ঘোষিত সময়েই মৌলিক সংস্কার করে নির্বাচন সম্ভব ?

- আপডেট সময় : ০৪:২২:২৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ মে ২০২৫
- / ৩৯৬ বার পড়া হয়েছে

আগামী ডিসেম্বর থেকে পরের বছর জুনের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে সরকার অবস্থান পরিষ্কার করলেও, নির্দিষ্ট তারিখ না দেয়ায় সংশয়ে রাজনৈতিক দলগুলো। রোজা, স্কুল কলেজের পরীক্ষা কিংবা আবহাওয়ার দিক বিবেচনায় বিএনপির ডিসেম্বর বা জামায়াত রমজানের আগেই ভোটের ভালো সময় বলছেন রাজনীতিবিদ ও বিশ্লেষকরা। সংস্কার প্রক্রিয়ায় জড়িত বিশিষ্টজনরাও বলছেন, ঘোষিত সময়েই মৌলিক সংস্কার করে নির্বাচন সম্ভব। আর এক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যে জোর দেন তারা।
শুধু আইন উপদেষ্টা নয়, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাও একাধিকবার বলেছেন, নির্বাচন ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যেই হবে। তবে ঠিক কোন মাসে সেটি স্পষ্ট করেন নি। তাতে নির্বাচন নিয়ে দলগুলোর সংশয় কাটছেই না।
প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সংশয় বাদ দিয়ে যদি সরকারের দেয়া সময় ডিসেম্বর থেকে জুন ধরা হয় তাহলে এরমধ্যে নির্বাচনের উপযুক্ত সময় কোনটি?
সাধারণত মধ্য ডিসেম্বর পর্যন্ত কেন্দ্রে কেন্দ্রে চলে পরীক্ষা। আর ২০২৬ এর রমজান শুরু ১৭ ফেব্রুয়ারি। ঈদুল ফিতরের সম্ভাব্য তারিখ ২০ মার্চ।
যদি রমজানের মধ্যে এসএসসি পরীক্ষা না হয় তাহলে সেটি গড়াবে এপ্রিলের শেষ পর্যন্ত। এর পরই উচ্চ মাধ্যমিক শুরু হলে শেষ করতে হবে মে মাসের মধ্যে কারণ সম্ভাব্য ঈদুল আযহা ২৭ মে।
তারপরই শুরু বর্ষা ও দুর্যোগ প্রবণ সময়। যদি অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে চায় তাহলে মোটা দাগে বলা যায়, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের ভালো সময় ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে জানুয়ারির শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত।
এই পঞ্জিকা ধরে বিএনপি ডিসেম্বরে আর জামায়াত রমজানের আগে নির্বাচন চাইছে কি না জানা নেই। তবে দুই দলের শীর্ষ নেতাদের কাছে প্রশ্ন ছিল, নির্বাচন নিয়ে একই সুরে কথা বলার কারণ কি ?
এ এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ‘সরকারের প্রতিশ্রুত অনুযায়ী ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যেই যদি এই কাজগুলো হয় তাহলে একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হবে, জামায়াত সেদিকেই ইঙ্গিত করেছে।’
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘রাজনীতিতে যে সংস্কৃতি আছে বিগত সরকারের সময় থেকে, সেখান থেকে তো বেরিয়ে আসতে হবে। সকলে সকলের সাথে কথা বলতে হবে, আলোচনা করতে হবে। গণতন্ত্রের ভিত্তি কিন্তু আলোচনা, সংলাপ। এর পরিপ্রেক্ষিতে যদি কোনো কিছু মিলে যায়, তাহলে সমস্যা কোথায়?’
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার বলেন, ‘সবাই যদি কাছাকাছি একটা মতৈক্যে আসে, এটা খুবই সম্ভব। সম্ভব না হওয়ার তো কোনো প্রশ্নই আসে না।’
তিনি আরো বলেন, ‘যদি ডিসেম্বরেও হয়, তাহলে সেটাকে কম সময় বলা যাবে না। যথেষ্ট সময় আছে।’
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, সরকার নয়, রাজনৈতিক দলগুলোর উপর নির্ভর করে ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে কিনা। দলগুলোর ঐকমত্যের উপর নির্ভর করে কবে হবে নির্বাচন।
সট বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘এটা মূলত নির্ভর করে রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর। তারা যত দ্রুত একমত হতে পারবে তত দ্রুত নির্বাচন সম্ভব।’
স্বাধীনতার পর থেকে দেশে আয়োজিত ১২টি নির্বাচনের মধ্যে ৯টি হয়েছিলো ডিসেম্বর থেকে মার্চের মধ্যে। আর জুনের পর হয়েছিলো একটি নির্বাচন।