শর্ত অতিরিক্ত যোগ করতে হবে কি না। তাদের মতামত পেলে যদি আমাদের দেশের জন্য উপকারী হয় তাহলে আমরা আরেকবার টেন্ডারে যেতে চাই।’

বাংলাদেশের ভূতত্ত্ব জরিপের তথ্য মূল্য পাঁচ থেকে ছয় কোটি টাকারও বেশি। কতটুকু এলাকাজুড়ে কী পরিমাণ গ্যাস মজুদ আছে এবং তার পেছনে বিনিয়োগ লাভজনক হবে কী না তার নির্দিষ্ট পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করে গ্যাস অনুসন্ধানে আগ্রহী হয় আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলো। ভাবতে হয় লভ্যাংশ ও অংশীদারিত্ব নিয়ে। কিন্তু পর্যাপ্ত তথ্য না থাকলে এত মূল্যে আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলো দরপত্র কেনায় আগ্রহী হয় না বলে মত জ্বালানি বিশেষজ্ঞদের।

এমআাইএসটি’র অধ্যাপক ড. আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘শ্যালো সির গ্যাসগুলো আনতে যে খরচ যাবে ডিপ সির গ্যাস আনতে তার দ্বিগুণ তিনগুণ খরচ যাবে। ওখানে পাইপলাইন করাও সম্ভব না। পিএসসিকে দুইভাগে ভাগে করতে হবে। একটা গচ্ছে ডিপ সির জন্য পিএসসি এবং শ্যালো সির জন্য আলাদা। একটা ডেটাসেট ছয় কোটি টাকা। তারা তো এই ডেটা কিনে আসবে না কারণ হতেও পারে নাও হতে পারে।’

গ্যাস অনুসন্ধানে বাড়াতে হবে নিজস্ব সক্ষমতা। তাই দেশিয় কোম্পানি বাপেক্সের মাধ্যমেই থ্রি ডি জরিপ চালিয়ে সাগরে কী পরিমাণ গ্যাস আছে, তার যথাযথ জরিপ চালালে আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলোকে আকৃষ্ট করা সম্ভব বলে মত সংশ্লিষ্টদের।

নিউজটি শেয়ার করুন

সাগরে গ্যাস অনুসন্ধানে আগ্রহী হয়নি আন্তর্জাতিক কোনো কোম্পানি

আপডেট সময় : ১১:২১:৩৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫

তিন মাস সময় বাড়িয়েও সাগরে গ্যাস অনুসন্ধানে আগ্রহী হয়নি আন্তর্জাতিক তেল-গ্যাস অনুসন্ধানকারী কোম্পানিগুলো। অনাগ্রহের বিষয়ে মতামত পেলে দরপত্রের মডেল সংস্কার করার কথা জানিয়েছে পেট্রোবাংলা। আর আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলোকে আকৃষ্টে সাগরের ভিন্ন ভিন্ন ব্লকে আলাদা পিএসসি মডেল তৈরির পরামর্শ জ্বালানি বিশেষজ্ঞদের। বলছেন, বাপেক্সের মাধ্যমেই ত্রিমাত্রিক জরিপ চালিয়ে মজুত গ্যাসের পরিমাণ জানা সম্ভব।

সাগরের গ্যাস অনুসন্ধানে গত বছর সাতটি আন্তর্জাতিক কোম্পানি পেট্রোবাংলার দরপত্র কিনলেও, শেষ পর্যন্ত কেউই অনুসন্ধানের নামেনি। তিন মাস সময় বাড়ালেও দরপত্র কেনেনি নতুন কোনো কোম্পানি।

২০১২ ও ২০১৪ সালে ভারত-মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা বিরোধ নিষ্পত্তি হলেও গ্যাস উত্তোলনে নেয়া হয়নি কোনো উদ্যোগ। কিন্তু হাত গুটিয়ে বসে থাকেনি প্রতিবেশি দেশগুলো। যদিও ২০১৬ সালের দরপত্র আহ্বানে সাড়া না পেয়ে ২০১৯ সালে নতুন পিএসসি তৈরি করে পেট্রোবাংলা, যা চূড়ান্ত হয় ২০২৩-এ। এ মডেলে সাগরের সম্ভাবনাময় ২৬টি ব্লক তুলে ধরলেও সাড়া মেলেনি অনুসন্ধানে।

পেট্রোবাংলা বলছে, সবশেষ গত বছর মার্চ থেকে সেপ্টেম্বরের দরপত্রে গভীর সমুদ্রে ১৫টি ও অগভীরে ৯টি ব্লকে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল। আগ্রহ দেখানো যুক্তরাষ্ট্র, নরওয়ে, ফ্রান্স, জাপান, চীন সিঙ্গাপুর ও ভারতের বেশ কয়েকটি কোম্পানির মধ্যে বহুমাত্রিক জরিপের তথ্য কেনে শেভরন, এক্সনমবিল, ইনপেক্স, সিনুক ও জোগম্যাক। তবে কেন কোম্পানিগুলো অনুসন্ধানে আসেনি তা জানতে চিঠি দিয়েছে পেট্রোবাংলা। তাদের মতামতের ভিত্তিতে সংশোধন হবে পিএসসি মডেল।

পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান মো. রেজানুর রহমান বলেন, ‘চিঠি পাঠিয়েছি যে আপনাদের মতামতটা দেন যে, কেন ড্রপ করেননি আর আমাদের টেন্ডারের শর্তগুলোতে আপনাদের কোনো সমস্যা আছে কি না বা কোনো শর্ত অতিরিক্ত যোগ করতে হবে কি না। তাদের মতামত পেলে যদি আমাদের দেশের জন্য উপকারী হয় তাহলে আমরা আরেকবার টেন্ডারে যেতে চাই।’

বাংলাদেশের ভূতত্ত্ব জরিপের তথ্য মূল্য পাঁচ থেকে ছয় কোটি টাকারও বেশি। কতটুকু এলাকাজুড়ে কী পরিমাণ গ্যাস মজুদ আছে এবং তার পেছনে বিনিয়োগ লাভজনক হবে কী না তার নির্দিষ্ট পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করে গ্যাস অনুসন্ধানে আগ্রহী হয় আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলো। ভাবতে হয় লভ্যাংশ ও অংশীদারিত্ব নিয়ে। কিন্তু পর্যাপ্ত তথ্য না থাকলে এত মূল্যে আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলো দরপত্র কেনায় আগ্রহী হয় না বলে মত জ্বালানি বিশেষজ্ঞদের।

এমআাইএসটি’র অধ্যাপক ড. আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘শ্যালো সির গ্যাসগুলো আনতে যে খরচ যাবে ডিপ সির গ্যাস আনতে তার দ্বিগুণ তিনগুণ খরচ যাবে। ওখানে পাইপলাইন করাও সম্ভব না। পিএসসিকে দুইভাগে ভাগে করতে হবে। একটা গচ্ছে ডিপ সির জন্য পিএসসি এবং শ্যালো সির জন্য আলাদা। একটা ডেটাসেট ছয় কোটি টাকা। তারা তো এই ডেটা কিনে আসবে না কারণ হতেও পারে নাও হতে পারে।’

গ্যাস অনুসন্ধানে বাড়াতে হবে নিজস্ব সক্ষমতা। তাই দেশিয় কোম্পানি বাপেক্সের মাধ্যমেই থ্রি ডি জরিপ চালিয়ে সাগরে কী পরিমাণ গ্যাস আছে, তার যথাযথ জরিপ চালালে আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলোকে আকৃষ্ট করা সম্ভব বলে মত সংশ্লিষ্টদের।