ঢাকা ০২:৪৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫, ৪ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

৮ বছরেও শেষ হয়নি শরীয়তপুরের গোলাম মাওলা সেতুর নির্মাণকাজ

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০২:৪৭:৫৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫
  • / ৩৫১ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

৮ বছরেও শেষ হয়নি শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ভাষা সৈনিক গোলাম মাওলা সেতুর নির্মাণকাজ। দফায় দফায় প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হলেও কাজের অগ্রগতি মাত্র ৫৫ শতাংশ। এতদিন ঢিমেতালে চললেও আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে পলাতক ঠিকাদার। এতে সেতুর কাজ শেষ হওয়া নিয়ে দেখা দিয়েছে জটিলতা।

শরীয়তপুরের নড়িয়া ও ভেদরগঞ্জকে ঢাকার সাথে যুক্ত করেছে কীর্তিনাশা নদীর ভাষা সৈনিক ডা. গোলাম মাওলা সেতু। ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় পুরানো সেতুটি অপসারণ করে ২০১৭ সালের মাঝামাঝিতে নতুন ব্রিজের নির্মাণকাজ শুরু হয়।

৮ বছর ধরে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলা সেতুর নির্মাণকাজ এখন মুখ থুবড়ে পড়েছে। ৩২৭ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটির নদীর মাঝের মূল অংশের কাজ এখনও শেষ করতে পারিনি ঠিকাদার। কাজ ফেলে রাখায় মরিচা ধরেছে লোহায়। ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে নির্মাণ সামগ্রী। এ অবস্থায় সরকার পতনের পর পলাতক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সেতুর কাজ বন্ধে ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা।

স্থানীয়দের একজন বলেন, ‘সরকার পতনের পর ঠিকাদাররা সব পালিয়েছে, এখন এপার থেকে ওপারে যেতে সবার খুব কষ্ট হয়।’

শরীয়তপুর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম রাফেউল ইসলাম বলেন, ‘৫ আগস্ট সরকার পতনের পর ঠিকাদার পলাতক আছে। পুলিশ বিভিন্নভাবে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এই কারণে ৬ মাস যাবৎ কাজের তেমন কোনো অগ্রগতি নেই।’

প্রকল্প কাজ চলাকালে দুই পাড়ের মানুষের চলাচলের সুবিধার্তে নির্মাণাধীন সেতুর পাশে নির্মাণ করা হয় ফুটওভার ব্রিজ। কিন্তু সেটিও ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় থেমে গেছে কাজ। তাই ঝুঁকি নিয়ে উত্তাল নদী পারাপারে নৌকাতেই ভরসা লাখো মানুষের। যাতায়াতের ভোগান্তিতে শিক্ষায় পিছিয়ে পড়েছে নদীর পশ্চিম প্রান্তের শিক্ষার্থীরা। পদ্মা সেতু থাকার পরও সুফল থেকেও বঞ্চিত হওয়ার সাথে ভেদরগঞ্জ ও নড়িয়াবাসি অর্থনৈতিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

ভুক্তভোগীদের একজন বলেন, ‘দৈনিক আমাদের যাতায়াতে অনেক বেশি খরচ হয়, অনেক সময় দুর্ঘটনাও ঘটে থাকে।’

কাজ শেষ না হওয়ায় আসন্ন ঈদে এ পথ ব্যবহারকারী ঘরমুখো মানুষকে পড়তে হবে বাড়তি ভোগান্তিতে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর বলছে- এরই মধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, ‘নতুন করে সবকিছু গুছিয়ে নিতে একমাস যাবে। এরপর প্রথম ধাপেই আমরা নতুন ঠিকাদার পেয়ে গেলে ৩ মাসের মধ্যেই কাজ শুরু করতে পারবো।’

শুরুতে সেতুটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ১৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। তবে, দফায় দফায় প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো ও নকশায় কিছুটা পরিবর্তনের কারণে নির্মাণ ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকায়।

নিউজটি শেয়ার করুন

৮ বছরেও শেষ হয়নি শরীয়তপুরের গোলাম মাওলা সেতুর নির্মাণকাজ

আপডেট সময় : ০২:৪৭:৫৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫

৮ বছরেও শেষ হয়নি শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ভাষা সৈনিক গোলাম মাওলা সেতুর নির্মাণকাজ। দফায় দফায় প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হলেও কাজের অগ্রগতি মাত্র ৫৫ শতাংশ। এতদিন ঢিমেতালে চললেও আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে পলাতক ঠিকাদার। এতে সেতুর কাজ শেষ হওয়া নিয়ে দেখা দিয়েছে জটিলতা।

শরীয়তপুরের নড়িয়া ও ভেদরগঞ্জকে ঢাকার সাথে যুক্ত করেছে কীর্তিনাশা নদীর ভাষা সৈনিক ডা. গোলাম মাওলা সেতু। ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় পুরানো সেতুটি অপসারণ করে ২০১৭ সালের মাঝামাঝিতে নতুন ব্রিজের নির্মাণকাজ শুরু হয়।

৮ বছর ধরে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলা সেতুর নির্মাণকাজ এখন মুখ থুবড়ে পড়েছে। ৩২৭ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটির নদীর মাঝের মূল অংশের কাজ এখনও শেষ করতে পারিনি ঠিকাদার। কাজ ফেলে রাখায় মরিচা ধরেছে লোহায়। ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে নির্মাণ সামগ্রী। এ অবস্থায় সরকার পতনের পর পলাতক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সেতুর কাজ বন্ধে ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা।

স্থানীয়দের একজন বলেন, ‘সরকার পতনের পর ঠিকাদাররা সব পালিয়েছে, এখন এপার থেকে ওপারে যেতে সবার খুব কষ্ট হয়।’

শরীয়তপুর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম রাফেউল ইসলাম বলেন, ‘৫ আগস্ট সরকার পতনের পর ঠিকাদার পলাতক আছে। পুলিশ বিভিন্নভাবে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এই কারণে ৬ মাস যাবৎ কাজের তেমন কোনো অগ্রগতি নেই।’

প্রকল্প কাজ চলাকালে দুই পাড়ের মানুষের চলাচলের সুবিধার্তে নির্মাণাধীন সেতুর পাশে নির্মাণ করা হয় ফুটওভার ব্রিজ। কিন্তু সেটিও ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় থেমে গেছে কাজ। তাই ঝুঁকি নিয়ে উত্তাল নদী পারাপারে নৌকাতেই ভরসা লাখো মানুষের। যাতায়াতের ভোগান্তিতে শিক্ষায় পিছিয়ে পড়েছে নদীর পশ্চিম প্রান্তের শিক্ষার্থীরা। পদ্মা সেতু থাকার পরও সুফল থেকেও বঞ্চিত হওয়ার সাথে ভেদরগঞ্জ ও নড়িয়াবাসি অর্থনৈতিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

ভুক্তভোগীদের একজন বলেন, ‘দৈনিক আমাদের যাতায়াতে অনেক বেশি খরচ হয়, অনেক সময় দুর্ঘটনাও ঘটে থাকে।’

কাজ শেষ না হওয়ায় আসন্ন ঈদে এ পথ ব্যবহারকারী ঘরমুখো মানুষকে পড়তে হবে বাড়তি ভোগান্তিতে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর বলছে- এরই মধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, ‘নতুন করে সবকিছু গুছিয়ে নিতে একমাস যাবে। এরপর প্রথম ধাপেই আমরা নতুন ঠিকাদার পেয়ে গেলে ৩ মাসের মধ্যেই কাজ শুরু করতে পারবো।’

শুরুতে সেতুটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ১৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। তবে, দফায় দফায় প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো ও নকশায় কিছুটা পরিবর্তনের কারণে নির্মাণ ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকায়।