পঞ্চম যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে ভারত-পাকিস্তান!

- আপডেট সময় : ০৩:৫৭:৩৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ মে ২০২৫
- / ৩৪৬ বার পড়া হয়েছে

কাশ্মীর ইস্যুতে যেকোনো সময় সংঘটিত হতে পারে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ। ইউক্রেন-রাশিয়া কিংবা ইসরাইল-ফিলিস্তিন ছাপিয়ে সবার চোখ এখন এই দুই দেশের দিকে। তবে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দেশ এর আগে আরো কয়েকবার যুদ্ধে জড়ায়।
কাশ্মীর ইস্যুতে ভারত ও পাকিস্তানের মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে উত্তপ্ত গোটা বিশ্ব। আলোচনার টেবিলেও চলছে তুমুল বিতর্ক। সংঘাত আর উত্তেজনার গতি-প্রকৃতি নিয়েও চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।
দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ের একের পর এক বৈঠকে উত্তেজনা চরমে। বাড়ছে সংকট, কাটছে না ধোঁয়াশা। যেকোনো মুহূর্তে লেগে যেতে পারে যুদ্ধ। বিশাল ভৌগোলিক ব্যবধান সত্ত্বেও শক্তিমত্তার বিচারেও প্রায় সমানে সমান দুদেশ। কিন্তু প্রশ্ন হলো, দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশ মোট কতবার যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছিল? আর ফলাফলই বা কী ছিল?
৭৮ বছরের ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যায়, ভারত-পাকিস্তান মোট চারবার যুদ্ধে জড়ালেও কাশ্মীর ইস্যুতেই হয়েছে তিনবার। দুই দেশের মধ্যে প্রথম যুদ্ধ সংঘটিত হয় ১৯৪৭ সালে। একই দিনে স্বাধীনতা লাভের কয়েক সপ্তাহ পরেই পাকিস্তানের আশঙ্কা ছিল কাশ্মীর ও জম্মুর মহারাজা ভারতের সাথে যোগ দেবে। কারণ দেশভাগের পর প্রতিটি রাজ্যকে সেই সিদ্ধান্তের স্বাধীনতা দেয়া হয়। হিন্দু মহারাজা হরিসিং দ্বারা শাসিত হওয়ায় ভারতের সাথে সংযুক্ত হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা ছিল রাজ্যটির।
অন্যদিকে জম্মু ও কাশ্মীরের ৭৫ ভাগ জনসংখ্যাই ছিল মুসলিম। তখন পাকিস্তান সেনাবাহিনী কাশ্মীরের কিছু অংশ দখলে নিয়ে নেয়। এরপরেই ভারতের সাথে যুদ্ধ বাধে দেশটির। ভারত রাজ্যের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ নিয়ন্ত্রণ লাভ করে, যার মধ্যে ছিল জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ। অন্যদিকে রাজ্যের এক-তৃতীয়াংশ নিয়ন্ত্রণ পায় পাকিস্তান। দখলে নেয় আজাদ কাশ্মীর ও গিলগিট বালতিস্তান। তখন জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছিল।
১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তানের দ্বিতীয় যুদ্ধও হয় কাশ্মীর ইস্যুতে। ১৯৬২ সালে চীনের সাথে যুদ্ধে ভারতের পরাজয়ের পর পাকিস্তানের ধারণা ছিল প্রতিবেশি দেশটির সামরিক সক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়েছে। সেই সুযোগে কাশ্মীর দখলে নিতে পাঁয়তারা করে পাকিস্তান। তারই ধারাবাহিকতায় পাক সৈন্যরা কাশ্মীরে অনুপ্রবেশ করে। এরপর ভারতীয়রাও যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে।
তবে এই যুদ্ধের ফলাফল ছিল অমীমাংসিত। সেবারও জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় হয় যুদ্ধবিরতি। এই যুদ্ধে ভারতের প্রায় ১২শ’ সেনা নিহতের বিপরীতে পাকিস্তানের নিহত সেনা সদস্যের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৭ হাজার। দুই দেশের প্রায় ১৫০টি যুদ্ধবিমান ধ্বংস হয়।
ভারতের লাদাখে অবস্থিত একটি জেলা কার্গিল। ১৯৯৯ সালের এই যুদ্ধের বীজ বোনা ছিল ১৯৪৭ সালেই, এটি দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশের মধ্যে শেষ যুদ্ধ। পাকিস্তানি স্বাধীনতাকামীরা উভয় রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে ভারতে ঢুকে পড়লে এই যুদ্ধ অনিবার্য আকার ধারণ করে। তবে এই যুদ্ধে পাকিস্তানের পরাজয় ঘটে। এমনকি নিজ দেশের সেনাদের মরদেহ নিতেও অস্বীকৃতি জানায় পাকিস্তান। দায় চাপিয়ে দেয় কাশ্মীরি স্বাধীনতাকামীদের ওপর। তাই তাদের ভারতেই দাফন করতে বাধ্য হয় দেশটির সরকার।