ঢাকা ১০:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

অন্তর্বর্তী সরকারের বিবৃতি

‘আ.লীগ নিষিদ্ধ: মুক্ত মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করা হয়নি’

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১১:৪৬:১৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫
  • / ৩৫৬ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপনে অন্য কোনো রাজনৈতিক দল বা মুক্তমতের মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ন করা হয়নি বলে জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। সোমবার রাতে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ সংক্রান্ত ১২ মে প্রজ্ঞাপনটি জারি করা হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে। সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় এই প্রজ্ঞাপনটি জারি করা হয়। ওই আইন ও প্রজ্ঞাপন অনুসারে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারকার্য সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগ (এবং এর সকল অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন) কর্তৃক যে কোনো ধরনের প্রকাশনা, গণমাধ্যম, অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণা, মিছিল, সভা-সমাবেশ, সম্মেলন আয়োজনসহ যাবতীয় কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মী ও সদস্যদের জন্য প্রযোজ্য হবে।

অন্তর্বর্তী সরকার বলছে, ওই প্রজ্ঞাপন অন্য কোনো রাজনৈতিক দল বা মুক্তমতের মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ন করে না। আওয়ামী লীগের কোনো কর্মকাণ্ড, দলটি সম্পর্কে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের যৌক্তিক, গঠনমূলক বা আইনানুগ বিশ্লেষণ বা মতামত প্রদান, এই প্রজ্ঞাপন দ্বারা খর্বিত করা হয়নি।

গত প্রায় ১৫ বছর বিশেষ করে গতবছরের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যূত্থানকালে আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের বিরুদ্ধে হামলা গুম, খুন, অমানবিক নির্যাতন, সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের সুস্পষ্ট অভিযোগ রয়েছে। উল্লিখিত অপরাধসমূহের অভিযোগে উপরোক্ত সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এবং দেশের ফৌজদারি আদালতে বহুসংখ্যক মামলা বিচারাধীন রয়েছে।

এতে আরো বলা হয়, এ সকল মামলার বিচারে প্রতিবন্ধকতা তৈরি, জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি এবং জননিরাপত্তা বিপন্ন করার লক্ষ্যে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ এবং সংগঠনগুলো কর্তৃক গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে হামলা ও উসকানি প্রদানসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সংঘটিত করা হচ্ছে। এতে বিশেষ করে দায়েরকৃত মামলার বাদী ও সাক্ষীদের মনে ভীতির সঞ্চার হয়েছে ও এভাবে বিচার এবং দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। এই প্রেক্ষিতে আজকের প্রজ্ঞাপনটি জারি করা হয়।

এর আগে, সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে এ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে বিচার সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।

একই সঙ্গে দলটির অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সব ধরনের প্রচারণাও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে গত কয়েকদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) সমমনা দলগুলো। আন্দোলনের মুখে রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে গত শনিবার (১০ মে) উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

আওয়ামী লীগের নেতাদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত অনলাইনসহ দলটির সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত হয় বৈঠকে। ওই দিন রাতেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল অধ্যাদেশ জারি করা হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

অন্তর্বর্তী সরকারের বিবৃতি

‘আ.লীগ নিষিদ্ধ: মুক্ত মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করা হয়নি’

আপডেট সময় : ১১:৪৬:১৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপনে অন্য কোনো রাজনৈতিক দল বা মুক্তমতের মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ন করা হয়নি বলে জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। সোমবার রাতে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ সংক্রান্ত ১২ মে প্রজ্ঞাপনটি জারি করা হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে। সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় এই প্রজ্ঞাপনটি জারি করা হয়। ওই আইন ও প্রজ্ঞাপন অনুসারে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারকার্য সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগ (এবং এর সকল অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন) কর্তৃক যে কোনো ধরনের প্রকাশনা, গণমাধ্যম, অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণা, মিছিল, সভা-সমাবেশ, সম্মেলন আয়োজনসহ যাবতীয় কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মী ও সদস্যদের জন্য প্রযোজ্য হবে।

অন্তর্বর্তী সরকার বলছে, ওই প্রজ্ঞাপন অন্য কোনো রাজনৈতিক দল বা মুক্তমতের মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ন করে না। আওয়ামী লীগের কোনো কর্মকাণ্ড, দলটি সম্পর্কে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের যৌক্তিক, গঠনমূলক বা আইনানুগ বিশ্লেষণ বা মতামত প্রদান, এই প্রজ্ঞাপন দ্বারা খর্বিত করা হয়নি।

গত প্রায় ১৫ বছর বিশেষ করে গতবছরের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যূত্থানকালে আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের বিরুদ্ধে হামলা গুম, খুন, অমানবিক নির্যাতন, সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের সুস্পষ্ট অভিযোগ রয়েছে। উল্লিখিত অপরাধসমূহের অভিযোগে উপরোক্ত সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এবং দেশের ফৌজদারি আদালতে বহুসংখ্যক মামলা বিচারাধীন রয়েছে।

এতে আরো বলা হয়, এ সকল মামলার বিচারে প্রতিবন্ধকতা তৈরি, জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি এবং জননিরাপত্তা বিপন্ন করার লক্ষ্যে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ এবং সংগঠনগুলো কর্তৃক গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে হামলা ও উসকানি প্রদানসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সংঘটিত করা হচ্ছে। এতে বিশেষ করে দায়েরকৃত মামলার বাদী ও সাক্ষীদের মনে ভীতির সঞ্চার হয়েছে ও এভাবে বিচার এবং দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। এই প্রেক্ষিতে আজকের প্রজ্ঞাপনটি জারি করা হয়।

এর আগে, সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে এ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে বিচার সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।

একই সঙ্গে দলটির অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সব ধরনের প্রচারণাও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে গত কয়েকদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) সমমনা দলগুলো। আন্দোলনের মুখে রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে গত শনিবার (১০ মে) উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

আওয়ামী লীগের নেতাদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত অনলাইনসহ দলটির সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত হয় বৈঠকে। ওই দিন রাতেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল অধ্যাদেশ জারি করা হয়।