৩০ দিনের সাময়িক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সমর্থন দিয়ে খবরের শিরোনামে রুশ প্রেসিডেন্ট। জেলেনস্কির দাবি, যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করতে চাইলেও ট্রাম্পের ভয়ে সমর্থন দিয়েছেন পুতিন। চুক্তি সইয়ের ক্ষেত্রে নানাবিধ শর্ত জুড়ে দেয়া, বিষয়টি প্রমাণে যথেষ্ট বলেও মন্তব্য করেন তিনি। অন্যদিকে পুতিনের বক্তব্য আশাব্যঞ্জক হলেও, অসম্পূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

মার্কিন মসনদে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তনের পর থেকেই পাল্টাচ্ছে ভূরাজনীতির গতি প্রকৃতি। সম্প্রতি জাতিসংঘে যেমন রাশিয়াকে সমর্থন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ঠিক তেমনি যুদ্ধ বন্ধের প্রস্তাবে এবার ওয়াশিংটনকে সমর্থন দিলো মস্কো।

ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাবিত ৩০ দিনের সাময়িক বিরতির প্রস্তাবে সমর্থন দিয়েছেন পুতিন। চুক্তিতে স্বাক্ষরের আগে, বেশ কিছু বিষয়ে আলোচনা প্রয়োজন বলে দাবি করেন রুশ প্রেসিডেন্ট। দাবি করেন, দুই দেশের মধ্যে দ্বন্দ্বের শেকড় উপড়ে ফেলতে না পারলে এই প্রস্তাব চিরস্থায়ী শান্তি ফেরাতে পারবে না। এছাড়াও ইউক্রেন ইস্যুতে মনোযোগ দেয়ায় ট্রাম্পকে ধন্যবাদ দেন তিনি।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, ‘সংঘাত বন্ধের প্রস্তাবে আমাদের সমর্থন আছে। তবে আমরা এমন বিরতিতে যেতে চাই, যা দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা করবে। এমনকি সংকটের প্রকৃত কারণকে নির্মূলে সহায়ক হবে। বিভিন্ন বিষয়ে একমত না হয়ে যুদ্ধবিরতির চুক্তি ফলপ্রসূ হবে না।’

পুরো বিশ্ব রুশ প্রেসিডেন্টের পদক্ষেপকে স্বাগত জানালেও ভিন্ন সুরে কথা বললেন ইউক্রেনের সরকার প্রধান। ভলোদিমির জেলেনস্কির দাবি, যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যানের কথা ভাবছিল রাশিয়া। তবে ট্রাম্পের ভয়ে বাধ্য হয়ে পরিকল্পনা পরিবর্তন করেন তিনি। সঙ্গে যোগ করেন নানাবিধ শর্ত।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘পুতিনের কাছ থেকে আবারও একটি বিভ্রান্তমূলক কথা শুনলাম। তিনি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করতে চাইছিলেন। তবে ট্রাম্পের ভয়ে পুতিন সরাসরি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেননি। তিনি যুদ্ধ অব্যাহত রেখে সকল ইউক্রেনীয়দের হত্যা করতে চান।’

রাশিয়ার সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় রয়েছেন বিশেষ মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফ। এমনটাই জানিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্টের আশা, মানবতার খাতিরে শান্তির পথকে বেছে নেবে রাশিয়া। তবে পুতিনের বক্তব্যটি আশাব্যঞ্জক হলেও অসম্পূর্ণ বলে মন্তব্য করেন তিনি।

ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘পুতিন আশাব্যঞ্জক বক্তব্য দিয়েছেন। তবে বক্তব্যটি সম্পূর্ণ করা হয়নি। আমি তার সঙ্গে দেখা করতে বা কথা বলতে মুখিয়ে আছি। তার আগে আমাদের যুদ্ধ শেষ করতে হবে। প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ নিহত হচ্ছেন।’

এদিকে, কুরস্ক অঞ্চলের সবচেয়ে বড় শহর সুঝাসহ তিনটি শহর পুনরুদ্ধারের দাবি করেছে রাশিয়া। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবি, অঞ্চলটি থেকে ইউক্রেনীয়দের হঠিয়ে দেয়ার শেষ পর্যায়ে আছে মস্কোর সেনারা।