ঢাকা ০১:৫৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৪ মে ২০২৫, ২০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি ও জুলাইয়ের এক দফা দাবি একই’

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১০:৫০:১৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ মে ২০২৫
  • / ৩৪৯ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার দাবি ও জুলাইয়ের এক দফা দাবি একই বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। আজ (শুক্রবার, ২ মে) বিকেলে বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। যারা আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করবে তাদেরও ছাত্র-জনতা প্রতিহত করবে বলেও জানান এনসিপির নেতারা।

আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে জুলাই বিপ্লবে সহস্রাধিক ছাত্র-জনতাকে হত্যার অভিযোগ ওঠার পর দাবি ওঠে দলটিকে নিষিদ্ধের। বিভিন্ন সময় বিচ্ছিন্নভাবে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি উঠলেও দলীয়ভাবে এই প্রথম আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে মাঠে নামে ছাত্রদের নতুন দল এনসিপি।

চলতি মাসের শুরুতে ছোট ছোট কর্মসূচি পালন করলেও বিকেলে বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে বিক্ষোভ সমাবেশের মতো বড় কর্মসূচির আয়োজন করে এনসিপির ঢাকা মহানগর শাখা। মিছিল, স্লোগানে শেখ হাসিনার বিচার ও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি নিয়ে সমাবেশস্থলে আসতে থাকে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মী সমর্থকরা। প্রশ্ন ছিল আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ আদৌ সম্ভব কিনা?

এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরউদ্দিন পাটওয়ারী বলেন, ‘মুজিববাদীদের কোনো জায়গা এদেশে হবে না। খুনি হাসিনা আর মুজিববাদীদের কোনো অস্তিত্ব রাখা হবে না। ভারতের এক্সটেনশন হলো মুজিববাদী সংবিধান। এই সংবিধান থাকলেই লীগ ফেরত আসবে।’

তিনি বলেন, ‘ইসির কলকব্জা নাড়াচ্ছে একটি দল। তারা আওয়ামী লীগ পুনর্বাসন করতে চায়। সেই দল লীগের সাথে লিয়াঁজো করে ভোগবিলাসে মত্ত ছিল। যেই দল লীগের সাথে লিয়াঁজো করে ভোগবিলাসে মত্ত ছিল তাদের সংসদে দেখতে চাই না। লীগের প্রতীক ও নিবন্ধন বাতিল না পর্যন্ত রাজপথে থাকবো।’

এনসিপির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন বলেন, ‘সংস্কারের আগে নির্বাচন হতে দেয়া হবে না। ন্যূনতম সংস্কার নয়, মৌলিক সংস্কার করেই মাঠ ছাড়বো। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দেখা মাত্রই প্রতিহত করবেন।’

সমাবেশে যোগ দিয়ে কেন্দ্রীয় নেতারা জানান, যারা আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করবে তাদেরও প্রতিহত করবে ছাত্র-জনতা। পরিপূর্ণ সংস্কার ও লীগ নিষিদ্ধের আগে কোনো নির্বাচন হতে দেয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন নেতারা।

এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, ‘৫ আগস্ট লীগের বিরুদ্ধ জনগণ রায় দিয়ে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি ও জুলাইয়ের এক দফা দাবি একই। লীগ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চলতে থাকবে।’

এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আওয়ামী লীগে নিষিদ্ধে কোনো যদি কিন্তু নাই। স্পষ্ট জানিয়ে দেই আওয়ামী নিষিদ্ধ করতে হবে।’

এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘সুশীল সরকার নয়, আপনারা গণঅভ্যুত্থানের সরকার। লীগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাঁধা কোথায়? মুজিববাদী আদর্শের নামে কোনো রাজনীতি চলতে দেয়া হবে না। আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল করতে হবে। লীগকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দেয়া হবে না। আওয়ামী লীগের সহযোগীদের যারা জায়গা দিবে তাদের তাদের প্রতিহত করা হবে। লীগ নিষিদ্ধে ঐকমত্য তৈরিতে বিএনপি, জামায়াতসহ প্রতিটি ফ্যাসিবাদবিরোধী দলকে এক হতে হবে। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না হলে দেশে নির্বাচন হতে দেয়া হবে না।’

সংগঠনটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম জানান, মৌলিক সংস্কার ও দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই সনদে আওয়ামী লীগ নিষেদ্ধের কথা উল্লেখ করতে হবে।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘এখনও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি নিয়ে রাজপথে আসা আমাদের ব্যর্থতা। ’৪৭ এর আজাদীর স্বপ্ন লুট করা হয়েছিল। ’৭১ এর স্বাধীনতা মুজিববাদীদের হাতে বেহাত হয়ে গিয়েছিল। অতীতে অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের প্রতিশ্রুতি পালন করেনি।’

তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ ও নিবন্ধন বাতিল করতে হবে। নির্বাচন কমিশন ফ্যাসিস্টদের রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করতে দিয়ে কার পারপাস সার্ভ করছে? যারা হাসিনার গণহত্যা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে তারা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর। মৌলিক সংস্কার ও দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই সনদে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের কথা উল্লেখ করতে হবে।’

এসময় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ও শেখ হাসিনার বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন নাগরিক পার্টির নেতারা।

নিউজটি শেয়ার করুন

‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি ও জুলাইয়ের এক দফা দাবি একই’

আপডেট সময় : ১০:৫০:১৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ মে ২০২৫

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার দাবি ও জুলাইয়ের এক দফা দাবি একই বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। আজ (শুক্রবার, ২ মে) বিকেলে বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। যারা আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করবে তাদেরও ছাত্র-জনতা প্রতিহত করবে বলেও জানান এনসিপির নেতারা।

আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে জুলাই বিপ্লবে সহস্রাধিক ছাত্র-জনতাকে হত্যার অভিযোগ ওঠার পর দাবি ওঠে দলটিকে নিষিদ্ধের। বিভিন্ন সময় বিচ্ছিন্নভাবে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি উঠলেও দলীয়ভাবে এই প্রথম আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে মাঠে নামে ছাত্রদের নতুন দল এনসিপি।

চলতি মাসের শুরুতে ছোট ছোট কর্মসূচি পালন করলেও বিকেলে বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে বিক্ষোভ সমাবেশের মতো বড় কর্মসূচির আয়োজন করে এনসিপির ঢাকা মহানগর শাখা। মিছিল, স্লোগানে শেখ হাসিনার বিচার ও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি নিয়ে সমাবেশস্থলে আসতে থাকে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মী সমর্থকরা। প্রশ্ন ছিল আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ আদৌ সম্ভব কিনা?

এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরউদ্দিন পাটওয়ারী বলেন, ‘মুজিববাদীদের কোনো জায়গা এদেশে হবে না। খুনি হাসিনা আর মুজিববাদীদের কোনো অস্তিত্ব রাখা হবে না। ভারতের এক্সটেনশন হলো মুজিববাদী সংবিধান। এই সংবিধান থাকলেই লীগ ফেরত আসবে।’

তিনি বলেন, ‘ইসির কলকব্জা নাড়াচ্ছে একটি দল। তারা আওয়ামী লীগ পুনর্বাসন করতে চায়। সেই দল লীগের সাথে লিয়াঁজো করে ভোগবিলাসে মত্ত ছিল। যেই দল লীগের সাথে লিয়াঁজো করে ভোগবিলাসে মত্ত ছিল তাদের সংসদে দেখতে চাই না। লীগের প্রতীক ও নিবন্ধন বাতিল না পর্যন্ত রাজপথে থাকবো।’

এনসিপির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন বলেন, ‘সংস্কারের আগে নির্বাচন হতে দেয়া হবে না। ন্যূনতম সংস্কার নয়, মৌলিক সংস্কার করেই মাঠ ছাড়বো। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দেখা মাত্রই প্রতিহত করবেন।’

সমাবেশে যোগ দিয়ে কেন্দ্রীয় নেতারা জানান, যারা আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করবে তাদেরও প্রতিহত করবে ছাত্র-জনতা। পরিপূর্ণ সংস্কার ও লীগ নিষিদ্ধের আগে কোনো নির্বাচন হতে দেয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন নেতারা।

এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, ‘৫ আগস্ট লীগের বিরুদ্ধ জনগণ রায় দিয়ে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি ও জুলাইয়ের এক দফা দাবি একই। লীগ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চলতে থাকবে।’

এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আওয়ামী লীগে নিষিদ্ধে কোনো যদি কিন্তু নাই। স্পষ্ট জানিয়ে দেই আওয়ামী নিষিদ্ধ করতে হবে।’

এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘সুশীল সরকার নয়, আপনারা গণঅভ্যুত্থানের সরকার। লীগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাঁধা কোথায়? মুজিববাদী আদর্শের নামে কোনো রাজনীতি চলতে দেয়া হবে না। আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল করতে হবে। লীগকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দেয়া হবে না। আওয়ামী লীগের সহযোগীদের যারা জায়গা দিবে তাদের তাদের প্রতিহত করা হবে। লীগ নিষিদ্ধে ঐকমত্য তৈরিতে বিএনপি, জামায়াতসহ প্রতিটি ফ্যাসিবাদবিরোধী দলকে এক হতে হবে। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না হলে দেশে নির্বাচন হতে দেয়া হবে না।’

সংগঠনটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম জানান, মৌলিক সংস্কার ও দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই সনদে আওয়ামী লীগ নিষেদ্ধের কথা উল্লেখ করতে হবে।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘এখনও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি নিয়ে রাজপথে আসা আমাদের ব্যর্থতা। ’৪৭ এর আজাদীর স্বপ্ন লুট করা হয়েছিল। ’৭১ এর স্বাধীনতা মুজিববাদীদের হাতে বেহাত হয়ে গিয়েছিল। অতীতে অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের প্রতিশ্রুতি পালন করেনি।’

তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ ও নিবন্ধন বাতিল করতে হবে। নির্বাচন কমিশন ফ্যাসিস্টদের রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করতে দিয়ে কার পারপাস সার্ভ করছে? যারা হাসিনার গণহত্যা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে তারা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর। মৌলিক সংস্কার ও দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই সনদে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের কথা উল্লেখ করতে হবে।’

এসময় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ও শেখ হাসিনার বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন নাগরিক পার্টির নেতারা।