ঢাকা ১১:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১৩ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

দেশে স্বর্ণের বিক্রি কমেছে ৫০-৬০ শতাংশ

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১১:২৪:৫৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫
  • / ৩৫২ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বিশ্বজুড়ে স্বর্ণের বাজারে আবারও অস্থিরতা। দেশের বাজারে স্বর্ণের ভরি ঠেকেছে ১ লাখ ৭২ হাজার টাকায়। এমন বাস্তবতায় বিক্রি কমেছে ৫০-৬০ শতাংশ পর্যন্ত। বাজুস বলছে, শুল্ক ও বাণিজ্য যুদ্ধের পাশাপাশি দেশের বুলিয়ান মার্কেট লাগামহীন দাম বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। অর্থনীতিবিদদের পরামর্শ, ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে স্বর্ণের চাহিদা ও যোগানের সমন্বয় করতে হবে।

অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তায় সুরক্ষা কবচ স্বর্ণ। যে কোনো সংকটে লাফিয়ে দাম বাড়ার রেকর্ড আছে এই মূল্যবান ধাতুটির। বিলাসী পণ্য হিসেবে দাম বৃদ্ধিতে বারবার রেকর্ড ভাঙছে স্বর্ণ। বিশ্ববাজারে তো বটেই, দেশের বাজারেও লাগামহীন এর দাম।

শুল্ক ও বাণিজ্য যুদ্ধের উদ্বেগের কারণে মার্কিন ডলার যখন দর হারাচ্ছে; তখন আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে দেশেও ধরাছোঁয়ার বাইরে যাচ্ছে স্বর্ণ। টানা চারবার বৃদ্ধির পর কিছুটা কমলেও রেকর্ড ছুঁয়েছে দাম।

বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন-বাজুসের তথ্য বলছে, চলতি বছর জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত দাম সমন্বয় হয়েছে ২৬ বার। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ১৯ দফায়; আর কমেছে মাত্র ৭ বার। ২০২৪ সালে দাম সমন্বয় হয়েছে ৬২ বার। যার মধ্যে দাম বেড়েছে ৩৫ বার। প্রতিমাসে একাধিকবার তো বটেই, মাত্র একদিনের ব্যবধানেও দাম ওঠানামার চিত্রও দেখা যায়।

দাম বৃদ্ধির ধারাবাহিকতায় সবশেষ ২২ এপ্রিল ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম বেড়ে দাঁড়ায় ১ লাখ ৭৭ হাজার টাকা। তবে একদিনের ব্যবধানে কিছুটা কমে দর ঠেকেছে ১ লাখ ৭২ হাজার টাকায়। দেশের বাজারে এটিই এখন পর্যন্ত রেকর্ড দাম।

এমন বাস্তবতায় মধ্যবিত্ত ক্রেতাদের হাতের নাগালের বাইরে স্বর্ণ। বিয়ে কিংবা সামাজিক আয়োজনে কমছে এর ব্যবহার। হঠাৎ এমন চড়া বাজারে ক্রেতারা বলছেন, লাগামহীন দামের কারণে গহনা কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা।

অব্যাহত দাম বৃদ্ধিতে চিন্তার ভাঁজ ব্যবসায়ীদেরও। দাম বাড়ায় আগের চেয়ে বিক্রি কমেছে ৫০-৬০ শতাংশ পর্যন্ত। এমন অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে জুয়েলারি ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কায় তারা।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক-কাণ্ডে বিশ্বজুড়ে স্বর্ণের বাজারে প্রভাব ফেলছে। শুধু দেশেই নয়, বিশ্ববাজারে স্বর্ণের আউন্স প্রতি দাম বেড়ে হয়েছে ৩ হাজার ৩১৯ মার্কিন ডলার।

দেশের বাজারে দাম বৃদ্ধির জন্য বিশ্ববাজারের অস্বস্তিকর সমীকরণের পাশাপাশি দেশের বুলিয়ান মার্কেটকেও দায় দিচ্ছেন দেশের স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগঠন-বাজুস।

অর্থনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশের বাজারে স্বর্ণ আমদানি, চাহিদা কিংবা সরবরাহের কোন নির্ভরযোগ্য তথ্য নেই। পাশাপাশি ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ডলারের মূল্যমান কমে যাওয়ার আশঙ্কায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর রিজার্ভ হিসেবে স্বর্ণের চাহিদা বাড়ছে। যা ক্রেতাদের মধ্যে তৈরি করছে অর্থনৈতিক চাপ। তাই স্বর্ণের চাহিদা ও যোগানের সমন্বয়ের অভাব ঘোচানোর দাবি তাদের।

শুধু সাজসজ্জায় নয়, অর্থনৈতিক দুর্দিনে বহুকাল ধরেই নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে ভূমিকা রাখছে স্বর্ণ। তাই বৈশ্বিক বাজারের সাথে সঙ্গতি রেখে ব্যবসায়ীদের মুনাফার মার্জিনকে সমন্বয়ের পাশাপাশি স্বর্ণ কেনাবেচায় সচেতন হওয়ার পরামর্শ অর্থনীতিবিদদের।

নিউজটি শেয়ার করুন

দেশে স্বর্ণের বিক্রি কমেছে ৫০-৬০ শতাংশ

আপডেট সময় : ১১:২৪:৫৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫

বিশ্বজুড়ে স্বর্ণের বাজারে আবারও অস্থিরতা। দেশের বাজারে স্বর্ণের ভরি ঠেকেছে ১ লাখ ৭২ হাজার টাকায়। এমন বাস্তবতায় বিক্রি কমেছে ৫০-৬০ শতাংশ পর্যন্ত। বাজুস বলছে, শুল্ক ও বাণিজ্য যুদ্ধের পাশাপাশি দেশের বুলিয়ান মার্কেট লাগামহীন দাম বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। অর্থনীতিবিদদের পরামর্শ, ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে স্বর্ণের চাহিদা ও যোগানের সমন্বয় করতে হবে।

অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তায় সুরক্ষা কবচ স্বর্ণ। যে কোনো সংকটে লাফিয়ে দাম বাড়ার রেকর্ড আছে এই মূল্যবান ধাতুটির। বিলাসী পণ্য হিসেবে দাম বৃদ্ধিতে বারবার রেকর্ড ভাঙছে স্বর্ণ। বিশ্ববাজারে তো বটেই, দেশের বাজারেও লাগামহীন এর দাম।

শুল্ক ও বাণিজ্য যুদ্ধের উদ্বেগের কারণে মার্কিন ডলার যখন দর হারাচ্ছে; তখন আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে দেশেও ধরাছোঁয়ার বাইরে যাচ্ছে স্বর্ণ। টানা চারবার বৃদ্ধির পর কিছুটা কমলেও রেকর্ড ছুঁয়েছে দাম।

বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন-বাজুসের তথ্য বলছে, চলতি বছর জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত দাম সমন্বয় হয়েছে ২৬ বার। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ১৯ দফায়; আর কমেছে মাত্র ৭ বার। ২০২৪ সালে দাম সমন্বয় হয়েছে ৬২ বার। যার মধ্যে দাম বেড়েছে ৩৫ বার। প্রতিমাসে একাধিকবার তো বটেই, মাত্র একদিনের ব্যবধানেও দাম ওঠানামার চিত্রও দেখা যায়।

দাম বৃদ্ধির ধারাবাহিকতায় সবশেষ ২২ এপ্রিল ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম বেড়ে দাঁড়ায় ১ লাখ ৭৭ হাজার টাকা। তবে একদিনের ব্যবধানে কিছুটা কমে দর ঠেকেছে ১ লাখ ৭২ হাজার টাকায়। দেশের বাজারে এটিই এখন পর্যন্ত রেকর্ড দাম।

এমন বাস্তবতায় মধ্যবিত্ত ক্রেতাদের হাতের নাগালের বাইরে স্বর্ণ। বিয়ে কিংবা সামাজিক আয়োজনে কমছে এর ব্যবহার। হঠাৎ এমন চড়া বাজারে ক্রেতারা বলছেন, লাগামহীন দামের কারণে গহনা কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা।

অব্যাহত দাম বৃদ্ধিতে চিন্তার ভাঁজ ব্যবসায়ীদেরও। দাম বাড়ায় আগের চেয়ে বিক্রি কমেছে ৫০-৬০ শতাংশ পর্যন্ত। এমন অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে জুয়েলারি ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কায় তারা।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক-কাণ্ডে বিশ্বজুড়ে স্বর্ণের বাজারে প্রভাব ফেলছে। শুধু দেশেই নয়, বিশ্ববাজারে স্বর্ণের আউন্স প্রতি দাম বেড়ে হয়েছে ৩ হাজার ৩১৯ মার্কিন ডলার।

দেশের বাজারে দাম বৃদ্ধির জন্য বিশ্ববাজারের অস্বস্তিকর সমীকরণের পাশাপাশি দেশের বুলিয়ান মার্কেটকেও দায় দিচ্ছেন দেশের স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগঠন-বাজুস।

অর্থনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশের বাজারে স্বর্ণ আমদানি, চাহিদা কিংবা সরবরাহের কোন নির্ভরযোগ্য তথ্য নেই। পাশাপাশি ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ডলারের মূল্যমান কমে যাওয়ার আশঙ্কায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর রিজার্ভ হিসেবে স্বর্ণের চাহিদা বাড়ছে। যা ক্রেতাদের মধ্যে তৈরি করছে অর্থনৈতিক চাপ। তাই স্বর্ণের চাহিদা ও যোগানের সমন্বয়ের অভাব ঘোচানোর দাবি তাদের।

শুধু সাজসজ্জায় নয়, অর্থনৈতিক দুর্দিনে বহুকাল ধরেই নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে ভূমিকা রাখছে স্বর্ণ। তাই বৈশ্বিক বাজারের সাথে সঙ্গতি রেখে ব্যবসায়ীদের মুনাফার মার্জিনকে সমন্বয়ের পাশাপাশি স্বর্ণ কেনাবেচায় সচেতন হওয়ার পরামর্শ অর্থনীতিবিদদের।